সুখরঞ্জন সমাদ্দার
সুখরঞ্জন সমাদ্দার (১৫ জানুয়ারি ১৯৩৮ - ১৪ এপ্রিল ১৯৭১) ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলাদেশের শহীদ বুদ্ধিজীবী। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন ১৪ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। [১]
সুখরঞ্জন সমাদ্দার | |
---|---|
১৫ জানুয়ারি ১৯৩৮ – এপ্রিল ১৪, ১৯৭১ | |
জন্ম তারিখ | ১৫ জানুয়ারি ১৯৩৮ |
জন্মস্থান | বরিশাল, বৃটিশ ভারত (অধুনা বাংলাদেশ) |
মৃত্যু তারিখ | ১৪ এপ্রিল ১৯৭১ | (বয়স ৩৩)
মৃত্যুস্থান | রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, পাকিস্তান, অধুনা বাংলাদেশ |
আন্দোলন | বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ |
দাম্পত্য সঙ্গী | চম্পা রাণী সমাদ্দার |
পিতামাতা | কার্তিক চন্দ্র সমাদ্দার, প্রফুল্লবালা সমাদ্দার |
সন্তান | সলিলরঞ্জন সমাদ্দার, মল্লিকা সমাদ্দার, সুস্মিতা সমাদ্দার |
জন্ম ও শিক্ষাজীবন
সম্পাদনাসুখরঞ্জন সমাদ্দার ১৯৩৮ সালের ১৫ জানুয়ারি বরিশাল জেলার বানারীপাড়া উপজেলার ইলুহার গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম কার্তিক চন্দ্র সমাদ্দার, মা প্রফুল্লবালা সমাদ্দার। তিনি ১৯৫২ সালে স্থানীয় বাইশহারী স্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং ১৯৫৪ সালে বরিশাল বি এম কলেজ থেকে আই এ পাস করেন। এরপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৭ সালে সংস্কৃতে বি.এ (সম্মান) ডিগ্রি লাভ করেন। পরবর্তীতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংস্কৃতে এম.এ পাস করেন।
কর্মজীবন
সম্পাদনা১৯৫৮ সালে সুখরঞ্জন সমাদ্দার গোপালগঞ্জ কলেজে অধ্যাপনা শুরু করার এক বছর পর ১৯৫৯ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগে প্রভাষক নিযুক্ত হন। তিনি ছিলেন মুক্তবুদ্ধি ও অসাম্প্রদায়িক চিন্তাধারার অধিকারী। নজরুল গীতি ও রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী হিসেবে তার খ্যাতি ছিল।
অবদান
সম্পাদনা১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের যে চারজন শিক্ষক ও বুদ্ধিজীবীকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়, সুখরঞ্জন সমাদ্দার তাদের একজন। ১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনারা রাজশাহী শহরে প্রবেশ করে। সেদিন সন্ধ্যায় যুদ্ধে আহত একজন বাঙালি মুক্তিযোদ্ধা ইপিআর সেনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সুখরঞ্জন সমাদ্দারের বাসায় এসে আশ্রয় গ্রহণ করেন। ওই ইপিআর সেনাকে আশ্রয় দিলে বিপদ হতে পারে জেনেও তাকে আশ্রয় দেন ও তার রক্তাক্ত ক্ষতস্থান বেঁধে দিয়ে সারা রাত তার সেবা করেন। পরদিন ১৪ এপ্রিল সকালে পাকিস্তানি সেনারা সুখরঞ্জন সমাদ্দারকে ধরে নিয়ে যায়। ঘাতকেরা তাকে সেদিনই নির্মমভাবে হত্যা করে ফেলে রেখে দেয়। তার বাসার গোয়ালা গুলিবিদ্ধ সুখরঞ্জনকে মাটিচাপা দেয়, যা তিনি বিজয়ের পর পরিবারকে জানান।। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার দেহাবশেষ তুলে এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের সামনে পুনঃসমাহিত করে।[২]
পারিবারিক জীবন
সম্পাদনাতার স্ত্রীর নাম চম্পা রাণী সমাদ্দার। এ দম্পতি এক পুত্র ও দুই কণ্যার জনক। পুত্র সলিলরঞ্জন সমাদ্দার চিকিৎসক, কণ্যা মল্লিকা সমাদ্দার ও সুস্মিতা সমাদ্দার দুজনই শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত।
সম্মননা
সম্পাদনারাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার নামানুসারে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র (টিএসসিসি) এর নামকরণ করেছে 'শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র'। [৩]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ http://www.channel24bd.tv/index.php/2016121467765/desh-24-cat/%E0%A6%AC%E0%A7%81%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A7%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%80%E0%A6%AC%E0%A7%80-%E0%A6%B8%E0%A7%81%E0%A6%96%E0%A6%B0%E0%A6%9E%E0%A7%8D%E0%A6%9C%E0%A6%A8-%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%B0.channel24[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "সুখরঞ্জন সমাদ্দার"।
- ↑ "উদ্বোধনের এক বছর পর চালু টিএসসিসি"।