স্মিতা তলওয়াকর

ভারতীয় অভিনেত্রী

স্মিতা তলওয়াকর (৫ই সেপ্টেম্বর ১৯৫৪ - ৬ই আগস্ট ২০১৪) একজন মারাঠি চলচ্চিত্র অভিনেত্রী, প্রযোজক এবং পরিচালক ছিলেন। তিনি কালাত নাকালাত (১৯৮৯) এবং তু তিথে মী (১৯৯৯) চলচ্চিত্রের প্রযোজক হিসাবে দুটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছিলেন।

স্মিতা তলওয়াকর
জন্ম
স্মিতা গোভিলকর

৫ই সেপ্টেম্বর ১৯৫৪
মৃত্যুআগস্ট ৬, ২০১৪(২০১৪-০৮-০৬)
মুম্বই, ভারত
জাতীয়তাভারতীয়
পেশাঅভিনেত্রী, প্রযোজক, পরিচালক)
আত্মীয়সুলেখা তালওয়ালকর (পুত্রবধু)

কর্ম জীবন সম্পাদনা

১৯৫৪ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর স্মিতা গোভিলকর হিসাবে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।[১] অভিনয়ে প্রবেশের আগে তিনি ১৭ বছর টেলিভিশনের সংবাদ পাঠক ছিলেন।[২] অভিনেত্রী হিসাবে তাঁর প্রাথমিক সফল চলচ্চিত্রগুলির মধ্যে রয়েছে তু সৌভাগ্যবতী হো এবং গড়বড় ঘোটালা, দু'টিই ১৯৮৬ সালের সৃষ্টি। গড়বড় ঘোটালা একটি কৌতুক আবেগপূর্ণ চলচ্চিত্র যেখানে বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য অভিনেতারা অভিনয় করে ছিলেন। ১৯৮৯ সালে অস্মিতা চিত্রের ব্যানারে তাঁর প্রথম চলচ্চিত্র 'কালাত নাকালত' দিয়ে তিনি চলচ্চিত্র নির্মাতার ভূমিকায় পদার্পণ করেছিলেন।[২] এই ছবিটি পরিবার এবং শিশুদের সূক্ষ্ম বিষয় নিয়ে কাজ করেছিল, যেখানে শিশুর বাবা-মায়েরা বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত ছিল। কাঞ্চন নায়ক পরিচালিত, এই ছবিটিকে সেরা মারাঠি ফিচার ফিল্ম হিসাবে ৩৭ তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দিয়ে ভূষিত করা হয়েছিল।

১৯৯১ সালে, তলওয়াকর মিনালের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, চৌকত রাজা -তে যে ছিল মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলের শৈশবের বন্ধু। ছেলের মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন দিলীপ প্রভাভালকর, যার জন্য তিনি সেরা অভিনেতার জন্য মহারাষ্ট্র রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন।[৩] সঞ্জয় সরকার পরিচালিত ছবিটিও তলওয়াকর প্রযোজনা করেছিলেন। সুরকার-তলওয়াকর জুটি এরপরে তু তিথে মী (১৯৯৮), সাচ্যা আট ঘরত (২০০৪) এবং আনন্দচে ঝাড় (২০০৬) এর মতো অনেকগুলি উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র তৈরি করেছিল। নির্মাতা হিসেবে ছবি তৈরি করার পরে, তলওয়াকর ১৯৯৩ সালে কৌতুক-নাটক চলচ্চিত্র সাওয়াত মাঝি লড়কি দিয়ে তাঁর পরিচালনায় অভিষেক করেছিলেন। ছবিটি মহারাষ্ট্র রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিল।

অস্মিতা চিত্রের ব্যানারে তলওয়াকর প্রায় ৬টি চলচ্চিত্র এবং ২৫ টি টেলিভিশন ধারাবাহিক নির্মাণ করেছিলেন।[২] তাঁর প্রোডাকশন হাউজের সাথে জি নেটওয়ার্ক এর তিনটি চলচ্চিত্র প্রযোজনার জন্য একটি যৌথ উদ্যোগ ছিল।[৪] তার উল্লেখযোগ্য টেলিভিশন ধারাবাহিকের মধ্যে ছিল পেশোয়াই, অবন্তিকা, সুভাষিণী, উঞ্চ মাজা জোকা ইত্যাদি, যেগুলির প্রধান চরিত্রে ছিলেন মৃণাল কুলকার্নী। আলফা মারাঠিতে প্রচারিত অবন্তিকা ছিল একটি পারিবারিক নাটক। পেশোয়াই মহারাষ্ট্রের পেশোয়ার উপর ভিত্তি করে একটি ঐতিহাসিক গল্প ছিল। এতে নীনা কুলকার্নী রানির ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন।[৫] উঞ্চ মাজা জোকা সমাজ কর্মী রমাবাই রানাডের জীবনের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল।

তিনি কথা এক আনান্দিচি এবং অর্ধঙ্গিনী তে উপস্থিত হয়েছিলেন, যেগুলি সামাজিক সমস্যা নিয়ে তৈরি করা হয়েছিল। স্টার প্রবাহ তে প্রচারিত টিভি অনুষ্ঠান সুভাষিণী ২০১২ সালে ম-টা সম্মানে সেরা ধারাবাহিকের পুরস্কার পেয়েছিল। ব্যানারটি বৃহন্মুম্বাই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের এর জন্য ৩০ মিনিটের একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেছিল, যেখানে পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে বলার জন্য শচীন তেন্ডুলকর এসেছিলেন।[৬]

তলওয়াকর ‘অস্মিতা চিত্র একাডেমি’ নামে একটি অভিনয় স্কুলও পরিচালনা করেন। একাডেমিটি পুনে, মুম্বই এবং থানের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থিত এবং মিডিয়ার বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রায় ৩০০ থেকে ৩৫০ শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেয়।[২] তলওয়াকর অভিনেত্রী ও প্রযোজক হিসাবে থিয়েটারেও কাজ করেছেন। তিনি স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক উভয় স্তরের ইভেন্টের বিচারক ছিলেন। তিনি নাট্য চিত্র কলা একাডেমি আয়োজিত মারাঠি চলচ্চিত্র উৎসবের সভাপতি ছিলেন।

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

তলওয়াকর ১৭ বছর বয়সে বিবাহ করেছিলেন।[২] তাঁর ছেলে, অম্বর তলওয়াকর ভারতে স্বাস্থ্য ক্লাবের একটি বড় চেইন তলওয়াকর'স এর একজন পরিচালক। অম্বর অভিনেত্রী সুলেখা তালওয়ালকার কে বিবাহ করেছেন।[৭][৮] স্মিতার অপর পুত্রবধূ হলেন টেলিভিশন অভিনেত্রী পূর্ণিমা তলওয়াকর, আনুষ্ঠানিকভাবে পূর্ণিমা ভাবে নামে পরিচিত।

মৃত্যু সম্পাদনা

২০১০ সালে স্মিতা তলওয়াকরের ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার ধরা পড়ে এবং কেমোথেরাপি দ্বারা চিকিৎসা করা হয়।[৯][১০] তিনি ২০১৪ সালের ৬ই আগস্ট তাঁর ৬০ তম জন্মদিনের এক মাসেরও কম সময় আগে মুম্বইয়ের জসলোক হাসপাতালে মারা যান।[১১]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Phadke, Aparna (২৯ সেপ্টেম্বর ২০১২)। "The day the ever-smiling Sanjay Surkar cried"Times of India। ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জানুয়ারি ২০১৩ 
  2. "Smita Talwalkar: Live wire of positive energy"Navhind Times। Goa, India। ২৭ মার্চ ২০১২। ৬ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জানুয়ারি ২০১৩ 
  3. Asha Mandpe (২৪ এপ্রিল ২০১১)। "Different faces of a versatile actor"Mumbai Mirror। ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জানুয়ারি ২০১৩ 
  4. "Zee network spreads further"। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ৯ জানুয়ারি ২০১৩ 
  5. "An Interview with Neena Kulkarni: 'Acting is about good characterisation'"। Indiantelevision.com। ২০১০-০৮-১০। সংগ্রহের তারিখ ৮ জানুয়ারি ২০১৩ 
  6. Ashar, Sandeep (২২ জানুয়ারি ২০০৯)। "Tendulkar's clean sweep in BMC film"DNA। সংগ্রহের তারিখ ৯ জানুয়ারি ২০১৩ 
  7. P R Sanjai, P. R. (২৪ অক্টোবর ২০০৫)। "Talwalkars plan pvt equity placement, IPO"Business Standard India। সংগ্রহের তারিখ ৯ জানুয়ারি ২০১৩ 
  8. "This is how you do it"। DNA। ৮ অক্টোবর ২০০৫। সংগ্রহের তারিখ ৯ জানুয়ারি ২০১৩ 
  9. "Cancer patients speak of benefit of homeopathy treatment"Times of India। ২৯ আগস্ট ২০১১। ১০ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০১৩ 
  10. "Words of the Wise"Pune Mirror। Pune, India। ১৮ মে ২০১২। ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০১৩ 
  11. Mukane, Pratik (৬ আগস্ট ২০১৪)। "Veteran Marathi actress Smita Talwalkar passes away at 59"Daily News and Analysis। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০১৪ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

টেমপ্লেট:Smita Talwalkar