মোহাম্মদ আব্দুল জলিল
মোহাম্মদ আবদুল জলিল (জন্ম: ৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪২ - মৃত্যু: ১৯ নভেম্বর, ১৯৮৯) যিনি মেজর জলিল নামেই বেশি পরিচিত, বাংলাদেশের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ছিলেন একজন রাজনীতিক ও সামরিক কর্মকর্তা৷ তিনি ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ৯নং সেক্টরে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
মোহাম্মদ আবদুল (এম এ) জলিল | |
---|---|
জন্ম | ৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৪২ |
মৃত্যু | ১৯ নভেম্বর ১৯৮৯ | (বয়স ৪৭)
নাগরিকত্ব | ![]() ![]() ![]() |
পেশা | রাজনীতিবিদ ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা |
পরিচিতির কারণ | মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার |
জন্ম ও শিক্ষাজীবনসম্পাদনা
এম এ জলিল বরিশাল জেলার উজিরপুরে ১৯৪২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি নানার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন।[১] তার পুরো নাম মোহাম্মদ আব্দুল জলিল। তবে তিনি মেজর এম এ জলিল নামেই পরিচিত। তার পিতা জনাব আলী চৌধুরী ও মা রাবেয়া খাতুন। উজিরপুর ডব্লিউবি ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশন থেকে ১৯৫৯ সালে তিনি মেট্রিক পাশ করেন৷ ১৯৬১ সালে পাকিস্তানের মারি ইয়ং ক্যাডেট ইনস্টিটিউশন থেকে আইএ পাস করেন এবং এর পাশাপাশি গ্রহণ করেন সামরিক শিক্ষা৷ ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান একাডেমি থেকে গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি লাভ করেন৷ পরে মুলতানে কর্মরত থাকাকালে তিনি ইতিহাসে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন৷
সেনাজীবনসম্পাদনা
১৯৬২ সালে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীতে ট্রেনি অফিসার হিসেবে যোগদান করেন৷ সামরিক বাহিনীতে চাকুরিরত অবস্থায় তিনি বি.এ পাশ করেন৷ ১৯৬৫ সালে তিনি কমিশনপ্রাপ্ত হন এবং ১২নং ট্যাঙ্ক ক্যাভালরি রেজিমেন্ট অফিসার হিসেবে তৎকালীন পাক-ভারত যুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন৷ ১৯৭০ সালে তিনি মেজর পদে উন্নীত হন৷ তিনি ১৯৭১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি ছুটি নিয়ে বরিশালে আসেন এবং মার্চে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধে তিনি নবম সেক্টরের কমান্ডারের দায়িত্ব লাভ করেন৷
রাজনৈতিক জীবনসম্পাদনা
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) গঠনের সময়ে তিনি কাজ করেছিলেন।[২][৩] তিনি ছিলেন এ দলের যুগ্ম আহ্বায়ক৷ ১৯৭৩ সালে তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন৷ এছাড়া তিনি ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন৷ ১৯৮৪ সালে তিনি জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন৷ পরবর্তীকালে তিনি জাসদ ত্যাগ করে জাতীয় মুক্তি আন্দোলন নামে একটি দল গঠন করেন৷ ১৯৮৪ সালের ২১ অক্টোবর তিনি আমীরে শরীয়ত মাওলানা মুহাম্মদুল্লাহ হাফেজ্জী (রহ) এর নেতৃত্বে গঠিত সম্মিলিত সংগ্রাম পরিষদে যোগ দেন। ২৬ অক্টোবর পরিষদের দেশব্যাপী দুআ দিবস ও বায়তুল মুকাররম মসজিদ চত্বরে সমাবেশে তিনি মাওলানা হাফেজ্জীর হাতে বাই'আত গ্রহণ করেন।[৪]
প্রকাশিত গ্রন্থসম্পাদনা
- সীমাহীন সময় (১৯৭৬)
- দৃষ্টিভঙ্গি ও জীবনদর্শন, সূর্যোদয় (১৯৮২)
- অরক্ষিত স্বাধীনতাই পরাধীনতা (১৯৮৯)
- কৈফিয়ত ও কিছু কথা (১৯৮৯)
- বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট ফর ইউনিটি: আ হিস্টোরিক্যাল নেসেসিটি [ঐক্যের জন্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন: ঐতিহাসিক প্রয়োজনীয়তা]
- এ সার্চ ফর আইডেন্টিটি [পরিচয়ের খোঁজে]
মৃত্যুসম্পাদনা
১৯৮৯ সালের ১৯ নভেম্বর রাত ১০টা ৩০ মিনিটে তিনি পাকিস্তানের ইসলামাবাদে মৃত্যুবরণ করেন৷ পরে ২২ নভেম্বর তার মৃতদেহ ঢাকায় আনা হয় এবং সামরিক মর্যাদায় তার দাফন সম্পন্ন করা হয়।[৫]
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ "Major Jalil's anniversary of death today"। thedailystar.net।
- ↑ Alim, Syed Fattahul (১ ফেব্রুয়ারি ২০১২)। "Has Left Politics any Future?"। Forum। The Daily Star। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুলাই ২০১৬।
- ↑ "Jalil, (Major) MA"। Banglapedia।
- ↑ নাসীম আরাফাত, মাওলানা (২০১৬)। আমীরে শরীয়ত মাওলানা মুহাম্মদুল্লাহ হাফেজ্জী হুজুর রহ. (২য় সংস্করণ)। ১১/১, ইসলামী টাওয়ার, বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০: মাকতাবাতুল হুদা আল ইসলামিয়া। পৃষ্ঠা ৩০১–৩০২।
- ↑ আজকের বরিশাল[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]