ওয়াল্ট হুইটম্যান
ওয়াল্টার "ওয়াল্ট" হুইটম্যান (ইংরেজি: Walter "Walt" Whitman) (৩১ মে, ১৮১৯–২৬ মার্চ, ১৮৯২) ছিলেন একজন মার্কিন কবি, প্রাবন্ধিক ও সাংবাদিক। মানবতাবাদী হিসেবে প্রসিদ্ধ হুইটম্যান তার রচনায় তুরীয়বাদ ও বাস্তবতাবাদের সম্মিলন ঘটিয়েছিলেন। হুইটম্যান সর্বাধিক প্রভাবশালী মার্কিন কবিদের অন্যতম। তাকে মুক্তছন্দের জনকও বলা হয়।[১] তার রচনা সেযুগে যথেষ্ট বিতর্কের সৃষ্টি করে। বিশেষত তার কাব্যসংকলন লিভস অব গ্রাস মাত্রাতিরিক্ত অশ্লীলতার জন্য সমালোচিত হয়।
ওয়াল্ট হুইটম্যান | |
---|---|
জন্ম | ওয়েস্ট হিলস, টাউন অফ হান্টিংটন, লং আইল্যান্ড, নিউ ইয়র্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র | ৩১ মে ১৮১৯
মৃত্যু | ২৬ মার্চ ১৮৯২ ক্যামডেন, নিউ জার্সি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র | (বয়স ৭২)
সমাধিস্থল | ক্যামডেন, নিউ জার্সি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
স্বাক্ষর |
হুইটম্যানের জন্ম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের লং আইল্যান্ডে। তিনি নিজের কবিতা প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে সাংবাদিকতা, শিক্ষকতা, সরকারি করণিক বৃত্তি এবং আমেরিকান গৃহযুদ্ধে স্বেচ্ছাসেবক শুশ্রুষাকারীর কাজও করেন। কর্মজীবনের প্রথম ভাগে তিনি ফ্র্যাঙ্কলিন ইভান্স (১৮৪২) নামে একটি টেম্পারেন্স উপন্যাস রচনা করেন। ১৮৫৫ সালে তিনি নিজের অর্থে তার প্রধান গ্রন্থ লিভস অব গ্রাস প্রকাশ করেন। এই কাব্যের উদ্দেশ্য ছিল সাধারণ মানুষের পাঠযোগ্য একটি আমেরিকান মহাকাব্য রচনা। ১৮৯২ সালে মৃত্যুর পূর্বাবধি তিনি নানাভাবে এই কাব্যটিকে পরিবর্ধিত ও পরিমার্জিত করেছিলেন। জীবনের শেষ দিকে একবার হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর তিনি নিউ জার্সির ক্যামডেনে চলে যান। সেখানেই ৭২ বছর বয়সে তার জীবনাবসান হয়। তার অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়ায় বহু সাধারণ মানুষ অংশ নেন।[২][৩]
হুইটম্যানের কবিতার সঙ্গে সঙ্গে তার যৌনপ্রবৃত্তির বিষয়টিও বহুল আলোচিত। জীবনীকারদের মধ্যে তার যৌনতাবোধ নিয়ে তর্ক থাকলেও, তিনি সাধারণত সমকামী বা উভকামী হিসেবে বর্ণিত হন।[৪] যদিও কোনো পুরুষের সঙ্গে হুইটম্যানের যৌন অভিজ্ঞতা ছিল কিনা, তা নিয়েও তার জীবনীকারদের মধ্যে মতবিরোধ আছে।[৫] সারাজীবনই হুইটম্যান ছিলেন রাজনীতি সচেতন। তিনি উইলমট প্রোভিসোর সমর্থক ছিলেন এবং দাসত্বপ্রথার বিস্তারের বিরোধিতা করেন। তার কবিতায় জাতিগোষ্ঠীগুলি সম্পর্কে সমতাবাদী সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পাওয়া যায়। এক সময়ে তিনি দাসত্বপ্রথা বিলোপের ডাক দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে দাসত্ববিলোপবাদী আন্দোলনকে তিনি গণতন্ত্রের পক্ষে ক্ষতিকর মনে করতে শুরু করেন।[৬]
প্রারম্ভিক জীবন ও শিক্ষা
সম্পাদনা১৮১৯ সালের ৩১ মে, লং আইল্যান্ডের টাউন অব হান্টিংটনের ওয়েস্ট হিলসে ওয়াল্ট হুইটম্যান জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ও মাতার নাম ছিল ওয়াল্টার ও লুসিয়া ভন ভেলসর হুইটম্যান। তারা কোয়াকার চিন্তাধারার অনুগামী ছিলেন। হুইটম্যান ছিলেন তার পিতামাতার নয় সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয়।[৭] নামকরণের অব্যবহিত পরেই, পিতার নামের সঙ্গে তার নামের পার্থক্য নির্ণয়ের জন্য তার ডাকনাম "ওয়াল্ট" রাখা হয়।[৮] ওয়াল্টার হুইটম্যান সিনিয়র তার সাত পুত্রের মধ্যে তিন জনের নামকরণ করেন মার্কিন নেতা অ্যান্ড্রু জ্যাকসন, জর্জ ওয়াশিংটন ও টমাস জেফারসনের নামানুসারে। তার জ্যেষ্ঠ পুত্রের নাম ছিল জেস এবং তার এক পুত্র নামকরণের পূর্বেই মাত্র ছয় মাস বয়সে মৃত্যুবরণ করে। তার ষষ্ঠ তথা কনিষ্ঠ পুত্রের নাম ছিল এডওয়ার্ড।[৮] চার বছর বয়সে হুইটম্যান তার পরিবারের সঙ্গে ওয়েস্ট হিলস থেকে ব্রুকলিনে চলে আসেন। এখানে আর্থিক সমস্যার কারণে তাদের বারংবার বাসস্থান পরিবর্তন করতে হচ্ছিল।[৯] হুইটম্যান তার স্মৃতিচারণাতেও তাদের খারাপ আর্থিক অবস্থার দরুন এক অশান্ত ও বিষন্ন ছেলেবেলার উল্লেখ করেছেন।[১০] অবশ্য ছেলেবেলার একটি আনন্দঘন মুহুর্তের কথাও তিনি জানান। ১৮২৫ সালের ৪ জুলাইয়ে এক অনুষ্ঠানে ব্রুকলিনে একবার তাকে শূন্যে তুলে ধরা হয়েছিল এবং সেই সময় মার্কুইস ডে লাফায়েট তার গালে চুমু খান।[১১]
এগারো বছর বয়সে হুইটম্যান প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন।[১২] এরপর তিনি পরিবারের সাহায্যার্থে কাজকর্মের চেষ্টা করতে থাকেন। প্রথমে তিনি দুইজন আইনজীবীর অফিস বয় হিসেবে কাজ করেন। এরপর প্যাট্রিয়ট নামে স্যামুয়েল ই. ক্লিমেন্টস সম্পাদিত লং আইল্যান্ডের সাপ্তাহিক সংবাদপত্রে শিক্ষানবিশি ও ‘পেইন্টার’স ডেভিল’-এ কাজ করেন।[১৩] এখানেই হুইটম্যান প্রিন্টিং প্রেসের কাজ ও টাইপসেটিং শিক্ষা গ্রহণ করেন।[১৪] এই সাপ্তাহিকের কোনো কোনো সংখ্যার পৃষ্ঠা ভরানোর উদ্দেশ্যে ওই সময় তিনি "সেন্টিমেন্টাল বিটস" রচনা করেন বলে মনে করা হয়।[১৫] তিনি, ক্লিমেন্টস এবং তাদের আরও দুই বন্ধু কোয়েকার মন্ত্রী এলিয়াস হিকসের কবর খুঁড়ে তার মাথার প্লাস্টার ছাঁচ তৈরি করার চেষ্টা করতে গিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন।[১৬] সম্ভবত এই বিতর্কের জেরেই এর কিছুকাল পরেই ক্লিমেন্টস প্যাট্রিয়ট পত্রিকার কাজ ছেড়ে দেন।[১৭]
কর্মজীবন
সম্পাদনাপ্রারম্ভিক কর্মজীবন
সম্পাদনাপরের গ্রীষ্মে হুইটম্যান ব্রুকলিনে এরাস্টাস ওরদিংটন নামে অপর এক মুদ্রাকরের হয়ে কাজ শুরু করেন।[১৮] সেই বসন্তে তার পরিবার ওয়েস্ট হিলে ফিরে যায়। কিন্তু হুইটম্যান সেখানে থেকে যান এবং ওই সময়ে হুইগ পার্টির নেতৃস্থানীয় সাপ্তাহিক সংবাদপত্র লং-আইল্যান্ড স্টার-এর সম্পাদক অ্যালডেন স্পুনারের দোকানে একটি কাজ নেন।[১৮] এখানে কাজ করার সময়ই হুইটম্যান স্থানীয় গ্রন্থাগারের একজন নিয়মিত পৃষ্টপোষক হয়ে ওঠেন। এই সময় তিনি শহরের এক বিতর্ক সংগঠনের সদস্য হন এবং নাট্যাভিনয় দেখা শুরু করেন।[১৯] ওই সময়ে তিনি নিউ ইয়র্ক মিরর পত্রিকায় বেনামে তার প্রথম যুগের কয়েকটি কবিতাও ছাপান।[২০] ১৮৩৫ সালের মে মাসে ষোলো বছর বয়সে তিনি লং-আইল্যান্ড স্টার ও ব্রুকলিন পরিত্যাগ করেন[২১] এবং নিউ ইয়র্ক শহরে চলে আসেন। এখানে তিনি ছাপাখানার অক্ষরস্থাপনার কাজ শুরু করেন।[২২] অবশ্য জীবনের শেষ দিকে এসে তিনি ঠিক কোথায় এই কাজ করতেন, তা স্মরণ করতে পারেননি।[২৩] তখন তিনি অন্য কাজের সন্ধান করতে থাকেন। কিন্তু একটি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সেই অঞ্চলের মুদ্রণ ও প্রকাশন অঞ্চলটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তার অন্য কাজ পাওয়া কঠিন হয়ে যায়।[২৩] এর সঙ্গে যুক্ত হয় ১৮৩৭-এর আতঙ্কের ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক দুরবস্থা।[২৪] ১৮৩৬ সালের মে মাসে তিনি তার পরিবারের কাছে ফিরে আসেন। তার পরিবার সেই সময় লং আইল্যান্ডের হ্যাম্পস্টেডে বসবাস করছিলেন।[২৫] ১৮৩৮ সালের বসন্ত পর্যন্ত হুইটম্যান এখানে ওখানে স্কুল শিক্ষকতার কাজও করেন। তবে শিক্ষকতার কাজে তিনি বিশেষ তৃপ্তি পাননি।[২৬]
