এম. সি. এশ্যর
মাউরিৎস কোর্নেলিস এশ্যর (ওলন্দাজ: Maurits Cornelis Escher) (লেওভার্ডন, ১৭ই জুন, ১৮৯৮ – লারন, ২৭শে মার্চ, ১৯৭২) একজন ওলন্দাজ চিত্রলেখ শিল্পী (graphic artist)। তিনি গাণিতিক চিন্তাধারায় প্রভাবিত কাঠ, পাথর ও ধাতুর খোদাইকর্মের জন্য বিখ্যাত; অসম্ভব গঠন (impossible constructions), অসীমের সন্ধান (exploration of infinity) ও স্তরীকরণ (tesselation) তার কাজের বিশিষ্ট দিক। এছাড়া তার কাজের মধ্যকার অপটিক্যাল ইল্যুশন বা দৃষ্টিবিভ্রম সংক্রান্ত কাজগুলো বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।[১]
এম. সি. এশ্যর | |
---|---|
জন্ম | Maurits Cornelis Escher ১৭ জুন ১৯৮৯ লিউওয়ারবেন, নেদারল্যান্ডস |
মৃত্যু | ২৭ মার্চ ১৯৭২ নেদারল্যান্ডস |
জাতীয়তা | ডাচ |
শিক্ষা | টেকনিক্যাল কলেজ অফ ডেলফ্ট, হারলেম স্কুল অফ আর্কিটেকচার অ্যান্ড ডেকোরেটিভ আর্টস |
পরিচিতির কারণ | অঙ্কন, ছাপচিত্র |
উল্লেখযোগ্য কর্ম |
|
দাম্পত্য সঙ্গী | Jetta Umiker (বি. ১৯২৪) |
সন্তান | ৩ |
পিতা-মাতা |
|
পুরস্কার | Knight (1955) and Officer (1967) of the Order of Orange-Nassau |
ওয়েবসাইট | www |
শৈশব
সম্পাদনাএশ্যর জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৭ জুন ১৮৯৮ সালে নেদারল্যান্ডের লীউয়ারডেন-এর একটি বাড়িতে।তিনি যে বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, তা আজ প্রিন্সেসহফ সিরামিকস যাদুঘরের অংশ। তিনি ছিলেন পুর প্রকৌশলী জর্জ আর্নল্ড এসচার এবং তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী সারা গ্লাইচম্যানের কনিষ্ঠ পুত্র। ১৯০৩ সালে, পরিবার আর্নহমে চলে যায়, যেখানে তিনি ১৯১৮ সাল পর্যন্ত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। হারলেম-এ ১৯১৯ থেকে ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত লেখাপড়া করেন স্কুল অফ আর্কিটেকচার অ্যান্ড ওর্নামেন্টাল ডিযাইন-এ, যেখানে তিনি উডকাটিং-এর উপর বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেন।[২][৩] তিনি অসুস্থ শিশু ছিলেন এবং তাকে সাত বছর বয়সে একটি বিশেষ স্কুলে স্থান দেওয়া হয়েছিল; কিন্তু তিনি দ্বিতীয় শ্রেণিতে ফেল করেন।[৪]
যদিও তিনি অঙ্কনে দক্ষতা অর্জন করেছিলেন, তবে তার গ্রেডগুলি সাধারণত কম ছিল।তিনি তেরো বছর বয়স হওয়ার আগেই তড়িৎ ও পিয়ানো শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন।[২][৩] ১৯২২ থেকে ১৯৩৪ পর্যন্ত তিনি ইতালিতে ছিলেন, এরপর ছিলেন সুইযারল্যান্ড এবং বেলজিয়াম-এ; ১৯৪১-এ তিনি নেদারল্যান্ডের বার্ন-এ স্থায়ী আবাস শুরু করেন।[১] তিনি সংক্ষিপ্তভাবে আর্কিটেকচার অধ্যয়ন করেছিলেন, তবে তিনি বেশ কয়েকটি বিষয়কে ব্যর্থ হয়েছিলেন (আংশিকভাবে ত্বকের সংক্রমণের কারণে)[৪] এবং গ্রাফিক শিল্পী স্যামুয়েল জেসুরুন ডি মেসকিটার অধীনে অধ্যয়নরত থাকার সময় সজ্জাসংক্রান্ত কলাগুলি শিখেছিলেন।[৫]
শিক্ষা জীবনের ভ্রমণ
সম্পাদনা১৯২২ সালে, তার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর, এসময় ইতালির মধ্য ফ্লোরেন্স, সান গিমিগানো, ভোল্টেরা, সিয়েনা এবং রাভেলো ভ্রমণ করে ভ্রমণ করেছিলেন।[২] তাকে ইতালির গ্রামাঞ্চল মুগ্ধ করে। আলহাম্বরা-এর জটিল নকশা গুলো তাকে নানা ভাবে প্রভাবিত করতে থাকে।[৬][৭]
পরবর্তী জীবন
সম্পাদনা১৯৩৫ সালে, ইতালির রাজনৈতিক আবহাওয়া (মুসোলিনির অধীনে) এসচারের কাছে অগ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে। রাজনীতির প্রতি তার কোনো আগ্রহ ছিলো না। সেই সময় মনে করেছিলেন নিজেকে নিজেস্ব চিন্তার মধ্যে মনোযোগী হতে হবে। তবে তিনি ধর্মান্ধতা এবং ভণ্ডামির বিরুদ্ধে ছিলেন।[৮] নেদারল্যান্ডসের ডাকঘর ১৯৩৫ সালে "এয়ার ফান্ড" এর জন্য একটি সেমি-ডাকটিকিট ডিজাইন করেছিলেন,[৯] এরপরে ১৯৪৪ সালে তিনি নেদারল্যান্ডসের স্ট্যাম্পগুলি ডিজাইন করেছিলেন। এই সবগুলিই সর্বজনীন ডাক ইউনিয়নের ৭৫ তম বার্ষিকীর জন্য ছিল; একই সময়ে সুরিনাম ও নেদারল্যান্ডস এন্টিলস-এর একটি আলাদা নকশা ব্যবহার করেছিল।[১০][১১]
১৯৬২ সালে তিনি অসুস্থয হয়ে পরেন এবং কিছুদিনের জন্য কাজ বন্ধ রাখেন।[২] পবর্তিতে তার চিত্রগুলো Escher on Escher নামে বই আকারে প্রকাশিত হয়।[১২] ১৯৫৫ সালে তাকে অর্ডার অফ অরেঞ্জ-নাসাউয়ের নাইটহডে ভূষিত করা হয়েছিল; পরে তাকে ১৯৬৭ সালে অফিসার করা হয়।[১৩] ১৯৬৯ সালে তিনি তার শেষ কাজটি সম্পূর্ণ করেন। কাঠে খোঁদায় করে ৩ গুণ প্যাঁচালো একটি নকশা তৈরি করেন যার নাম দেন সাপ। সেটাকে এমনভাবে তৈরি করেন যা একটি বৃত্তের মাঝে ঘুরে প্যাঁচে আবদ্ধ থাকে।[১৪][১৫][১৬]
গাণিতিকভাবে অনুপ্রাণিত কাজ
সম্পাদনাএশ্যর গাণিতিক ভাবে চিত্র অঙ্কন করার দিকে মনযোগী হন। এটি তার জনপ্রিয়তার খ্যাতি এবং শিল্পের জগতে তাকে যে সম্মানের এক নতুন সংযোগ স্থাপন করেছে।তার এই কাজ গুলো শিল্প জগতে এক মৌলিকত্ব এনে দেয়। তার এই কাজের গুণাবলী জনসাধারণের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয় করে তুলেছিল।[১৭]
টালিকরণ
সম্পাদনাএশ্যরের চিত্রের একটা বিশেষ দিক হলো টালিকরণ পদ্ধতি।টালিকরণ বলতে এক বা একাধিক জ্যামিতিক আকৃতির টালি দ্বারা এমনভাবে আবৃত করা বোঝায় যাতে টালিগুলির মাঝে কোন ফাকঁ বা উপরিপাতন না হয়। গাণিতিকভাবে টালিকরণ আরও উচ্চতর মাত্রার এবং নানা প্রকারের জ্যামিতিক আকৃতির মাধ্যমে প্রকাশ করা যায়।[১৮]
কিছু চিত্রকর্ম
সম্পাদনা- গাছ, কালি (১৯২০)
- আট মাথা, কাঠে খোদাই ছবি (১৯২২)
- ব্রিজ, লিথোগ্রাফ (১৯৩০)
- সাপ, কাঠে খোদাই ছবি (১৯৬৯)
চিত্রশালা
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ Escher, M(aurits) C(ornelis), Microsoft Encarta Encyclopedia Deluxe 2004, Microsoft Corporation. Version 13.0.0.0531.
- ↑ ক খ গ ঘ "Chronology"। World of Escher। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১৫।
- ↑ ক খ "About M.C. Escher"। Escher in het Paleis। ২৭ জানুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।
- ↑ ক খ Bryden, Barbara E. (২০০৫)। Sundial: Theoretical Relationships Between Psychological Type, Talent, And Disease। Gainesville, Fla: Center for Applications of Psychological Type। আইএসবিএন 978-0-935652-46-8।
- ↑ Locher, 1974. p. 5
- ↑ Roza, Greg (২০০৫)। An Optical Artist: Exploring Patterns and Symmetry। Rosen Classroom। পৃষ্ঠা 20। আইএসবিএন 978-1-4042-5117-5।
- ↑ Monroe, J. T. (২০০৪)। Hispano-Arabic Poetry: A Student Anthology। Gorgias Press LLC। পৃষ্ঠা 65। আইএসবিএন 978-1-59333-115-3।
- ↑ Ernst, Bruno, The Magic Mirror of M.C. Escher, Taschen, 1978; p. 15
- ↑ "Aircraft over the Netherlands"। Stamp catalogue। Colnect.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৩-৩১।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ Hathaway, Dale K. (২০১৫-১১-১৭)। "Maurits Cornelis Escher (1898 - 1972)"। Olivet Nazarene University। ২০১৬-০৪-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৩-৩১।
- ↑ "M.C. Escher stamps"। Stamp catalogue। Colnect.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৩-৩১।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ Escher, M. C. (১৯৮৯)। Escher on Escher: Exploring the Infinite। Harry N. Abrams। আইএসবিএন 978-0-8109-2414-7।
- ↑ "Timeline"। Escher in het Paleis। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মার্চ ২০১৮।
- ↑ Locher, 1974. p. 151
- ↑ "Snakes"। M. C. Escher। ১৪ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ নভেম্বর ২০১৫।
- ↑ Cucker, Felipe (২৫ এপ্রিল ২০১৩)। Manifold Mirrors: The Crossing Paths of the Arts and Mathematics। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 106–107। আইএসবিএন 978-0-521-42963-4।
- ↑ Locher, 1974. p. 13
- ↑ Master the GRE 2013। Peterson's। ২০১২। পৃষ্ঠা 119। আইএসবিএন 978-0-7689-3681-0।
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |