ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি

ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (বাংলা: ইসলামী প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়) (আরবি: الجامعة الإسلامية للتقنية‎‎); বাংলাদেশের গাজীপুর জেলায় অবস্থিত একটি আন্তর্জাতিক প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়। এটি মূলত একটি শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল এবং বর্তমানে বাংলাদেশের একমাত্র আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকানা ইসলামী সম্মেলন সংস্থা তথা ওআইসি'র হাতে এবং এর লক্ষ্য ওআইসিভুক্ত সকল রাষ্ট্রের ছাত্রদের জন্য পড়াশোনার সুব্যবস্থা করে দেয়া এবং প্রযুক্তি ও প্রকৌশল শিক্ষার ক্ষেত্রে মুসলমানদের এগিয়ে নিয়ে আসা।

ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি
ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির লোগো.jpg
ধরনআন্তর্জাতিক
স্থাপিত২৭ মার্চ ১৯৮১
উদ্বোধন: ১৪ জুলাই ১৯৮৮
অধিভুক্তিওআইসি, আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাসোসিয়েশন, ইসলামিক উম্মার বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেডারেশন, এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন
আচার্যওআইসি-এর মহাসচিব
উপাচার্যঅধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম
প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ
২০১
স্নাতক৮৯০
স্নাতকোত্তর১৫০
ঠিকানা
বোর্ড বাজার, গাজীপুর-১৭০৪
, , ,
২৩°৫৬′৫১″ উত্তর ৯০°২২′৪৮″ পূর্ব / ২৩.৯৪৭৩৭৯° উত্তর ৯০.৩৭৯৯১১° পূর্ব / 23.947379; 90.379911
শিক্ষাঙ্গননগর, ৩০ একর
ওয়েবসাইটwww.iutoic-dhaka.edu
মানচিত্র

সম্পূর্ণ সেশনজটমুক্ত একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান । চার বছর মেয়াদি কোর্স কখনও সময়ের বেশি লেগে যায়নি । শিক্ষাকালীন মাসিক ভাতা শিক্ষার্থীরা পান। এছাড়াও ডরমিটরি, বই, থাকা-খাওয়া সহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দেয়া হয় বিনামূল্যে ।

গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করে শিক্ষার্থীরা দেশ এবং বিদেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন রয়েছেন । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, আইবিএ (ঢাবি), বিসিএস (পররাষ্ট্র), প্রশাসন, পুলিশ, এনবিআর, কাস্টমস,গণপূর্ত,সড়ক ও জনপথ ইত্যাদি সহ বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন, বাংলাদেশ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড,পেট্রোবাংলা, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লি, আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি, ইলেকট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড, নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড, ঢাকা ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, নর্দার্ন ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ইত্যাদি সরকারি প্রতিষ্ঠানে এর স্নাতকরা কর্মরত আছেন। এছাড়া দেশের বাইরে বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান গুগল, মাইক্রোসফট, আইবিএমসহ নামকরা বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ও এখানকার গ্র্যাজুয়েটদের পদচারণায় মুখরিত ।

সদস্যপদসম্পাদনা

আইইউটির সদস্যপদ আছে আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাসোসিয়েশন, ইসলামিক উম্মার বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেডারেশন, এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাসোসিয়েশনের। এছাড়া, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকধারীরা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সদস্য হতে পারে।[১][২][৩]

অবস্থানসম্পাদনা

আইইউটি ঢাকা থেকে ৩০ কি.মি. উত্তরে, গাজিপুরের বোর্ড বাজারে অবস্থিত। শীতকালে এখানকার তাপমাত্রা সর্বনিম্ন ১০ ডিগ্রি সেঃ থাকে এবং গ্রীষ্মকালে সর্বোচ্চ ৩২ ডিগ্রি সেঃ পর্যন্ত হয়ে থাকে।[৪][৫]

ইতিহাসসম্পাদনা

 
ইসলামের পঞ্চস্তম্ভ চিহ্নিতকারী গেট

বাংলাদেশ সরকারের প্রদান করা ৩০ একর জমিতে ১৯৮১ সালের ২৭ এ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়। ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলোজি অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কনফারেন্স বা OIC'র সরাসরি তত্ত্বাবধানে পরিচালিত একটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়। OIC'র ৫৭ টি দেশের ছাত্ররা এখানে পড়তে আসে । ১৯৭৮ সালে সেনেগালের ডাকারে অনুষ্ঠিত মুসলিম দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের নবম বৈঠকে মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর প্রকৌশল ও ভোকেশনাল প্রশিক্ষণ ও গবেষণার কেন্দ্র হিসাবে বাংলাদেশের গাজীপুরে এটি প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় । বাংলাদেশ সরকারের প্রদান করা ৩০ একর জমিতে ১৯৮১ সালের ২৭ এ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয় । সে সময় এটির নামকরণ করা হয় ICTVTR । ১৯৯৪ সালে মরক্কোর রাজধানী ক্যাসাব্লাঙ্কায় মুসলিম দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের তেইশতম বৈঠকে এটির নাম ইসলামিক ইনস্টিটিউট অব টেকনোলোজি হিসাবে পরিবর্তন করা হয় । পরবর্তীতে ২০০১ সালের ২৫-২৭ জুন মালিতে অনুষ্ঠিত মুসলিম দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের আঠাশতম বৈঠকে এটির নাম পুনরায় পরিবর্তন করে বর্তমানের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলোজিতে রূপান্তর করা হয়।

উপাচার্যসম্পাদনা

নিম্নোক্ত ব্যক্তিবর্গ বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন—[৬]

কোর্সসমূহসম্পাদনা

ইন্সট্রাক্টর ট্রেনিং প্রোগ্রামসমূহসম্পাদনা

প্রকৌশল এবং প্রযুক্তি বিষয়ক প্রোগ্রামসমূহসম্পাদনা

  • স্নাতকোত্তর কোর্সসমূহ:
  • স্নাতক কোর্সসমূহ:
    • কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশলে ব্যাচেলর অফ সাইন্স
    • যন্ত্র প্রকৌশলে ব্যাচেলর অফ সাইন্স
    • তড়িৎ প্রকৌশলে ব্যাচেলর অফ সাইন্স
    • পুরকৌশল এবং পরিবেশ কৌশলে ব্যাচেলর অফ সাইন্স
  • উচ্চতর ডিপ্লোমা কোর্সসমূহঃ
    • কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশলে উচ্চতর ডিপ্লোমা
    • তড়িৎ প্রকৌশলে উচ্চতর ডিপ্লোমা
    • পুরকৌশল এবং পরিবেশ কৌশলে উচ্চতর ডিপ্লোমা

কম্পিউটার সেন্টারসম্পাদনা

গ্রন্থাগারসম্পাদনা

আইইউটি গ্রন্থাগার ১৩০০ বর্গ মিঃ জুড়ে অবস্থিত ও ৫২,০০০টি বই ধারণ করতে সক্ষম।

অবকাঠামোসম্পাদনা

মসজিদসম্পাদনা

 
আইইউটির লেকের পাশে মসজিদ দেখা যাচ্ছে

আই ইউ টি তে রয়েছে স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি মসজিদ।

হলসমূহসম্পাদনা

আই ইউ টি তে ছাত্রদের বসবাসের জন্য ২টি ভবন আছে। ভবন ২টি যথাক্রমে উত্তরদক্ষিণ হল নামে পরিচিত। হল দুটিতে বসবাসের জন্য সকল আধুনিক সুবিধা রয়েছে।এখানে রয়েছে প্রতিটি হলে মোট ১৫০ টি করে কক্ষ যেখানে প্রত্যেকটি কক্ষে ৪ জন করে ছাত্র থাকতে পারে ।

ক্যাফেটেরিয়াসম্পাদনা

 
সাউথ হল ক্যাফেটেরিয়া

আইইউটি তে দুইটি ক্যাফেটেরিয়া ( কেন্দ্রীয় ও উত্তর ) আছে যেখানে ছাত্ররা সকালের নাস্তা ও দুইবেলা খাদ্য গ্রহণ করে । বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের প্রতিমাসে ৫০ ডলার মূল্যমানের সকালের নাস্তা, দুপুরের ও রাতের খাবার পরিবেশন করে । এই খরচ ছাত্রদের বহন করতে হয় না, বিশ্ববিদ্যালয় তা বহন করে থাকে । ক্যাফেটেরিয়ার খাদ্য সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনার জন্য একটি ক্যাফেটেরিয়া কমিটি রয়েছে। বিভিন্ন দেশের ছাত্র ও শিক্ষকের সমন্বয়ে এ কমিটি গঠিত।

স্টুডেন্টস সেন্টারসম্পাদনা

আইইউটি র স্টুডেন্টস সেন্টার ছাত্রদের বিনোদন কেন্দ্র। এখানে ছাত্ররা টিভি দেখার পাশাপাশি টেবিল টেনিস, ক্যারামজিমনেশিয়াম এ শরীরচর্চা করে থাকে।

শিক্ষা ভবনসম্পাদনা

আইইউটির ২টি (উত্তর ও দক্ষিণ) শিক্ষা ভবন আছে। প্রতিটি ভবন ৫ তলা ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন।

খেলাধুলাসম্পাদনা

প্রতি বছর আইইউটি তে আয়োজিত হয় বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। এছাড়াও সারা বছর কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত হয় ক্রিকেট, ফুটবল, বাস্কেটবল, হ্যান্ডবল প্রতিযোগিতা।

মিলনায়তনসম্পাদনা

আইইউটির মিলনায়তন সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আধুনিক ভবন। এখানে নিয়মিত সেমিনার ও ওয়ার্কশপের পাশাপাশি বার্ষিক সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়ে থাকে।

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. "Institutions"International Association of Universities। ১ মে ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১৬ 
  2. "Home page"Federation of the Universities of the Islamic World। ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১৬ 
  3. "Association of the Universities of Asia and the Pacific"Association of the Universities of Asia and the Pacific। ২৫ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১৬ 
  4. "IUT Structural Details"Archnet। ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১৬ 
  5. "The University"Islamic University of Technology। ২৬ জুলাই ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১৬ 
  6. "Former VCs/Director Generals/Directors"ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  7. "আইইউটির নতুন উপাচার্য অধ্যাপক এম রফিকুল ইসলাম"বাংলাদেশ প্রতিদিন। ২ সেপ্টেম্বর ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ 

বহিঃসংযোগসম্পাদনা