মুহাম্মদ আবদুল্লাহিল বাকী
মুহাম্মদ আবদুল্লাহিল বাকী (১৮৮৬-১৯৫২) ছিলেন একজন বাঙালি ইসলামি চিন্তাবিদ ও স্বাধীনতা সংগ্রামী। তিনি আহলে হাদিস জামায়াতের নেতা, ভারতীয় কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা পরিষদ, পূর্ববাংলা আইন পরিষদ এবং পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য ছিলেন।[১]
মুহাম্মদ আবদুল্লাহিল বাকী | |
---|---|
জন্ম | ১৮৮৬ বর্ধমান, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত |
মৃত্যু | ১ ডিসেম্বর ১৯৫২ |
জাতিভুক্ত | বাঙালি |
অঞ্চল | ব্রিটিশ ভারত, পূর্ব পাকিস্তান |
শাখা | সুন্নি |
আন্দোলন | খিলাফত আন্দোলন, অসহযোগ আন্দোলন, আইন অমান্য আন্দোলন, পাকিস্তান আন্দোলন |
মূল আগ্রহ | রাজনীতি, ইসলাম |
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাবাকী ১৮৮৬ সালে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির বর্ধমান জেলার টুবগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পরে তিনি দিনাজপুরের নূরুল হুদায় বসবাস শুরু করেন। রংপুর জেলার বদরগঞ্জ থানার লালবাড়ি মাদ্রসায় তিনি প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেছেন। এরপর তিনি ভারতের কানপুর মাদ্রাসায় ইসলাম ও আরবি সাহিত্যের উপর উচ্চশিক্ষা অর্জন করেছেন।[১]
রাজনীতি
সম্পাদনাবাকী মাওলানা আকরম খাঁ, মাওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী ও ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর সহায়তায় আঞ্জুমান-ই-উলামা-ই-বাঙ্গালা প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি রাজনীতিতেও সক্রিয় ছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি দিনাজপুর জেলা কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন এবং খিলাফত ও অসহযোগ আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছেন।[১]
১৯৩০ সালে আইন অমান্য আন্দোলনে অংশগ্রহণের কারণে তাকে দুইবার কারারুদ্ধ করা হয়। প্রজা পার্টি থেকে তিনি ১৯৩৪ সালে ভারতীয় কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।[১]
১৯৩৭ সালে তিনি নিখিল বঙ্গ প্রজা সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ১৯৪৬ সালে তিনি মুসলিম লীগে যোগ দেন এবং পাকিস্তান আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। তিনি বঙ্গীয় আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর তিনি পূর্ববাংলা আইন পরিষদ এবং পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। এছাড়া তিনি পূর্ববাংলা মুসলিম লীগের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্বপালন করেছেন।[১]
ধর্মীয় কর্মকাণ্ড
সম্পাদনাবাকী দেশ বিভাগের পূর্বে বিভিন্ন আহলে হাদিস সম্মেলনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন। ১৯৪৬ সালে রংপুরের হারাগাছে অনুষ্ঠিত আহলে হাদিস সম্মেলনে তিনি সভাপতি ছিলেন। সেখানেই প্রতিষ্ঠা লাভ করে বাংলাদেশ জমঈয়তে আহলে হাদীস যা সে সময় নিখিল বঙ্গ ও আসাম জমঈয়তে আহলে হাদিস নামে পরিচিত ছিলো।[১]
অন্যান্য
সম্পাদনাবাকী বাংলা ছাড়াও আরবি, ফারসি, উর্দু ও ইংরেজি ভাষায় দক্ষ ছিলেন। আল-এসলাম পত্রিকায় তার প্রবন্ধ ছাপা হত।পীরের ধ্যান নামে তিনি একটি পুস্তিকা প্রণয়ন করেছিলেন।[১]
মৃত্যু
সম্পাদনামুহাম্মদ আবদুল্লাহিল বাকী ১৯৫২ সালের ১ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।[১]