সুপতি রায়
সুপতি রায় (২.০২.১৩১৩ বঙ্গাব্দ - ২৬.১১.১৩৭৫ বঙ্গাব্দ) একজন ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র বিপ্লববাদী, বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার্সের সদস্য।
সুপতি রায় | |
---|---|
জন্ম | ২.০২.১৩১৩ বঙ্গাব্দ |
মৃত্যু | ২৬.১১.১৩৭৫ বঙ্গাব্দ (বয়স ৬২ বছর) |
আন্দোলন | ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন |
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাবাংলাদেশে কুমিল্লা জেলার বিজয়নগরে জন্মগ্রহণ করেন সুপতি। পিতা রামগোবিন্দ রায় ছিলেন ঢাকার বারদিতে নাগদের এস্টেট তহশিলদার। ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ পাশ করেন। স্কুলে পড়ার সময়েই বিপ্লবী সংস্থা মুক্তি সংঘের সাথে যোগাযোগ হয়।
বিপ্লবী কর্মকাণ্ড
সম্পাদনাসুপতি রায় মুক্তি সংঘের সক্রিয় এবং অকুতোভয় সদস্য ছিলেন। গোপনে বিপ্লবাত্মক কাজ সফল করার ব্যাপারে বিশেষ পারদর্শিতা ছিল। ঢাকা শহরে যারা গোয়েন্দা পুলিশের সাহায্যকারী ছিল ও বিপ্লবীদের ধরিয়ে দিতো তাদের শায়েস্তা করার ভার নেন। একাজে তার সাথীরা ছিলেন বিপ্লবী নেপাল নাগ, জিতেন ঘোষ প্রমুখ। ২৯ আগস্ট ১৯২৯ সালে বিপ্লবী বিনয় বসু লোমান সাহেবকে হত্যা করলে তার ওপর দশ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে সরকার। ঢাকা শহরে চিরুনী তল্লাশী ও অত্যাচার শুরু হয়। সুপতি নিজ দায়িত্বে পলাতক বিনয় বসু'কে নিরাপদে কলকাতা পৌঁছে দেন। নৌকাযোগে, ট্রেনে অনেকবার তাদের পুলিশের মুখোমুখি হতে হয়। কখোনো মুসলিম শ্রমিকদের বেশে, কখোনো বা জমিদার ও তার চাকরের ছদ্মবেশে পুলিশ কর্মকর্তাদের চোখের সামনে দিয়েই তুখোড় বুদ্ধিসম্পন্ন সুপতি, বিনয় বসুকে বার করে নিয়ে যান। এই দুই বিপ্লবীর পলায়নের কাহিনী প্রায় রূপকথার মতো।[১] বিপ্লবী ত্রয়ী বিনয় - বাদল - দীনেশের রাইটার্স বিল্ডিং আক্রমনের প্রস্তুতি পর্বে তার বিশেষ ভূমিকা ছিল। প্রশাসনের যোগাযোগ ব্যবস্থা ধ্বংস করতে মুক্তি সংঘ যে 'তারকাটা' কর্মসূচি নেয় তাতেও সক্রিয় অংশ নেন তিনি[২]।
বেংগল ভলেন্টিয়ার্স সংগঠক
সম্পাদনা১৯৩০ সালে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠন ও যুববিদ্রোহের সাহায্যার্থে বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার্সের যে পাঁচজন বিপ্লবীকে নিয়ে অ্যাকশন স্কোয়াড গঠিত হয় তার অন্যতম ছিলেন বিপ্লবী সুপতি রায়[৩]। ১৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৩ পুলিশ তাকে এক গোপন বৈঠক থেকে গ্রেপ্তার করে বেংগল অর্ডিন্যান্স এর বলে বিনা বিচারে আটকে রাখে পাঁচ বছর। ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দে মুক্তি পেয়ে নতুন উদ্যমে বিপ্লবী কার্যকলাপ চালিয়ে যান। ত্রিপুরায় বেংগল ভলেন্টিয়ার্সের সংগঠক হিসেবে কাজ করতে থাকেন[২]।
ফরওয়ার্ড ব্লক
সম্পাদনানেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, ফরওয়ার্ড ব্লক দল গঠন করলে তাতে যোগ দেন সুপতি। ১২ এপ্রিল ১৯৪০ ঢাকায় ফরওয়ার্ড ব্লক পার্টি অফিস থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। আবার কারান্তরালে থাকেন দীর্ঘ পাঁচ বছর। ১৯৪৬ সালে মুক্তি পেয়ে দেশবিভাগ বিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন সুপতি।[২]
মৃত্যু
সম্পাদনা২৬.১১.১৩৭৫ (বঙ্গাব্দ) মারা যান বিপ্লবী সুপতি রায়।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "বিনয় বসু"। গুণীজন। সংগ্রহের তারিখ ২২.০১.২০১৭। Authors list-এ
|প্রথমাংশ1=
এর|শেষাংশ1=
নেই (সাহায্য); এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ ক খ গ প্রথম খন্ড, সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত (২০০২)। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা ৫৮৪। আইএসবিএন 81-85626-65-0।
- ↑ "নেতাজীর হোমফ্রন্ট ৮"। মুখোমুখি ডট কম। সংগ্রহের তারিখ ২২.০১.১৭। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]