সৈয়দ হাকিম (ফার্সি: سید حکیم) জাহাঙ্গীরের রাজত্বকালে সুবাহ বাংলার একজন সামরিক কর্মচারী ছিলেন। তিনি বাকলা বিজয়ের প্রধান সেনাপতি ছিলেন এবং এবং পরবর্তীকালে এই অঞ্চলের প্রথম ফৌজদার হিসেবে জিম্মাদারী পালন করেন। [১]

সৈয়দ হাকিম
সরকার-ই-বাকলার ফৌজদার
কাজের মেয়াদ
ডিসেম্বর ১৬১১ - ১৬১৮
সার্বভৌম শাসকজাহাঙ্গীর
গভর্নরইসলাম খাঁ
কাশেম খাঁ
উত্তরসূরীছবি খাঁ

কর্মজীবন সম্পাদনা

বাংলার সুবাহদার ইসলাম খাঁ সৈয়দ হাকিমকে চন্দ্রদ্বীপের রাজা রামচন্দ্র বসুর বিরুদ্ধে অভিযানের প্রধান সেনাপতি নিযুক্ত করেন।[২] যুদ্ধ প্রায় এক সপ্তাহ স্থায়ী হয়, যার ফলে রাজার আত্মসমর্পণ হয় এবং বাকলা অঞ্চল সুবাহ বাংলার সাথে যুক্ত হয়। বিজয়ের পর, হাকিম এবং তার ফৌজেকে নিকটবর্তী যশোরের রাজা প্রতাপাদিত্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত মোগল ফৌজেকে সহায়তা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। [৩] সুবাহদার ইসলাম খাঁ সৈয়দ হাকিমকে সম্মানের পোশাক, ঘোড়া এবং অন্যান্য উপহার দেওয়ার জন্য ভূষণার রাজা সত্রাজিতকে পাঠান যাতে তাকে তার অবদান অব্যাহত রাখতে অনুপ্রাণিত করা যায়।[৪] :১৩১–১৩২ পর্তুগিজ আর্মাদের সাথে মোকাবিলা করার পাশাপাশি প্রতাপাদিত্যকে যখন জানানো হয় যে সৈয়দ হাকিমের নেতৃত্বে আরেকটি বাহিনী যশোরের দিকে আসছে তখন তিনি মোগল ফৌজের কাছে আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নেন।[৪] :১৩৬ আত্মসমর্পণের পরে, ইসলাম খাঁ সৈয়দ হাকিমকে তার ভাইদের সাথে বাকলায় ফিরে যাওয়ার এবং সুবাহ বাংলার পক্ষে সেই অঞ্চলের প্রশাসনের নির্দেশ দিয়ে একটি চিঠি পাঠান। [৪] :১৪৩–১৪৪

১৬১৫ খ্রীষ্টাব্দে, বাংলার পরবর্তী সুবাহদার কাশেম খাঁ সৈয়দ হাকিম এবং তাঁর ভাই সৈয়দ কাশুকে আসাম অভিযানের সেনাপতি সৈয়দ আবু বকরের সাথে যোগ দিতে নির্দেশ দেন। [৪] :৩৫৩[৫] কয়েকদিনের মধ্যে সৈয়দ হাকিম এবং সৈয়দ কাশু ৪০০ ঘোড়া এবং বড় একটি পদাতিক ফৌজকে নেতৃত্ব দিয়ে আসামে সৈয়দ আবু বকরের বাহিনীর সাথে চলে যান।[৬] বাহারিস্তান-ই-গায়েবী জানাচ্ছে যে সৈয়দ আবু বকর সৈয়দ হাকিমের ফৌজেকে খোশ আমদেদ জানাননি যদিও তার স্বজনেরা তাকে তা করার জন্য সুপারিশ করেছিলেন। সৈয়দ হাকিম সৈয়দ আবু বকর কর্তৃক স্থাপিত কেল্লার বাইরে তার ফৌজেকে শিবির করার সিদ্ধান্ত নেন। পরের দিন যুদ্ধ শুরু হয়, আহোমরা তাদের সাথে যাওয়ার সাথে সাথে প্রতিটি শিবির ধ্বংস করে। কেল্লার মধ্যে না থাকার কারণে, সৈয়দ হাকিমের সহায়তা বিলম্বিত হয় এবং মোগলরা একটি ভারী পরাজয়ের সম্মুখীন হয়, হাতি লুটপাট ও অস্ত্রাগার ধ্বংস হয়। [৪] :৩৯৫–৩৯৬

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Ray, Aniruddha (১৯৯৮)। Adventurers, Landowners, and Rebels। Munshiram Manoharlal Publishers। পৃষ্ঠা 70–75। আইএসবিএন 9788121507431 
  2. Ahmed, Siraj Uddin (২০১০)। "মোগলদের বিরুদ্ধে চন্দ্রদ্বীপের স্বাধীনতা যুদ্ধ" [Chandradwip's war of independence against the Mughals]। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস। Bhaskar Prakashani। 
  3. Datta, Bhupendranath (১৯৭৭)। বাঙ্গলার ইতিহাস (সামাজিক বিবর্তন)। Nababharata Publishers। পৃষ্ঠা 128, 131। 
  4. Borah, M. I. (১৯৩৬)। Baharistan-I-Ghaybi। Narayani Handiqui Historical Institute।  উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "borah" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে
  5. S.K. Bhuyan (ed), Kamarupar Buranji, pp.24, 25
  6. Sen, Prabhas Chandra (১৯৪৯)। বাঙলার ইতিহাস। Avaniranjan Roy।