ইউসুফ আহমদী

কারী মোহাম্মদ ইউসুফ আহমাদি হলেন বর্তমান আফগানিস্তান তালেবান সরকারের দুইজন মুখপাত্রের একজন। অন্যজন হলেন জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ। মুখপাত্র হিসেবে জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ অধিক প্রসিদ্ধ এবং তালেবানের পক্ষে অধিকাংশ বিবৃতি তিনিই প্রকাশ করেন। ২০০৬ সালে প্রথম ইউসুফ দক্ষিণ আফগানিস্তান সম্পর্কে তালেবানের হয়ে বার্তা দেওয়ার জন্য স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে রয়টার্স, অ্যাসোসিয়েটেমড প্রেস, কানাডা প্রেস ও আফগান ইসলামিক প্রেসের সাথে যোগাযোগ করেন। এর মাধ্যমে তিনি আফগান তালেবানের মুখপাত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ২০২১ সালে তালেবান আফগানিস্তান দখল করে সরকার গঠন করলে কার্যত জাবিহুল্লাহ মুজাহিদই তালেবান সরকারের মুখপাত্রের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।

ইউসুফ আহমদী
সর্বোচ্চ নেতা	হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা
প্রধানমন্ত্রী	হাসান আখুন্দ (ভারপ্রাপ্ত)
মন্ত্রী	খায়রুল্লাহ খায়েরখাওয়া
পূর্বসূরী	মুহাম্মদ ওমর
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম	১৯৭০, জাবুল প্রদেশ, আফগানিস্তান
জাতীয়তা	আফগানিস্তান
রাজনৈতিক দল	তালেবান
সন্তান	৭
পেশা	মুখপাত্র
সামরিক পরিষেবা
আনুগত্য	তালেবান
কাজের মেয়াদ	২০০৬ - বর্তমান
যুদ্ধ	মার্কিন-আফগান যুদ্ধ

আত্মপ্রকাশ ও কার্যক্রম

২০০৬ সালে প্রথমবার বার্তা প্রেরণের দুই বছর পর ২০০৮ সালের আগস্টে সাংবাদিক টবি কোহেনের সাথে কানাডিয়ান প্রেসের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে তিনি পুনরায় আলোচনায় আসেন। সেখানে তিনি কানাডার জনগণকে এ বলে পরামর্শ দেন যে, তাদের এমন একজন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করা উচিত, যিনি আফগানিস্তান থেকে কানাডীয় সৈন্যদের সরিয়ে আনবেন। ইউসুফকে উদ্ধৃত করে সেখানে বলা হয়ে যে,"কানাডায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সেজন্যই কানাডীয়দের ওপর আমাদের আক্রমণ বেড়ে গেছে"। তিনি আরো বলেন যে, তালেবানরা কানাডার সাথে যুদ্ধ করতে চায় না। আসলে আমরা কানাডীয়দের সাথে বন্ধুত্ব করতে চাই"।

২০১২ সালের নভেম্বরে আহমাদি তালেবানের নিয়মিত প্রেস রিলিজ ইমেল করার সময় ভুলবশত BBC এর পরিবর্তে CC ব্যবহার করে ৪০০টিরও বেশি তালেবান সংশ্লিষ্ট নাম এবং তাদের ইমেল ঠিকানা প্রকাশ করে দেন। এই তালিকায় বেশিরভাগ সাংবাদিক, একজন আফগান বিধায়ক, একজন প্রাদেশিক গভর্নর, শিক্ষাবিদ, অ্যাক্টিভিস্ট, একজন আফগান পরামর্শক কমিটির সদস্য ও গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ারের একজন প্রতিনিধির ইমেল ঠিকানাও ছিল।

ব্যক্তিগত তথ্য

আহমাদি ১৯৭০ সালে আফগানিস্তানের জাবুলে জন্ম গ্রহণ করেন এবং সেখানেই বেড়ে ওঠেন। সোভিয়েত আফগান যুদ্ধের চলাকালীন মাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি যুদ্ধে যোগদান করেন এবং পরবর্তীতে আফগান গৃহযুদ্ধে তালেবানের পক্ষ হয়ে লড়াই করেন। তালেবান সরকারের সময়ে তিনি বিভিন্ন সরকারি দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০১ সালে আমেরিকার আফগানিস্তান আক্রমণের সময় তিনি আত্মগোপনে চলে যান এবং ২০০৬ সাল থেকে তালেবানের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। ২০১২ সালে আশ শারক আল আওসাত পত্রিকার ইন্টার্ভিউয়ে নিজের সম্পর্কে তিনি বলেন:

আমি ইউসুফ আহমাদী। আমার বয়স ৩৭ বছর। আমি একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে আধুনিক বিষয়ে অধ্যয়ন করেছি। আমি আল্লাহর ইচ্ছায় কোরান মুখস্থ করেছি । আমি বিভিন্ন ধর্মীয় বিদ্যালয়ে শরিয়া শিক্ষা শেষ করেছি। আমি কবিতা আবৃত্তি করি এবং সব ধরনের আরবি ও ফারসি ক্যালিগ্রাফি লিখতে পারি। আমি পশতু (মাতৃভাষা) ও ফারসিতে কথা বলি। এছাড়া আরবি, ইংরেজি এবং উর্দুতে আমার কিছু জ্ঞান আছে। আমি আফগানিস্তানে কমিউনিস্ট শাসনের সময় থেকে জিহাদে নিয়োজিত আছি।আমি বিবাহিত এবং আমার ৭ জন সন্তান আছে। আমার বড় ছেলে মুহাম্মদ, তার বয়স ১২ বছর। আমি প্রায়শ পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের থেকে দূরে থাকি। কিন্তু আমি তাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করি।

সাম্প্রতিক কার্যক্রম

আহমাদি তালেবানের ম্যাগাজিন আল সোমোদের একজন সম্পাদক হিসেবে পরিচিত। ২০১৪ সালের এপ্রিলে একজন আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী সম্পর্কে তিনি বিস্তারিত রিপোর্ট করেন যে, সে ৫০ জন মার্কিন ও তাদের মিত্রসৈন্যকে হত্যা করার জন্য একটি মোটরসাইকেল ব্যবহার করেছিল। ২০২১ সালের অক্টোবরে জবিহুল্লাহ মুজাহিদ একটি প্রেস কনফারেন্সে আহমদীর পরিচয় দেন। সে বছর আহমদি নিজেও প্রকাশ্যে এসে একটি পত্রিকায় সাক্ষাৎকার প্রদান করেন।

আরও দেখুন

তালেবান

জবিহুল্লাহ মুজাহিদ

সুহাইল শাহীন

হিবাতুল্লাহ আখুন্জাদা

মোল্লা ওমর