বাদ (রীতি)

আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের পাশতুন গোত্রের আপোষের একটি প্রথা
(Baad (practice) থেকে পুনর্নির্দেশিত)

বাদ রীতি বা বাদ প্রথা হলো আসামির পরিবারের কোন নারীকে, স্ত্রী বা দাসী হিসাবে ভিকটিম বা ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে দিয়ে আপোষ করার একটি রীতি[১] এটি এখনও আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানের কিছু এলাকায়, বিশেষত কোচীদের মধ্যে প্রচলিত রয়েছে।[২] যদিও আফগানিস্তানের আইনে এই বাদ রীতি অবৈধ, এই রীতির ভুক্তভোগীদের অনেকেই তাদের অধিকার জানে না।[৩]

বর্ণনা সম্পাদনা

একজন ব্যক্তি কোনো গুরুতর অপরাধ করার পর, প্রবীণদের একটি পরিষদ জিরগা কে ডাকা হয় (জিরগা একটি প্রবীনদের নিয়ে গঠিত পরিষদ যেখানে যারা পাশতুন আফগান বা পাঠানদের নিয়ম অনুসারে বিচার করে থাকে), তারা শাস্তির পরিমাণ ঠিক করে থাকে। ছোট বা কম অপরাধের শাস্তি হয় অর্থ বা গবাদি পশু জরিমানা হিসাবে দিয়ে। হত্যার মতো বড় অপরাধের জন্য সাধারণত শাস্তি হিসাবে অপরাধীর পরিবারের একটি নারীকে ভিকটিমের বা ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে দিতে হয়।[১] বা বলা যায়, জোর করে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের কারো সাথে আসামি পরিবারের মেয়ের জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী সে নারী তার নতুন পরিবারের সদস্য বা গৃহকর্মী হিসাবে গৃহীত হয় এবং সমান অধিকার পায়। তবে এইসব নারীরা সব সময় নতুন পরিবারে সমান অধিকার পায় না এবং নারী নির্যাতনের শিকার হয়।[৩]

বাদ রীতির সাথে ইসলামের বা ইসলামিক নিয়ম কানুনের কোন সম্পর্ক নেই। বরং এটি ইসলাম বিরোধী ও অবৈধ্য হিসাবে গন্য করা যায়।[৩] কারণ হাদিসে বলা আছে, নারীদের নির্দেশ ছাড়া তাদের বিয়ে দেওয়া যাবে না, এবং কুমারী নারীর ক্ষেত্রে তাদের বিয়েতে অনুমতি নিতে হবে; সে যদি নিরব থাকে তা সম্মতি হিসাবে গন্য হবে। (লজ্জাকে সম্মান করে) - [বুখারী ৬৪৫৫, মুসলিম ও অন্যান্য][৪]

আফগানিস্তানের আইন সম্পাদনা

বাদ ১৯৭৬ আফগান দণ্ডবিধির ৫১৭ ধারা অনুযায়ী একটি ফৌজদারি অপরাধ। কিন্তু অনুচ্ছেদটি কেবল তখনই প্রযোজ্য হয় যখন ১৮ বছরের বেশি বয়সী একজন বিধবা এবং নারী বাদের মাধ্যমে দেওয়া হয়। আফগান দণ্ডবিধিতে অপরাধীদের সর্বোচ্চ ২ বছর শাস্তির নিয়ম রয়েছে। যদিও এখনো কোন জিরগা বা প্রবীন শাস্তি নির্ধারককে এই কারণ গ্রেফতার পর্যন্ত করা হয়নি। বাদ রীতির চর্চা বেশিরভাগ আফগানিস্তানের কুনার, হেলমান্দ, বাল্‌খ প্রদেশে দেখা যায়।[১][৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Afghanistan: Stop Women Being Given as Compensation"। Human Rights Watch। মার্চ ৮, ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৫-২৬ 
  2. Alissa Rubin, সম্পাদক (ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১২)। "For Punishment of Elder's Misdeeds, Afghan Girl Pays the Price"The New York Times 
  3. "Afghan Girls Suffer for Sins of Male Relatives"Wahida Paykan। Institute for War and Peace Reporting। ২৬ মার্চ ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৫-২৬ 
  4. United Nations Office of Drugs and Crime (2009), Justice for Children in Conflict with the Law ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে, pp. 50, 358-361

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা