কৃত্রিম উপগ্রহভিত্তিক দিকনির্ণয়

এক ধরনের দিকনির্দেশক স্বয়ংসম্পূর্ণ ব্যবস্থা যা কৃত্রিম উপগ্রহের দ্বারা ভূ-পৃষ্ঠের যেকোনো অবস
(স্যাটেলাইট ন্যাভিগেশন থেকে পুনর্নির্দেশিত)

কৃত্রিম উপগ্রহভিত্তিক দিকনির্ণয় বা স্যাটেলাইট ন্যাভিগেশন সংক্ষেপে স্যাটনাভ এক ধরনের দিকনির্দেশক স্বয়ংসম্পূর্ণ ব্যবস্থা যা কৃত্রিম উপগ্রহের দ্বারা ভূ-পৃষ্ঠের যেকোনো অবস্থান প্রদর্শন করতে পারে। বেতার সংযোগের মাধ্যমে এটি ছোট বৈদ্যুতিন যন্ত্রের (জিপিএস) নিখুঁত অবস্থান (কিছু মিটার এর মধ্যে) বলে দিতে পারে (অক্ষাংশ দ্রাঘিমাংশ ও উচ্চতা)। এই ব্যবস্থা দিকনির্দেশন, অবস্থান বা জিপিএস যুক্ত কোন চলমান বস্তুর অবস্থান নিরূপণে কার্যকরী। জিপিএস-কে নিখুঁত স্থানীয় সময় নিরূপণের কাজেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই মাধ্যম সম্পূর্ণ আন্তর্জাল এবং দূরভাষ নিরপেক্ষ, যদিও এগুলির ব্যবহার এই স্যাটেলাইট ন্যাভিগেশন ব্যবস্থাকে আরও নিখুঁত করে তোলে।

কৃত্রিম উপগ্রহ

একটি স্যাটেলাইট ন্যাভিগেশন ব্যবস্থা যদি পুরো বিশ্বে কার্যকরী হয় তবে তাকে গ্লোবাল ন্যাভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেম (জিএনএসএস) বলে। ডিসেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত মার্কিন NAVSTAR জিপিএস, রাশিয়ান GLONASS এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের Galileo গ্লোবাল ন্যাভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেমের আওতায় আসে। চিন তাদের আঞ্চলিক BeiDou ন্যাভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেমকে ২০২০ নাগাদ BeiDou-2 GNSS গ্লোবাল ন্যাভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেমের দিকে পরিণত করে ফেলার প্রক্রিয়ায় আছে।[১] ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের Galileo ২০২০ নাগাদ পুরোপুরি কার্যকর হয়ে উঠবে।[২] ভারতের কৃত্রিম উপগ্রহ নির্ভর প্রসারণ ব্যবস্থা, GPS Aided GEO Augmented Navigation(GAGAN) NAVSTAR জিপিএস এবং GLONASS -এর কার্যক্ষমতা আরো বাড়িয়ে তুলেছে। ভারত ইতিমধ্যেই IRNSS কে NAVIC (Navigation with Indian Constellation) নাম দিয়ে কক্ষপথে স্থাপন করেছে, এটি মূলত কয়েকটি কৃত্রিম উপগ্রহের সমষ্টি যা ভারতীয় উপমহাদেশে দিকনির্দেশনা করতে সক্ষম, জুন ২০১৬ এর মধ্যেই এটি কার্যকর হবে। ফ্রান্সজাপান তাদের নিজস্ব জিএনএসএস তৈরির পথে আছে।

পুরো বিশ্বে এই ব্যবস্থা কার্যকর করার জন্য মূলত ১৮ থেকে ৩০ টি মাঝারি উচ্চতার, বিভিন্ন কক্ষীয়তলে বিভক্ত উপগ্রহ পুঞ্জ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এগুলির কক্ষীয়তল ৫০°-এর বেশি হেলে থাকে এবং আবর্তনকাল কমবেশি ১২ ঘণ্টা হয়ে থাকে (১২০০০ মাইল বা ২০০০০ কিমি উচ্চতায় এগুলি অবস্থিত)।

বিভাগ সম্পাদনা

নিখুঁত দিকনির্দেশন, অবস্থান নিরূপণ বা অসামরিক কার্যকলাপে ব্যবহৃত এই স্যাটেলাইট ন্যাভিগেশন ব্যবস্থাকে নিম্নলিখিত কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায় ঃ

  • জিএনএসএস১ঃ প্রথম প্রজন্মের কৃত্রিম উপগ্রহের ব্যবস্থা যা পুর্ববর্তী জিপিএস, GLONASS এবং তারই সঙ্গে কৃত্রিম উপগ্রহ নির্ভর প্রসারণ ব্যবস্থা (SBAS) বা ভূ নির্ভর প্রসারণ ব্যবস্থা (GBAS) কে কাজে লাগিয়ে তৈরি। আমেরিকায় এটি Wide Area Augmentation System (WAAS), ইউরোপে European Geostationary Navigation Overlay Service (EGNOS) এবং জাপানে এটি Multi-Functional Satellite Augmentation System (MSAS) বলে পরিচিত। ভূ নির্ভর প্রসারণ ব্যবস্থা নির্মাণ করতে Local Area Augmentation System (LAAS) সহায়তা করে।
  • জিএনএসএস২ঃ ২য় প্রজন্মের কৃত্রিম উপগ্রহের ব্যবস্থা যা সম্পূর্ণভাবে অসামরিক দিকনির্দেশন করতে সক্ষম, এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ হল ইউরোপিয়ান গালিলিও পজিশনিং সিস্টেম। এটি বিমান চালনায় বিশেষ সহায়ক। এই ব্যবস্থা অসামরিক কাজে এল১ ও এল২ (এল ব্যান্ডএর কম্পাঙ্ক) কম্পাঙ্কের বেতার কাজে লাগায় এবং অভ্যন্তরীণ কার্যকলাপের জন্য এল৫ কম্পাঙ্ক ব্যবহার করে। অসামরিক কাজে এল২ ও এল৫ কম্পাঙ্ককে জিপিএস ব্যবস্থার মধ্যে নিয়ে এনে জিপিএস কে জিএনএসএস২ তে পরিণত করার চেষ্টা চলছে।
  • মূল(কোর) স্যাটেলাইট ন্যাভিগেশন ব্যবস্থাঃ জিপিএস (আমেরিকা), জিএলওএনএএসএস (রাশিয়া), গালিলিও (ইইউ) এবং কম্পাস (চিন)।
  • Global Satellite Based Augmentation Systems (SBAS) যেমন Omnistar এবং StarFire
  • আঞ্চলিক SBAS যার মধ্যে পড়ে WAAS (আমেরিকা), EGNOS (ইইউ), MSAS (জাপান) and GAGAN (ভারত)।
  • আঞ্চলিক স্যাটেলাইট ন্যাভিগেশন যেমন চিনের Beidou, ভারতের NAVIC, আর জাপানের প্রস্তাবিত QZSS।
  • মহাদেশীয় ভূনির্ভর প্রসারণ ব্যবস্থা (GBAS) উদাহরণ হিসাবে অস্ট্রেলিয়ান GRAS এবং আমেরিকার Department of Transportation National Differential GPS (DGPS) ব্যবস্থা।
  • স্থানীয় GBAS যেমন CORS নেটওয়ার্ক।
  • জিপিএস অবলম্বিত GBAS ( Real Time Kinematic (RTK) সংশোধিত)।

ইতিহাস ও তত্ত্বীয় আলোচনা সম্পাদনা

 

আগে এই ধরনের কাজে DECCA, LORAN, GEE আর Omega radio navigationনামক ভূ-স্থাপিত বেতার মূলক যন্ত্র ব্যবহার করা হত। মূলত দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘের বেতার প্রেরক একটি যন্ত্র প্রধান একটি সঙ্কেত পাঠায়, এই প্রেরক যন্ত্রের অবস্থান মাস্টার বা প্রভু অবস্থান হিসাবে পরিচিত। এই সঙ্কেত পাঠাবার কিছু মুহূর্ত পরেই আরও একটি সঙ্কেত কিছু "ভৃত্য" প্রেরক পাঠায়- এদের অবস্থান আলাদা আলাদা জায়গায় হয়ে থাকে। গ্রাহক যন্ত্রে এই দুটি সঙ্কেত গ্রহণের সময়ের তারতম্য থেকে গ্রাহকের অবস্থান প্রত্যেক "ভৃত্য" প্রেরক থেকে কতদূরে তা জানা যায়, যা অবস্থান নিরূপণে সহায়ক।

প্রথম স্যাটেলাইট ন্যাভিগেশন ব্যবস্থা ছিল Transit। মার্কিন সেনা এই স্যাটেলাইট ন্যাভিগেশন ১৯৬০ সালে কার্যকর করে। এর কাজ ডপলার ক্রিয়ার ওপর নির্ভরশীল। এই স্যাটেলাইট পূর্বনির্ধারিত পথে নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘের বেতার তরঙ্গ বিকিরণ করে। স্যাটেলাইট এর গতি এই তরঙ্গদৈর্ঘের ওপর প্রভাব ফেলে। স্বল্প সময়ের মধ্যে এই তরঙ্গদৈর্ঘের পরিবর্তন দুটি সাম্ভাব্য জায়গা নির্দেশ করে। এভাবে বেশকিছু তথ্যসমষ্টি একটি নির্দিষ্ট জায়গা নির্দেশ করে- যা হল গ্রাহকের অবস্থান।

স্যাটেলাইটের নিখুঁত অবস্থান স্বল্প কিছু সময়ের জন্যেই প্রযোজ্য। গণনায় বিশুদ্ধতা আনার জন্য মার্কিন জলসেনা (USNO) নিরবচ্ছিন্নভাবে এই স্যাটেলাইটের নিখুঁত কক্ষীয় অবস্থান পর্যবেক্ষণ করে যেতে থাকতো। যখনই কক্ষীয় আচরণ পাল্টাত তখনই নতুন অবস্থান সংবলিত তথ্য স্যাটেলাইটে প্রেরণ করা হত। এভাবে কক্ষীয় গণনায় বিশুদ্ধতা আনা হত।

এখন আধুনিক ব্যবস্থা আরো উন্নত। কক্ষীয় তথ্য ছাড়াও এখন স্যাটেলাইটগুলি তথ্য পাঠাবার নিখুঁত সময়ও মূল তথ্যের সাথে মিশিয়ে প্রেরণ করে। স্যাটেলাইট পুঞ্জের সময় গণনার কাজে একটি পারমাণবিক ঘড়ি সাহায্য করে। প্রেরক যন্ত্র অন্তত তিনটি বা চারটি স্যাটেলাইট থেকে তথ্য গ্রহণ করে (সমুদ্রতলে)। এরকম কিছু তথ্যসমষ্টি গ্রাহকের নিরবচ্ছিন্ন অবস্থান নিরূপণ করে। একাজে trilateration গণিত ব্যবহার করা হয়। এখানে আরও দেখুন।

প্রত্যেক পরিমাপ গ্রাহককে প্রেরককেন্দ্রিক গোলক তলে আসীন করে। এরকম বেশ কিছু তথ্যপুঞ্জ গ্রাহকের অবস্থান নির্দেশ করে। গ্রাহক ও প্রেরকের আপেক্ষিক গতি ও আয়নমণ্ডলে বেতারের গতিহ্রাস গণনায় বিশুদ্ধতা কমিয়ে আনে। এর জন্য চার বা তার বেশি স্যাটেলাইট ব্যবহার করা হয়। Kalman filtering এর মত প্রণালী বিচ্ছিন্ন তথ্যস্রোতকে বিশ্লেষণ ও নিখুঁত অবস্থান নির্দেশ করে অবস্থান সময় ও গতির সঠিক পরিমাপ দেয়।

সামরিক ও অসামরিক ব্যবহার সম্পাদনা

 
ল্যাপটপ এর সাথে জিপিএস গ্রাহক যুক্ত আছে

সামরিক প্রয়োগ স্যাটেলাইট ন্যাভিগেশনের প্রধান অনুপ্রেরণা। লক্ষ্যে সঠিক ভাবে ক্ষেপণাস্ত্র দ্বারা আঘাত করতে পারা স্যাটেলাইট ন্যাভিগেশনএর অন্ননতম অবদান। এতে অস্ত্রের ধ্বংসক্ষমতা বাড়ে ও ভুল লক্ষ্যে আঘাতের সম্ভাবনা কমে। সৈন্যদলকে সঠিক ভাবে চালনা এবং তাদের অবস্থান যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে বিশেষ সহায়ক।

অসামরিক প্রয়োগের বেশিরভাগ জুড়েই আছে দিকনির্দেসন। রেলপথ ও সড়কপথে যানবাহনের সঠিক অবস্থান জানতে পারা যানজট কমাতে সাহায্য করে। অজানা স্থানে এই ব্যবস্থা বিশেষ সুবিধাজনক। এছাড়াও বিভিন্ন ব্যবসায়িক কাজে যেমন তৈল উত্তোলন, খনিজ উত্তোলনে এই পরিসেবা কাজে লাগে। স্যাটেলাইট ন্যাভিগেশন এর মাধ্যমে জমি জরিপ ও উচ্চতা নিরূপণ অত্যন্ত নিখুঁতভাবে করা যায়।

গ্লোবাল ন্যাভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেম সম্পাদনা

কার্যকরী প্রযুক্তি সম্পাদনা

জিপিএস সম্পাদনা

মূল নিবন্ধঃ জিপিএস

 
Geostationary, GPS, GLONASS, Galileo, Compass (MEO), International Space Station, Hubble Space Telescope এবং Iridium constellation orbits, তার সঙ্গে Van Allen radiation belts এবং পৃথিবীর তুলনা.

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জিপিএস প্রায় ৩২ টি স্যাটেলাইট নিয়ে গঠিত যা ছয়টি কক্ষতলে বিভক্ত।এটি কার্যকর হয় ১৯৭৮ সালে এবং বিশ্বজুড়ে উপলব্ধ হয় ১৯৯৪ সালে। জিপিএস সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত গ্লোবাল ন্যাভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেম।

GLONASS সম্পাদনা

মূল নিবন্ধঃ GLONASS

পূর্বতন সোভিয়েত এবং বর্তমান রাশিয়ান, Global'naya Navigatsionnaya Sputnikovaya Sistema (রাশিয়ান: ГЛОбальная НАвигационная Спутниковая Система), বা GLONASS ২৪ টি স্যাটেলাইট নিয়ে গঠিত দিকনির্দেশক স্যাটেলাইট ব্যবস্থা।

গ্যলিলিও সম্পাদনা

মূল নিবন্ধঃ গ্যলিলিও

ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এবং ইউরোপিয়ান মহাকাশ সংস্থা ২০০২ সালে জিপিএস এর পরিবর্ত হিসাবে গ্যলিলিও পজিশনিং সিস্টেম এর প্রকাশে রাজি হয়। গ্যলিলিও প্রায় ৩০ কোটি[৩] ইউরোর ব্যয়ে ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬ সালে প্রাথমিকভাবে কার্যকর হয়।[৪] ৩০ টি মাঝারি উচ্চতার উপগ্রহ প্রাথমিকভাবে ২০১০ সালে কার্যকর করার পরিকল্পনা ছিল কিন্তু ২০১৪ সালে এটি কার্যকর হয়।[৫] প্রথম পরীক্ষামূলক স্যাটেলাইটটি ২৮ ডিসেম্বর ২০০৫ সালে উৎক্ষেপণ করা হয়। ২০২০ সালে এটি পুরোপুরি কার্যকর হবে। জিপিএস এর সমতুল্য হওয়ায় পুরনো জিপিএস সিস্টেম এর প্রভূত উন্নতিতে সক্ষম এই ব্যবস্থা। এতে Composite Binary Offset Carrier (CBOC) modulation ব্যবহার করা হয়।

পরিকল্পিত সম্পাদনা

BeiDou-2 সম্পাদনা

 
১৯৭৮ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত উৎক্ষেপিত GNSS স্যাটেলাইট

মূল নিবন্ধঃ BeiDou Navigation Satellite System

চিন বর্তমানে তাদের এশীয় পরিষেবাকে বিবর্ধন করে ২০২০ এর মধ্যে ২য় প্রজন্মের Beidou স্যাটেলাইট ন্যাভিগেশন ব্যবস্থা (BDS বা BeiDou-2, পুর্ববর্তি COMPASS) সম্পূর্ণ করার কথা ভাবছে।[৬] প্রস্তাবিত এই ব্যবস্থা ৩০ টি মাঝারি উচ্চতার স্যাটেলাইট ও ৫ টি ভুসমলয় স্যাটেলাইট নিয়ে গঠিত হবে। ১৬ স্যাটেলাইট নিয়ে গঠিত এশীয় আঞ্চলিক ব্যবস্থা ২০১২ সালে সম্পূর্ণ হয়েছিল।

বিভিন্ন স্যাটেলাইট ব্যবস্থার তুলনা সম্পাদনা

সিস্টেম জিপিএস GLONASS BeiDou গ্যলিলিও
মালিকানা আমেরিকা রাশিয়া চীন ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন
কোডিং CDMA FDMA CDMA CDMA
কক্ষীয় উচ্চতা ২০১৮০ কিমি

১২৫৪০ মাইল

১৯১৩০ কিমি

১১১৮৯০ মাইল

২১১৫০ কিমি

১৩১৪০ মাইল

২৩২২০ কিমি

১৪৪২৯ মাইল

আবর্তনকাল ১১ ঘণ্টা ৫৮ মিনিট ১১ ঘণ্টা ১৬ মিনিট ১২ ঘণ্টা ৩৮ মিনিট ১৪ ঘণ্টা ৫ মিনিট
একটি সৌরদিনে মোট আবর্তন ১৭/৮ ১৭/৯ ১৭/১০
স্যাটেলাইটের সংখ্যা ৩১[৭] ২৮(অন্তত ২৪ টি কার্যকর

২ টি পরীক্ষাধীন

২ টি উৎক্ষেপিত হবে)[৮]

৫ টি ভুসমলয় ও

৩০ টি মধ্য উচ্চতার কক্ষপথে

১৮ টি পরিপূর্ণ

৩০ টি পরিকল্পিত

কম্পাঙ্ক ১.৫৭৫৪২ GHz (এল১)

১.২২৭৬ GHz (এল২)

প্রায় ১.৬০২ GHz(এসপি)

প্রায় ১.২৪৬ GHz(এসপি)

১.৫১০৯৮ GHz (B1)

১.৫৮৯৭৪২ GHz (B1-2)

১.২০৭১৪ GHz (B2)

১.২৬৮৫২ GHz (B3)

১.১৬৪-১.২১৫ GHz (E5a ও E5b)

১.২৬০-১.৩০০ GHz (E6)

১.৫৫৯-১.৫৯২ GHz (E2-L1-E11)

