অলিভিয়া (অভিনেত্রী)
অলিভিয়া গোমেজ (জন্ম: ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৩) একজন বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেত্রী।[১] ইংরেজি মাধ্যমের বিদ্যালয়ে ছেলেবেলায় লেখাপড়া করেন। মাত্র তেরো-চৌদ্দ বছর বয়স থেকে মডেলিং করা শুরু করেন। চাকরির প্রয়োজনে পূর্বাণী হোটেলের রিসেপশনিস্ট হয়েছিলেন কিছুদিন। অলিভিয়া প্রায় ৫৩টির মতো ছবিতে নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেছিলেন।[২]
অলিভিয়া | |
---|---|
জন্ম | করাচি, পাকিস্তান | ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৩
পেশা | চলচ্চিত্র অভিনেত্রী |
পরিচিতির কারণ | চলচ্চিত্র অভিনেত্রী |
দাম্পত্য সঙ্গী | এস এম শফি (বি. ১৯৭২; মৃ. ১৯৯৫) |
জন্ম ও ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনাঅলিভিয়ার জন্ম ১৯৫৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি করাচিতে। ১৪ বছর বয়সে মডেলিং শুরু করেন। তার পিতা-মাতার আদি নিবাস ভারতের গোয়াতে। পিতা দেশ বিভাগের পর পূর্ব পাকিস্তানে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। খ্রিস্টান ধর্ম অনুসারী ছিলেন তাদের পরিবার। করাচি থেকে ঢাকায় এসে পরিবারের সঙ্গে থাকতেন মগবাজারে। তার বাবা চাকরি করতেন দ্য ডেইলি অবজারভার পত্রিকার রিডিং সেকশনে। তারা ৩ ভাই, ৪ বোন। মেজো ভাই জর্জি ছিলেন ফুটবল খেলোয়াড়। অলিভিয়া ১৯৭২ সালে চলচ্চিত্রকার এস এম শফিকে বিয়ে করেন এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। ১৯৯৫ সালে শফি মারা যান। স্বামীর মৃত্যুতে শোকাহত অলিভিয়া চলচ্চিত্র জগৎ ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে ফতুল্লার মুনলাইট টেক্সটাইল মিলের কর্ণধার হাসানকে বিয়ে করেন। বর্তমানে বসবাস করছেন ঢাকার বনানীতে। নিভৃতে জীবন যাপন করেন তিনি।[৩]
চলচ্চিত্রে আগমন
সম্পাদনাঅলিভিয়া পূর্বাণী হোটেলের রিসেপশনিস্ট থাকা অবস্থায় কয়েকটি বিজ্ঞাপন চিত্রে অভিনয় করেন।[৪] ১৯৭২ সালে অলিভিয়া এস এম শফি পরিচালিত ছন্দ হারিয়ে গেল নামক ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন। যদিও জহির রায়হান তার ছবি ‘লেট দেয়ার বি লাইট’ সিনেমাতে এবং বেবী ইসলাম ‘সঙ্গীতা’ নামের চলচ্চিত্রে তাকে নিতে চেয়েছিলেন। পরে তিনি অজানা কারণে বাদ পড়েন।[৫] ‘মাসুদ রানা’ নামের একটি চলচ্চিত্রে প্রথম অলিভিয়াকে দেখা যায় হাঁটুর ওপর বস্ত্র পরিধান করতে যা সেই সময়ে বাংলাদেশী চলচ্চিত্রে ছিল নতুন ও সাহসী ব্যাপার। তাই পরিচালকেরা তাকে গ্ল্যামার গার্ল জাতীয় হিসেবে চিহ্নিত করেন এবং ঐ জাতের চলচ্চিত্রে তাকে কাস্ট করতে থাকেন। যদিও অলিভিয়া পোশাকি, ফ্যান্টাসি এবং সামাজিক সব ধরনের চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন কিন্তু দর্শকেরা তাকে সামাজিক ছবিতে ভালোভাবে নেয়নি। ১৯৭৬ সালে ‘দি রেইন’ ছবিতে অভিনয় করে অসম্ভব খ্যাতি লাভ করেন।[৬] ১৯৭৬ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত অলিভিয়া-ওয়াসিম জুটি অসম্ভব জনপ্রিয় হয়েছিল।[৪] অলিভিয়া উত্তম কুমারের সাথে নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করেন ১৯৭৬ সালের বহ্নিশিখা চলচ্চিত্রে। বাংলাদেশি নায়িকার বিপরীতে অভিনয় করা এটিই উত্তম কুমারের প্রথম ও শেষ চলচ্চিত্র।[৭]
গ্রহণযোগ্যতা
সম্পাদনাঅলিভিয়ার স্বামী এস এম শফি তার গ্ল্যামার এবং যৌন আবেদনকে ব্যবহার করতে কার্পণ্য করেননি। তবে অলিভিয়া শক্তিশালী অভিনয়ের পরিচয় দেন রাজ্জাকের বিপরীতে ‘যাদুর বাঁশী’ ছবিতে। উল্লেখ্য ববিতা'র পর অলিভিয়াই ছিলেন দ্বিতীয় নায়িকা যিনি পশ্চিমবঙ্গের চলচ্চিত্র ‘বহ্নিশিখা’ ছবিতে অভিনয় করেন। কর্মজীবন এবং অভিনয়ের ব্যাপারে অলিভিয়া ছিলেন খামখেয়ালী, তাই তিনি বেশি দূর যেতে পারেননি। অনেকদিন বিরতির পর আশির দশকের শেষের দিকে তিনি আবার ফিরে আসতে চেয়েছিলেন চলচ্চিত্র জগতে কিন্তু তার স্বামী এস এম শফির অকাল মৃত্যুতে তা সম্ভব হয়নি।[৬] তার সর্বশেষ ছবি ছিল 'দুশমনি' যা মুক্তি পেয়েছিল ১৯৯৫ সালে।[২]
উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র
সম্পাদনা- ছন্দ হারিয়ে গেল (১৯৭২)
- জীবন সঙ্গীত
- দূর থেকে কাছে
- টাকার খেলা (১৯৭৪)
- মাসুদ রানা (১৯৭৪)
- সেয়ানা (১৯৭৬)
- দি রেইন (১৯৭৬)
- বাহাদুর (১৯৭৬)
- বহ্নিশিখা (১৯৭৬)
- তীর ভাঙ্গা ঢেউ (১৯৭৬)
- শাপমুক্তি (১৯৭৬)
- আদালত (১৯৭৭)
- যাদুর বাঁশী (১৯৭৭)
- আগুনের আলো
- পাগলা রাজা
- শীষ নাগ
- চন্দ্রলেখা(১৯৮০)
- লুটেরা
- কুয়াশা (১৯৭৭)
- শ্রীমতী ৪২০ (১৯৭৮)
- একালের নায়ক (১৯৭৮)
- বেদ্বীন (১৯৮০)
- ডার্লিং (১৯৮২)
- টক্কর (১৯৮৩)
- হিম্মতওয়ালী (১৯৮৪)
- লাল মেমসাহেব (১৯৮৪)
- কালা খুন
- আগুন পানি
- রাস্তার রাজা
- শাহজাদী গুলবাহার
- বন্ধু
- তকদিরের খেলা
- বুলবুল এ বাগদাদ
- লাখে একটা
- হাতকড়া (১৯৯৪)
- দুশমনি (১৯৯৫)
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "কিং ব দ ন্তি : ড্রিম গার্ল অলিভিয়া"। দৈনিক আমার দেশ। ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫।
- ↑ ক খ মঈনুদ্দীন, অভি (১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১১)। "চলচ্চিত্রের ড্রিম গার্ল অলিভিয়ার গল্প"। দৈনিক করতোয়া। ১৪ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১১।
- ↑ অলিভিয়া কেন চলচ্চিত্র ছাড়েন, বাংলাদেশ প্রতিদিন, ১ জুন ২০২০
- ↑ ক খ খোকন, লিয়াকত হোসেন (২২ আগস্ট ২০১০)। "কিং ব দ ন্তি : ড্রিম গার্ল অলিভিয়া"। দৈনিক আমার দেশ। ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১১।
- ↑ দৈনিক কালের কণ্ঠ, জানেন কি?, মুদ্রিত সংস্করণ, ১০ মে, ২০১২, পৃষ্ঠা-১
- ↑ ক খ রহমান, মোমিন; হোসেন, নবীন (১৯৯৮)। "বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে তারকা নায়িকাঃ পপি থেকে পপি"। অন্যদিন, ঈদ সংখ্যা। মাজহারুল ইসলাম। ২ (২৫): ৩৫০।
- ↑ অলিভিয়া কেন চলচ্চিত্র ছাড়েন, বাংলাদেশ প্রতিদিন, ১ জুন ২০২০
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনাএই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |