সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়
সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় হলো বাংলাদেশের চতুর্থ প্রাচীনতম বিদ্যালয় এবং একই সাথে ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীন বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অন্যতম। এটি ১৮৩৬ খ্রিষ্টাব্দে স্থাপিত হয়। বিদ্যালয়টি সিলেট জেলার সুরমা নদীর তীরে কালীঘাটে অবস্থিত। ১৯৯১ সাল থেকে এটি দুই শিফট (দিবা ও প্রভাতী) একজন প্রধান ও দুইজন সহকারী প্রধান শিক্ষক সহ মোট ৫৫ জন শিক্ষক দিয়ে পরিচালিত হয়।
সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় | |
---|---|
অবস্থান | |
তথ্য | |
ধরন | মাধ্যমিক বিদ্যালয় |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৮৩৬ |
বিদ্যালয় জেলা | সিলেট জেলা |
ইআইআইএন | ১৩০৪০০ |
শিক্ষার্থী সংখ্যা | আনু. ২২০০ |
শিক্ষা ব্যবস্থা | জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড |
ক্যাম্পাস | শহুরে |
ডাকনাম | পাইলট স্কুল |
অন্তর্ভুক্তি | মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, সিলেট |
ওয়েবসাইট | www |
ইতিহাস
সম্পাদনাঊনবিংশ শতাব্দী
সম্পাদনা১৮৩০ সালের দিকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনামলে লর্ড বেন্টিক এই অঞ্চলের মানুষ যেন সঠিকভাবে ইংরেজি বলতে পারে সেই লক্ষ্যে এই বিদ্যালয়টি স্থাপনের নির্দেশ দেন।[১] ১৮৪১ সালে এখানে মাত্র ৪১ জন ছাত্র পড়াশোনা করত। এরপর রেভেন্ডার প্রাইজ প্রধান শিক্ষক হিসাবে বিদ্যালয়টির দায়িত্ব নেন এবং বিদ্যালয়টিকে একটি মিশনারি বিদ্যালয়ে রুপান্তর করেন। তখন বিদ্যালয়টি রেভেরেন্ড প্রাইজের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ১৮৬৯ সালে বিদ্যালয়টির নাম পরিবর্তন করে "সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়" নামকরণ করে হয় এবং রায় সাহেব দুর্গা কুমার বসুকে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে বিদ্যালয়টি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় এবং পরবর্তীতে বিদ্যালয়টি সরিয়ে নিয়ে বর্তমানে যে স্থানে রয়েছে (কালীঘাট) সেখানে স্থানান্তর করা হয়।
বিংশ শতাব্দী
সম্পাদনা১৯০৩ সালে রায় সাহেব দুর্গা কুমার বসু স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করলে বৈকুণ্ঠনাথ ভট্টাচার্য বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯১৮ সালে আরও একটি ভূমিকম্পে বিদ্যালয়টি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় এবং ১৯১৯ সালে বিদ্যালয়টি পুনঃস্থাপিত হয়। এটি ১৯২৬ সালে ভয়াবহ বন্যার ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ১৯২৯ সালে শুধুমাত্র একটি ভবন ছাড়া পুরো বিদ্যালয়টি আগুনে পুড়ে যায়। ১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বিদ্যালয় ভবনকে সৈনিকদের থাকার ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করা হয় এবং সৈনিকরা চলে যাওয়ার পর বিদ্যালয়টির কাজ পুনরায় শুরু হয়। ১৯৬২ সালে আব্দুল ওয়াহিদ চৌধুরী প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং বিজ্ঞানাগারের উন্নতি করান এবং শিক্ষকের সংখ্যা বৃদ্ধি করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি চট্টগ্রাম বিভাগের সেরা প্রধান শিক্ষক হিসেবে নির্বাচিত হন । একই সালে বিদ্যালয়টির আমূল পরিবর্তনের কারণে তাকে "তমগা-ই-খেদমাত" পুরস্কার দেয়া হয়। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সৈন্যরা বিদ্যালয়টিতে আগুন লাগিয়ে দেয়, অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি ধ্বংস করে এবং বিভিন্ন বই পুস্তক জ্বালিয়ে দেয়।
ক্লাসের সময়সূচী
সম্পাদনাপ্রভাতি শাখা: সকাল ৭:১০ টা - দুপুর ১১:৪৫ টা ।
দিবা শাখা: দুপুর ১২:০০ মিনিট - বেলা ৪:১৫ মিনিট।
কলেজে উন্নীতকরণ
সম্পাদনা২০১৩ সালে এটিকে কলেজে উন্নীত করার কথা হয়ে থাকলেও এখনো পর্যন্ত এটিকে কলেজে উন্নীতকরণ করা হয়নি ।
উল্লেখযোগ্য প্রাক্তন
সম্পাদনা- সৈয়দ মুজতবা আলী - সাহিত্যিক [২]
- জেনারেল এম এ জি ওসমানী - মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক
- হুমায়ূন রশীদ চৌধুরী-সাবেক স্পীকার
- আবুল মাল আবদুল মুহিত -সাবেক অর্থমন্ত্রী
- শাহ এ এম এস কিবরিয়া - সাবেক অর্থমন্ত্রী
- ব্রিগেডিয়ার ডা.এম এ মালিক - জাতীয় অধ্যাপক,বাংলাদেশের হৃদরোগ চিকিৎসার পথিকৃৎ
- ই.এ. চৌধুরী -বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজিপি এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রথম কমিশনার
- সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম - সাহিত্যিক;
- বিপিন চন্দ্র পাল-স্বদেশী আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা
- ড.এ কে আব্দুল মোমেন - পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আরো দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Siddiquee, Iqbal. "Sylhet Government Pilot High School: 171 Years", Star Insight (২৩ জুন ২০০৭)
- ↑ Abdullah Shibli (৭ মার্চ ২০১৫)। "Syed Mujtaba Ali as a Rebel"। The Daily Star।