ʿআলী ʾইবনে মুসা আর-রিদ়া (আরবি: عَلِيّ ٱبْن مُوسَىٰ ٱلرِّضَا, প্রতিবর্ণীকৃত: Alī ibn Mūsā ar-Riḍā; c. ১ জানুয়ারি ৭৬৬ – ৬ জুন ৮১৮),[] যিনি ইমাম রেজা এবং আবুল হাসান নামেও পরিচিত, ছিলেন ইসলামের নবী মুহম্মদের একজন বংশধর এবং দ্বাদশী শিয়া মুসলমানদের অষ্টম ইমাম। তিনি তাঁর ধর্মীয় জ্ঞানের জন্য জায়েদি শিয়া এবং সুফিবাদী সুন্নি মুসলমানদের নিকটও বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আব্বাসীয় আমলে জন্মগ্রহণ করেন এবং তাঁর জীবদ্দশায় আব্বাসীয় খলিফারা বিভিন্ন অসুবিধার—বিশেষত শিয়া বিদ্রোহের—সম্মুখীন হন। খলিফা আল-মামুন ইমাম আর-রিদাকে তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে নিয়োগ দিয়ে এই সমস্যার প্রতিকার চেয়েছিলেন, যাতে তিনি তাঁর মাধ্যমে পার্থিব বিষয়ে জড়িত হতে পারেন। তবে শিয়া মতানুসারে, আল-মামুন যখন দেখলেন যে ইমাম আরও বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন, তখন তিনি তাঁকে বিষপ্রয়োগ করে নিজের ভুল সংশোধন করার সিদ্ধান্ত নেন। ইমাম আর-রিদাকে খোরাসানের একটি শহরে দাফন করা হয়, শহরটি পরবর্তীতে মাশহাদ অর্থাৎ শাহাদতের স্থান নামে পরিচিতি লাভ করে।[][]

ʿইমাম আলী আর-রিদ়া
عَلِيّ ٱلرِّضَا
আল-ইমাম
আর-রিদ়া[]
ইমাম আজ়-জ়ামিন[]
ʿআলী আর-রিদ়ার নাম ও উপাধি সংবলিত আরবি চারুলিপি
৮ম ইমাম
(শিয়া ইসলাম)
ইমামত৭৯৯ – ৮১৮ খ্রি.
পূর্বসূরিমুসা আল-কাজিম
উত্তরসূরিমুহম্মদ আল-জওয়াদ
জন্মʿআলী ʾইবনে মুসা
আনু. ১ জানুয়ারি ৭৬৬[]
(১১ জ্বিলকদ ১৪৮ হিজরি)
মদীনা, হেজাজ, আব্বাসীয় খিলাফত
মৃত্যু৬ জুন ৮১৮(818-06-06) (বয়স ৫৩)
(১৭/৩০ সফর ২০২ হিজরি)
তুস, পারস্য, আব্বাসীয় খিলাফত
দাম্পত্য সঙ্গীসাবীকা (খয়জুরান)[]
সন্তান
  • মুহম্মদ
  • হাসান
  • হোসেন
  • জাফর
  • ইব্রাহীম
  • ফাতিমা
পূর্ণ নাম
ʿআলী ʾইবনে মুসা ʾইবনে জাʿফ়র ʾইবনে মুহ়ম্মদ ʾইবনে ʿআলী ʾইবনে হ়োসেন ʾইবনে ʿআলী
স্থানীয় নামعَلِيّ ٱبْن مُوسَىٰ ٱلرِّضَا
বংশআহল আল-বাইত
বংশবনু হাশিম
রাজবংশকুরাইশ
পিতামুসা আল-কাজিম
মাতাউম্মুল বনীন নাজমা[]
ধর্মইসলাম
মৃত্যুর কারণআল-মামুন কর্তৃক বিষপ্রয়োগ
সমাধিইমাম রেজার মাজার, মাশহাদ, ইরান
৩৩°২২′৪৮″ উত্তর ৪৪°২০′১৬.৬৪″ পূর্ব / ৩৩.৩৮০০০° উত্তর ৪৪.৩৩৭৯৫৫৬° পূর্ব / 33.38000; 44.3379556
আন্দোলনদ্বাদশী শিয়া ইসলাম
ইরানের মাশহাদ শহরে ইমাম রেজার মাজার, এটি বৃহত্তম শিয়া তীর্থস্থান এবং অন্যতম সর্বাধিক পরিদর্শনকৃত স্থান।[]

জন্ম ও পারিবারিক জীবন

সম্পাদনা

১১ই জিলকদ ১৪৮ হিজরী মোতাবেক (২৯ ডিসেম্বর, ৭৬৫ খ্রীঃ) একটি পুত্র সন্তান লাভ করেন মদিনার ইমাম মুসা আল-কাদিম। যে শিশুটি শিয়া ইসলামে দ্বাদশ ইমামের আষ্টম ইমাম হয়ে ছিলেন। তিনি তার নিজ যোগ্যতা দ্বারা বাবার অবস্থান ধরে রাখেন। তিনি হলেন আলি আল-রিদা। মূল নাম আলি, উপাধি আল রিদা বা আল রাজি। তবে তাকে ডাকা হত আবুল হাসান আল তানি নামে। তিনি তার দাদা জাফর আর সাদিকের মৃত্যুর এক মাস পর জন্মগ্রহণ করেন।[] তার মা নাজমা ছিলেন অত্যন্ত ধার্মিক মহিলা।"[]