বর্তমান পরিস্থিতি কার্যকর কার্যকর ২২ টি স্যাটেলাইট কার্যকর

৪০ টি পরিকল্পিত ২০১৬-২০২০

১৮ টি স্যাটেলাইট কার্যকর

১২ টি পরিকল্পিত ২০১৭-২০২০

আঞ্চলিক স্যাটেলাইট দিগদর্শন ব্যবস্থা সম্পাদনা

BeiDou-1 সম্পাদনা

মূল নিবন্ধঃ Beidou Navigation Satellite System

২য় প্রজন্মের Beidou স্যাটেলাইট ন্যাভিগেশন ব্যবস্থা। চিনের এই ব্যবস্থা ১৬ টি মাঝারি উচ্চতার স্যাটেলাইট নিয়ে গঠিত। এটি বিবর্ধিত হয়ে ২০২০ সাল নাগাদ ৩৫ টি স্যাটেলাইট সংবলিত ব্যবস্থায় পরিণত হবে।

NAVIC সম্পাদনা

মূল নিবন্ধঃ NAVIC

Indian Space Research Organisation (ISRO) নির্মিত NAVIC বা NAVigation with Indian Constellation একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ আঞ্চলিক স্যাটেলাইট ন্যাভিগেশন সিস্টেম যা ভারতীয় সরকারের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রাধীন। ২৮ এপ্রিল ২০১৬-র মধ্যে সম্পূর্ণ করার পরিকল্পনা নিয়ে সরকার মে ২০০৬ সালে এর অনুমোদন দেয়। এটি ৭ টি দিকনির্দেশক স্যাটেলাইট নিয়ে গঠিত।[৯] যার মধ্যে ৩ টি ভুসমলয় কক্ষপথে আছে এবং বাকি চারটি সমলয় কক্ষপথে অবস্থিত থেকে পুরো ভারতীয় উপমহাদেশকে স্যাটেলাইট ন্যাভিগেশনের আওতায় নিয়ে আসবে।[১০] সর্বনিম্ন ৭.৬ মিটারের বিশ্লেষণ ক্ষমতাসম্পন্ন এই ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ভারতে প্রস্তুত। গ্রাহক প্রেরক এবং স্যাটেলাইটের যন্ত্রাংশ সবই ভারতে তৈরি হয়েছে যা সরকারের উদ্দেশ্য ছিল।[১১] সাতটি স্যাটেলাইট IRNSS-1A, IRNSS-1B, IRNSS-1C, IRNSS-1D, IRNSS-1E, IRNSS-1F, এবং IRNSS-1G যথাক্রমে ১ জুলাই ২০১৩, ৪ এপ্রিল ২০১৩, ১৬ অক্টোবর ২০১৪, ২৮ মার্চ ২০১৫, ২০ জানুয়ারী ২০১৬, ১০ মার্চ ২০১৬ এবং ২৮ এপ্রিল ২০১৬ তে সতীশ ধওন মহাকাশ কেন্দ্র থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে।[১২]

QZSS সম্পাদনা

মূল নিবন্ধঃ Quasi-Zenith Satellite System

Quasi-Zenith Satellite System বা QZSS হল জাপানের একটি আঞ্চলিক ৩ স্যাটেলাইট সমন্বিত ব্যবস্থা যা time transfer ও জিপিএসের ক্ষমতা বিবর্ধনে সহায়ক। প্রথম প্রদর্শনমূলক স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হয় সেপ্টেম্বর ২০১০ এ।

সম্প্রসারণ সম্পাদনা

GNSS সম্প্রসারণের সাহায্যে স্যাটেলাইটগুলির গুনমান যেমন নিপুণতা, নির্ভরযোগ্যতা এবং লভ্যতা বাড়ানো হয়। একাজে বাইরে থেকে তথ্য গণনায় প্রবেশ করানো হয়। এর কয়েকটি উদাহরণ হল Wide Area Augmentation System, European Geostationary Navigation Overlay Service, Multi-functional Satellite Augmentation System, Differential GPS, এবং inertial navigation systems

DORIS সম্পাদনা

মূল নিবন্ধঃ DORIS (geodesy)

DORIS (Doppler Orbitography and Radio-positioning Integrated by Satellite) একটি ফরাসি ন্যাভিগেশন সিস্টেম। অন্য GNSS সিস্টেমের থেকে এটি আলাদা, এটির গ্রাহক স্যাটেলাইটের মধ্যে থাকে এবং বিশ্বের আলাদা আলাদা কিছু নির্দিষ্ট জায়গা থেকে প্রেরক যন্ত্রের সহায়তায় নিখুঁত কক্ষীয় অবস্থান নিরূপিত হয়। GNSS সিস্টেমের সাথে একসঙ্গে এটি ব্যবহার করলে এর বিশ্লেষণ ক্ষমতা সেন্টিমিটার থেকে মিলিমিটারে নেমে আসে। এত সূক্ষ্ম মাপ পৃথিবীর কক্ষীয় বেগের সামান্য পরিবর্তন বা ভূ বিকৃতির সামান্য মাপও এর থেকে পাওয়া যায়।[১৩]

স্বল্প উচ্চতার কক্ষীয় স্যাটেলাইট দূরভাষ ব্যবস্থা সম্পাদনা

বর্তমান দুটি কার্যকর স্যাটেলাইট যেকোনো প্রেরক-গ্রাহক যন্ত্রের অবস্থান কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে ডপলার ক্রিয়ার মাধ্যমে নিরূপণ করে। সেই অবস্থান সংবলিত তথ্য প্রেরক-গ্রাহক যন্ত্রে পাঠানো হয় যা AT command বা একটি graphical user interface বিশ্লেষণে সাহায্য করে।[১৪] এটিকে স্থান নির্ভর দুরভাষ মূল্য নির্ধারণেও কাজে লাগান যায়।

স্থাননিরূপণ সম্পাদনা

মূল নিবন্ধঃ GNSS positioning calculation

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "চিন জিএনএসএস" 
  2. "ইইউ জিপিএস" 
  3. "BBC NEWS | Science/Nature | Boost to Galileo sat-nav system"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০২-০৯ 
  4. "European Commission - PRESS RELEASES - Press release - Galileo goes live!" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০২-০৯ 
  5. "European Commission - PRESS RELEASES - Press release - Commission awards major contracts to make Galileo operational early 2014" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০২-০৯ 
  6. "China Military Online English Edition"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০২-০৯ 
  7. "GPS.gov: Space Segment" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০২-০৯ 
  8. "Constellation status"। ২০১৩-০৫-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০২-০৭ 
  9. "India to develop its own version of GPS"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০২-০৭ 
  10. "ISRO puts seventh and final IRNSS navigation satellite into orbit – Tech2"Tech2 (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৬-০৪-২৮। ২০১৭-০৫-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০২-০৭ 
  11. "India to build a constellation of 7 navigation satellites by 2012 - Livemint"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০২-০৭ 
  12. "ISRO: All 7 IRNSS Satellites in Orbit by March"GPS World (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৫-১০-০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০২-০৭ 
  13. "My AVISO+: Aviso+" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০২-০৭ 
  14. https://web.archive.org/web/20051109014357/http://www.skyhelp.net/acrobat/jan_05/Iridium%20SBD-FAQ%201-05.pdf  |title= এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)

আরও পড়ুন সম্পাদনা

  • Office for Outer Space Affairs of the United Nations (2010), Report on Current and Planned Global and Regional Navigation Satellite Systems and Satellite-based Augmentation Systems.[১]

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

বিশেষ GNSS এর উপর তথ্য সম্পাদনা

GNSS এর সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন সংস্থা সম্পাদনা

সহায়ক ও চিত্রিত ওয়েবপেজ সম্পাদনা

  1. http://www.oosa.unvienna.org/pdf/publications/icg_ebook.pdf  |title= এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)