ইন্দোনেশিয়া-সিরিয়া সম্পর্ক
ইন্দোনেশিয়া-সিরিয়া সম্পর্ক, ইন্দোনেশিয়া এবং সিরিয়া এর মাঝে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নির্দেশ করে। ১৯৪৯ সালে, এই দুই দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। সিরিয়া ছিল, প্রথমদিকে, ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেয়া দেশগুলোর মাঝে অন্যতম।[১] উভয় দেশই ফিলিস্তিন, ইরাক এবং লেবানন বিষয়ে একই মত পোষণ করে। এর পাশাপাশি গোলান হাইটস বিষয়ে, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে, ইন্দোনেশিয়া, সবসময় সিরিয়াকে সমর্থন দিয়ে এসেছে।[২] বর্তমানে সিরীয় গৃহযুদ্ধ বিষয়ে ইন্দোনেশিয়া আন্তর্জাতিক মহলে সিরিয়াকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে এবং এর পাশাপাশি, সিরিয়ার সকল পক্ষকে সহিংসতা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে[৩] এর পাশাপাশি, ২০১৪ সালে দেশটি যুদ্ধবিদ্ধস্ত সিরিয়াতে মানবিক সহায়তার জন্য ৫ লক্ষ মার্কিন ডলার সহায়তা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আগেও সিরিয়া জাতিসংঘ এর মাধ্যমে এই একই পরিমাণ সাহায্য ২০১২ এবং ২০১৩ সালে সিরিয়াকে অনুদান হিসেবে দিয়েছে।[৪] ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় সিরিয়ার একটি স্থায়ী দূতাবাস রয়েছে। অপরদিকে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কতে ইন্দোনেশিয়ার একটি স্থায়ী দূতাবাস রয়েছে।
ইন্দোনেশিয়া |
সিরিয়া |
---|
উভয় দেশই বিভিন্ন বহুমাত্রিক আন্তর্জাতিক সংস্থা যেমন: জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলন (ন্যাম), অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন (ওআইসি) এর সদস্য।
ইতিহাস
সম্পাদনাইন্দোনেশীয় জাতীয় অভ্যুত্থান এর সময় সিরিয়া সেই রাষ্ট্রগুলোর একটি ছিল, যারা প্রথমদিকেই ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতাকে সমর্থন করে এবং স্বীকৃতি দেয়। ১৯৪৭ সালে জাতিসংঘতে নিযুক্ত সিরিয়ার প্রতিনিধি, ফারিস আল-খোউরি, ইন্দোনেশিয়া প্রশ্নে জাতিসংঘ এর নিরাপত্তা পরিষদে আলোচ্যসুচী প্রেরণ করেন। আর এই পদক্ষেপের মাধ্যমেই ইন্দোনেশিয়ায় ডাচ সাম্রাজ্য এর উপনিবেশ শেষ হয় এবং সর্বশেষে ১৯৪৯ সালে, ডাচদের থেকে ইন্দোনেশিয়ার সার্বভৌমত্ব ইন্দোনেশীয় কর্তৃপক্ষের নিকট দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সিরিয়া, ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেয়া দ্বিতীয় রাষ্ট্র ছিল। মিশর, প্রথম রাষ্ট্র হিসেবে ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেয়॥ এরপর অতি শীঘ্রই ১৯৪৯ সালেই, দুই দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়।[১]
উচ্চপর্যায়ের সফর
সম্পাদনা১৯৭৭ সালের অক্টোবর মাসে ইন্দোনেশিয়ার তৎকালীন রাষ্ট্রপতি, সুহার্তো এক রাষ্ট্রীয় সফরে সিরিয়া যান। ১৯৯৭ সালের জুন মাসে, সিরিয়ার প্রধানমন্ত্রী, মাহমুদ জুবেই রাষ্ট্রীয় সফরে ইন্দোনেশিয়ায় যান। আবার ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে সিরিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজি ওত্তরি ইন্দোনেশিয়া সফরে যান।[১]
অর্থনীতি এবং বাণিজ্য
সম্পাদনা২০০৩ সালে দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৪৭.০৮ মিলিয়ন (৪.৭০ কোটি) মার্কিন ডলারের। যা ২০০৮ সালে বেড়ে দাঁড়িয়ে হয় ১০০ মিলিয়ন (১০ কোটি) মার্কিন ডলার। এই দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্যে, ব্যাপক বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে এবং এই বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে সিরিয়ার ক্ষেত্রে।
সিরিয়ায়, ইন্দোনেশিয়ার উল্লেখযোগ্য রপ্তানি পণ্য হল, টেক্সটাইল, রাবার, চা, কফি, পাম তেল, কাঠ এবং কাগজ। অপরদিকে, ইন্দোনেশিয়ায়, সিরিয়ার উল্লেখযোগ্য রপ্তানি পণ্য হল, খেজুর, শুঁকনো ফল এবং জলপাই এর তেল।[২]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ "Hubungan bilateral Suriah-Indonesia" (ইন্দোনেশীয় ভাষায়)। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ইন্দোনেশিয়া। ৭ মে ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ মে ৪, ২০১৪।
- ↑ ক খ বীরমল্লা আনজাইয়াহ (এপ্রিল ৩, ২০০৯)। "Syria seeks stronger ties with Indonesia: Envoy"। দ্যা জাকার্তা পোস্ট। সংগ্রহের তারিখ মে ৪, ২০১৪।
- ↑ এলা সিয়াফপুত্রী (ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১২)। "Indonesia urges all parties in Syria to end violence"। অন্তরা নিউজ। সংগ্রহের তারিখ মে ৪, ২০১৪।
- ↑ বীরমল্লা আনজাইয়াহ (জানুয়ারি ১৬, ২০১৪)। "RI to pledge $500,000 assistance to Syria"। দ্যা জাকার্তা পোস্ট। সংগ্রহের তারিখ মে ৪, ২০১৪।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইন্দোনেশিয়া দূতাবাস, দামেস্ক, সিরিয়া ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে
- সিরিয়া দূতাবাস, জাকার্তা, ইন্দোনেশিয়া