এরিক লামেলা

আর্জেন্টিনীয় ফুটবলার

এরিক মানুয়েল লামেলা (স্পেনীয়: Erik Lamela; জন্ম: ৪ মার্চ ১৯৯২; এরিক লামেলা নামে সুপরিচিত) হলেন একজন আর্জেন্টিনীয় পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড়। তিনি বর্তমানে স্পেনের পেশাদার ফুটবল লিগের শীর্ষ স্তর লা লিগার ক্লাব সেভিয়া এবং আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের হয়ে আক্রমণভাগের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেন।[২][৩] তিনি মূলত ডান পার্শ্বীয় আক্রমণভাগের খেলোয়াড় হিসেবে খেললেও মাঝেমধ্যে বাম পার্শ্বীয় আক্রমণভাগের খেলোয়াড় অথবা আক্রমণাত্মক মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেন। তার ডাকনাম কোকো[৪]

এরিক লামেলা
২০১৩ সালে টটেনহাম হটস্পারে লামেলা
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম এরিক মানুয়েল লামেলা
জন্ম (1992-03-04) ৪ মার্চ ১৯৯২ (বয়স ৩২)
জন্ম স্থান বুয়েনোস আইরেস, আর্জেন্টিনা
উচ্চতা ১.৮৩ মিটার (৬ ফুট ০ ইঞ্চি)[১]
মাঠে অবস্থান ফরোয়ার্ড
ক্লাবের তথ্য
বর্তমান দল
সেভিয়া
জার্সি নম্বর ১৭
যুব পর্যায়
রিভার প্লেট
জ্যেষ্ঠ পর্যায়*
বছর দল ম্যাচ (গোল)
২০০৯–২০১১ রিভার প্লেট ৩৬ (৪)
২০১১–২০১৩ রোমা ৬২ (১৯)
২০১৩– টটেনহাম হটস্পার (০)
জাতীয় দল
২০১১–২০১২ আর্জেন্টিনা অনূর্ধ্ব ২০ (৩)
২০১১– আর্জেন্টিনা (০)
* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে এবং ২১ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখ অনুযায়ী সকল তথ্য সঠিক।
‡ জাতীয় দলের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা ১৮ নভেম্বর ২০১৩ তারিখ অনুযায়ী সঠিক।

ক্লাব ক্যারিয়ার সম্পাদনা

রিভার প্লেট সম্পাদনা

২০০৯ সালের ১৪ জুন, রিভার প্লেটের হয়ে লামেলার অভিষেক হয়। টাইগ্রের বিপক্ষে খেলার ৮০তম মিনিটে বদলি হিসেবে মাঠে নামেন তিনি। ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর, রিভার প্লেটের হয়ে প্রথম গোল করেন লামেলা। খেলাটি ছিল আপের্তুরা প্রতিযোগিতায় কোলোনের বিপক্ষে। আপের্তুরা প্রতিযোগিতার শেষ খেলায় লানুসের বিপক্ষে রিভার প্লেটের হয়ে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন তিনি। খেলায় ৪–১ গোলের ব্যবধানে জিতে রিভার।

২০১০–১১ মৌসুমে আর্জেন্টিনীয় প্রিমেরা দিভিশনে লামেলা দলের একজন নিয়মিত খেলোয়াড়ে পরিণত হন। তিনি ৩৪টি খেলায় মাঠে নামেন এবং ৪টি গোল করেন।[৫] লিগে রিভার ষষ্ঠ স্থানে থেকে মৌসুম শেষ করে এবং ২০১১ কোপা সাউদামেরিকানাতে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। কিন্তু আর্জেন্টিনীয় প্রিমেরা দিভিশনের অবনমন রীতিতে একটি দলের শেষ তিন মৌসুম হিসাব করা হয়, যার ফলে রিভার প্লেটের বেলগ্রানোর বিপক্ষে প্লে অফ খেলার প্রয়োজন দেখা দেয়। রিভার সে খেলায় পরাজিত হয়, ফলে তাদের দ্বিতীয় বিভাগে অবনমন ঘটে।

রোমা সম্পাদনা

২০১১–১২ মৌসুম সম্পাদনা

২০১১ সালের ৬ আগস্ট, ১২ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে (সাথে €২ মিলিয়ন বোনাস) সিরি এ-এর ক্লাব রোমায় যোগ দেন লামেলা। [৬] ২০১১ সালের ২৩ অক্টোবর, পালেরমোর বিপক্ষে সিরি এ-তে প্রথম গোল করেন লামেলা।[৭] এরপর তিনি গোল করেন লেসে,[৮] নোভারা[৯] এবং সেসেনার[১০] বিপক্ষে। রোমায় নিজের প্রথম মৌসুমে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় ৩১টি খেলায় ৬টি গোল করেন লামেলা।

২০১২–১৩ মৌসুম সম্পাদনা

২০১২–১৩ মৌসুম ভালভাবেই শুরু করেন লামেলা। ১৬ সেপ্টেম্বর, বোলোগনার বিপক্ষে প্রথম গোল করেন তিনি। অক্টোবর এবং নভেম্বরের প্রথম ভাগে দূর্দান্ত নৈপূন্য প্রদর্শন করেন লামেলা। এসময় তিনি ৬ খেলায় ৭ গোল করেন, এর মধ্যে উদিনেসের বিপক্ষে করেন জোড়া গোল, খেলায় রোমা ৩–২ গোলের ব্যবধানে জয় লাভ করে। অন্য গোলগুলো ছিল আটলান্টা, গিনোয়া, প্রামা, পালেরমো এবং লাজিওর বিপক্ষে। এরপর ইনজুরিতে আক্রান্ত হওয়ায় তিনি প্রায় এক মাস মাঠের বাহিরে ছিলেন। ইনজুরি থেকে ফিরেই মিলানের বিপক্ষে জোড়া গোল করেন লামেলা। খেলায় রোমা ৪–২ গোলে জয় লাভ করে।[১১] মৌসুমে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় তিনি ৩৫ খেলায় ১৫ গোল করেন এবং ৬টি গোলে সহায়তা করেন।[১২] রোমার ২০১২–১৩ মৌসুম খুব বাজেভাবে কাটে। কোপা ইতালিয়ার ফাইনালে তারা চির প্রতিদ্বন্দি লাজিওর বিপক্ষে পরাজিত হয়। এছাড়া তারা সিরি এ-তে ষষ্ঠ হয়।[১৩]

টটেনহাম হটস্পার সম্পাদনা

২০১৩–১৪ মৌসুম সম্পাদনা

২০১৩ সালের ৩০ আগস্ট, প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব টটেনহাম হটস্পার লামেলার স্থানান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে।[১৪] তার স্থানান্তর ফি ছিল £২৫.৮ মিলিয়ন, সাথে £৪.২ মিলিয়ন বোনাস।[১৫] লামেলা টটেনহামের কিংবদন্তি অসভাল্দো ‘অজি’ আর্দিলেস এবং রিকার্দো ‘রিকি’ ভিয়ার পদাঙ্ক অনুসরণ করেন।[১৬]

১ সেপ্টেম্বর, এমিরেট্‌স স্টেডিয়ামে আর্সেনালের বিপক্ষে লামেলার অভিষেক হয়। খেলার ৭৫তম মিনিটে উইঙ্গার অ্যান্ড্রোস টাউনসেন্ডের বদলি হিসেবে মাঠে নামেন তিনি।[১৭]

আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার সম্পাদনা

২০১১ ফিফা অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা অনূর্ধ্ব-২০ দলের হয়ে অংশগ্রহণ করেন লামেলা। আর্জেন্টিনা জাতীয় দলে তার অভিষেক হয় ২০১১ সালের ২৫ মে, প্যারাগুয়ের বিপক্ষে একটি প্রীতি খেলায়।

ক্যারিয়ার পরিসংখ্যান সম্পাদনা

ক্লাব সম্পাদনা

২৪ নভেম্বর ২০১৩ অনুসারে।[১৮]

ক্লাব মৌসুম লিগ কাপ মহাদেশীয় মোট
উপস্থিতি গোল সহায়তা উপস্থিতি গোল সহায়তা উপস্থিতি গোল সহায়তা উপস্থিতি গোল সহায়তা
রিভার প্লেট ২০০৮–০৯
২০০৯–১০
২০১০–১১ ৩৪ ৩৪
মোট ৩৬ ৩৬
রোমা ২০১১–১২ ২৯ ৩১
২০১২–১৩ ৩৩ ১৫ ৩৫ ১৫
মোট ৬২ ১৯ ১১ ৬৬ ২১ ১২
টটেনহাম হটস্পার ২০১৩–১৪ ১১
মোট ১২
ক্যারিয়ারে সর্বমোট ১০৩ ২৩ ১৫ ১১৪ ২৬ ১৯

আন্তর্জাতিক সম্পাদনা

জাতীয় দল সাল উপস্থিতি গোল
আর্জেন্টিনা ২০১১
২০১২
২০১৩
মোট

সম্মাননা সম্পাদনা

ক্লাব সম্পাদনা

রোমা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. ন্যাশনাল-ফুটবল-টিমস.কমে এরিক লামেলা (ইংরেজি)
  2. "Primer equipo – Sevilla FC" [প্রথম দল – সেভিয়া ফুটবল ক্লাব]। sevillafc.es (স্পেনীয় ভাষায়)। সেভিয়া। ২৩ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ অক্টোবর ২০২৩ 
  3. "Official Sevilla FC staff in 2023/24 – LALIGA" [২০২৩/২৪-এ সেভিয়া ফুটবল ক্লাবের কর্মকর্তা – লা লিগা]। laliga.com (ইংরেজি ভাষায়)। লা লিগা। ৮ অক্টোবর ২০২৩। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ অক্টোবর ২০২৩ 
  4. "¡A Lamela!"edant.ole.com। ১১ জুন ২০০৯। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩ 
  5. "Profile"। Argentine Soccer। ২ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুন ২০১৩ 
  6. "Acquisizione a titolo definitivo dei diritti alle prestazioni sportive del calciatore Erik Manuel Lamela" (পিডিএফ) (ইতালীয় ভাষায়)। Asroma.it। ২০১২-০৬-০৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুন ২০১৩ 
  7. "AS Roma 1-0 Palermo"ইএসপিএন। Entertainment and Sports Programming Network। ২৮ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩ 
  8. "Lecce 4-2 AS Roma"ইএসপিএন। Entertainment and Sports Programming Network। ২৮ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩ 
  9. "Europe close in on AS Roma"ESPN। Entertainment and Sports Programming Network। ২৮ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩ 
  10. "De Rossi earns win"ESPN। Entertainment and Sports Programming Network। ২৮ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩ 
  11. "Roma 4-2 AC Milan: Ragged Rossoneri leave it too late against 10-man Giallorossi"। Goal.com। ২২ ডিসেম্বর ২০১২। ১৬ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩ 
  12. "Italian Serie A Goal Scoring Leaders – 2012–13"ইএসপিএন। Entertainment and Sports Programming Network। সংগ্রহের তারিখ ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩ 
  13. "Roma 0-1 Lazio: Biancocelesti edge dour derby to claim Coppa Italia"। Goal.com। ২৬ মে ২০১৩। ১২ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩ 
  14. "We are delighted to announce that we've reached agreement with AS Roma for the transfer of Erik Lamela"। Tottenham Hotspur। সংগ্রহের তারিখ ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩ 
  15. "Erik Lamela: Tottenham confirm the signing of Roma forward"। বিবিসি স্পোর্ট। ৩০ আগস্ট ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩ 
  16. "Tottenham complete moves for Erik Lamela & Christian Eriksen"inside World Soccer। ১ সেপ্টেম্বর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩ 
  17. Magowan, Alistair (১ সেপ্টেম্বর ২০১৩)। "Arsenal 1-0 Tottenham"। বিবিসি স্পোর্ট। সংগ্রহের তারিখ ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩ 
  18. "Erik Lamela"। ESPN Soccernet। সংগ্রহের তারিখ ৮ এপ্রিল ২০১৩ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা