সুপ্রকাশ রায়
সুপ্রকাশ রায় ( ১৯১৫ — ২১ ডিসেম্বর, ১৯৯০) একজন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনকারী বিপ্লবী, শিক্ষক ও ইতিহাস গবেষক। তার আসল নাম সুধীরচন্দ্র ভট্টাচার্য।
সুপ্রকাশ রায় | |
---|---|
সুধীরচন্দ্র ভট্টাচার্য | |
জন্ম | ১৯১৫ |
মৃত্যু | ২১ ডিসেম্বর, ১৯৯০ (বর্তমান ভারত) |
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) ভারত |
শিক্ষা | ব্রজমোহন কলেজ |
পেশা | লেখক, রাজনীতিবিদ |
নিয়োগকারী | শিক্ষকতা |
প্রতিষ্ঠান | ১৯৫৫ সালে হেয়ার স্কুল এ |
পরিচিতির কারণ | ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন |
উল্লেখযোগ্য কর্ম | ভারতের কৃষক বিদ্রোহ ও গনতান্ত্রিক সংগ্রাম তেলেংগানা বিপ্লব সাঁওতাল বিদ্রোহ ইত্যাদি |
রাজনৈতিক দল | স্বাধীনতার পুর্বে যুগান্তর দল, স্বাধীনোত্তর কালে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি, |
বিপ্লবী আন্দোলন
সম্পাদনাবরিশালের গৈলা স্কুলে পড়াশোনা করেন। বরিশালের বিখ্যাত ব্রজমোহন কলেজে পড়াকালীন বিপ্লবী যুগান্তর দলের সাথে যোগাযোগ হয়। বিপ্লবী আন্দোলনে যুক্ত থাকার অভিযোগে ১৯৩৪ থেকে ১৯৩৭ সাল অবধি কারাবাস করেন। তাকে হিজলি ডিটেনশন ক্যাম্প ও বহরমপুর জেলে থাকতে হয়েছিল। কারান্তরালে মার্কসবাদে আকৃষ্ট হয়ে গভীর অধ্যয়ন করেন তিনি।
কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য
সম্পাদনাজেল থেকে বেরিয়ে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হন তিনি। সক্রিয় ভাবে শ্রমিক আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়ে কলকাতার ট্রাম মজদুর ইউনিয়নের সংগঠক হিসেবে পরিচিতি পান এবং ১৯৪৫-৪৬ পার্টির জেলা ইউনিট, ও জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি, ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে বে-আইনি ঘোষিত হলে গোপনে পার্টির সংগঠনের কাজ চালাতে থাকেন। পরবর্তীতে পার্টির সাথে মতবিরোধ হলে সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে আসেন আদর্শনিষ্ঠ সুপ্রকাশ রায়। সর্বক্ষনের পার্টিকর্মী হিসেবে কাজ করেছেন, তার নিজস্ব সম্বল কিছুই ছিলোনা। ফলত তার মৃত্যুর পরে অভাব অনটনে জর্জরিত ছিল তার পরিবার।[১]
সাহিত্যকর্ম ও গবেষণা
সম্পাদনা১৯৫৫ সালে হেয়ার স্কুল এ শিক্ষকতার কাজে যোগদান করেন। ১৯৫৬-৮২ পর্যন্ত টানা শিক্ষকতা করেছেন। বিশিষ্ট বামপন্থী চিন্তাবিদ গোপাল হালদার ও চিন্মোহন সেহানবীশের প্রেরণায় স্বাধীনতা আন্দোলন ও সংগ্রামের ইতিহাস নিয়ে গবেষণা ও লেখা শুরু করেন। তার বেশিরভাগ গ্রন্থই সুপ্রকাশ রায় নামে প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও তার আরো দুটো ছদ্মনাম ছিলো বিজন সেন এবং কাফি খাঁ।[২]
রচনা
সম্পাদনা- ভারতের কৃষক বিদ্রোহ ও গনতান্ত্রিক সংগ্রাম
- ভারতের বৈপ্লবিক সংগ্রামের ইতিহাস
- বিদ্রোহী ভারত
- ভারতের জাতীয়তাবাদী বিপ্লবের ইতিহাস
- মাও সে তুং
- পরিভাষা কোষ
- তেলেংগানা বিপ্লব
- ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির ইতিহাসের রূপরেখা
- মহাবিদ্রোহ ও তারপর
- সাঁওতাল বিদ্রোহ
- তেভাগা সংগ্রাম
- জাতিসমস্যায় মার্কসবাদ
- গান্ধীবাদের স্বরূপ
- মার্ক্সের ক্যাপিটাল
- কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো: সংগ্রামের দিশা
- চীন বিপ্লব ও চীনের কৃষক; ইত্যাদি তার রচিত ও সম্পাদিত বই।[৩]
মৃত্যু
সম্পাদনাসুপ্রকাশের শেষ জীবন অবহেলায় কেটেছে। তিনি ২১ ডিসেম্বর, ১৯৯০ সালে মারা যান। ১৯৭২ সালে তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসেবে তাম্রপত্র পান যা পরবর্তীকালে তার কন্যা অভাবের তাড়নায় কাগজওয়ালার কাছে দশ টাকায় বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন।[৩]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ সোমনাথ দে (৩ ডিসেম্বর, ২০১২)। "সম্পাদক সমীপেষু"। আনন্দবাজার পত্রিকা। সংগ্রহের তারিখ ১৫.০১.২০১৭। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=, |সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ সংসদ বাংগালী চরিতাভিধান (দ্বিতীয় খন্ড)। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। ২০০৪। পৃষ্ঠা ৩৮২। আইএসবিএন 81-86806-99-7।
- ↑ ক খ ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির ইতিহাসের রূপরেখা। কলকাতা: র্যাডিকাল ইমপ্রেশন। ২০১০। আইএসবিএন 978-81-85459-15-8।