উসমানীয়-সৌদি যুদ্ধ

১৮১১-১৮১৮ সালের মধ্যে সংঘটিত একটি যুদ্ধ।

উসমানীয়-সৌদি যুদ্ধ বা (উসমানীয়-ওয়াহাবি যুদ্ধ বলেও পরিচিত) ১৮১১ থেকে ১৮১৮ সালের মধ্যে সংঘটিত হয়। যুদ্ধের এক পক্ষে ছিল মিশরের উসমানীয় শাসক মুহাম্মদ আলি পাশার অধীন মিশর এলায়েত এবং অন্য পক্ষে ছিল প্রথম সৌদি রাষ্ট্র। যুদ্ধের ফলে প্রথম সৌদি রাষ্ট্র ধ্বংস হয়ে যায়।

উসমানীয়-সৌদি যুদ্ধ
তারিখ১৮১১-১৮১৮
অবস্থান
ফলাফল উসমানীয়দের বিজয়
দিরিয়া আমিরাতের সমাপ্তি
বিবাদমান পক্ষ
দিরিয়া আমিরাত মিশর এলায়েত
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী
সৌদ ইবনে আবদুল আজিজ ইবনে মুহাম্মদ ইবনে সৌদ
আবদুল্লাহ বিন সৌদ মৃত্যুদণ্ড
তুসুন পাশা
মুহাম্মদ আলি পাশা
ইবরাহিম পাশা
শক্তি
২০,০০০ ৫০,০০০
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি
১১,০০০ নিহত
৩,০০০ আহত
২,০০০ নিহত
১,০০০ আহত
৫০ বন্দী

পটভূমি সম্পাদনা

ওয়াহাবি আন্দোলন ছিল একটি সংস্কারবাদি আন্দোলন। এর আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় প্রথম সৌদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে মুহাম্মদ আলি পাশা তা ধ্বংস করেন।

মুহাম্মদ ইবনে আবদুল ওয়াহাব এবং আমির মুহাম্মদ ইবনে সৌদ তাদের শক্তিকেন্দ্র দিরিয়া থেকে অভিযান শুরু করেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল ইসলামের সংস্কার এবং আরবে ক্ষমতা সুসংহত করা। ১৮০৫ সাল নাগাদ ওয়াহাবিরা মক্কামদিনার নিয়ন্ত্রণ লাভ করে এবং কারবালাহুসাইন ইবনে আলির মাজারে হামলা চালায়।[১] তারা উসমানীয় বাণিজ্য কাফেলার উপরও আক্রমণ চালায়।[২] সৌদি আমির উসমানীয় সুলতানকে প্রত্যাখ্যান করেন এবং তার খিলাফত এবং পবিত্র দুই মসজিদের রক্ষকের দাবির যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।[৩] উসমানীয় সাম্রাজ্যের তরফ থেকে মিশরের শাসক মুহাম্মদ আলি পাশাকে তাদের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়।

অভিযান সম্পাদনা

 
আবদুল্লাহ বিন সৌদ। যুদ্ধের পর তাকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়।

সুলতান চতুর্থ মোস্তফা মুহাম্মদ আলি পাশাকে সৌদি রাষ্ট্র ধ্বংস করার নির্দেশ দেন। তবে মিশরের অভ্যন্তরের সমস্যার কারণে তিনি পূর্ণ মনোযোগ দিতে পারেননি। ১৮১১ সাল পর্যন্ত মিশরীয়রা পবিত্র শহরগুলো পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়নি।[৩]

তবে ওয়াহাবি রাষ্ট্র পুরোপুরো ধ্বংস হতে ১৮১৮ সাল পর্যন্ত সময় লেগে যায়। এসময় তাদের নেতারা আত্মসমর্পণ করে। মুহাম্মদ আলি পাশার পুত্র ইবরাহিম পাশা ১৮১৭ সালে অভিযানে আসেন। বিভিন্ন আরব গোত্রের সাথে কূটনৈতিক ও উপহারের মাধ্যমে সমর্থন আদায় করে তিনি মধ্য আরবের দিকে অগ্রসর হন। ১৮১৮ সালের এপ্রিলে তারা দিরিয়া পৌছান। ওয়াহাবিদের আত্মসমর্পণ করতে সেপ্টেম্বর নাগাদ সময় লেগে যায়। বন্দী সৌদি রাষ্ট্রের প্রধান আবদুল্লাহ বিন সৌদকে কনস্টান্টিনোপল পাঠানো হয়।[৩]

পরবর্তী অবস্থা সম্পাদনা

আবদুল্লাহ বিন সৌদকে কনস্টান্টিনোপলে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। তবে অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের সাথে ভালো আচরণ করা হয়েছিল। তবে বিদ্রোহে উৎসাহ দেয়ার কারণে সাম্রাজ্য ধর্মীয় নেতাদের প্রতি ক্রুদ্ধ ছিল। সুলায়মান ইবনে আবদুল্লাহসহ কিছু ধর্মীয় নেতাকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছিল। রাজনৈতিক নেতাদের চাইতে তাদের বেশি বিপদজনক মনে করা হয়েছিল।[৩]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Bowen, Wayne H. (২০০৮)। The History of Saudi Arabia। Westport, CN: Greenwood Press। পৃষ্ঠা 153। আইএসবিএন 978-0313340123ওসিএলসি 166388162 
  2. Marsot, Afaf Lutfi Al-Sayyid. A History of Egypt From the Islamic Conquest to the Present. New York: Cambridge UP, 2007.
  3. Elizabeth Sirriyeh, Salafies, "Unbelievers and the Problems of Exclusivism". Bulletin (British Society for Middle Eastern Studies, Vol. 16, No. 2. (1989), pp. 123-132. (Text online at JSTOR)