১৯৬২ রাজশাহীর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা

১৯৬২ সালে বিএলটি এর সহযোগিতায় তৎতালীন পাকিস্তান এর রাজশাহী অঞ্চলের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সংঘটিত হয়। এই দাঙ্গা ২৩ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে চলে মে মাসের প্রথম দিক পর্যন্ত চলে।[১]

ঘটনাক্রম

সম্পাদনা

২২ এপ্রিল ১৯৬২ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর লেফট্যেনেন্ট জেনারেল মোহাম্মদ আজম খান রাজশাহীতে আসেন এবং বিকেলে স্থানীয় ঈদগাহ ময়দানে এক বিরাট জনসভায় জ্বালাময়ী বক্তৃতা করেন। তাঁর এই বক্তব্য তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাজশাহীর দাঙ্গা উত্তেজনাকে উস্কে দিয়েছিল। ২৩ এপ্রিল ১৯৬২ সাল থেকে রাজশাহীপাবনা জেলায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হলেও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বিভিন্ন কারণে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাজশাহী জেলায় বিরাজ করছিল।[২]

এ দাঙ্গার প্রধান একটি কেন্দ্র ছিল রাজশাহীর কোটি স্টেশন থেকে ৮ কিলোমিটার দূরত্বে খুজুরি পাড়া ইউনিয়নের দারুসা।

ভারতের মালদহমুর্শিদাবাদে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা এই উত্তেজনার পেছনে কাজ করছিল। ১৯৬২ সালের ২২ মার্চ ভারতের পশ্চিমবাংলার মালদহ জেলায় সাঁওতাল মুসলিমদের মধ্যে একটি দাঙ্গা সংঘটিত হয় এই দাঙ্গা সাঁওতালদের সাথে মুসলিমদের দাঙ্গা হিসেবে আখ্যায়িত হলেও মালদহ থেকে বাংলাদেশের রাজশাহীতে সে সময়ে আগত মুসলিমদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে তা হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা নামে খ্যাত।[৩]

প্রতিক্রিয়া

সম্পাদনা

ভারতের মালদহ মুর্শিদাবাদ জেলায় দাঙ্গার প্রতিক্রিয়ায় বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। মালদহের দুদফার দাঙ্গার পরপরই রাজশাহীতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সূত্রপাত ঘটে এবং রাজশাহীতে এ দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা। পুলিশ লাইনের পাশে অবস্থিত ঘোষপাড়ায় দাঙ্গাকারীরা হামলা ও লুটপাট করে।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. রহমান, সাদিকুর (২০২০)। রাজশাহীর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ১৯৬২, দারুশার নির্মমতা। ২৭৪/২, শহিদ জননী জাহানারা ইমাম স্মরণি, এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা ১২০৫: দ্যু প্রকাশন। 
  2. কুমার ঘোষ, সুনীতি (২০১২)। বাংলা বিভাজনের অর্থনীতি রাজনীতি। ঢাকা, বাংলাদেশ: ঢাকা জাতীয় সাহিত্য প্রকাশ। পৃষ্ঠা ১৩৭। 
  3. উপর, বদরুদ্দিন (২০১১)। সাম্প্রদায়িকতা। ঢাকা, বাংলাদেশ: মাওলা ব্রাদার্স। পৃষ্ঠা ১১।