কয়েকবার শিক্ষকতার প্রচেষ্টার পর, হুইটম্যান ফিরে যান নিউ ইয়র্কের হান্টিংটনে। এখানে তিনি নিজের সংবাদপত্র লং আইল্যান্ডার প্রকাশ করেন। হুইটম্যান শুধুমাত্র এই সংবাদপত্রের প্রকাশক, সম্পাদক, মুদ্রক ও বিতরকই ছিলেন না, তিনি সেটি ঘরে ঘরে পৌঁছেও দিতেন। দশ মাস পর তিনি সংবাদপত্রটি এ. ও. ক্রোওয়েলের কাছে বিক্রি করে দেন। ক্রোওয়েল ১৮৩৯ সালের ১২ জুলাই তার নিজের সংবাদপত্রের প্রথম সংখ্যা প্রকাশ করেন।[২৭] হুইটম্যান প্রকাশিত লং-আইল্যান্ডার পত্রিকাটির কোনো কপি এখন আর পাওয়া যায় না।[২৮] ১৮৩৯ সালের গ্রীষ্মে কুইনসের জামাইকায় তিনি জেমস জে. ব্রেন্টন সম্পাদিত লং আইল্যান্ড ডেমোক্র্যাট পত্রিকায় ছাপাখানার অক্ষরস্থাপক হিসেবে কাজ পান।[২৭] কিছুদিন পরেই তিনি সেই কাজ ছেড়ে দেন এবং ১৮৪০ সালের শীতকাল থেকে ১৮৪১ সালের বসন্ত পর্যন্ত আরও একবার শিক্ষকতা করার চেষ্টা করেন।[২৯] ১৮৪০ সালের শীতকাল থেকে ১৮৪১ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত তিনি তিনটি সংবাদপত্রে "সান-ডাউন পেপারস—ফ্রম দ্য ডেস্ক অব অ্য স্কুলমাস্টার" নামে দশটি সম্পাদয়ীকের একটি সিরিজ প্রকাশ করেন। এই প্রবন্ধগুলিতে তিনি এমন এক চেতনার অভিব্যক্তি ও শৈলী ব্যবহার করেন যা তার সারাজীবনের সাহিত্যকর্মের পরিচায়ক হয়ে ওঠে।[৩০] মে মাসে হুইটম্যান নিউ ইয়র্কে চলে আসেন। প্রথমে তিনি পার্ক বেঞ্জামিন, সিনিয়র ও রুফুস উইলমট গ্রিসওল্ডের অধীনে নিউ ওয়ার্ল্ড পত্রিকায় একটি ছোটোখাটো কাজ পান।[৩১] এরপর তিনি বিভিন্ন সংবাদপত্রে স্বল্প সময়ের জন্য কাজ করেন। ১৮৪২ সালে তিনি অরোরা এবং ১৮৪৬ সাল থেকে ১৮৪৮ সাল পর্যন্ত ব্রুকলিন ইগল পত্রিকায় সম্পাদনা করেন।[৩২] সমগ্র ১৮৪০-এর দশক জুড়ে তিনি অনেকগুলি ফ্রিল্যান্স কবিতা ও কথাসাহিত্য বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ করেন।[৩৩] ১৮৪৮ সালে তিনি ডেমোক্রেটিক পার্টির রক্ষণশীল বা "হাঙ্কনার্স" শাখার বিরুদ্ধে দলের দাসত্বপ্রথা-বিরোধী "বার্নবার্নার" শাখার পক্ষাবলম্বন করেন। ব্রুকলিন ইগল পত্রিকার মালিক আইজ্যাক ভ্যান অ্যান্ডেন হাঙ্কার শাখার অনুগামী ছিলেন। এর ফলে তিনি ওই পত্রিকায় কাজ হারান।[৩৪] ১৮৪৮ সালে হুইটম্যান ফ্রি সয়েল পার্টির প্রতিষ্ঠা সম্মেলনের একজন ডেলিগেট হন।
১৮৫২ সালে তিনি নিউইয়র্কের দ্য সানডে ডিসপ্যাচ পত্রিকায় ছয় খণ্ডে লাইফ অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চারস অব জ্যাক এঙ্গেল শিরোনামের একটি উপন্যাস লেখেন।[৩৫] ১৮৫৮ সালে হুইটম্যান মোস ভেলসর ছদ্মনামেম্যানলি হেলথ অ্যান্ড ট্রেনিং নামক ৪৭,০০০ শব্দের একটি শব্দ সিরিজ প্রকাশ করেন।[৩৬][৩৭] এখানে তিনি তার মায়ের পারিবারিক নাম ভ্যান ভেলসর থেকে ভেলসর ছদ্মনামটি ব্যবহার করেন।[৩৮] এই শব্দ সিরিজে দাড়ি, নগ্ন সূর্যস্নান, আরামদায়ক জুতা, প্রতিদিন ঠান্ডা জলে গোসল, প্রায় একচেটিয়াভাবে মাংস খাওয়া, প্রচুর তাজা বাতাস এবং প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরামর্শের উল্লেখ রয়েছে৷
লিভস অব গ্রাস
সম্পাদনাহুইটম্যান দাবি করেছিলেন যে, বছরের পর বছর "স্বাভাবিক পুরস্কার" এর জন্য প্রতিযোগিতা করার পরে, তিনি কবি হওয়ার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হন।[৩৯] তিনি সর্বপ্রথম বিভিন্ন জনপ্রিয় সাহিত্যের ধারা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছিলেন যা সেই সময়ের সাংস্কৃতিক রুচির প্রতিফলন করে।[৪০] ১৮৫০ সালের প্রথম দিকে তিনি লিখতে শুরু করেছিলেন যেটি লিভস অব গ্রাস নামে সংকলন করা হয়।[৪১] পরবর্তীতে, এই কবিতার সংকলনটি তিনি তার মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত সম্পাদনা ও সংশোধন করেন।[৪২] হুইটম্যান একটি সুস্পষ্ট আমেরিকান মহাকাব্য লিখতে চেয়েছিলেন[৪৩] এবং বাইবেলের উপর ভিত্তি করে একটি মুক্ত শ্লোক ব্যবহার করেছিলেন।[৪৪] ১৮৮৫ সালের জুনের শেষের দিকে হুইটম্যান তার ভাইদেরকে অবাক করে দিয়ে লিভস অব গ্রাসের মুদ্রিত প্রথম সংস্করণ বের করেন। তখন তার ভাই জর্জ "এটা পড়ার অযোগ্য মনে করেন"।[৪৫]
লিভস অব গ্রাসের প্রথম সংস্করণ প্রকাশের জন্য হুইটম্যান নিজেই অর্থ প্রদান করেছিলেন[৪৫] এবং স্থানীয় একটি মুদ্রণ দোকানে এটি মুদ্রণ করেছিলেন।[৪৬] প্রথম সংস্করণে বইটির মোট ৭৯৫ কপি মুদ্রিত হয়েছিল।[৪৭] প্রথম সংস্করণে বইতিতে লেখকের কোন নাম ছিল না। নামের পরিবর্তে শিরোনাম পৃষ্ঠায় ছিল স্যামুয়েল হলিয়ারের খোদাই করা হুইটম্যানের একটি প্রতিকৃতি।[৪৮] তবে বইয়ের মূল পাঠ্যের ৫০০তম লাইনে তিনি নিজেকে "ওয়াল্ট হুইটম্যান, একজন আমেরিকান, একজন রুক্ষ, একজন কসমস, উচ্ছৃঙ্খল, মাংসল এবং কামুক, আবেগপ্রবণ নয়, বিনয়ী থেকে বেশি বিনয়ী নয়" হিসেবে অবিহিত করেছেন।[৪৯] প্রকাশের পর বইটির সবচেয়ে বেশি প্রশংসা করেছিলেন রালফ ওয়াল্ডো এমারসন, যিনি হুইটম্যানকে পাঁচ পৃষ্ঠার একটি আত্মতৃপ্তির চিঠি লিখেছিলেন এবং বন্ধুদের কাছে বইটি সম্পর্কে উচ্চ প্রশংসা করেছিলেন।[৫০] লিভস অব গ্রাসের প্রথম সংস্করণ ব্যাপকভাবে বিতরণ করা হয়েছিল এবং এমারসনের প্রশংসার কারণে উল্লেখযোগ্য সাড়া ফেলেছিল।[৫১][৫২] কিন্তু কবিতার আপাতদৃষ্টি "অশ্লীল" প্রকৃতির জন্য কখনো কখনো সমালোচিতও হয়েছিল।[৫৩] ভূতত্ত্ববিদ পিটার লেসলি এমারসনকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন যে, বইটি "আবর্জনাপূর্ণ, অপবিত্র এবং অশ্লীল" এবং এটির লেখক "একটি দাম্ভিক গাধা"।[৫৪] হুইটম্যান বইটির দ্বিতীয় সংস্করণের ব্লার্ব বা সংক্ষিপ্ত প্রচার বিজ্ঞাপনে সোনালী অক্ষরে এমারসনের চিঠি থেকে একটি উদ্ধৃতি করে বলেন "একটি দুর্দান্ত কর্মজীবনের শুরুতে আমি আপনাকে শুভেচ্ছা জানাই"। এটিকেই মুলত কার্যকরভাবে আধুনিক বইয়ের ব্লার্ব আবিষ্কার বলা হয়। নটরডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক লরা ডাসো ওয়ালস লিখেছেন: "এক আঘাতেই, হুইটম্যান আধুনিক কভার ব্লার্বের জন্ম দিয়েছিলেন, একেবারে এমারসনের অনুমতি ছাড়াই"।[৫৫]
১৮৫৫ সালের ১১ জুলাই লিভস অব গ্রাস প্রকাশিত হওয়ার কয়েকদিন পর হুইটম্যানের বাবা ৬৫ বছর বয়সে মারা যান[৫৬] লিভস অব গ্রাসের প্রথম সংস্করণের পরের মাসগুলিতে সম্ভাব্য আক্রমণাত্মক যৌন থিমের জন্য এটি প্রচণ্ড সমালোচনার মুখে পরে। এই পরিস্থিতিতে ইতিমধ্যেই বইটির দ্বিতীয় সংস্করণ মুদ্রণ সম্পূর্ণ হয়ে গেছিল। কিন্তু তারপরেও প্রকাশক এটি প্রকাশ করেনি।[৫৭] শেষ পর্যন্ত ১৮৫৬ সালে,[৫৮] ১৮৬০ সালে,[৫৯] এবং ১৮৬৭ সালে সংস্করণটি আরও ২০টি অতিরিক্ত কবিতাসহ খুচরা বাজারে যায়।[৬০] হুইটম্যানের জীবনের বাকি সময় জুড়ে বইটি আরও কয়েকবার সংশোধন এবং পুনরায় প্রকাশ করা হয়েছিল। আমোস ব্রনসন অ্যালকট এবং হেনরি ডেভিড থোরোসহ বেশ কয়েকজন সুপরিচিত লেখক হুইটম্যানের লিভস অব গ্রাসে বইয়ের প্রশংসা করেন এবং তাকে দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেন।[৬১]
লিভস অব গ্রাস প্রথম প্রকাশনার সময় হুইটম্যান আর্থিক সমস্যায় পড়েন। ফলে সে আবার সাংবাদিক হিসেবে কাজ করতে বাধ্য হয় এবং ব্রুকলিনের ডেইলি টাইমসে ১৮৫৭ সালের মে মাস থেকে একজন সম্পাদক হিসাবে কাজ শুরু করেন।[৬২] সম্পাদক হিসাবে তিনি সংবাদপত্রের বিষয়বস্তু তদারকি করতেন, বইয়ের পর্যালোচনায় অবদান রাখতেন এবং সম্পাদকীয় লিখতেন।[৬৩] তিনি ১৮৫৯ সালে চাকরি ছেড়ে চলে যান, যদিও এটি স্পষ্ট নয় যে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল নাকি সে নিজেই চাকরি ছেড়েছিলেন।[৬৪] হুইটম্যান সাধারণত তার সবকিছুর বিস্তারিত নোটবুক এবং জার্নাল রাখতেন, কিন্তু ১৮৫০ এর দশকের শেষের দিকে নিজের সম্পর্কে খুব কম তথ্য রেখে গেছেন।[৬৫]
গৃহযুদ্ধের বছর
সম্পাদনাআমেরিকান গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার সাথে সাথে হুইটম্যান তার কবিতা " বিট! বিট! ড্রামস! প্রকাশ করেন। কবিতাটিতে "দেশপ্রেমিক হিসাবে জাগরণের আহ্বান করা হয়েছিল''।[৬৬] হুইটম্যানের ভাই জর্জ ৫১তম নিউইয়র্ক পদাতিক রেজিমেন্ট ইউনিয়ন সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন এবং হুইটম্যানকে চিঠি মারফত সম্মুখ যুদ্ধের বেশ কয়েকটি ঘটনার বিস্তারিত জানিয়েছিলেন।[৬৭] ১৮৬২ সালের ১৬ ডিসেম্বর নিউ-ইয়র্ক ট্রিবিউনে নিহত এবং আহত সৈন্যদের একটি তালিকায় "ফার্স্ট লেফটেন্যান্ট জিডব্লিউ হুইটমোর"এর নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল, যা দেখে হুইটম্যান তার ভাই জর্জের জন্য উদ্বিগ্ন হয়ে পরেন।[৬৮] তিনি তাকে খুঁজে বের করার জন্য তৎক্ষণাৎ দক্ষিণে রওনা করেন, যদিও পথে তার মানিব্যাগ চুরি হয়ে যায়।[৬৯] সারা দিন এবং রাত হেঁটে বড় বড় মানুষদের কাছে ধরনা দিয়ে তিনি তার ভাইয়ের তথ্য জানার চেষ্টা করেন[৭০] এবং শেষ পর্যন্ত তিনি জর্জকে জীবিত দেখতে পান। জর্জ সামান্য আহত হয়েছিলেন এবং শুধুমাত্র তার গালে একটি ক্ষত ছিল।[৬৮] হুইটম্যান আহত সৈন্যদের এবং তাদের বিচ্ছিন্ন অঙ্গের স্তূপ দেখে গভীরভাবে প্রভাবিত হয়ে আর কখনও নিউইয়র্কে ফিরে না আসার অভিপ্রায় নিয়ে ১৮৬২ সালের ২৮ ডিসেম্বর ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্যে রওনা হন।[৬৯]
