আবদুল হক ফরিদী
আবদুল হক ফরিদী (২৫ মে ১৯০৩ - ৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬) একজন বাংলাদেশী শিক্ষাবিদ ও লেখক। ভাষাক্ষেত্রে তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ তিনি বাংলা একাডেমির ফেলোশিপে ভূষিত হন।[১] তার প্রকৃত নাম আ.ফ.ম আবদুল হক ফরিদী। ফরিদী ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের ইসলামী বিশ্বকোষ প্রকল্পের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন এবং বাংলাদেশ স্কাউটের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন।[২]
আবদুল হক ফরিদী | |
---|---|
জন্ম | আবুল ফারাহ মুহাম্মদ আবদুল হক ফরিদী ২৫ মে ১৯০৩ |
মৃত্যু | ৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ | (বয়স ৯২)
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
মাতৃশিক্ষায়তন | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, লিডস বিশ্ববিদ্যালয়, ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | প্রভাষক, শিক্ষাবিদ, লেখক |
পরিচিতির কারণ | ইসলামী বিশ্বকোষ |
উল্লেখযোগ্য কর্ম | মাদ্রাসা শিক্ষা: বাংলাদেশ (১৯৭৬) |
আদি নিবাস | নড়িয়া |
সন্তান | আতাউল হক |
পিতা-মাতা |
|
পরিবার | হক পরিবার |
পুরস্কার | বাংলা একাডেমি ফেলোশিপ |
প্রাথমিক ও শিক্ষা জীবন
সম্পাদনাফরিদী ১৯০৩ সালের ২৫ মে ফরিদপুর জেলার নড়িয়া উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। গ্রামের মকতবে প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন শেষে ১৯২৩ সালে তিনি রিফর্ম স্কিম (নিউ স্কিম মাদ্রাসা সিস্টেম নামে পরিচিত) থেকে হাই স্কিম এন্ট্রান্স পাস করেন ও ১৯২৫ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। উভয় পরীক্ষায় ফরিদী বাংলার সর্বোচ্চ স্কোর অর্জন করা অন্যতম শিক্ষার্থী ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী শিক্ষা বিভাগ থেকে ১৯২৮ সালে স্নাতক (সম্মান) ও ১৯২৯ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে তৎকালিন সরকারি কর্মস্থলে থাকাবস্থায় অনিয়মিত পরীক্ষার্থী হিসেবে ১৯৩৩ সালে ফার্সি সাহিত্যে দ্বিতীয়বার মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে তিনি বিলেতের লিডস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিপ্লোমা ইন এডুকেশন এবং আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয় অ্যাট আর্বানা-শ্যাম্পেইন থেকে শিক্ষা প্রশাসনে অ্যাডভান্সড সার্টিফিকেট অর্জন করেন।[২]
কর্মজীবন
সম্পাদনাফরিদী চট্টগ্রাম কলেজে প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে এডুকেশনাল সার্ভিসে উন্নীত হয়ে তিনি বর্ধমান বিভাগের মুসলিম শিক্ষার সহকারী স্কুল পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৪৭ থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৬ সালে পূর্ব পাকিস্তানের জনশিক্ষা পরিচালক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। অবসর গ্রহণের পর ফরিদী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনারারি ট্রেজারার হিসেবে নিযুক্ত হয়ে ৬ বছর দায়িত্ব পালন করেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে ফরিদী বহু বই অনুবাদ করেছিলেন। ১৯৭৬ সালে তিনি মাদ্রাসা শিক্ষার উপর মাদ্রাসা শিক্ষা: বাংলাদেশ নামে একটি বই লিখেছিলেন। ১৯৭৭ সালের অক্টোবর মাসে তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের মহাপরিচালক নিযুক্ত হয়ে ২ বছর কাজ করেন।[৩] ইফা থেকে বৃহৎ আকারে ইসলামী বিশ্বকোষ প্রণয়ন পরিকল্পনা তিনিই প্রথম গ্রহণ করেন। যা পরবর্তীকালে বাস্তব রুপ নেয়। [২] বিশ্বকোষের সম্পাদকীয় বোর্ডের সভাপতি থাকাকালীন, তাঁর জীবদ্দশায় ১৮টি খণ্ডের কাজ সম্পন্ন হয়েছিল।
গ্রন্থ
সম্পাদনামাদ্রাসা শিক্ষা: বাংলাদেশ (১৯৭৬) তাঁর মৌলিক গ্রন্থ। এছাড়া তিনি কিছু মূল্যবান গ্রন্থের অনুবাদ করেন।[২]
মৃত্যু
সম্পাদনাআবদুল হক ফরিদী ৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ সালে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।[২] তাঁর পুত্র আতাউল হক ১৮ জানুয়ারি ১৯৯৭ থেকে ১৩ ডিসেম্বর ১৯৯৮ পর্যন্ত বাংলাদেশের মন্ত্রিপরিষদের সাবেক সচিব ছিলেন।[৪]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "বাংলা একাডেমি সম্মানসূচক ফেলোশিপ"। বাংলা একাডেমি। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর, সম্পাদকগণ (২০১২)। "ফরিদী, আবদুল হক"। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ "ইসলামিক ফাউন্ডেশন-মহাপরিচালকবৃন্দ"। ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-১৫।
- ↑ "জেলার ঐতিহ্য"। shariatpur.gov.bd। ৬ আগস্ট ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০২০।