ব্যারাকপুর
ব্যারাকপুর (দাপ্তরিক নাম বারাকপুর) পশ্চিমবঙ্গের ৩২তম জনবহুল শহর ও ব্যারাকপুর মহকুমার সদর কার্যালয়। শহরটি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগণা জেলার একটি পৌরসভা এলাকা।
ব্যারাকপুর বারাকপুর | |
---|---|
শহর | |
উপর থেকে ঘড়ির কাঁটার দিকে: অন্নপূর্ণা মন্দির, রেস কোর্স ট্র্যাক গ্রাউন্ড, সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি রোড, ব্যারাকপুর রেলওয়ে স্টেশন, মঙ্গল পাণ্ডে উদ্যান ও ব্যারাকপুর ট্রাঙ্ক রোড | |
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২২°৪৬′ উত্তর ৮৮°২২′ পূর্ব / ২২.৭৬° উত্তর ৮৮.৩৭° পূর্ব | |
রাষ্ট্র | ভারত |
রাজ্য | পশ্চিমবঙ্গ |
জেলা | উত্তর ২৪ পরগণা |
অঞ্চল | বৃহত্তর কলকাতা |
সরকার | |
• ধরন | পৌরসভা |
• শাসক | বারাকপুর পৌরসভা |
• চেয়ারম্যান | উত্তম দাস, (এআইটিসি)[১][২] |
• এমপি | অর্জুন সিং, (বিজেপি) |
• এমএলএ | রাজ চক্রবর্তী, (এআইটিসি] |
• পুলিশ কমিশনার | মনোজ কুমার বর্মা, আইপিএস |
• উপনগরপাল | শ্রীহরি পাণ্ডে, আইপিএস |
আয়তন | |
• মোট | ১০.৬১ বর্গকিমি (৪.১০ বর্গমাইল) |
উচ্চতা | ১৫ মিটার (৪৯ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ১,৫২,৭৮৪ |
• জনঘনত্ব | ১৪,০০০/বর্গকিমি (৩৭,০০০/বর্গমাইল) |
বিশেষণ | ব্যারাকপুরবাসী |
ভাষা | |
• দাপ্তরিক | বাংলা, হিন্দি[৩][৪] |
• অতিরিক্ত ভাষা | ইংরেজি[৪] |
সময় অঞ্চল | আইএএসটি (ইউটিসি+৫:৩০) |
পিন | ৭০০১২০, ৭০০১২১, ৭০০১২২, ৭০০১২৩ |
টেলিফোন কোড | +৯১ ৩৩ |
যানবাহন নিবন্ধন | ডব্লিউবি-২৩/ডব্লিউবি-২৪ |
লোকসভা কেন্দ্র | ব্যারাকপুর |
বিধানসভা কেন্দ্র | ব্যারাকপুর |
পুলিশ এখতিয়ার | ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট |
ওয়েবসাইট | www |
ইতিহাস
সম্পাদনাব্যারাকপুর অঞ্চলের পুরোনো নাম চানক।ব্যারাকপুর ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের একটি প্রাচীন শহর। গঙ্গাতীরবর্তী এই শহরটি সিপাহী বিদ্রোহ ১৮৫৭ বা ভারতীয় জাতীয় মহাবিদ্রোহের কারণে বিখ্যাত। বিপ্লবী মঙ্গল পাণ্ডে ছিলেন প্রথম প্রতিবাদী, যিনি ব্যারাকপুর থেকে ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে তার প্রতিবাদ শুরু করেছিলেন। প্রকৃতপক্ষে, এই একমাত্র ঘটনা যা ব্যারাকপুরকে আন্তর্জাতিক ইতিহাসে স্থান দিয়েছে।
১৮৫৭ সালের এই বিদ্রোহের সাথে সংযুক্ত থাকা ছাড়াও, বহু সাহিত্যিক এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিদের একটি প্রিয় স্থান ছিল। রাজনীতিবিদ ও দেশনেতা রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বহু দিন ব্যারাকপুরে ছিলেন। তিনি যেই বাড়িটিতে থাকতেন তা এখন নেতাজী মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়েছে, এছাড়াও এই একই জায়গায় তার নামে একটি মহাবিদ্যালয় আছে।
পর্যটন
সম্পাদনাব্যারাকপুর বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে। ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহ দ্বারা সমৃদ্ধ, ব্যারাকপুর বহু পর্যটকদের আকর্ষনীয় স্থান।
ব্যারাকপুরের দর্শনীয় স্থানগুলি হলো
- গান্ধী মিউজিয়াম।
- গান্ধী ঘাট।
- আদ্যাপীঠ মন্দির।
- লক্ষ্মী নারায়ণ মন্দির।
- লাট বাগান।
- অন্নপূর্ণা মন্দির।
- উদয়ন বাটি।
- হনুমান মন্দির।
- প্রেমচাঁদ শত বার্ষিকী ভবন।
- নন্দ কিশোর মন্দির।
চিড়িয়াখানা
সম্পাদনাএশিয়ার প্রথম চিড়িয়াখানা হয়েছিল ব্যারাকপুরে। উনিশ শতকে লর্ড ওয়েলেসলির তৈরি সেই চিড়িয়াখানা। অপূর্ব গথিক স্থাপত্যে তৈরি এক পাখিশালা রয়েছে।