ইমাম হিসেবে পদবী

সম্পাদনা

অষ্টম ইমাম তার বাবার মৃত্যুর পর এক বিষেশ আদেশ বলে বাবার স্থালাভিসিক্ত হন। আর ইমামত এর মত মর্যাদা পূর্ণ আসনে আরোহণ করেন। এ সময়ে ইমামের অনেক সঙ্গি হয়েছিল বিশেষ করে মুসা আল-কাদিম। যেমন মুখজুমি বলেন এক দিন নির্বাহক এবং উত্তরাধিকারী হিসাবে তাকে ডেকে আমাদের সংগৃহীত এবং অধিকারের কথা উল্লখ করেছেন।" []

মক্কা যাওয়ার সময় [[ইয়াজিদ ইবনে সালিত বর্ণানা দিয়েছেন সপ্তম ইমাম প্রথমে আলি ও পরে ইমাম বলে বিবেচিত হবেন। একই কথা বলেন, ইমাম মুসা আল-কাজিম আলী বিন আতিক, থেকে বর্ণিত" "আলী আমার সন্তানদের শ্রেষ্ঠতম এবং আমি তাঁর দিকেই আমার প্রত্যাবর্তণ করেছি।"[১০][১১]

তাঁর যুগের রাজনৈতিক পরিস্থিতি

সম্পাদনা

বাদশা হরুনুর রশিদ মারা যান ৮০৯ সাল। আর এর পর শুরু হয় বাদশার দুই ছেলে আব্বাসীয় সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করার জন্য রিতিমত যুদ্ধ শুরু করে দেন। এক ছেলে আল-আমিন। তার মা ছিল আরব আর তাই তিনি আরবের সমর্থন লাভ করেছিল এবং তার সৎভাই আল মামুনের মা ছিল ফারসি আর তিনি পারস্যের সমর্থন লাভ করেছিলেন।[১২] মামুন তার ভাইকে হারানোর পর তিনি খোরাসান যাওয়ার ডাক পেয়েছিলেন। Firstly, Ma'mun offered al-Ridha the caliphate. পরে তিনি বুঝতে পারে বিষয়টি ছিল রাজনৈতিক খেলা।[১৩]

আলী আল-রিদার তার ভাইদের উপদেশ

সম্পাদনা
 
ইমাম আলি আল-রাদির মাজার সরণি মাশহাদ, খোরাসান

বিতর্ক

সম্পাদনা
 
এ টা সেই কোরআন,যার লিপি আলি আল-রিদা লিখেছেন, বর্তমানে এটি কোম জাদুঘর, ইরান এ সংরক্ষিত আছে।

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. A Brief History of The Fourteen Infallibles। Qum: Ansariyan Publications। ২০০৪। পৃষ্ঠা 137। 
  2. al-Qummi, Shaykh Abbas (১৯৯৮)। "2"। The Last Journey, Translation of Manazile Akherah। Aejazali Turabhusain Bhujwala। Qum: Imam Ali Foundation। পৃষ্ঠা 62–64। 
  3. Shabbar, S.M.R. (১৯৯৭)। Story of the Holy Ka'aba। Muhammadi Trust of Great Britain। ২২ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ অক্টোবর ২০১৩ 
  4. Badruddīn, Amir al-Hussein bin (১৮ ডিসেম্বর ২০০৮)। The Precious Necklace Regarding Gnosis of the Lord of the Worlds। Imam Rassi Society। 
  5. Tabåatabåa'åi, Muhammad Husayn (১৯৮১)। A Shi'ite Anthology। Selected and with a Foreword by Muhammad Husayn Tabataba'i; Translated with Explanatory Notes by William Chittick; Under the Direction of and with an Introduction by Hossein Nasr। State University of New York Press। পৃষ্ঠা 49–50 & 138–139। আইএসবিএন 9780585078182 
  6. Donaldson, Dwight M. (১৯৩৩)। The Shi'ite Religion: A History of Islam in Persia and Irak। BURLEIGH PRESS। পৃষ্ঠা 161–170। 
  7. Parto Khorshid, 1392, Vol.1, P.77
  8. W. Madelung (১ আগস্ট ২০১১)। "ALĪ AL-REŻĀ, the eighth Imam of the Emāmī Shiʿites."Iranicaonline.org। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুন ২০১৪ 
  9. Tabasi, Mohammad Mohsen (2007)। "Imam Ridha in the narrations of Ahl al-Sunnah"Kowsar Culture (72): 67। সংগ্রহের তারিখ September 2014  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  10. Al-Kulayni Arazi, Sheikh Abu Jafar Muhammad Ibn Yaqub Ibn Isha। Al Kafi। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ নভেম্বর ২০১৫ 
  11. Tabarsi, Fazl ibn HassanElam al-Vora Be-A'lam al-Hoda। Vol. 2। পৃষ্ঠা 50। 
  12. Sykes, Sir Percy (২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৩)। A History Of Persia। Routledge। পৃষ্ঠা 2–। আইএসবিএন 978-1-136-52597-1 
  13. Dungersi, Mohammed Raza (১৯৯৬)। A Brief Biography of Imam Ali bin Musa (a.s.): al-Ridha। Bilal Muslim Mission of Tanzania। পৃষ্ঠা 6–। আইএসবিএন 978-9976-956-94-8 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা