আবদুল গফুর বীর প্রতীক

বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা ও বীর প্রতীক

আবদুল গফুর (জন্ম: ১৯৫১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে। []

আবদুল গফুর
জন্ম১৯৫১
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর প্রতীক
একই নামের অন্যান্য ব্যক্তিবর্গের জন্য দেখুন আবদুল গফুর (দ্ব্যর্থতা নিরসন)

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

সম্পাদনা

আবদুল গফুরের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার রাজপাট গ্রামের পশ্চিম পাড়ায়। তার বাবার নাম হাতেম মোল্লা এবং মায়ের নাম সাজু খাতুন। আবদুল গফুরের স্ত্রীর নাম মমতাজ বেগম। তার তিন ছেলে, তিন মেয়ে। []

কর্মজীবন

সম্পাদনা

আবদুল গফুর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে হাবিলদার পদে কর্মরত ছিলেন। এই রেজিমেন্টের অবস্থান ছিল যশোর সেনানিবাসে। ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি এই রেজিমেন্টকে পাকিস্তানের শিয়ালকোটে বদলি করা হয়। সে কারণে তাদের বেশির ভাগ ছুটিতে এবং বাকিরা যশোরের চৌগাছায় শীতকালীন প্রশিক্ষণে ছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা

সম্পাদনা

আবদুল গফুরও তখন প্রশিক্ষণরত। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে প্রশিক্ষণরতদের সেনা-নিবাসে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়। ২৯ মার্চ গভীর রাতে তারা সেনানিবাসে ফেরত আসেন। পরদিন পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ২৫ বালুচ ও ২২ এফএফ রেজিমেন্ট তাদের আক্রমণ করে। তখন তারা তাদের প্রতিরোধের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এরপর তারা সেনানিবাস থেকে বের হয়ে চৌগাছায় একত্র হন এবং ক্যাপ্টেন হাফিজের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। পরে তারা ভারতে যান। ভারতে পুনর্গঠিত হওয়ার পর আবদুল গফুর প্রথম যুদ্ধ করেন জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার কামালপুরে। ৩০-৩১ জুলাইয়ে এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এরপর তারা সিলেট এলাকায় চলে আসেন। তিনি সিলেট এলাকায় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ব্রাভো কোম্পানির অধীনে আটগ্রাম, কানাইঘাট ও এমসি কলেজসহ আরও কয়েকটি স্থানে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। সম্মুখযুদ্ধে আবদুল গফুর যথেষ্ট সাহসিকতার পরিচয় দেন। ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর সিলেটের চারগ্রামে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর এক ভয়াবহ যুদ্ধ হয়। আবদুল গফুর এই যুদ্ধে অংশ নেন। মুক্তিবাহিনীর স্বতন্ত্র ব্রিগেড জেড ফোর্সের অধীন প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ব্রাভো কোম্পানি আটগ্রাম-চারঘাট-সিলেট অক্ষ ধরে চূড়ান্ত অভিযান শুরু করলে সেদিন চারগ্রামে এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়। ব্রাভো কোম্পানির মুক্তিযোদ্ধারা একপর্যায়ে পাকিস্তানি বাহিনীর তুমুল গোলাগুলি উপেক্ষা করে তাদের সেখানকার ঘাঁটির ভেতর ঢুকে পড়েন এবং ২০ জন পাকিস্তানি সেনাকে তারা বন্দী করেন। পাকিস্তানি বাহিনীর বাকি সেনারা পালিয়ে যায়। যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর পাঁচজন আহত হন। আটগ্রাম যুদ্ধে আবদুল গফুর চরম সাহসিকতা প্রদর্শন করেন। []

পুরস্কার ও সম্মাননা

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না"[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ], দৈনিক প্রথম আলো, তারিখ: ২৭-০৪-২০১১
  2. একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ৩৫৪। আইএসবিএন 9789843351449 
  3. একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (প্রথম খন্ড)। প্রথমা প্রকাশন। এপ্রিল ২০১২। পৃষ্ঠা ১৪৯। আইএসবিএন 9789843338884 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা