হেলোপেলটিস
হেলোপেলটিস (ইংরেজি: Helopeltis) গণ এর সকল কীট যা চায়ের গান্ধি পোকা (ইংরেজি: Tea mosquito bug) নামেই বেশি পরিচিত চা গাছের অন্যতম প্রধান অনিষ্টকারী কীটপতঙ্গ। বাংলাদেশসহ ভারতের আসাম, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, ও ইন্দোনেশিয়ায় এ পোকা ব্যাপকভাবে বিন্তৃত।[১] আকৃতিগত দিক থেকে এগুলো অনেকটা মশার মতো বলে এগুলোকে মশা-জাবপোকা (ইংরেজি: mosquito bug) বলে। চা গাছের ক্ষতি ছাড়াও এটি কোকো, তুলা ও নানা রকমের ডাল জাতীয় ফসলের ক্ষতিসাধন করে।[২]
হেলোপেলটিস | |
---|---|
চায়ের গান্ধিপোকা Helopeltis antonii | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Animalia |
পর্ব: | Arthropoda |
শ্রেণী: | Insecta |
বর্গ: | Hemiptera |
উপবর্গ: | Heteroptera |
পরিবার: | Miridae |
উপপরিবার: | Bryocorinae |
গোত্র: | Monaloniini |
গণ: | Helopeltis Signoret, 1858 |
Species | |
14 currently recognized:
|
আকার আকৃতি
সম্পাদনাচায়ের গান্ধি পোকা আকারে লম্বা ধরনের। দেহ গড়ে ৬ মি.মি. লম্বা। মাধার রঙ জলপাই সবুজ ও কালো; ব্ক্ষাঞ্চল হালকা হলুদ ও কালো; উদরাঞ্চল হলুদ ও কালচে সবুজ রঙের। এগুলোর সামনের ডানা সামান্য পুরু ও স্বচ্ছ। শুঙ্গ বেশ লম্বা ও সূত্রাকার। স্কুলেটামের উপরিভাগে ড্রামের কাঠির মতো এক প্রকার কাঁটা বর্তমান।[৩] পূর্নবয়স্ক পোকার দেহে চারটি ডানা থাকে। এর সাহা্যে এরা উড়তে পারে।[২]
জীবনবৃত্তান্ত
সম্পাদনাপূর্নাঙ্গ স্ত্রী পোকা একটি একটি করে এক সাথে প্রায় ৫০০ টি পর্যন্ত ডিম পাড়ে।[২] ডিমগুলো ডালের নরম অংশ, পাতার মধ্যশিরা এবং পত্রাক্ষে আটকে থাকে। ডিমগুলো লম্বা শসার আকৃতির এবং এক প্রান্তে দুটি লোম থাকে। গ্রীষ্মকালে ৫-১০ দিন ও শীতকালে ১১-২৭ দিনের মধ্যে ডিম ফুটে নিম্ফ বের হয়।[২] এরা দেখতে অনেকটা মাকড়সার মতো হয়। নিম্ফ অবস্থায় এগুলো চলাফেরা করতে পারে। নিম্ফের দেহ ৪.৫ মিমি. লম্বা। নিম্ফ প্রথমে ফ্যাকাশে হলুদ বর্নের দেখায়। ধীরে ধীরে এগুলো সবুজাফ-হলুদ বর্ণ ধারণ করে। পর পর পাঁচ বার খোলস ত্যাগ করার পর নিম্ফ পূর্ণবয়স্ক কীটপতঙ্গে পরিণত হয়। বাংলাদেশে চায়ের গান্ধিপোকা বছরে প্রায় ১৮ বার বংশবিস্তার করে।[২][৪]
ক্ষতির প্রকৃতি
সম্পাদনাগান্ধি পোকা সাধারনত চা গাছের কচি ডগা ও পাতার বেশি ক্ষতি করে।[১] এগুলো ডগা ও পাতায় অসংখ্য ছিদ্র করে রস চুষে খায়। একটি পোকা দৈনিক গড়ে দুটি কচি ডগা নষ্ট করে।[৫]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ ভট্টাচার্য, গোপালচন্দ্র (১৯৮৬)। "কৃষি কীটত্ত্ব"। বাংলার কীটপতঙ্গ। কোলকাতা, ভারত: দে’জ পাবলিশিং।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ বিশ্বাস, বিবেকানন্দ (জুন ২০১৪)। "কৃষি কীটতত্ত্ব"। ওয়াহাব, আবদুল। আধুনিক কীটতত্ত্ব। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলা একাডেমী। পৃষ্ঠা ৫১৯। আইএসবিএন 984-07-5355-X।
- ↑ Stonedahl GM (1991) Oriental species of Helopeltis (Heteroptera: Miridae): a review of economic literature and guide to identification. Bulletin of Entomological Research 81: 465–490
- ↑ Schmitz G (1968) 'Monographie des especes Africaines du genre Helopeltis Signoret (Heteroptera, Miridae) avec un exposedes problemes relatifes aux structures genitales', Ann. Mus. Roy. Afr. Cent. 168: 247 pp.
- ↑ Entwistle PF (1972) Pests of Cocoa, Longmans, London, 779 pp