হায়াতে শায়খুল হাদিস
হায়াতে শায়খুল হাদিস মাওলানা জাকারিয়া (র.) (উর্দু: حضرت شیخ الحدیث مولانا محمد زکریا کاندھلویؒ) শায়খুল হাদিস হিসেবে প্রসিদ্ধ ভারতীয় আলেম জাকারিয়া কান্ধলভিকে নিয়ে রচিত আবুল হাসান আলী হাসানী নদভীর একটি উর্দু জীবনী সাহিত্য।[১][২] ১৯৮২ সালে লখনউয়ের মাকতাবায়ে ইসলাম থেকে বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়। লেখকের সাথে কান্ধলভির সম্পর্কের সূচনা ১৯৪০ সালের শুরুর দিকে। তখন থেকে তিনি কান্ধলভিকে আধ্যাত্মিক শিক্ষক মান্য করতেন। কান্ধলভি মৃত্যুর পূর্বে ৭ খণ্ডে আপবীতি নামে তার আত্মজীবনী লিপিবদ্ধ করেছিলেন। সেই আপবীতিকে ভিত্তি করে লেখক বইটি রচনা করেন। বইটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য উর্দু ও ফার্সি কবিতার ব্যবহার। ১৯৮৭ সালে বইটির বঙ্গানুবাদ করেন আব্দুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদী, যা প্রকাশ করে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ।[৩]
লেখক | আবুল হাসান আলী হাসানী নদভী |
---|---|
মূল শিরোনাম | উর্দু: حضرت شیخ الحدیث مولانا محمد زکریا کاندھلویؒ |
দেশ | ভারত |
ভাষা | উর্দু |
বিষয় | মুহাম্মদ জাকারিয়া কান্ধলভি |
ধরন | জীবনী |
প্রকাশিত | ১৯৮২ |
প্রকাশক | মাকতাবায়ে ইসলাম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ |
মিডিয়া ধরন | শক্তমলাট |
পৃষ্ঠাসংখ্যা | ৩২০ |
আইএসবিএন | ৯৮৪-০৬-০৫৪৮-৮ বাংলা সংস্করণ |
ওসিএলসি | ৮৫৬৫৬৯৫০৭ |
২৯৭.০৯ | |
ওয়েবসাইট | abulhasanalinadwi.org |
উৎস
সম্পাদনাতাবলিগ জামাতের দ্বিতীয় আমির মুহাম্মদ ইউসুফ কান্ধলভির জীবনীগ্রন্থ "সাওয়ানেহে ইউসুফ" রচনার সময় তার একটি অংশ ছিল ইউসুফ কান্ধলভির অন্যতম সহকারী মুহাম্মদ জাকারিয়া কান্ধলভির একটি জীবনবৃত্তান্ত রচনা, যার দায়িত্ব পড়ে আবুল হাসান আলী হাসানী নদভীর উপর। সাওয়ানেহে ইউসুফে ৬৪ পৃষ্ঠাব্যাপী এই জীবনবৃত্তান্ত লিপিবদ্ধ হয়। পরবর্তীতে সেই জীবনবৃত্তান্ত ও কান্ধলভির রচিত আপবীতিকে ভিত্তি করে লেখক বক্ষমান গ্রন্থটি রচনা শুরু করেন। এছাড়াও তার জীবনকাহিনীর প্রধান উৎস কান্ধলভির উর্দু রচনাবলী ও তার বিশিষ্ট শিষ্যদের লিখিত সফরসমূহের বিবরণ, বিশেষত সেসব হস্তলিখিত উপাদান যা তার দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ড সফরকালে লিখিত হয়। অন্তিম রোগভোগ ও মৃৃত্যু সম্পর্কিত বিবরণের উৎস মদিনায় কান্ধলভির একান্তই ঘনিষ্ঠ জনদের কাছে লিখিত বিবরণ ও পত্রাদি। পূর্বপুরুষগণের বংশ বর্ণনার ভিত্তি নদভীর লিখিত আরেক গ্রন্থ মুহাম্মদ ইলিয়াস কান্ধলভির জীবনী ও ইহতেশামুল হাসান কান্ধলভির "হালাতে মাশায়েখে কান্ধলা"।[৪]
বিষয়বস্তু
সম্পাদনালেখক মুহাম্মদ জাকারিয়া কান্ধলভির বংশবৃত্তান্ত প্রদানের মাধ্যমেই গ্রন্থটির সূচনা করেন। তারপরের অধ্যায়ে আলোচনা করেন তার জন্ম ও ছাত্রজীবন। এ অধ্যায়ে তিনি খলিল আহমদ সাহারানপুরির হাতে কান্ধলভির বায়আত গ্রহণ ও বজলুল মজহুদ রচনায় তার অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ করেন। তার পরবর্তী অধ্যায়ে কর্মজীবনের আলোচনায় সাহারানপুরির নিকট থেকে খেলাফত লাভের আলোচনা দিয়ে অধ্যায়টি সমাপ্ত করেন। কর্মজীবনে কান্ধলভি মক্কায় চলে গিয়েছিলেন এবং পরবর্তীতে সাহারানপুর চলে আসেন। লেখক চতুর্থ অধ্যায়ে তার সাহারানপুরের জীবন নিয়ে আলোচনা করেন। পঞ্চম অধ্যায়ের আলোচ্য বিষয় কান্ধলভির রমজান পালনের ধরন। লেখক ষষ্ঠ অধ্যায়ে কান্ধলভির মদিনায় স্থায়ী বসবাসের আলোচনা করে সেখান থেকে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডে যেসব দাওয়াতি সফর করেছেন তার আলোচনা করেছেন সপ্তম অধ্যায়ে। কান্ধলভির জীবনের অন্তিম সময়ের আলোচনা এসেছে বইটির অষ্টম অধ্যায়ে। জীবনবৃত্তান্তের আলোচনা শেষ করে লেখক নবম অধ্যায়ে কান্ধলভির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেন। দশম অধ্যায়ে আলোচনা করেন কান্ধলভির রচনাবলী নিয়ে। মূল উর্দু গ্রন্থে কান্ধলভির বিভিন্ন বাণী প্রদান করে গ্রন্থটির ইতি টানা হয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত বঙ্গানুবাদে "ছড়িয়ে আছেন সবখানে" শিরোনামে শেষে মুহাম্মদ জাকারিয়া কান্ধলভির অনুমতিপ্রাপ্ত শিষ্যদের একটি তালিকাও জুড়ে দেওয়া হয়েছে।[৫]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ নদভী, মুহসিন উসমান (২০০২)। মুতালায়ে তাসানিফাত মুফাক্কিরে ইসলাম আবুল হাসান আলী নদভী [আবুল হাসান আলী নদভীর রচনাবলির গবেষণা] (উর্দু ভাষায়)। ভারত: আরশি পাবলিকেশন্স। পৃষ্ঠা ২৩৩–২৪০।
- ↑ আবদুল গফফার, প্রফেসর (২০০৪)। উর্দু ভাষা ও সাহিত্যে আবুল হাসান আলী নদভীর অবদান (গবেষণাপত্র) (উর্দু ভাষায়)। পিএইচডি অভিসন্দর্ভ। ভারত: উর্দু বিভাগ, শ্রী সংকরাচার্য সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয়। পৃষ্ঠা ৭৯। ওসিএলসি 1015275663।
- ↑ মুহাম্মদ সালমান, মাওলানা (মে ২০০২)। আবুল হাসান আলী নদভীর জীবন ও কর্ম (পিডিএফ)। ঢাকা: আল ইরফান পাবলিকেশন্স। পৃষ্ঠা ৩৪১।
- ↑ নদভী, আবুল হাসান আলী হাসানী (১৯৮৭)। হায়াতে শায়খুল হাদীছ মাওলানা যাকারিয়া (র.) (পিডিএফ)। জালালাবাদী, আব্দুল্লাহ বিন সাঈদ কর্তৃক অনূদিত। ঢাকা: ইসলামিক ফাউণ্ডেশন বাংলাদেশ। পৃষ্ঠা ১২–১৩। আইএসবিএন 984-06-0548-8।
- ↑ বাংলা সংস্করণের সূচিপত্র।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- হায়াতে শায়খুল হাদিস–এর বাংলা সংস্করণ