সুফিয়া আহমেদ

একুশে পদক প্রাপ্ত ব্যক্তি

সুফিয়া আহমেদ (২০ নভেম্বর ১৯৩২ - ৯ এপ্রিল ২০২০) ছিলেন একজন বাংলাদেশী শিক্ষাবিদ। ১৯৯৪ সালে তিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী জাতীয় অধ্যাপক নির্বাচিত হন। ভাষা আন্দোলনে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে।[]

সুফিয়া আহমেদ
জন্ম
সুফিয়া ইবরাহিম

(1932-11-20) ২০ নভেম্বর ১৯৩২ (বয়স ৯১)
মৃত্যু৯ এপ্রিল ২০২০(2020-04-09) (বয়স ৮৭)
ইউনাইটেড হাসপাতাল, ঢাকা, বাংলাদেশ
জাতীয়তাবাংলাদেশি
শিক্ষাপিএইচডি
মাতৃশিক্ষায়তনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাঅধ্যাপক
দাম্পত্য সঙ্গীসৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ (বি. ১৯৫৫; মৃ. ২০০৩)
সন্তান
পিতা-মাতামুহম্মদ ইবরাহিম (পিতা)
লুৎফুন্নেসা ইবরাহিম (মাতা)
পুরস্কারএকুশে পদক

প্রারম্ভিক জীবন

সম্পাদনা

সুফিয়া ১৯৩২ সালের ২০ নভেম্বর তদানীন্তন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) ফরিদপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মুহম্মদ ইবরাহিম ছিলেন একজন বিচারপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং মাতা লুৎফুন্নেসা ইবরাহিম।[][] ১৯৪৮ সালে প্রাইভেটে মেট্রিকুলেশন পাস করেন এবং পরে বরিশালের ব্রজমোহন কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। ১৯৫০ সালে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে তিনি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে পড়াশুনা করেন। তিনি ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গকারী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্য আইনের বিরুদ্ধে মিছিলকারী নারীদের মধ্যে একজন ছিলেন।[] তিনি ১৯৬০ সালে লন্ডন থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।[]

কর্মজীবন

সম্পাদনা

১৯৪৩-৪৪ সালে তার পিতা মুহম্মদ ইবরাহিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে পাঠদান করতেন। তখন থেকে তার মাঝে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন লালিত ছিল। ১৯৬১ সালে লন্ডন থেকে পিএইচডি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তার নিজের বিভাগ ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে লেকচারার হিসেবে যোগ দেন। ১৯৮৩ সালে অধ্যাপক হন।[] দেশের বাইরেও তিনি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাদান করেছেন। তিনি ইস্তানবুলের বসফরাস বিশ্ববিদ্যালয় এবং উইজকনসিনের মিলোউকির আলভার্নো কলেজের আমন্ত্রিত অধ্যাপক ছিলেন।[]

সুফিয়া আহমেদ বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে কর্মরত ছিলেন।[] এছাড়া তিনি বাংলাদেশ ইতিহাস পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।[]

ব্যক্তিগত জীবন

সম্পাদনা

সুফিয়া আহমেদ ১৯৫৫ সালের জুনে সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।[] ইশতিয়াক আহমেদ ছিলেন একজন বিচারক ও আইনজীবী। তাদের দুই সন্তান। পুত্র সৈয়দ রেফাত আহমেদ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (পরবর্তীতে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি) এবং কন্যা রাইনা আহমেদ একজন চিকিৎসক।[]

সম্মাননা

সম্পাদনা
  • সুফিয়া কামাল পুরস্কার (২০১৫)[]
  • ভাষা আন্দোলনে অবদানের জন্য একুশে পদক (২০০২)[১০]

মৃত্যু

সম্পাদনা

৯ এপ্রিল ২০২০ সালে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিলো ৮৭ বছর।[১১]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. শেখ রফিক (ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১০)। "জাতীয় অধ্যাপক সুফিয়া আহমেদঃ অন্যতম ভাষা সৈনিক"biplobiderkotha.com। ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  2. মুস্তফা কামাল (জুলাই ১২, ২০০৮)। "Ishtiaq: An extraordinary legal mind"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ জুন ১৩, ২০১৬ 
  3. অদিতি ফাল্গুনী (ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১০)। "His-story vs Her-story"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ আগস্ট ২০১৭ 
  4. "ভাষাকন্যা: সুফিয়া আহমেদ"দৈনিক ইত্তেফাক। ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ৫ আগস্ট ২০১৭ 
  5. "ভাষাসৈনিক সুফিয়া আহমেদের জীবনাবসান"bdnews24.com। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০২৪ 
  6. "'Preserve real history for new generation'"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। জুন ১৪, ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ৫ আগস্ট ২০১৭ 
  7. প্রতিবেদক, নিজস্ব (২২ নভেম্বর ২০২৩)। "আলো ছড়িয়ে গেছেন জাতীয় অধ্যাপক সুফিয়া আহমেদ"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০২৪ 
  8. খান, বাহরাম (১০ আগস্ট ২০২৪)। "নতুন প্রধান বিচারপতি সম্পর্কে যা জানা গেল"দ্য ডেইলি স্টার। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০২৪ 
  9. "ভাষাসৈনিক অধ্যাপক সুফিয়া আহমেদ আর নেই"দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদ। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০২৪ 
  10. "একুশে পদকপ্রাপ্ত সুধীবৃন্দ ও প্রতিষ্ঠান" (পিডিএফ)সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। পৃষ্ঠা ৭। ২২ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০১৯ 
  11. "ভাষাসৈনিক অধ্যাপক সুফিয়া আহমেদ আর নেই"জাগোনিউজ২৪.কম। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০২৪