১৮৬৪ সালের দিকে হুইটম্যানের পরিবার খুব কঠিন সময় পার করছিলেন। ১৮৬৪ সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর হুইটম্যানের ভাই জর্জ ভার্জিনিয়াতে কনফেডারেটদের হাতে বন্দী হন,[৭১] এবং তার আরেক ভাই অ্যান্ড্রু জ্যাকসন ৩ ডিসেম্বর মদ্যপানের কারণে যক্ষ্মা রোগে মারা যান।[৭২][৭৩] অবশেষে, তিনি স্বরাষ্ট্র বিভাগের ব্যুরো অব ইন্ডিয়ান অ্যাফেয়ার্সে নিম্ন-গ্রেডের ক্লার্ক হিসাবে একটি ভাল বেতনের সরকারি চাকরী পেয়েছিলেন এবং এজন্য তিনি তার বন্ধু উইলিয়াম ডগলাস ও'কনরকে ধন্যবাদ জানান।[৭৪] ১৮৬৫ সালের ২৪ জানুয়ারী তিনি নতুন পদে চাকরী শুরু করেন যার বার্ষিক বেতন ছিল $১,২০০ ডলার।[৭৫] এক মাস পরে, ১৮৬৫ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারী জর্জকে বন্দী থেকে মুক্তি দেওয়া হয় এবং তার খারাপ স্বাস্থ্যের কারণে তাকে ছুটি দেওয়া হয়।[৭৪] ওই বছর মে মাসের ১ তারিখে হুইটম্যানকে উচ্চতর ক্লার্কশিপে পদোন্নতি দেয়া হয়।[৭৫] ওই বছরই তিনি ড্রাম-ট্যাপস প্রকাশ করেন।[৭৬]
১৮৬৫ সালের ৩০ জুন নতুন স্বরাষ্ট্র সচিব আইওয়ার সাবেক সিনেটর জেমস হারলান হুইটম্যানকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেন।[৭৫][৭৬] হারলান ওই সময়ে বেশ কিছু ক্লার্ককে "নিজস্ব ডেস্কে খুব কম সক্রিয়" থাকার কারণে বরখাস্ত করেছিলেন। তবে ধারণা করা হয়, তিনি হুইটম্যানকে হয়তো ১৮৬০ সালে লিভস অব গ্রাসের নতুন সংস্করণের জন্য বরখাস্ত করেন।[৭৭] হুইটম্যানের বন্ধু ও'কনর এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করেন এবং যতক্ষণ না জে. হুবলি অ্যাশটন ১ জুলাই অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসে হুইটম্যানকে বদলি করেন ও'কনর প্রতিবাদ চালিয়ে যান।[৭৮]
অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসে হুইটম্যানের কাজের একটি অংশ ছিল রাষ্ট্রপতির ক্ষমাপ্রাপ্ত প্রাক্তন কনফেডারেট সৈন্যদের সাক্ষাৎকার নেওয়া। এই বিষয়ে তিনি পরে লিখেছিলেন "তাদের মধ্যে সত্যিকারের চরিত্র আছে", "এবং আপনি জানেন যে আমি সাধারণ কিছুর জন্য অভিনব বোধ করি।"[৭৯] ১৮৬৬ সালের আগস্ট মাসে তিনি এক মাসের ছুটি নিয়ে লিভস অব গ্রাসের একটি নতুন সংস্করণ প্রকাশ করার চেষ্টা করেন যদিও প্রকাশক খুঁজে পেতে অসুবিধার জন্য এটি ১৮৬৭ সাল পর্যন্ত প্রকাশিত হয়নি।[৮০] তিনি আশা করেছিলেন যে এটিই হবে বইটির শেষ সংস্করণ।[৮১] যদিও পরবর্তীতে, হুইটম্যান অনিচ্ছা সত্ত্বেও ১৮৬৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে উইলিয়াম মাইকেল রোসেত্তির প্রভাবের কারণে ইংল্যান্ডে হুইটম্যানের কবিতা সামান্য পরিবর্তন করে প্রকাশিত হয়েছিল।[৮২][৮৩] এই সংস্করণটি ইংল্যান্ডে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, বিশেষ করে অত্যন্ত সম্মানিত লেখিকা অ্যান গিলক্রিস্টের সমর্থনে কারণে।[৮৪] লিভস অব গ্রাসের আরেকটি সংস্করণ ১৮৭১ সালে প্রকাশ করা হয়েছিল এবং একই বছর এটি ভুলভাবে রিপোর্ট করা হয়েছিল যে এর লেখক একটি রেল দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।[৮৫] হুইটম্যানের আন্তর্জাতিক খ্যাতি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনি ১৮৭২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসে ছিলেন।[৮৬] তিনি ১৮৭২ সালের বেশিরভাগ সময় তার মায়ের সেবা-যত্ন করে কাটিয়েছেন। তার মায়ের বয়স তখন প্রায় আশি বছর এবং তিনি আর্থ্রাইটিসের সাথে লড়াই করছিলেন।[৮৭] তিনি ১৮৭২ সালের ২৬ জুন ভাষণ দেওয়ার জন্য ডার্টমাউথ কলেজে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন।[৮৮]
সাহিত্যকর্ম
সম্পাদনাহুইটম্যানের সৃষ্টিকর্ম কাব্যিক গঠনরীতি থেকে আলাদা ধরণের অনেকটা সাধারণত গদ্যের মতো ছিল।[৮৯] তার লেখার শৈলী তার পূর্বসূরীদের নির্ধারিত রীতি থেকে বিচ্যুত ছিল এবং এতে "শরীর এবং আত্মার পাশাপাশি নিজের এবং অন্যের প্রতি বৈচিত্রপূর্ণ আচরণ" অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।[৯০] তার লেখায় পচা পাতা, খড়ের টুকরো এবং ধ্বংসাবশেষসহ অস্বাভাবিক চিত্র এবং প্রতীক ব্যবহার করা হয়েছে।[৯১] হুইটম্যান প্রকাশ্যে পতিতাবৃত্তিসহ মৃত্যু এবং যৌনতা সম্পর্কে লিখেছেন।[৮১] তাকে প্রায়শই মুক্ত শ্লোকের জনক বলা হয়, যদিও তিনি মুক্ত শ্লোক আবিষ্কার করেননি।[৮৯]
কাব্যিক তত্ত্ব
সম্পাদনা১৮৫৫ সালের লিভস অব গ্রাসের সংস্করণের মুখবন্ধে হুইটম্যান লিখেছিলেন: "একজন কবির প্রমাণ হল যে, তার দেশ তাকে যেমন স্নেহের সাথে আপন করে নেয়, তেমনি তিনিও আপন করে নেয়।" তিনি বিশ্বাস করতেন কবি ও সমাজের মধ্যে একটি অত্যাবশ্যকীয় গভীর সম্পর্ক রয়েছে।[৯২] তিনি সং অব মাইসেলফ " কবিতায় এই সম্পর্কের বিষয়ে উল্লেখ করেন এবং এখানে তিনি একটি শক্তিমান উত্তম ব্যক্তি বা ''আমি'' ব্যবহার করে।[৯৩] এখানে লেখক একজন উন্নত নায়কের ঐতিহাসিক ব্যবহার থেকে বিচ্যুত হয়ে সাধারণ মানুষের পরিচয় গ্রহণ করেন।[৯৪] লিভস অব গ্রাসেও জনসাধারণের উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সাম্প্রতিক নগরায়নের প্রভাব বর্ণনা করা হয়েছে।[৯৫]
জীবনধারা এবং বিশ্বাস
সম্পাদনামদ
সম্পাদনাহুইটম্যান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মদ বিরোধী টেম্পারেন্স আন্দোলনের একজন কণ্ঠপ্রবক্তা ছিলেন এবং যৌবনে তিনি খুব কমই অ্যালকোহল পান করতেন। তিনি একবার বলেছিলেন যে, তিনি ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত কোন "শক্তিশালী মদ" পাননি[৯৬] এবং মাঝে মাঝে মদ নিষেধাজ্ঞার জন্য যুক্তি দিয়েছিলেন।[৯৭] তাঁর প্রথম উপন্যাস, ফ্র্যাঙ্কলিন ইভান্স, বা দ্য ইনব্রিয়েট, ১৮৪২ সালের ২৩ নভেম্বর প্রকাশিত হয়।[৯৮] হুইটম্যান উপন্যাসটি লিখেছেন ওয়াশিংটনীয় আন্দোলনের জনপ্রিয়তার শীর্ষের সময়ে যদিও আন্দোলনটি নিয়ে ভিন্নমত ছিল।[৯৯] কয়েক বছর পর হুইটম্যান দাবি করেন যে, তিনি বইটি দেখে বিব্রত বোধ করেছেন[১০০] এবং বইটিকে "অভিশপ্ত পচা" বলে অভিহিত করেন।[১০১] অনেকে মনে করেন যে, তিনি মদ্যপানের প্রভাবে শুধুমাত্র অর্থের জন্য তিন দিনে উপন্যাসটি লিখেছিলেন, যদিও তিনি তা স্বীকার করেনি।[১০২] তা সত্ত্বেও, তিনি টেম্পারেন্স আন্দোলনের সুপারিশ করে অন্যান্য রচনাতেও লিখেছেন, যার মধ্যে রয়েছে দ্য ম্যাডম্যান এবং ছোট গল্প "রুবেন'স লাস্ট উইশ"।[১০৩] পরবর্তী জীবনে তিনি মদের প্রতি আরও উদার ছিলেন এবং স্থানীয় ওয়াইন ও শ্যাম্পেন উপভোগ করতেন।[১০৪]
ধর্ম বিশ্বাস
সম্পাদনাহুইটম্যান ঈশ্বরবাদ দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত ছিলেন। তিনি কোনও একটি বিশ্বাস অন্যটির চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এটা অস্বীকার করেছিলেন এবং সমস্ত ধর্মকে সমানভাবে গ্রহণ করেছিলেন।[১০৫] "সং অব মাইসেলফ"-এ তিনি প্রধান ধর্মগুলির একটি তালিকা দিয়েছেন এবং ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তিনি সকল ধর্মকে সম্মান করেন এবং গ্রহণ করেন। এই অনুভূতি তিনি তার উইথ এন্টিসিডেন্টস কবিতায় আরও জোর দিয়ে বলেছিলেন: "আমি প্রতিটি তত্ত্ব, মিথ, ঈশ্বর এবং ডেমি-গড, বাইবেল, বংশতালিকা, ব্যতিক্রম ছাড়াই সত্য বলে গ্রহণ করি।"[১০৫] ১৮৭৪ সালে তাকে আধ্যাত্মবাদ আন্দোলন সম্পর্কে একটি কবিতা লেখার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, যেখানে তিনি প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন: "এটি আমার কাছে প্রায় সম্পূর্ণভাবে একটি দরিদ্র, সস্তা, অশোধিত হাম্বুগ্ বলে মনে হয়।"[১০৬] হুইটম্যান একজন ধর্মীয় সংশয়বাদী ছিলেন: তিনি সমস্ত গীর্জাকে গ্রহণ করেছিলেন, যদিও তিনি কোনোটিতেই বিশ্বাস করেননি।[১০৫] হুইটম্যান মনে করতেন ঈশ্বর অস্থায়ী ও অতিক্রান্ত এবং মানুষের আত্মা অমর ও প্রগতিশীল বিকাশের অবস্থায় আছে।[১০৭] আমেরিকান দর্শন: একটি এনসাইক্লোপিডিয়া তাকে বেশ কয়েকজন ব্যক্তিত্বের একজন হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করে যারা "বিশ্ব থেকে পৃথক হিসেবে ঈশ্বরের দৃষ্টিভঙ্গি প্রত্যাখ্যান করে আরও বেশি সর্বেশ্বরবাদ গ্রহণ করেছিলেন।"[১০৮]
যৌনতা
সম্পাদনাহুইটম্যানকে সাধারণত তার অনুভূতি এবং আকর্ষণের জন্য সমকামী বা উভকামী হিসাবে বর্ণনা করা হয়, যদিও জীবনীকাররা হুইটম্যানের যৌনতা নিয়ে বিতর্ক চালিয়ে যাচ্ছেন। হুইটম্যানের যৌন অভিমুখীতা সাধারণত তার কবিতার ভিত্তিতে অনুমান করা হয়, যদিও এই অনুমান নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। তাঁর কবিতা প্রেম এবং যৌনতাকে ব্যক্তিত্ববাদী উপায়ে চিত্রিত করেছে যা ১৯ শতকের শেষের দিকে যৌনতার চিকিৎসার আগে আমেরিকান সংস্কৃতিতে প্রচলিত ছিল।[১০৯][১১০] যদিও লিভস অব গ্রাসেকে প্রায়শই অশ্লীল বা অশ্লীল লেবেল করা হত। তথাপি শুধুমাত্র একজন সমালোচক, রুফাস উইলমট গ্রিসওল্ড,১৮৫৫ সালের নভেম্বরের একটি পর্যালোচনায় হুইটম্যানের অনুমিত যৌন কার্যকলাপের উপর মন্তব্য করে বলেছিলেন: "তিনি খ্রিস্টানদের মধ্যে উল্লেখ করা উচিত নয় এমন ভয়ঙ্কর পাপের জন্য দোষী"।[১১১]
