সূরা ফাজ্র
আল ফাজ্র (আরবি: سورة الفجر) কুরআনের ৮৯তম সূরা। আল ফাজ্র শব্দের অর্থ ভোর। এই সূরাটি কুরআনের ৩০তম পারায় অবস্থিত। এতে ৩০টি আয়াত আছে।[১] এই সূরাতে প্রাচীনকালের কয়েকটি অবিশ্বাসী জাতির ধ্বংস হওয়ার কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে। এছাড়া অর্থলিপ্সু ও নির্দয় লোকদের সমালোচনাও এই সূরায় বিদ্যমান। এখানে সৎ ও সত্যপন্থীদেরকে জান্নাতের সুসংবাদও দেয়া হয়েছে। এই সূরার শুরুতে প্রভাত বেলার শপথ করে বক্তব্য সূচনা করা হয়েছে।[২]
![]() সূরা আল ফাজ্র | |
শ্রেণী | মক্কী সূরা |
---|---|
নামের অর্থ | ভোর, প্রভাত |
অবতীর্ণ হওয়ার সময় | মাক্কী যুগের এমন এক সময় যখন মুসলিমগণ চরমভাবে নির্যাতিত হচ্ছিলেন |
পরিসংখ্যান | |
সূরার ক্রম | ৮৯ |
আয়াতের সংখ্যা | ৩০ |
পারার ক্রম | ৩০ |
রুকুর সংখ্যা | ১ |
সিজদাহ্র সংখ্যা | নেই |
শব্দের সংখ্যা | ১৩৯ |
অক্ষরের সংখ্যা | ৫৭৩ |
← পূর্ববর্তী সূরা | সূরা গাশিয়াহ্ |
পরবর্তী সূরা → | সূরা বালাদ |
আরবি পাঠ্য · বাংলা অনুবাদ |
নামকরণ সম্পাদনা
সূরাটির প্রথম শব্দ 'আল ফাজ্র' এর নাম হিসেবে নেয়া হয়েছে। যার অর্থ হচ্ছে ভোরবেলা। উক্ত সূরাটিতে আল্লাহ পাঁচটি বস্তুর নাম উল্লেখ করে শপথ নিয়েছেন।
মূল বক্তব্য সম্পাদনা
মৃত্যু-পরবর্তী জীবনের পুরস্কার ও শাস্তির বিষয়টি এই সূরায় প্রমাণ করা হয়েছে। মক্কার অবিশ্বাসীগণ পরকালকে অস্বীকার করত; তাই সেই সময় নাজিল হওয়া সূরাসমূহে পরকালের বাস্তবতা ও যথার্থতার পক্ষে যুক্তি পেশ করা হয়েছে। এই সূরাটিতেও বিভিন্ন ইতিহাস ও যুক্তি পেশের মাধ্যমে পরকালের বিষয়টি প্রমাণ করা হয়েছে। সূরাটির শুরুতেই কয়েকটি বিষয়ের শপথ করে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে যে, এর মধ্যে বুদ্ধিমান মানুষদের জন্য বিবেচ্য বিষয় আছে কিনা। এখানে দিন রাতের আবর্তনের শপথ করার ব্যাখ্যা এই যে, যে স্রষ্টা একটি সুনিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে দিন রাতের আবর্তন ঘটাতে সক্ষম, তার জন্য পরকাল প্রতিষ্ঠা করা এবং প্রতিফল প্রদান করা মোটেই কঠিন কিছু নয়। এর পর মানবেতিহাস থেকে আদ, সামুদ ও ফিরাউনের ধ্বংস হবার উদাহরণ দিয়ে বলা হয়েছে, যারা দুনিয়াতে বিপর্যয় সৃষ্টিকারী তাদেরকে যথাসময়ে পাকড়াও করাই আল্লাহ্র নীতি। এই পৃথীবিতে যার যা ইচ্ছা তা করার অধিকার নেই, বরং আল্লাহ সর্বদা নজর রেখে চলেছেন যেন এখানে বিপর্যয় সৃষ্টি না হয়; তিনি পরকালে তো বটেই, প্রয়োজনে দুনিয়ার জীবনেও শাস্তি প্রদান করে থাকেন। ন্যায়পরায়ণতার দাবী এটাই যে, ভাল এবং মন্দ উভয় রকম কাজেরই যথাযোগ্য প্রতিফল থাকা উচিত। এরপর এই সূরায় অর্থলিপ্সা ও অনাথদের প্রতি নির্দয়তার সমালোচনা করা হয়েছে। সবশেষে বলা হয়েছে, ভাল এবং মন্দ উভয় কাজেরই যোগ্য প্রতিদান পরকালে প্রদান করা হবে।