আমাদের কুটির শিল্পের ইতিহাস
"আমাদের কুটির শিল্পের ইতিহাস" বাংলাদেশি লেখক শহীদুল জহির রচিত ছোটগল্প। ১৯৯৫ সালে রচিত গল্পটি ১৯৯৯ সালে ডুমুরখেকো মানুষ ও অন্যান্য গল্প শিরোনামে জহিরের দ্বিতীয় গল্পসংকলনে প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে ডলু নদীর হাওয়া ও অন্যান্য গল্প (২০০৪) শিরোনামে জহিরের তৃতীয় গল্পসংকলনে এটির সংশোধিত পুনমূদ্রণ প্রকাশিত হয়েছে।[১]
"আমাদের কুটির শিল্পের ইতিহাস" | |
---|---|
লেখক | শহীদুল জহির |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
বর্গ | জাদুবাস্তবতাবাদ |
প্রকাশিত হয় | ডুমুরখেকো মানুষ ও অন্যান্য গল্প (১৯৯৯) ডলু নদীর হাওয়া ও অন্যান্য গল্প (২০০৪) |
প্রকাশনার ধরন | ছোটগল্প সংগ্রহ |
প্রকাশক | শিল্পতরু প্রকাশনী |
মাধ্যম | ছাপা (শক্তমলাট) |
প্রকাশনার তারিখ | ১৯৯৯ |
পূর্ববর্তী রচনা | "কাঁটা (১৯৯৯)" |
পরবর্তী রচনা | "ধুলোর দিনে ফেরা (১৯৯৯)" |
পুঁজিবাদের আধিপত্যে তৃতীয় বিশ্বের মানুষ কিভাবে পরিবর্তিত হয়ে সমাজের সকল স্তরে কোণঠাসা হয়ে পড়ে তার উপাখ্যান এই গল্প।[২] মূলত আখ্যানধর্মী গল্প এটি।[৩]
পটভূমি
সম্পাদনাগল্পটি গল্পসংকলন গ্রন্থে প্রকাশের পূর্বে মারুফ রায়হান সম্পাদিত মাটি সাহিত্যকাগজে প্রকাশিত হয়েছিল।[৪][৫] এটি বন্ধনীমধ্যস্থ (Parenthesis) পদ্ধতিতে রচিত। আঠারো পাতার এই গল্প কোন দাঁড়ি বা পূর্ণ যতিচিহ্নের ব্যবহার ব্যতীত শুধুমাত্র একটি অসম্পূর্ণ বাক্যে মুদ্রিত। অর্থাৎ যার সমাপ্তিতে দাঁড়ি বা পূর্ণ যতিচিহ্নর বদলে কমা (,) ব্যবহার করা হয়েছে।[৫] গল্পটি প্রথমে জহিরের ডুমুরখেকো মানুষ ও অন্যান্য গল্প (১৯৯৯) সংকলনে প্রকাশিত হলেও উক্ত মূদ্রণে একটা কমা (,) দিয়ে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রকাশক তা যথারীতি "দাঁড়ি" দিয়েই মূদ্রিত করেন। ফলে, পরবর্তীতে সমাপ্তিতে শুধুমাত্র এই "কমা" দেয়ার প্রয়োজনবোধ এটি পুনমূদ্রিত হয়।[৬][৭][৮]
কাহিনীসংক্ষেপ
সম্পাদনাগল্পের স্থানিক পটভূমি পুরান ঢাকা। যেখানকার একটি মহল্লার বহুদিনের কর্মকাণ্ডের প্রতীকী বয়ান রয়েছে এতে। তরমুজ উৎপাদন থেকে ভোক্তার কাছে পৌঁছানোর প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গল্পের বয়ান তুলে ধরা হয়েছে। মূলত জাদুবাস্তবতার অন্তরালে স্থানিক এবং জনজীবনের বর্ণনায় একটি অঞ্চলের অবস্থা নির্দেশিত হয়েছে এই গল্পে। গল্পে তরমুজের অবস্থা ও গুণগত মানের ক্রমাগত পরিবর্তনের পাশাপাশি মহল্লার ও সেখানকার মানুষের পরিবর্তনের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।[২]
সমালোচনা
সম্পাদনাবহুমাত্রিক সরবতা নিয়ে গল্পটি বাংলা কথাসাহিত্যে অস্তিত্ব জানান দেয় বলে মন্তব্য করেছেন, লেখক কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর। সমালোচকের মতে গল্পে বাস্তবতার ভিতর অধিবাস্তবতা রয়েছে।[৯]
অনুবাদ
সম্পাদনাপরবর্তীতে জহির গল্পটিকে "History of Our Cottage Industry" নামে ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করেছেন,[১০] যেটি শহীদুল জহির গল্পসমগ্র (২০১৯) বইয়ে প্রকাশিত হয়েছে।[১১]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ টিপু, সাখাওয়াত (২২ মার্চ ২০১৯)। "মধ্যবিত্তের প্রপাগান্ডা অথবা ঘোড়ার ডিমের গল্প"। রাইজিংবিডি.কম। ৬ মার্চ ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০২৩।
- ↑ ক খ সোহানুজ্জামান (১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯)। "শহীদুল জহিরের 'আমাদের কুটির শিল্পের ইতিহাস': বাস্তব ও জাদুবাস্তবের দ্বৈরথ"। দেশ রূপান্তর। ৬ মার্চ ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০২৩।
- ↑ মৃধা, প্রশান্ত (১১ সেপ্টেম্বর ২০২১)। "ডলু নদীর হাওয়ায় মুখের দিকে দেখি"। সংবাদ প্রকাশ। ৬ মার্চ ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০২৩।
- ↑ শামীম, ইমতিয়ার (২৭ মার্চ ২০০৮)। "সেদিন তুষার ঝরেছিল"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ৪ মার্চ ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০২৩।
- ↑ ক খ ফাল্গুনী, অদিতি। "লেখকের প্রয়াণ: শহীদুল জহির ও আমাদের কথাশিল্পের ভুবন"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ৪ মার্চ ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০২৩।
- ↑ জাহাঙ্গীর, কামরুজ্জামান (২৯ আগস্ট ২০১৫)। "শহীদুল জহির: তার গল্পের পতনশীল মানুষেরা"। amarbarta24। ৪ মার্চ ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০২১।
- ↑ শাহাদুজ্জামান (১০ সেপ্টেম্বর ২০২১)। "শহীদুল জহিরের ঘর"। বাংলা ট্রিবিউন। ৬ মার্চ ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০২৩।
- ↑ হাসান, শফিক (৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২)। "লেখকদের রঙ্গ-রসিকতা"। বাংলা ট্রিবিউন। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ মার্চ ২০২৩।
- ↑ আলমগীর, কাজী মোহাম্মদ (ফেব্রুয়ারি ২০১০)। ইসলাম, মাইনুল; মোর্শেদ, হেলাল, সম্পাদকগণ। "বাংলা গল্পের ভাষা"। দৃক। ১।
- ↑ মজিদ, পিয়াস (২৮ জুলাই ২০১৪)। "একজন অন্যবিধরোদে পোড়াশহীদুল জহির"। ঢাকা: ইত্তেফাক। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০২১।
- ↑ রশিদ, মোহাম্মদ আবদুর, সম্পাদক (জানুয়ারি ২০১৯)। শহীদুল জহির গল্পসমগ্র। ঢাকা: পাঠক সমাবেশ। পৃষ্ঠা ৩৯০। আইএসবিএন 9789849408130। ২ মার্চ ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জানুয়ারি ২০২১।