হ্যান্স এবলিং

অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার
(Hans Ebeling থেকে পুনর্নির্দেশিত)

হ্যান্স আরভিন এবলিং, এমবিই (ইংরেজি: Hans Ebeling; জন্ম: ১ জানুয়ারি, ১৯০৫ - মৃত্যু: ১২ জানুয়ারি, ১৯৮০) ভিক্টোরিয়ার অ্যাভোকা এলাকায় জন্মগ্রহণকারী অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও প্রশাসক ছিলেন। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৩৪ সালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

হ্যান্স এবলিং
১৯৩৪ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে হ্যান্স এবলিং
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামহ্যান্স আরভিন এবলিং
জন্ম(১৯০৫-০১-০১)১ জানুয়ারি ১৯০৫
অ্যাভোকা, ভিক্টোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া
মৃত্যু১২ জানুয়ারি ১৯৮০(1980-01-12) (বয়স ৭৫)
পূর্ব বেন্টলেই, ভিক্টোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
ভূমিকাবোলার, প্রশাসক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
একমাত্র টেস্ট
(ক্যাপ ১৫২)
১৮ আগস্ট ১৯৩৪ বনাম ইংল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৭৩
রানের সংখ্যা ৪৩ ১০০৫
ব্যাটিং গড় ২১.৫০ ১৪.১৫
১০০/৫০ ০/০ ০/৩
সর্বোচ্চ রান ৪১ ৭৬
বল করেছে ৫৫ ১৬০৮৫
উইকেট ২১৭
বোলিং গড় ২৯.৬৬ ২৬.৫৮
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৩/৭৪ ৭/৩৩
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ০/০ ৩৮/০
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে ভিক্টোরিয়া দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ডানহাতে ব্যাটিং করতেন হ্যান্স এবলিং

শৈশবকাল সম্পাদনা

আর্থার জন ক্লস ফ্রেডরিক এবলিং (১৮৬৩-১৯১০)[১] ও মেরি গ্রেস এবলিং (১৮৬৯-১৯৪৮, বিবাহপূর্ব মোচেট) দম্পতির সন্তান ছিলেন তিনি।[২] ১৯১৯ থেকে ১৯২২ সময়কালে কলফিল্ড গ্রামার স্কুলে পড়াশোনা করেন।[৩] বিদ্যালয়ে অবস্থানকালে প্রথম একাদশ ক্রিকেট দল, ফুটবল প্রথম অষ্টাদশ ও দূরপাল্লা দলে খেলতেন।[৪]

৪ নভেম্বর, ১৯২১ তারিখে ক্যাম্বারওয়েল গ্রামার স্কুলের জে. ম্যানিংয়ের সাথে সম্মিলিত অ্যাসোসিয়েটেড গ্রামার স্কুলে স্পোর্টস প্রতিযোগিতায় মুক্ত দৌড়ে অংশ নেন।[৫] জুন, ১৯২২ সালে ক্যাম্বারওয়েল গ্রামারের বিপক্ষে একটি খেলায় ১৩ গোল করেছিলেন।[৬]

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

১৯২৩-২৪ মৌসুম থেকে ১৯৩৭-৩৮ মৌসুম পর্যন্ত হ্যান্স এবলিংয়ের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। দীর্ঘদেহের অধিকারী হ্যান্স এবলিং সুতীক্ষ্ণ ইন-সুইঙ্গার সহযোগে মিডিয়াম-পেস বোলিং করতেন। এছাড়াও, বলকে উভয় দিক দিয়েই মারতে পারতেন। অধিকন্তু, আক্রমণধর্মীয় কার্যকরী ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিলেন। ড্রাইভ ও হুকে সবিশেষ দক্ষ ছিলেন।

চার বছর শেফিল্ড শিল্ডে ভিক্টোরিয়ার পক্ষে খেলেন। তন্মধ্যে, ১৯৩৪ ও ১৯৩৮ সালে দুইবার চ্যাম্পিয়নশীপ দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। মেলবোর্ন ক্রিকেট ক্লাবকে (এমসিসি) চারবার প্রিমিয়ারশীপ প্রতিযোগিতায় নেতৃত্ব দিয়েছেন।

১৯৩৩ সালে ডগলাস জারদিনের নেতৃত্বাধীন দলের বিপক্ষে সাফল্য লাভের প্রেক্ষিতে ১৯৩৪ সালে ইংল্যান্ড গমনের সুযোগ পেয়েছিলেন। হার্বার্ট সাটক্লিফবব ওয়াটসহ তিনজনের উইকেট পান ও ব্যাট হাতে ৬৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। ফলশ্রুতিতে ভিক্টোরিয়া দল খেলাটিকে ড্রয়ের দিকে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিল।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে একটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন হ্যান্স এবলিং। ১৮ আগস্ট, ১৯৩৪ তারিখে ওভালে স্বাগতিক ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এটিই তার একমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল। এরপর আর তাকে কোন টেস্টে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি।

ইংল্যান্ডে তিনি যথেষ্ট সফলতার স্বাক্ষর রাখেন। স্পিননির্ভর অস্ট্রেলীয় দলটিতে ২০.৮০ গড়ে ৬২ উইকেট পান। ওভালে সিরিজের চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। এটিই তার একমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল। ওয়ালি হ্যামন্ডসহ তিনজনের উইকেট পান। এছাড়াও, দ্বিতীয় ইনিংসে বিল ও’রিলির সাথে শেষ উইকেট জুটিতে চল্লিশ মিনিটে ৫৬ রান তুলেন। নিজে করেন ৪১ রান।

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে স্কোয়াড্রন লিডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এমসিসি’র পরিচালনার পরিষদের সদস্য হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭৭ সালে এসসিজিতে শতবার্ষিকী টেস্টে ইংল্যান্ড - অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার খেলা আয়োজন অংশ নেন। তার চিন্তাধারার ফসলরূপে অস্ট্রেলিয়ায় ১৯৭৭ সালে শতবার্ষিকী টেস্ট পরবর্তীতে বাস্তবায়িত হয়েছিল। মৃত্যুকালীন মেলবোর্ন ক্রিকেট ক্লাবের সভাপতির দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন।

কলফিল্ড গ্রামার স্কুলে ক্রিকেট সহায়তাকারী অভিভাবকদের সংস্থার নাম তার সম্মানার্থে রাখা হয়। একমাত্র কলফিল্ড গ্রামারিয়ান হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করার গৌরব অর্জন করেন। ১৯৯৯ সালে মেলবোর্ন ক্রিকেট ক্লাবের উদ্যোগে প্রণীত শতাব্দীর সেরা দলে তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন হ্যান্স এবলিং। ৫ অক্টোবর, ১৯৩৬ তারিখে মাইরা আইলিন কনরি নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন।[৭] ১২ জানুয়ারি, ১৯৮০ তারিখে ৭৫ বছর বয়সে ভিক্টোরিয়ার পূর্ব বেন্টলেই এলাকায় হ্যান্স এবলিংয়ের দেহাবসান ঘটে।[৮]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

গ্রন্থপঞ্জী সম্পাদনা