১৮০২-১৮০৩ খ্রিষ্টাব্দ। তখনও পর্যন্ত সারা পৃথিবীতে সাধারণ দর্শকদের জন্য চিড়িয়াখানা খোলা হয়েছিল মাত্র তিনটি। প্রথমটি ভিয়েনায় (১৭৬৫), দ্বিতীয়টি মাদ্রিদে (১৭৭৫), তৃতীয়টি প্যারিসে (১৭৯৫)। এমনকী ‘জ়ুলজিক্যাল সোসাইটি অব লন্ডন’ তখনও তৈরি হয়নি (তৈরি হবে ১৮২৬ সালে)। লন্ডন চিড়িয়াখানাও তখনও দূর অস্ত্, তার শুরু ১৮২৮ সালে, আর সেখানে সাধারণ দর্শকের ঢুকতে তখনও ৪৩ বছর দেরি। রাজারাজড়াদের চিড়িয়াখানায় প্রজাদের প্রবেশাধিকার নেই। ভাবলে অবাক লাগে, এমন এক সময়ে কলকাতা থেকে ষোলো মাইল উত্তরে, ব্যারাকপুরে খোলা হল ভারতের প্রথম, এশিয়ার প্রথম আর খুব সম্ভবত পৃথিবীর চতুর্থ এই চিড়িয়াখানা, যেখানে সাধারণ মানুষের প্রবেশাধিকার ছিল। বিশ্বের প্রকৃতি-চর্চার ইতিহাসে বৈপ্লবিক এই কাজটি করেছিলেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির এক উদ্যোগী পুরুষ, ভারতের গভর্নর জেনারেল লর্ড রিচার্ড ওয়েলেসলি, প্রথম মার্কাস ওয়েলেসলি।[৫]
ব্যারাকপুর পার্ক
সম্পাদনা১৮০০ সাল থেকে ব্যারাকপুরে গঙ্গাতীরে তৈরি করা শুরু করলেন বিলিতি ধাঁচের এক বাহারি উদ্যান— ‘ব্যারাকপুর পার্ক’। তিন বছরের মধ্যেই সেই পার্কের আয়তন গিয়ে দাঁড়াল ১০০৬ বিঘা। সেই পার্ককে এখন আমরা ‘লাটবাগান’ বা ‘মঙ্গল পান্ডে উদ্যান’ নামে জানি। পার্কে আর এক প্রাসাদ তৈরির কাজ যখন চলছে, তখন অস্থায়ী ভাবে থাকার জন্য গঙ্গার তীর ঘেঁষে বানালেন একটি বড় দোতলা বাড়ি। প্রাসাদ আর শেষ হয়নি, ক্রমে ওই দোতলা বাড়িটিই হয়ে উঠল ‘ব্যারাকপুর গভর্নমেন্ট হাউস’, সব গভর্নর জেনারেল আর ভাইসরয়দের প্রিয় ‘কান্ট্রি হাউস’। কিছু দিন আগে পর্যন্তও এই বাড়িতেই ছিল পুলিশ হাসপাতাল। ক্যালকাটা গভর্নমেন্ট হাউস থেকে তার প্রিয় ব্যারাকপুর পার্কের বাড়িতে সহজে যাতায়াতের জন্য ওয়েলেসলি বানিয়ে ফেললেন শ্যামবাজার থেকে ব্যারাকপুর পর্যন্ত টানা এক রাস্তা, এখন যার নাম বি টি রোড।
যোগাযোগ
সম্পাদনাকলকাতার সংগে ব্যারাকপুর শহর ট্রেন ও বাসযোগে সুসংযুক্ত। শিয়ালদহ রেলওয়ে স্টেশন হতে মেইন লাইনের ট্রেনে ব্যারাকপুর, নৈহাটি, কল্যাণী সীমান্ত, রানাঘাট, কৃষ্ণনগর, শান্তিপুর ও গেদে লোকালে ব্যারাকপুর আসা যায়। ব্যারাকপুর ট্রাঙ্ক রোড (বিটি রোড) দ্বারা সরাসরি সড়কপথে ব্যারাকপুর আসা যায় কলকাতা থেকে। শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড় থেকে ব্যারাকপুর চিড়িয়ামোড়ের দূরত্ব কম বেশি ১৯ কিমি. । এছাড়া কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে ব্যারাকপুর শহরের নিকট ওয়ারলেস গেট দিয়ে গেছে।
জনসংখ্যার উপাত্ত
সম্পাদনাভারতের ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুসারে ব্যারাকপুর শহরের জনসংখ্যা হল ১৪৪,৩৩১ জন।[৬] এর মধ্যে পুরুষ ৫৩% এবং নারী ৪৭%।
এখানে সাক্ষরতার হার ৮১%। পুরুষদের মধ্যে সাক্ষরতার হার ৮৪% এবং নারীদের মধ্যে এই হার ৭৬%। সারা ভারতের সাক্ষরতার হার ৫৯.৫%, তার চাইতে ব্যারাকপুর এর সাক্ষরতার হার বেশি।
এই শহরের জনসংখ্যার ৮% হল ৬ বছর বা তার কম বয়সী।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "- Best Municipality in West Bengal"। bkpmuty.in। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০২২।
- ↑ Official District Administration site ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৫ জানুয়ারি ২০০৭ তারিখে
- ↑ "52nd Report of the Commissioner for Linguistic Minorities in India" (পিডিএফ)। Nclm.nic.in। Ministry of Minority Affairs। পৃষ্ঠা 85। ২৫ মে ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০২২।
- ↑ ক খ "Fact and Figures"। Wb.gov.in। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০২২।
- ↑ "Barrackpore Zoo"।
- ↑ "ভারতের ২০০১ সালের আদমশুমারি" (ইংরেজি ভাষায়)। Archived from the original on ১৬ জুন ২০০৪। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ২৫, ২০০৬।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনাপশ্চিমবঙ্গের অবস্থান বিষয়ক এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |