আজহারুল হক
ডাঃ আজহারুল হক (জন্ম: ২ মার্চ ১৯৪০ - মৃত্যু: ১৬ নভেম্বর ১৯৭১) একজন বাংলাদেশী চিকিৎসক, শহীদ বুদ্ধিজীবী। যিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন।[১][২][৩]
আজহারুল হক | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ১৬ নভেম্বর ১৯৭১ | (বয়স ৩১)
মাতৃশিক্ষায়তন | সিলেট মেডিক্যাল কলেজ স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ |
পেশা | চিকিৎসক |
পিতা-মাতা |
|
জন্ম ও প্রথমিক জীবন
সম্পাদনাআজহারুল হকের জন্ম ২ মার্চ ১৯৪০ সালে ঢাকায়। তার পৈতৃক বাস ছিল ব্রিটিশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়ার কৃষ্ণনগরের রাধানগরে। তার পিতার নাম মোঃ জহুরুল হক ও মাতার নাম ফাতেমা খাতুন। তার পিতা ছিলেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার। মাত্র ৩ বছর বয়সে ১৯৪৩ সালে তার পিতা মারা যান।[১]
শিক্ষা জীবন
সম্পাদনাআজহারুল হক তার ভাইয়ের কর্মস্থল বারবার পরিবরতনের কারণে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন সিলেট, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও বরিশালে। ১৯৬৩ সালে তিনি এলএমএফ ডিগ্রি অর্জন করেন সিলেটে মেডিক্যাল স্কুল থেকে এবং ঢাকার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ থেকে ১৯৬৮ সালে এম,বি,বি, এস সমাপ্ত করেন।[১]
কর্মজীবন
সম্পাদনাআজহারুল হক এক বছর ইন্টার্নশীপ শেষে সহকারী সার্জন পদে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ২৬ জুন ১৯৬৯ সালে কর্মজীবন শুরু করেন।[১]
মুক্তিযুদ্ধে অবদান
সম্পাদনাআজহারুল হক বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখেন। যুদ্ধ শুরু হলে তিনি হাতিরপুলে ব্যক্তিগত চেম্বারে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের গোপনে চিকিৎসা করতেন। জুলাই ১৯৭১ সালে পুলিশ তাকে ডেকে নিয়ে শাসালেও তিনি গোপনে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার চালিয়ে যান। ১৫ নভেম্বর ১৯৭১ সালে নিজ বাড়ির প্রধান ফটকে তিনি ও তার সহকর্মী এবিএম হুমায়ুন কবির হাসপাতাল থেকে তাদেরকে নিতে আসা গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। সেখান থেকে আলবদর বাহিনী দুইজনকেই ধরে নিয়ে যায়।[১]
মৃতদেহ উদ্ধার
সম্পাদনা১৬ নভেম্বর ১৯৭১ সালে আজহারুল হক ও ডাঃ এবিএম হুমায়ুন কবিরের মৃতদেহ হাত-পা ও চোখ বাঁধা অবস্থায় মতিঝিলের নটরডেম কলেজের পাশে পানিতে পাওয়া যায়। তাকে আজিমপুর কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।[১]
ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন
সম্পাদনাআজহারুল হক সাহিত্য চর্চা ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের প্রতি অনুরাগী ছিলেন। ভাইবোনদের ছাড়াও তিনি স্ত্রী সৈয়দা সালমা হককে রেখে গেছেন। সালমা হক তখন ছিলেন সন্তান সম্ভবা। ১৪ জানুয়ারি ১৯৭২ সালে তিনি এক পুত্র আশরাফুল হক নিশানের জন্ম দেন। আত্মত্যাগ ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ ডাক বিভাগ ১৪ ডিসেম্বর ১৯৯৫ সালে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে তার নামে ডাকটিকিট প্রকাশ করে।[১][৪]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ "হক, আজহারুল - বাংলাপিডিয়া"। bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-০২।
- ↑ "ডা. আজহারুল হক"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-০২।
- ↑ "Secret operation of a young surgeon"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৬-১২-১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-০২।
- ↑ "Operated like Gestapo"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৪-১০-৩০। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-০২।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ডাঃ আজহারুল হক – বাংলাপিডিয়া থেকে নেয়া