হুইটম্যানের সারাজীবনে অনেক পুরুষ ও ছেলের সাথে নিবিড় বন্ধুত্ব ছিল। কিছু জীবনীকার মনে করেন যে, তিনি আসলে পুরুষদের সাথে যৌন সম্পর্কে জড়িত ছিলেন না।[১১২] তবে কিছু জীবনীকার তার চিঠি, জার্নাল এন্ট্রি এবং অন্যান্য উত্স উদ্ধৃত করে বলেছেন যে পুরুষদের সাথে তার সম্পর্ক কিছুটা যৌন প্রকৃতির ছিল।[১১৩] ইংরেজ কবি ও সমালোচক জন অ্যাডিংটন সাইমন্ডস প্রায় ২০ বছর এটির উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেন।[১১৪] ১৮৯০ সালে তিনি হুইটম্যানকে লিখেছিলেন: "আপনার কমরেডশিপের ধারণার মধ্যে আপনি কি সেই আধা-যৌন আবেগ এবং ক্রিয়াগুলির সম্ভাব্য অনুপ্রবেশের কথা ভাবছেন যা কোন সন্দেহ নেই পুরুষদের মধ্যে ঘটে?" উত্তরে, হুইটম্যান অস্বীকার করেছিলেন যে, তার কাজে এই ধরনের কোনও অন্তর্নিহিততা নেই। তখন তিনি দাবি করেন যে, তিনি ছয়টি অবৈধ সন্তানের জনক। ওই সময়ের কিছু সমসাময়িক পণ্ডিত হুইটম্যানের অস্বীকারের সত্যতা বা তার দাবি করা শিশুদের অস্তিত্ব নিয়ে সন্দিহান ছিলেন।[১১৫][১১৬][১১৭][১১৮]
পিটার ডয়েল ছিলেন হুইটম্যানের জীবনের ভালোবাসা পাবার সবচেয়ে সম্ভাব্য ব্যক্তি।[১১৯][১২০][১২১] ডয়েল একজন বাস কন্ডাক্টর ছিলেন যার সাথে হুইটম্যান ১৮৬৬ সালের দিকে দেখা করেছিলেন এবং দুজন বেশ কয়েক বছর ধরে অবিচ্ছেদ্য ছিল। ১৮৯৫ সালে এক সাক্ষাত্কারে, ডয়েল বলেছিলেন: "আমরা একবারই পরিচিত হয়েছিলাম-আমি তার হাঁটুতে হাত রাখলাম-আমরা বুঝতে পেরেছিলাম। তিনি ট্রিপ শেষে বের হননি-আসলে তিনি আমার সাথেই ফিরে গিয়েছিলেন।"[১২০][১২২] অস্কার ওয়াইল্ড ১৮৮২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হুইটম্যানের সাথে দেখা করেন এবং সমকামী-অধিকার কর্মী জর্জ সিসিল আইভসকে বলেছিলেন যে, হুইটম্যানের যৌন অভিমুখিতা প্রশ্নাতীত ছিল-"আমার ঠোঁটে এখনও ওয়াল্ট হুইটম্যানের চুম্বন লেগে আছে।"[১২৩] হুইটম্যানের যৌন ক্রিয়াকলাপের একমাত্র সুস্পষ্ট বর্ণনা সেকেন্ডহ্যান্ড। ১৯২৪ সালে এডওয়ার্ড কার্পেন্টার গ্যাভিন আর্থারকে তার যৌবনে হুইটম্যানের সাথে যৌন মিলনের কথা বলেছিলেন, যার বিবরণ আর্থার তার জার্নালে লিপিবদ্ধ করেছিলেন।[১২৪][১২৫][১২৬] তার জীবনের শেষ দিকে যখন হুইটম্যানকে সরাসরি জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে তার "ক্যালামাস " কবিতাগুলি সমকামী কিনা? জন অ্যাডিংটন সাইমন্ডস "অ্যাথলেটিক ফ্রেন্ডশীপ", "দ্যা লাভ অব এ ম্যান ফর ম্যান " বা "দ্যা লাভ অব ফ্রেন্ডস" সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন[১২৭] কিন্তু হুইটম্যান এর কোন উত্তর দেননি।[১২৮][১২৯] হুইটম্যানের ২৯ বছর বয়সে লেখা তার প্রেমের কবিতা "অন্স আই পাসড থ্রু এ পপুলাস সিটি", নির্দেশ করে যে এটি মূলত একজন পুরুষকে নিয়ে লেখা ছিল।[১৩০]
হুইটম্যানের আরেকজন সম্ভাব্য প্রেমিক ছিলেন বিল ডকেট। কিশোর বয়সে তিনি ক্যামডেনের একই রাস্তায় থাকতেন এবং হুইটম্যানের কাছে চলে যান এবং তার সাথে কয়েক বছর বসবাস করেন। ডাকেট যখন ১৫ বছর বয়সের তখন হুইটম্যান ৩২৮ মিকল স্ট্রিটে তার বাড়ি কিনেছিলেন। আনুমানিক ১৮৮০ সাল থেকে ডাকেট এবং তার দাদি, লিডিয়া ওয়াটসন, ৩৩৪ মিকল স্ট্রিটে অন্য পরিবারের আছে বোর্ডার ছিলেন। এই নৈকট্যের কারণে ডাকেট এবং হুইটম্যান প্রতিবেশী হিসাবে দেখা করেছিলেন। তাদের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ ছিল। হুইটম্যান তাদের বন্ধুত্বকে "ঘনিষ্ট" বলে বর্ণনা করেছেন। যদিও কিছু জীবনীকার তাকে একজন বোর্ডার হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং অন্যরা তাকে একজন প্রেমিক হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।[১৩১] তাদের ছবি (বামে) "বিয়ের প্রতিকৃতির নিয়মানুসারে তৈরি" হিসেবে বর্ণনা করা হয়।[১৩২] এছাড়াও, হ্যারি স্টাফোর্ড নামের একজন যুবকের সাথে হুইটম্যানের নিবিড় সম্পর্ক ছিল, যার পরিবারের সাথে হুইটম্যান টিম্বার ক্রিকে থাকতেন এবং ১৮৭৬ সালে স্টাফোর্ডের বয়স যখন ১৮ বছর তখন তিনি প্রথম দেখা করেছিলেন। হুইটম্যান স্ট্যাফোর্ডকে একটি আংটি দিয়েছিলেন, যেটি পরবর্তীতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং পুনরায় দেওয়া হয়েছিল। সেই আংটি সম্পর্কে স্ট্যাফোর্ড হুইটম্যানকে লিখেছিলেন: "আপনি জানেন যখন আপনি এটি লাগিয়েছিলেন তখন আমার কাছ থেকে এটিকে আলাদা করার জন্য একটি রাস্তাই ছিল এবং সেটি ছিল মৃত্যু।"[১৩৩]
এমন কিছু প্রমাণও পাওয়া যায় যে, হুইটম্যান মহিলাদের সাথেও যৌন সম্পর্ক করেছিলেন। ১৮৬২ সালের বসন্তে নিউ ইয়র্কের একজন অভিনেত্রী এলেন গ্রে-এর সাথে তার রোমান্টিক বন্ধুত্ব ছিল, তবে এটি যৌনতা ছিল কিনা তা জানা যায়নি। হুইটম্যানের কাছে কয়েক দশক পরেও এলেনের একটি ছবি ছিল, যখন তিনি ক্যামডেনে চলে আসেন, এবং তিনি তাকে "আমার একজন পুরানো প্রিয়তমা" বলে ডাকতেন।[১৩৪] ১৮৯০ সালের ২১ শে আগস্ট একটি চিঠিতে তিনি দাবি করেছিলেন: "আমার ছয়টি সন্তান রয়েছে এবং দুটি মারা গেছে।" যদিও এই দাবিটি কখনোই প্রমাণিত হয়নি।[১৩৫] তার জীবনের শেষ দিকে তিনি প্রায়ই পূর্ববর্তী বান্ধবী এবং প্রণয়ীদের গল্প বলতেন। তার সম্পর্কে নিউ ইয়র্ক হেরাল্ডের প্রকাশিত একটি অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন যে তার "কোনও প্রেমের সম্পর্ক ছিল না"।[১৩৬] হুইটম্যানের জীবনীকার জেরোম লাভিং লিখেছেন, "যত কিছুই প্রমাণ পাওয়া যাবেনা কেনো হুইটম্যানের যৌন অভিমুখতার আলোচনা সম্ভবত অব্যাহত থাকবে।"[১১২]
সূর্যস্নান এবং সাঁতার কাটা
সম্পাদনাহুইটম্যান নগ্ন হয়ে স্নান ও সূর্যস্নান উপভোগ করতেন বলে জানা গেছে।[১৩৭] মোজ ভেলসর ছদ্মনাম ব্যবহার করে ম্যানলি হেলথ অ্যান্ড ট্রেনিং-এ তিনি পুরুষদের নগ্ন সাঁতার কাটার পরামর্শ দেন।[১৩৮] সূর্যস্নানের নগ্নতায় তিনি লিখেছেন:
এর আগে কখনো প্রকৃতির এত কাছাকাছি যাইনি; এর আগে সে আমার এত কাছে আসেনি... প্রকৃতি নগ্ন ছিল এবং আমিও ছিলাম... মিষ্টি, বিচক্ষণ, প্রকৃতিতে এখনও নগ্নতা! - আহ যদি শহরের দরিদ্র, অসুস্থতা, বিচক্ষণ মানবতা আপনাকে আরও একবার চিনতে পারে! নগ্নতা কি অশোভন নয়? না, সহজাত নয়? এটা আপনার চিন্তা, আপনার পরিশীলিত, আপনার ভয়, আপনার সম্মান, এটা অশালীন। এমনও হয় যখন আমাদের এই পোশাকগুলি পরতে খুব বিরক্তিকর লাগে, এগুলোই অশালীন।
শেক্সপিয়ারের লেখকত্ব
সম্পাদনাহুইটম্যান শেকসপিয়রের লেখকত্ব-সংক্রান্ত তর্কে অনুগামী ছিলেন। স্ট্রাটফোর্ড-অন-অ্যাভনে উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের কাজের ঐতিহাসিক বৈশিষ্ট্যে হুইটম্যান বিশ্বাস করতেন না। শেক্সপিয়ারের ঐতিহাসিক নাটক সম্পর্কে হুইটম্যান তার নভেম্বর বফস (১৮৮৮)-তে মন্তব্য করেছেন:
ইউরোপীয় সামন্তবাদের সম্পূর্ণ তাপ এবং নাড়ি থেকে ধারণা করা হয়েছে - মধ্যযুগীয় আভিজাত্যকে অতুলনীয় উপায়ে প্রকাশ করা, এর নির্মম এবং বিশাল জাতপাতের বিশাল চেতনা, তার নিজস্ব অদ্ভুত বাতাস এবং অহংকার (কোনও অনুকরণ নয়) - "নেকড়ের আর্লস" এর মধ্যে একটি মাত্র নাটকে নিজেরাই বা কেউ কেউ জন্মগত বংশধর এবং জ্ঞানী, এই আশ্চর্যজনক রচনাগুলির প্রকৃত লেখক বলে মনে হতে পারে - কিছু ক্ষেত্রে নথিভুক্ত সাহিত্যের অন্য যে কোনও কিছুর চেয়ে বড় কাজ। [১৩৯]
দাসত্ব
সম্পাদনাফ্রি সয়েল পার্টির অনেকে দাসত্বের হুমকির ব্যাপারে উদ্বিগ্ন ছিলেন এবং তারা মনে করতেন যে মুক্ত শ্বেতাঙ্গ শ্রমিকদের দাসত্ব বরন করতে হবে এবং উত্তরের ব্যবসায়ীরা নতুন উপনিবেশিত পশ্চিম অঞ্চল শোষণ করবে।[১৪০] হুইটম্যানও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দাসত্বের প্রসারের বিরোধিতা করেছিলেন এবং উইলমোট প্রভিসোকে সমর্থন করেছিলেন।[১৪১] প্রথমে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিলুপ্তিবাদীদের বিরোধী ছিলেন এবং তিনি বিশ্বাস করতেন যে, এই আন্দোলন ভালোর চেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে। ১৮৪৬ সালে তিনি লিখেছিলেন যে, বিলুপ্তিবাদীরা প্রকৃতপক্ষে তাদের "অতিবাদ এবং আধিপত্য" দ্বারা তাদের উদ্দেশ্যের অগ্রগতিকে মন্থর করেছিল।[১৪২] তার প্রধান উদ্বেগ ছিল যে তাদের কার্যক্রম গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করছিল।[১৪১] ১৮৫৬ সালে তার অপ্রকাশিত গ্রন্থ দ্য এইটিন্থ প্রেসিডেন্সিতে দক্ষিণের পুরুষদের সম্বোধন করে তিনি লেখেন "আপনি হয় দাসত্ব বিলোপ করেন, না হলে এটি আপনাকে বিলুপ্ত করবে"। এই ব্যাপারে জর্জ হাচিনসন এবং ডেভিড ড্রুস লিখেছেন যে "হুইটম্যানের জাতিগত সচেতনতার প্রাথমিক বিকাশ সম্পর্কে খুব কমই জানা যায়, তবে যেটুকু জানা যায় তা থেকে বোঝা যায় যে, তিনি তার সময় বিরাজমান শ্বেতাঙ্গ কুসংস্কারগুলিকে আত্মস্থ করেছিলেন-শ্বেতাঙ্গরা ক্রীতদাস শ্রেণী, অপারদর্শী, অজ্ঞ এবং চোর। "কিন্তু তার দৃষ্টিভঙ্গি অনেকাংশে অপরিবর্তিত থাকা সত্ত্বেও "কৃষ্ণাঙ্গসহ বিংশ শতাব্দীর পাঠকরা তাকে একজন উগ্র জাতিবিদ্বেষী মনে করতেন।"[১৪৩]
জাতীয়তাবাদ
সম্পাদনাহুইটম্যানকে প্রায়শই আমেরিকার জাতীয় কবি হিসাবে বর্ণনা করা হয়। "যদিও তাকে প্রায়শই গণতন্ত্র এবং সমতার একজন চ্যাম্পিয়ন হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। তবে হুইটম্যান নিজেকে মাথায় রেখে একটি শ্রেণিবিন্যাস তৈরি করেন, যেখানে তিনি আমেরিকার নিচে বাকি বিশ্বকে একটি অধস্তন অবস্থানে কল্পনা করেন।[১৪৪] স্টিফেন জন ম্যাক তার গবেষণায় "দ্য প্র্যাগম্যাটিক হুইটম্যান: আমেরিকান ডেমোক্রেসি রিইমাজিনিং"-এ সমালোচকদের পরামর্শ দিয়েছেন যে, যারা তার জাতীয়তাবাদ উপেক্ষা করার প্রবণতা পোষণ করেন, তাদের হুইটম্যানের জাতীয়তাবাদের দিকে আবার তাকানো উচিত। অন্যদিকে নাথানেল ও'রিলি "ওয়াল্ট হুইটম্যানস নেশনালিস্ম ইন দ্য লিভস অব গ্রাসস ফাস্ট এডিশন" নামক একটি প্রবন্ধে দাবি করেছেন যে "হুইটম্যানের কল্পিত আমেরিকা অহংকারী, সম্প্রসারণবাদী, শ্রেণিবদ্ধ, বর্ণবাদী এবং একচেটিয়া; এই ধরনের আমেরিকা নেটিভ আমেরিকান, আফ্রিকান, অভিবাসী, প্রতিবন্ধী, বন্ধ্যা এবং যারা সমান অধিকারকে মূল্য দেয় তাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য।"[১৪৪] হুইটম্যানের জাতীয়তাবাদে নেটিভ আমেরিকানদের চিকিত্সা সংক্রান্ত সমস্যাগুলি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। যেমন জর্জ হাচিনসন এবং ডেভিড ড্রুস "জাতিগত মনোভাব" প্রবন্ধে পরামর্শ দিয়েছেন: "স্পষ্টতই, হুইটম্যান তার সমতাবাদী আদর্শের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্নিহিত, এমনকি ভিত্তিগত, বর্ণবাদী চরিত্রকে ধারাবাহিকভাবে সমন্বয় করতে পারেনি। এমনকি তিনি তার নিজের মানসিকতায় এই ধরনের দ্বন্দ্বের সাথে মিলিত হতে পারেননি।[১৪৩]
মেক্সিকান-আমেরিকান যুদ্ধের বিষয়ে হুইটম্যান ১৮৬৪ সালে লিখেছিলেন যে, মেক্সিকোই "একমাত্র [দেশ] যার প্রতি আমরা সত্যিই ভুল করেছি।"[১৪৫] ১৮৮৩ সালে সান্তা ফে-র ৩৩৩তম বার্ষিকী উদযাপনে হুইটম্যান যুক্তি দিয়েছিলেন যে, আদিবাসী এবং স্প্যানিশ-ভারতীয় উপাদানগুলি "ভবিষ্যতের সমন্বিত আমেরিকান পরিচয়ে" নেতৃস্থানীয় বৈশিষ্ট্য সরবরাহ করবে।[১৪৬]
স্বাস্থ্যের অবনতি এবং মৃত্যু
সম্পাদনা১৮৭৩ সালের প্রথম দিকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পর হুইটম্যান ওয়াশিংটন থেকে নিউ জার্সির ক্যামডেনের ৪৩১ স্টিভেনস স্ট্রিটে তার ভাই প্রকৌশলী জর্জ ওয়াশিংটন হুইটম্যানের বাড়িতে চলে যেতে প্ররোচিত হন। তার অসুস্থ মা সেখানেই ছিলেন এবং ওই বছর মে মাসে তিনি মারা যান। উভয় ঘটনাই হুইটম্যানের জন্য কঠিন ছিল এবং তাকে হতাশ করে রেখেছিল। ১৮৮৪ সালে নিজের বাড়ি কেনার আগ পর্যন্ত তিনি তার ভাইয়ের বাড়িতেই ছিলেন।[১৪৭] তার বাড়ি কেনার আগে তিনি ক্যামডেনে স্টিভেনস স্ট্রিটে তার ভাইয়ের বাড়িতে তার বসবাসের সবচেয়ে বেশি সময় কাটিয়েছিলেন। সেখানে বসবাসের সময় তিনি অত্যন্ত উত্পাদনশীল ছিলেন। ওই সময়ে তিনি অন্যান্য কাজ ছাড়াও লিভস অব গ্রাসের তিনটি সংস্করণ প্রকাশ করেছিলেন। তার অন্য ভাই, এডওয়ার্ড, জন্ম থেকেই "অবৈধ", বাড়িতে থাকতেন।
তার ভাই এবং ভাবী যখন ব্যবসায়িক কারণে সেখান থেকে চলে যেতে বাধ্য হন, তখন তিনি ৩২৮ মিকল স্ট্রিটে (বর্তমানে ৩৩০ ড. মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র বুলেভার্ড) নিজের বাড়িটি কিনেছিলেন।[১৪৮] তিনি মিকল স্ট্রিটে তার বেশিরভাগ সময় সম্পূর্ণরূপে শয্যাশায়ী ছিলেন। প্রথমদিকে ভাড়াটিয়ারা তার দেখাশোনা করত। এই সময়ে তিনি মেরি ওকস ডেভিসের সাথে সামাজিকরন শুরু করেন যিনি ছিলেন একজন সমুদ্র অধিনায়কের বিধবা। মেরি ওকস তার প্রতিবেশী ছিলেন এবং মিকল স্ট্রিট থেকে মাত্র কয়েক ব্লকের দূরে ব্রিজ অ্যাভিনিউতে একটি পরিবারের সাথে বোর্ডিং করতেন।[১৪৯] তিনি ১৮৮৫ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি হুইটম্যানের সাথে বিনামূল্যে ভাড়ার বিনিময়ে তার গৃহকর্মী হিসাবে কাজ করার জন্য চলে আসেন। তিনি তার সাথে একটি বিড়াল, একটি কুকুর, দুটি কচ্ছপ, একটি ক্যানারি এবং অন্যান্য বিভিন্ন প্রাণী নিয়ে এসেছিলেন[১৫০] হুইটম্যান ১৮৭৬, ১৮৮১ এবং ১৮৮৯ সালে লিভস অব গ্রাসের আরও সংস্করণ তৈরি করেছিলেন।
১৮৯১ সালের শেষের দিকে তিনি লিভস অব গ্রাসের একটি চূড়ান্ত সংস্করণ প্রস্তুত করেন, যে সংস্করণটিকে "ডেথবেড সংস্করণ" নামে ডাকা হয়।[১৫১] মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সময়, হুইটম্যান ৪,০০০ ডলার খরচ করে বাড়ির মতো আকৃতির একটি গ্রানাইট সমাধি তৈরি করেছিলেন[১৫২] এবং নির্মাণের সময় তিনি প্রায়ই এটি পরিদর্শন করতেন।[১৫৩] জীবনের শেষ সপ্তাহে তিনি এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন যে তিনি একটি ছুরি বা কাঁটা চামচ পর্যন্ত তুলতে পারতেন না। জীবনের শেষ সময় সম্পর্কে তিনি লিখেছিলেন: "আমি সব সময় কষ্ট পাই: আমার কোন স্বস্তি নেই, পালাতেও পারছি না: এটি একঘেয়েমি-একঘেয়েমি-বেদনার।"[১৫৪]
ওয়াল্ট হুইটম্যান ১৮৯২ সালের ২৬ মার্চ[১৫৫] নিউ জার্সির ক্যামডেনে তার নিজের বাড়িতে ৭২ বছর বয়সে মারা যান।[১৫৬] একটি ময়নাতদন্তে প্রকাশ পায় যে, ব্রঙ্কিয়াল নিউমোনিয়ার ফলে তার ফুসফুসের স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসের ক্ষমতা এক-অষ্টমাংশে হ্রাস পেয়েছিল[১৫২] এবং তার বুকে ডিম্বাকৃতির একটি ফোড়া হয়েছিল যেটি তার একটি পাঁজর ক্ষয় করে ফেলেছে। আনুষ্ঠানিকভাবে তার মৃত্যুর কারণ হিসেবে "বাম দিকের প্লুরিসি, ডান ফুসফুসের ক্ষয়, সাধারণ মিলিয়ারি যক্ষ্মা এবং প্যারেনকাইমাটাস নেফ্রাইটিস" তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল।[১৫৭] জনসাধারণের দর্শনের জন্য তার মৃতদেহ ক্যামডেন তার নিজ বাড়িতে রাখা হয়েছিল। তিন ঘণ্টায় এক হাজারের বেশি মানুষ তার মৃতদেহ পরিদর্শন করেছেন।[১৫৮] হুইটম্যানের কফিনটি দর্শনার্থীদের রেখে যাওয়া ফুল এবং পুষ্পস্তবকে প্রায় ঢাকা পরেছিল।[১৫৭] মৃত্যুর চার দিন পর তাকে ক্যামডেনের হারলেগ কবরস্থানের সমাধিতে সমাহিত করা হয়।[১৫৮] কবরস্থানে তার বন্ধুরা বক্তৃতা, লাইভ মিউজিক এবং রিফ্রেশমেন্ট দিয়ে আরেকটি পাবলিক অনুষ্ঠান করেছিলেন।[১৫৯] হুইটম্যানের বন্ধু, বক্তা রবার্ট ইনগারসোল তার প্রশংসা করেন।[১৬০] পরবর্তীতে, হুইটম্যানের বাবা-মা, তার দুই ভাই এবং তাদের পরিবারের দেহাবশেষ এই সমাধিতে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল।[১৬১]
উত্তরাধিকার এবং প্রভাব
সম্পাদনাওয়াল্ট হুইটম্যানকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম "গণতন্ত্রের কবি" হিসেবে দাবি করা হয় যেটি এককভাবে আমেরিকান চরিত্রে তার লেখার ক্ষমতাকে প্রতিফলিত করে। হুইটম্যানের একজন আমেরিকান-ব্রিটিশ বন্ধু মেরি হুইটাল স্মিথ কস্টেলো লিখেছেন: "ওয়াল্ট হুইটম্যান ছাড়া, লিভস অব গ্রাস ছাড়া আপনি আমেরিকাকে সত্যিই বুঝতে পারবেন না। . . তিনি সেই সভ্যতা প্রকাশ করেছেন, 'আপ টু ডেট', যেমন তিনি বলেছেন এবং ইতিহাস দর্শনের কোনো ছাত্র তাকে ছাড়া ইতিহাস পাঠ শেষ করতে পারবে না।"[১৬২] অ্যান্ড্রু কার্নেগি তাকে "এখন পর্যন্ত আমেরিকার মহান কবি" বলে অভিহিত করেছেন।[১৬৩] হুইটম্যান নিজেকে কবিতায় একজন মশীহ-সদৃশ ব্যক্তিত্ব মনে করতেন।[১৬৪] অনেকে মনে করেন তার একজন ভক্ত উইলিয়াম স্লোয়ান কেনেডি অনুমান করেছিলেন যে "লোকেরা ওয়াল্ট হুইটম্যানের জন্ম উদযাপন করবে কারণ তারা এখন খ্রিস্টের সৃষ্টি"।[১৬৫]
সাহিত্য সমালোচক হ্যারল্ড ব্লুম লিভস অব গ্রাসের ১৫০তম বার্ষিকীর ভূমিকা লিখেছেন:
আপনি যদি আমেরিকান হন, তাহলে ওয়াল্ট হুইটম্যান আপনার কল্পনাপ্রসূত পিতা ও মাতা, এমনকি যদি আমার মতো আপনিও কখনো পদ্যের একটি লাইন রচনা না করেন। আপনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ধর্মনিরপেক্ষ গ্রন্থের নাম হিসবে ন্যায্য সংখ্যক সাহিত্যকর্মকে মনোনীত করতে পারেন। এর মধ্যে মেলভিলের মবি-ডিক, টোয়েনের অ্যাডভেঞ্চারস অব হাকলবেরি এবং এমারসনের দুই খন্দের রচনা এবং দ্য কন্ডাক্ট অব লাইফ অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। এগুলোর কোনোটিই, এমনকি এমারসনের রচনাও, লীভস অব গ্রাসের প্রথম সংস্করণের মতো কেন্দ্রীয় নয়।[১৬৬]
তার নিজের সময়ে, হুইটম্যান তার শিষ্য এবং প্রশংসকদের একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠীকে আকৃষ্ট করেছিলেন। তার অন্যান্য প্রশংসকদের মধ্যে ঈগল স্ট্রিট কলেজ দলও অন্তর্ভুক্ত ছিল। দলটি হুইটম্যানের কবিতা পাঠ ও আলোচনা করার জন্য ১৮৮৫ সালে বোল্টনের ঈগল স্ট্রিটে জেমস উইলিয়াম ওয়ালেসের বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। দলটি পরবর্তীকালে বোল্টন হুইটম্যান ফেলোশিপ বা হুইটম্যানাইটস নামে পরিচিতি লাভ করে। এর সদস্যরা কবির জন্মদিনকে ঘিরে একটি বার্ষিক "হুইটম্যান ডে" উদযাপন করে।[১৬৭]
আমেরিকান কবিরা
সম্পাদনাহুইটম্যান আমেরিকার সবচেয়ে প্রভাবশালী কবিদের একজন। আধুনিকতাবাদী কবি এজরা পাউন্ড হুইটম্যানকে "আমেরিকার কবি" বলেছেন. . তিনি আমেরিকা।"[১৬৮] কবি ল্যাংস্টন হিউজস লিখেছেন " আমিও, আমেরিকার গান করি", হুইটম্যান ছিলেন একজন সাহিত্যিক নায়ক।[১৬৯] হুইটম্যানের ভবঘুরে জীবনধারা ১৯৫০ এবং ১৯৬০-এর দশকে বিট আন্দোলন এবং এর নেতারা যেমন অ্যালেন গিন্সবার্গ এবং জ্যাক কেরোয়াক সেইসাথে অ্যাড্রিয়েন রিচ, অ্যালিসিয়া অস্ট্রিকার এবং গ্যারি স্নাইডারের মতো যুদ্ধবিরোধী কবিরা গ্রহণ করেছিলেন।[১৭০] লরেন্স ফেরলিংহেট্টি নিজেকে হুইটম্যানের "বন্য শিশুদের" মধ্যে গণ্য করেছেন। ফেরলিংহেট্টির ১৯৬১ সালের সংকলন স্টার্টিং ফ্রম সান ফ্রান্সিসকোর শিরোনামটি হুইটম্যানের স্টার্টিং ফ্রম পাউমানক- এর একটি ইচ্ছাকৃত উল্লেখ হিসেবে ধরা হয়।[১৭১] জুন জর্ডান "ফর দ্য সেক অব পিপলস পোয়েট্রি: ওয়াল্ট হুইটম্যান অ্যান্ড দ্য রেস্ট অব আস" শিরোনামে একটি মূল প্রবন্ধ প্রকাশ করেছেন, যেখানে তিনি হুইটম্যানকে একজন গণতান্ত্রিক কবি হিসাবে প্রশংসা করেছেন, যার কাজগুলি সমস্ত পটভূমি থেকে মানুষের কথা বলে।[১৭২] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নোবেল বিজয়ী কবি জয় হারজো, যিনি আমেরিকান কবিদের একাডেমির একজন চ্যান্সেলর, নিজেকে হুইটম্যানের দ্বারা প্রভাবিত হিসেবে গণ্য করেন।[১৭৩]
ল্যাটিন আমেরিকান কবিরা
সম্পাদনাহুইটম্যানের কবিতা ১৯ এবং[১৭৪] ২০ শতকে কিউবার কবি[১৭৫] এবং জাতীয়তাবাদী নেতা জোসে মার্টি, যিনি ১৮৮৭ সালে হুইটম্যানের লেখা স্প্যানিশ ভাষায়[১৭৬] প্রকাশ করেছিলেন, থেকে শুরু করে ল্যাটিন আমেরিকান এবং ক্যারিবিয়ান অনেক কবিদের প্রভাবিত করেছিল। আলভারো আরমান্দো ভ্যাসিউরের ১৯১২ সালের অনুবাদগুলি লাতিন আমেরিকায় হুইটম্যানের প্রোফাইলকে আরও উত্থাপন করেছিল।[১৭৭] পেরুর ভ্যানগার্ডিস্ট সিজার ভ্যালেজো, চিলির কবি পাবলো নেরুদা এবং আর্জেন্টিনার হোর্হে লুইস বোর্হেস ওয়াল্ট হুইটম্যানের প্রভাব স্বীকার করেছেন।[১৭৭]
ইউরোপীয় লেখক
সম্পাদনাঅস্কার ওয়াইল্ড এবং এডওয়ার্ড কার্পেন্টার সহ অনেকই হুইটম্যানকে ইউটোপিয়ান ভবিষ্যতের এবং সমকামী আকাঙ্ক্ষার একজন নবী মনে করতেন। এই মনোভাব ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সমাজতন্ত্রের ভবিষ্যতের জন্য তাদের নিজস্ব আকাঙ্ক্ষার সাথেও সম্পৃক্ত ছিল।[১৭৮] হুইটম্যান ড্রাকুলার লেখক ব্রাম স্টোকারকেও প্রভাবিত করেছিলেন এবং তিনি ড্রাকুলার চরিত্রের একজন মডেল ছিলেন। স্টোকার তার নোটে বলেছিলেন যে, ড্রাকুলা সেই শ্রেষ্ঠ পুরুষের প্রতিনিধিত্ব করে, যেটি স্টোকারের কাছে হুইটম্যানই ছিল, যার সাথে তিনি হুইটম্যানের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত চিঠিপত্র আদান প্রদান করেছিলেন।[১৭৯]
চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশন
সম্পাদনাহুইটম্যানের জীবন এবং শ্লোক সম্পর্কে বিভিন্ন চলচ্চিত্রে এবং অনেক ভিডিওতে অনেক বার উল্লেখ করা হয়েছে। বিউটিফুল ড্রিমার্স (হেমডেল ফিল্মস, ১৯৯২) চলচ্চিত্রে রিপ টর্ন হুইটম্যান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। হুইটম্যান লন্ডন, অন্টারিওতে একটি উন্মাদ আশ্রয় কেন্দ্রে সফর করেন, যেখানে একটি পেশাগত থেরাপি প্রোগ্রামের অংশ হিদেবে তার কিছু ধারণা গৃহীত হয়।[১৮০]
পিটার ওয়েয়ারের ডেড পোয়েটস সোসাইটি (১৯৮৯) নাটকে শিক্ষক জন কিটিং তার ছাত্রদের হুইটম্যান, শেক্সপিয়ার এবং জন কিটসের কাজ দিয়ে অনুপ্রাণিত করেন।[১৮০][১৮১]
হুইটম্যানের কবিতা "Yonnondio" টিলি ওলসনের বই (Yonnondio: ফ্রম দ্য থারটিস, ১৯৭৪) এবং আলী মোহাম্মদ সেলিমের একটি ষোল মিনিটের চলচ্চিত্র, Yonnondio (১৯৯৪) উভয়কেই প্রভাবিত করেছে।[১৮০]
হুইটম্যানের "আই সিং দ্য বডি ইলেকট্রিক" (১৮৫৫) কবিতাটি রে ব্র্যাডবেরি একটি ছোট গল্প এবং একটি ছোট গল্পের সংকলনের শিরোনাম হিসাবে ব্যবহার করেছিলেন। ব্র্যাডবারির গল্পটি ১৯৬২ সালের ১৮ মে টোয়াইলাইট জোন পর্বের জন্য গৃহীত হয়েছিল, যেখানে একটি শোকাহত পরিবার চিরকালের জন্য ওই পরিবারকে ভালবাসা এবং সেবা করার জন্য একটি তৈরি করা রোবট দাদীকে কিনে নেয়।[১৮২]
সঙ্গীত এবং অডিও রেকর্ডিং
সম্পাদনা৫০০ জনেরও বেশি সুরকার হুইটম্যানের কবিতা দিয়ে গান রচনা এবং সুর করেছেন; প্রকৃতপক্ষে মনে করা হয় যে, এমিলি ডিকিনসন এবং হেনরি ওয়েডসওয়ার্থ লংফেলো ছাড়া অন্য যেকোনো আমেরিকান কবির চেয়ে হুইটম্যানের কবিতায় বেশি সঙ্গীত করা হয়েছে।[১৮৩][১৮৪] যাঁরা তাঁর কবিতায় সঙ্গীত রচনা করেছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন জন অ্যাডামস; আর্নস্ট বেকন; লিওনার্ড বার্নস্টাইন; বেঞ্জামিন ব্রিটেন; রোডা কোগিল; ডেভিড কন্টে; রোনাল্ড কর্পোরেশন; জর্জ ক্রাম্ব; ফ্রেডরিক ডেলিয়াস; হাওয়ার্ড হ্যানসন; কার্ল অ্যামাডিউস হার্টম্যান; হ্যান্স ওয়ার্নার হেনজে; বার্নার্ড হারম্যান;[১৮৫] জেনিফার হিগডন;[১৮৬] পল হিন্দমিথ;[১৮৭] নেড রোরেম;[১৮৮] হাওয়ার্ড স্কেম্পটন; ইভা রুথ স্প্যাল্ডিং; উইলিয়ামেটা স্পেন্সার; চার্লস ভিলিয়ার্স স্ট্যানফোর্ড; রবার্ট স্ট্রাসবার্গ;[১৮৯] ইভানা মারবার্গার থেমেন;[১৯০] রোসিনি ভ্রোনাইডস;[১৯১] রালফ ভন উইলিয়ামস;[১৯২] কার্ট ওয়েল;[১৯৩] হেলেন এল. ওয়েইস;[১৯৪] চার্লস উড এবং রজার সেশনস।[১৯৫]
নামের স্বীকৃতি
সম্পাদনা১৯৫৭ সালের ১৬ মে ক্যামডেনে হুইটম্যানের বাড়ির কাছে ডেলাওয়্যার নদীতে তার নামে ওয়াল্ট হুইটম্যান ব্রিজ নির্মাণ এবং উদ্বোধন করা হয়।[১৯৬] ১৯৯৭ সালে ডালাসে ওয়াল্ট হুইটম্যান কমিউনিটি স্কুল চালু হয়, যেটি এলজিবিটি যুবকদের জন্য প্রথম বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে পরিণত হয়।[১৯৭] তার নামের স্বীকৃতির অন্যান্য নামের মধ্যে রয়েছে ওয়াল্ট হুইটম্যান হাই স্কুল (বেথেসডা, মেরিল্যান্ড), ওয়াল্ট হুইটম্যান হাই স্কুল (হান্টিংটন স্টেশন, নিউ ইয়র্ক), হান্টিংটন স্টেশন, লং আইল্যান্ড, নিউ ইয়র্কের ওয়াল্ট হুইটম্যান শপস (পূর্বে "ওয়াল্ট হুইটম্যান মল" নামে পরিচিত) যেটি তার জন্মস্থানের পাশে অবস্থিত।[১৯৮] ওয়াল্ট হুইটম্যান রোড হান্টিংটন স্টেশন এবং মেলভিল, নিউ ইয়র্কে অবস্থিত।
হুইটম্যানকে ২০০৯ সালে নিউ জার্সি হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়[১৯৯] এবং ২০১৩ সালে তাকে লিগ্যাসি ওয়াকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[২০০]
জো ডেভিডসনের তৈরি হুইটম্যানের একটি মূর্তি ওয়াল্ট হুইটম্যান ব্রিজের প্রবেশপথে এবং আরেকটি মূর্তি বিয়ার মাউন্টেন স্টেট পার্কে অবস্থিত। নিউ হ্যাম্প্শায়ারের পিয়ারমন্টে ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি গ্রীষ্ম শিবিরের নামকরণ হুইটম্যানের নামে করা হয়েছে।[২০১][২০২]
বুধের একটি গর্তের নামকরণও তার নামানুসারে করা হয়েছে।[২০৩] নিউ জার্সির চেরি হিলের টার্নপাইকের একটি পরিষেবা এলাকা তার নামে নামকরণ করা হয়েছে।
সৃষ্টিকর্ম
সম্পাদনা- ফ্র্যাঙ্কলিন ইভান্স; বা দ্য ইনব্রিয়েট: এ টেল অব দ্য টাইমস (১৮৪২)
- হাফ ব্রিড; এ টেল অব দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার (১৮৪৬)
- লাইফ এন্ড অ্যাডভেঞ্চারস অব জ্যাক এঙ্গেলে (১৮৫২ সালে সংকলিত)[৩৫]
- লিভস অব গ্রাস (১৮৫৫ সাল থেকে ১৮৯১ সাল পর্যন্ত সাতটি সংস্করণ)
- ম্যানলি হেলথ অ্যান্ড ট্রেনিং (১৮৫৮)[২০৪]
- ড্রাম-ট্যাপস (১৮৬৫)
- ডেমোক্র্যাটিক ভিস্তাস (১৮৭১)
- মেমোরান্দুম ডিউরিং দ্য ওয়ার (১৮৭৬)
- স্পেসিমেন ডে (১৮৮২)
- দ্য ওয়াউন্ড ড্রেসার: গৃহযুদ্ধের সময় ওয়াশিংটনের হাসপাতালগুলি থেকে তার মাকে লেখা চিঠিসমুহ, রিচার্ড এম. বুকে (১৮৯৮) কর্তৃক সম্পাদিত।
- ওয়াল্ট হুইটম্যান স্পিকস: হিজ ফাইন থটস অন লাইফ, রাইটিং, স্পিরিচুয়ালিটি, অ্যান্ড দ্য প্রমিজ অব আমেরিকা অ্যাস টু হেড টু হোরাস ট্রবেল, ব্রেন্ডা ওয়াইনঅ্যাপল কর্তৃক সম্পাদিত (২০১৯)।[২০৫]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Reynolds, 314
- ↑ Loving, 480
- ↑ Reynolds, 589
- ↑ Buckham, Luke. "Walt Whitman's Vision of Liberty[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]", Keene Free Press. October 11, 2006.
- ↑ Loving, 19
- ↑ "The Walt WHitman Encyclopedia"।
- ↑ Miller, 17
- ↑ ক খ Loving, 29
- ↑ Loving, 30
- ↑ Reynolds, 24
- ↑ Reynolds, 33–34
- ↑ Loving, 32
- ↑ Reynolds, 44
- ↑ Kaplan, 74
- ↑ Callow, 30
- ↑ Callow, 29
- ↑ Loving, 34
- ↑ ক খ Reynolds, 45
- ↑ Callow, 32
- ↑ Kaplan, 79
- ↑ Kaplan, 77
- ↑ Callow, 35
- ↑ ক খ Kaplan, 81
- ↑ Loving, 36
- ↑ Callow, 36
- ↑ Loving, 37
- ↑ ক খ Reynolds, 60
- ↑ Loving, 38
- ↑ Kaplan, 93–94
- ↑ Stacy, 25
- ↑ Callow, 56
- ↑ Stacy, 6
- ↑ Reynolds, 83–84
- ↑ Stacy, 87–91
- ↑ ক খ Schuessler, Jennifer (ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৭)। "In a Walt Whitman Novel, Lost for 165 Years, Clues to Leaves of Grass"। The New York Times।
- ↑ Schuessler, Jennifer (এপ্রিল ২৯, ২০১৬)। "Found: Walt Whitman's Guide to 'Manly Health'"। The New York Times। সংগ্রহের তারিখ মে ১, ২০১৬।
Now, Whitman's self-help-guide-meets-democratic-manifesto is being published online in its entirety by a scholarly journal, in what some experts are calling the biggest new Whitman discovery in decades.
- ↑ "Special Double Issue: Walt Whitman's Newly Discovered 'Manly Health and Training'" (3)। Winter–Spring ২০১৬। আইএসএসএন 0737-0679। সংগ্রহের তারিখ মে ১, ২০১৬।
- ↑ Whitman, Walt (১৮৮২)। "Genealogy – Van Velsor and Whitman"। Bartleby.com (excerpt from Specimen Days)। সংগ্রহের তারিখ মে ২, ২০১৬।
THE LATER years of the last century found the Van Velsor family, my mother's side, living on their own farm at Cold Spring, Long Island, New York State, ...
- ↑ Kaplan, 185.
- ↑ Reynolds, 85.
- ↑ Loving, 154.
- ↑ Miller, 55.
- ↑ Miller, 155.
- ↑ Kaplan, 187.
- ↑ ক খ Callow, 226.
- ↑ Loving, 178.
- ↑ Kaplan, 198.
- ↑ Callow, 227.
- ↑ "Review of Leaves of Grass (1855)"। The Walt Whitman Archive।
- ↑ Kaplan, 203.
- ↑ Reynolds, 340.
- ↑ Callow, 232.
- ↑ Loving, 414.
- ↑ Kaplan, 211.
- ↑ Walls, Laura Dassow Henry David Thoreau: A Life, 394. Chicago and London: The University of Chicago Press, 2017. আইএসবিএন ৯৭৮-০-২২৬-৫৯৯৩৭-৩
- ↑ Kaplan, 229.
- ↑ Reynolds, 348.
- ↑ Kaplan, 207.
- ↑ Loving, 238.
- ↑ Callow, 238.
- ↑ Reynolds, 363.
- ↑ Callow, 225.
- ↑ Reynolds, 368.
- ↑ Loving, 228.
- ↑ Reynolds, 375.
- ↑ Callow, 283.
- ↑ Reynolds, 410.
- ↑ ক খ Kaplan, 268.
- ↑ ক খ Reynolds, 411.
- ↑ Callow, 286.
- ↑ Loving, 281.
- ↑ Kaplan, 293–294.
- ↑ Reynolds, 454.
- ↑ ক খ Loving, 283.
- ↑ ক খ গ Reynolds, 455.
- ↑ ক খ Loving, 290.
- ↑ Loving, 291.
- ↑ Kaplan, 304.
- ↑ Loving, 293.
- ↑ Kaplan, 318–319.
- ↑ ক খ Loving, 314.
- ↑ Callow, 326.
- ↑ Kaplan, 324.
- ↑ Callow, 329.
- ↑ Loving, 331.
- ↑ Reynolds, 464.
- ↑ Kaplan, 340.
- ↑ Loving, 341.
- ↑ ক খ Reynolds, 314.
- ↑ Kirmizi, Busra, and Martin Kopacik, "The Affinity between the Body, The Self and Nature in Whitman's 'Song of Myself'", in Academic research of SSaH 2016, p. 101. আইএসবিএন ৯৭৮-৮০-৯০৬২৩১-৮-৭.
- ↑ Kaplan, 233.
- ↑ Reynolds, 5.
- ↑ Reynolds, 324.
- ↑ Miller, 78.
- ↑ Reynolds, 332.
- ↑ Loving, 71.
- ↑ Callow, 75.
- ↑ Loving, 74.
- ↑ Reynolds, 95.
- ↑ Reynolds, 91.
- ↑ Loving, 75.
- ↑ Reynolds, 97.
- ↑ Loving, 72.
- ↑ Binns, Henry Bryan (১৯০৫)। A life of Walt Whitman। Methuen & Co.। পৃষ্ঠা 315। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১০, ২০২০।
- ↑ ক খ গ Reynolds, 237.
- ↑ Loving, 353.
- ↑ Kuebrich, David (জুলাই ৭, ২০০৯)। "Religion and the poet-prophet"। A Companion to Walt Whitman। John Wiley and Sons। পৃষ্ঠা 211–। আইএসবিএন 978-1-4051-9551-5। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ১৩, ২০১০।
- ↑ American Philosophy: An Encyclopedia। ২০০৭। পৃষ্ঠা 310। আইএসবিএন 978-0415939263।
- ↑ D'Emilio, John and Estelle B. Freeman, Intimate Matters: A History of Sexuality in America. University of Chicago Press, 1997. আইএসবিএন ০-২২৬-১৪২৬৪-৭
- ↑ Fone, Byrne R. S. (১৯৯২)। Masculine Landscapes: Walt Whitman and the Homoerotic Text। Southern Illinois University Press।
- ↑ Loving, 184–185.
- ↑ ক খ Loving, 19.
- ↑ "Walt Whitman, Prophet of Gay Liberation"। rictornorton.co.uk। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-০৯।
- ↑ Robinson, Michael. Worshipping Walt. Princeton, NJ: Princeton University Press, 2010: 142–143. আইএসবিএন ০৬৯১১৪৬৩১৪
- ↑ Higgins, Andrew C. (১৯৯৮)। "Symonds, John Addington [1840–1893]"। Walt Whitman: An Encyclopedia। Garland Publishing। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১০, ২০২০।
- ↑ Miller, James E. Jr. (১৯৯৮)। "Sex and Sexuality"। Walt Whitman: An Encyclopedia। Garland Publishing। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১০, ২০২০।
- ↑ Tayson, Richard (২০০৫)। "The Casualties of Walt Whitman"। অক্টোবর ১৩, ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১১, ২০২০।
- ↑ Rothenberg Gritz, Jennie (সেপ্টেম্বর ৭, ২০১২)। "But Were They Gay? The Mystery of Same-Sex Love in the 19th Century"। The Atlantic। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১১, ২০২০।
- ↑ Kaplan, Justin (২০০৩)। Walt Whitman: A Life। Harper Perennial Modern Classics। পৃষ্ঠা 287।
- ↑ ক খ Shively, Charley (১৯৮৭)। Calamus Lovers: Walt Whitman's Working Class Camerados। Gay Sunshine Press। পৃষ্ঠা 25। আইএসবিএন 978-0-917342-18-9।
- ↑ Reynolds, 487.
- ↑ Kaplan, 311–312.
- ↑ Stokes, John, Oscar Wilde: Myths, Miracles and Imitations, Cambridge University Press, 1996, p. 194, n.7.
- ↑ "Gay Sunshine"। www.leylandpublications.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-০৯।
- ↑ Kantrowitz, Arnie (১৯৯৮)। "Carpenter, Edward [1844–1929]"। Walt Whitman: An Encyclopedia। Garland Publishing। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১০, ২০২০।
- ↑ Arthur, Gavin The Circle of Sex, University Books, New York 1966.
- ↑ "John Addington Symonds to Walt Whitman, 7 February 1872 (Correspondence) - The Walt Whitman Archive"। whitmanarchive.org। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ২৪, ২০২১।
- ↑ Reynolds, 527.
- ↑ Reynolds, David S. (১৯৯৬)। Walt Whitman's America: A Cultural Biography (ইংরেজি ভাষায়)। Vintage Books। পৃষ্ঠা 198, 396, 577। আইএসবিএন 978-0-679-76709-1।
- ↑ Norton, Rictor (নভেম্বর ১৯৭৪)। "The Homophobic Imagination: An Editorial": 274।
- ↑ Adams, Henry (২০০৫)। Eakins Revealed: The Secret Life of an American Artist। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 289। আইএসবিএন 9780190288877।
- ↑ Bohan, Ruth L. (এপ্রিল ২৬, ২০০৬)। Looking into Walt Whitman: American Art, 1850–1920 (1st সংস্করণ)। Penn State University Press। পৃষ্ঠা 136।
- ↑ Folsom, Ed (এপ্রিল ১, ১৯৮৬)। "An Unknown Photograph of Whitman and Harry Stafford": 51–52। ডিওআই:10.13008/2153-3695.1125 । ৮ আগস্ট ২০১০ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১০, ২০২০।
- ↑ Callow, 278.
- ↑ Loving, 123.
- ↑ Reynolds, 490.
- ↑ Folsom, Ed (১৯৯৬)। "Whitman's Calamus Photographs"। Breaking Bounds: Whitman and American Cultural Studies। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 213। আইএসবিএন 978-0-19-976228-6।
- ↑ Velsor, Mose (২০১৬)। "Manly Health and Training, With Off-Hand Hints Toward Their Conditions" (PDF): 184–310। আইএসএসএন 0737-0679। ডিওআই:10.13008/0737-0679.2206 ।
- ↑ Nelson, Paul A. "Walt Whitman on Shakespeare" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০০৭-০৩-২৪ তারিখে. Reprinted from The Shakespeare Oxford Society Newsletter, Fall 1992: Volume 28, 4A.
- ↑ Klammer, Martin (১৯৯৮)। "Free Soil Party"। Walt Whitman: An Encyclopedia। Garland Publishing। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১০, ২০২০।
- ↑ ক খ Reynolds, 117.
- ↑ Loving, 110.
- ↑ ক খ Hutchinson, George; Drews, David (১৯৯৮)। "Racial Attitudes"। Walt Whitman: An Encyclopedia। Garland Publishing। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১০, ২০২০।
- ↑ ক খ O'Reilly, Nathanael (২০০৯)। "Imagined America: Walt Whitman's Nationalism in the First Edition of Leaves of Grass": 1–9। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১১, ২০২০।
- ↑ Kummings, Donald D.; LeMaster, J. R. (১৯৯৮)। Walt Whitman: An Encyclopedia। Garland। পৃষ্ঠা 427।
- ↑ Levin, Joanna (২০১৮)। Walt Whitman in Context। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 314।
- ↑ Miller, 33.
- ↑ Haas, Irvin. Historic Homes of American Authors. Washington, D.C.: The Preservation Press, 1991: 141. আইএসবিএন ০-৮৯১৩৩-১৮০-৮.
- ↑ Loving, 432.
- ↑ Reynolds, 548.
- ↑ Reynolds, 586.
- ↑ ক খ Loving, 479.
- ↑ Kaplan, 49.
- ↑ Reynolds, 587.
- ↑ Callow, 363.
- ↑ Griffiths, Rhys (March 2017), "Death of Walt Whitman", History Today, volume 67, issue 3.
- ↑ ক খ Reynolds, 588.
- ↑ ক খ Loving, 480.
- ↑ Reynolds, 589.
- ↑ Theroux, Phyllis (১৯৭৭)। The Book of Eulogies। Simon & Schuster। পৃষ্ঠা 30।
- ↑ Kaplan, 50.
- ↑ Reynolds, 4.
- ↑ Kaplan, 22.
- ↑ Callow, 83.
- ↑ Loving, 475.
- ↑ Bloom, Harold. Introduction to Leaves of Grass. Penguin Classics, 2005.
- ↑ উদ্ধৃতি খালি (সাহায্য).
- ↑ Pound, Ezra. "Walt Whitman", Whitman, Roy Harvey Pearce, ed. Englewood Cliffs, NJ: Prentice-Hall, Inc., 1962: 8.
- ↑ Ward, David C. (সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৬)। "What Langston Hughes' Powerful Poem "I, Too" Tells Us About America's Past and Present"। Smithsonian (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ৩১, ২০১৯।
- ↑ Loving, 181.
- ↑ Foley, Jack (২০০৮)। "A Second Coming"। Contemporary Poetry Review। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১০।
- ↑ Foundation, Poetry (নভেম্বর ৭, ২০২০)। "For the Sake of People's Poetry by June Jordan"। Poetry Foundation (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ৭, ২০২০।
- ↑ Poets, Academy of American (এপ্রিল ১, ২০১৯)। "An Interview with Joy Harjo, U.S. Poet Laureate"। poets.org। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ৭, ২০২০।
- ↑ Meyer, Mary Edgar (১৯৫২)। "Walt Whitman's Popularity among Latin-American Poets": 3–15। আইএসএসএন 0003-1615। জেস্টোর 977855। ডিওআই:10.2307/977855।
- ↑ উদ্ধৃতি খালি (সাহায্য)
- ↑ Molloy, S. (জানুয়ারি ১, ১৯৯৬)। "His America, Our America: Jose Marti Reads Whitman": 369–379। আইএসএসএন 0026-7929। ডিওআই:10.1215/00267929-57-2-369।
- ↑ ক খ Cohen, Matt; Price, Rachel। "Walt Whitman in Latin America and Spain: Walt Whitman Archive Translations"। whitmanarchive.org। The Walt Whitman Archive। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ৭, ২০২০।
Only with Vasseur's subsequent 1912 translation did Whitman become available and important to generations of Latin American poets, from the residual modernistas to the region's major twentieth-century figures.
- ↑ Robinson, Michael. Worshipping Walt. Princeton, NJ: Princeton University Press, 2010: 143–145. আইএসবিএন ০৬৯১১৪৬৩১৪
- ↑ Nuzum, Eric. The Dead Travel Fast: Stalking Vampires from Nosferatu to Count Chocula. Thomas Dunne Books, 2007: 141–147. আইএসবিএন ০-৩১২-৩৭১১১-X
- ↑ ক খ গ Britton, Wesley A. (১৯৯৮)। "Media Interpretations of Whitman's Life and Works"। Walt Whitman: An Encyclopedia। Garland Publishing। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১০, ২০২০।
- ↑ Wilmington, Michael (জুন ২, ১৯৮৯)। "MOVIE REVIEW : 'Poets Society': A Moving Elegy From Peter Weir"। Los Angeles Times। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১০, ২০২০।
- ↑ Jewell, Andrew; Price, Kenneth M. (জুলাই ৭, ২০০৯)। "Twentieth Century Mass Media Appearances"। A Companion to Walt Whitman। John Wiley and Sons। পৃষ্ঠা 211–। আইএসবিএন 978-1-4051-9551-5। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ১৩, ২০১০।
- ↑ American Composers Orchestra – May 15, 1999 – Walt Whitman & Music
- ↑ Sommerfeld, Paul (May 8, 2019), "Celebrating Walt Whitman’s 200th Birthday", In the Muse Performing Arts Blog, Library of Congress.
- ↑ Music to accompany Whitman, a radio play by Norman Corwin
- ↑ Dooryard Bloom
- ↑ When Lilacs Last in the Dooryard Bloom'd (Hindemith)
- ↑ Five Poems of Walt Whitman
- ↑ Folsom, Ed (২০০৪)। "In Memoriam: Robert Strassburg, 1915–2003" (3): 189–191। ডিওআই:10.13008/2153-3695.1733 । ৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ Cohen, Aaron I. (১৯৮৭)। International encyclopedia of women composers (Second edition, revised and enlarged সংস্করণ)। আইএসবিএন 0-9617485-2-4। ওসিএলসি 16714846।
- ↑ Neilson, Kenneth P. (১৯৬৩)। The World of Walt Whitman Music: A Bibliographical Study (ইংরেজি ভাষায়)। Kenneth P. Neilson।
- ↑ A Sea Symphony
- ↑ "Four Walt Whitman Songs For voice and piano. Texts by Walt Whitman," Kurt Weill Foundation for Music.
- ↑ "Frank Weise collection of Helen Weiss papers, circa 1940-1948, 1966"। dla.library.upenn.edu। আগস্ট ১৭, ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুন ৯, ২০২১।
- ↑ Sessions, Roger/When Lilacs Last in the Dooryard Bloom'd, DRAM.
- ↑ "Walt Whitman Bridge"। Delaware River Port Authority of Pennsylvania and New Jersey। ২০১৩। নভেম্বর ১২, ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ২, ২০১৭।
- ↑ Company, Johnson Publishing (১৯৯৭-০৯-২২)। Jet (ইংরেজি ভাষায়)। Johnson Publishing Company।
- ↑ Reserved, Simon Property Group, L. P. and/or Its Affiliates (NYSE: SPG), © Copyright 1999-2022 All Rights। "Walt Whitman Shops®"। www.simon.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-০৯।
- ↑ New Jersey to Bon Jovi: You Give Us a Good Name Yahoo News, February 2, 2009.
- ↑ "Boystown unveils new Legacy Walk LGBT history plaques"। Chicago Phoenix। মার্চ ১৩, ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ Camp Walt Whitman ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত এপ্রিল ২৮, ২০১৭ তারিখে July 1, 2016.
- ↑ Domius, Susan (আগস্ট ১৪, ২০০৮)। "A Place and an Era in Which Time Could Stand Still"। The New York Times। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ২০, ২০১৮।
- ↑ "Mercury"। We Name the Stars। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১১, ২০২০।
- ↑ "Walt Whitman’s Newly Discovered 'Manly Health and Training'", Walt Whitman Quarterly Review, Volume 33, Issue 3/4, 2016.
- ↑ Wineapple, Brenda, "'I Have Let Whitman Alone’: Horace Traubel's monumental chronicle of Whitman’s reflections, ruminations, analyses, and affirmations", The New York Review of Books, April 18, 2019.
উৎস
সম্পাদনা- Callow, Philip. From Noon to Starry Night: A Life of Walt Whitman. Chicago: Ivan R. Dee, 1992. আইএসবিএন ০-৯২৯৫৮৭-৯৫-২
- Kaplan, Justin. Walt Whitman: A Life. New York: Simon and Schuster, 1979. আইএসবিএন ০-৬৭১-২২৫৪২-১
- Loving, Jerome. Walt Whitman: The Song of Himself. University of California Press, 1999. আইএসবিএন ০-৫২০-২২৬৮৭-৯
- Miller, James E., Jr. Walt Whitman. New York: Twayne Publishers, Inc. 1962
- Reynolds, David S. Walt Whitman's America: A Cultural Biography. New York: Vintage Books, 1995. আইএসবিএন ০-৬৭৯-৭৬৭০৯-৬
- Stacy, Jason. Walt Whitman's Multitudes: Labor Reform and Persona in Whitman's Journalism and the First Leaves of Grass, 1840-1855. New York: Peter Lang Publishing, 2008. আইএসবিএন ৯৭৮-১-৪৩৩১-০৩৮৩-৪
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ওয়াল্ট হুইটম্যান: কংগ্রেস লাইব্রেরিতে অনলাইন তথ্য উপাত্ত
- ওয়াল্ট হুইটম্যান আর্কাইভ "লিভস অব গ্রাস" এর সমস্ত সংস্করণ, সেইসাথে পাণ্ডুলিপি, সমালোচনা এবং জীবনী অন্তর্ভুক্ত
- ক্যামডেন কাউন্টি, নিউ জার্সি হিস্টোরিক্যাল সোসাইটি কর্তৃক ওয়াল্ট হুইটম্যান পেজ
- গ্রন্থাগারে ওয়াল্ট হুইটম্যান সম্পর্কিত বা কর্তৃক কাজ (ওয়ার্ল্ডক্যাট ক্যাটালগ) (ইংরেজি)
- 'ক্ষত ড্রেসার' থেকে নেওয়া ওয়াল্ট হুইটম্যানের গৃহযুদ্ধের চিঠি
- ওয়াল্ট হুইটম্যানের কবিতা হুইটম্যানের কবিতার একটি বিস্তৃত সংগ্রহ
সাইট
- ওয়াল্ট হুইটম্যানের জন্মস্থানের ঐতিহাসিক সাইট ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে
- ওয়াল্ট হুইটম্যানের বাড়ির ঐতিহাসিক সাইট