সাহাবউদ্দিন আহমেদ

বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মুক্তিযোদ্ধা

সাহাবউদ্দিন আহমেদ (জন্ম: অজানা) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর উত্তম খেতাব প্রদান করে। [১]

সাহাবউদ্দিন আহমেদ
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর উত্তম
একই নামের অন্যান্য ব্যক্তিবর্গের জন্য দেখুন শাহাবুদ্দিন আহমেদ (দ্ব্যর্থতা নিরসন)

জন্ম ও শিক্ষাজীবনসম্পাদনা

সাহাবউদ্দিন আহমেদের বাড়ি ফরিদপুর জেলা শহরের চরকমলাপুর। তার বাবার নাম গিয়াসউদ্দিন আহমেদ এবং মায়ের নাম লাইলী রশিদ।তার স্ত্রীর নাম রোকেয়া নার্গিস। তাঁদের এক মেয়ে, এক ছেলে।

কর্মজীবনসম্পাদনা

১৯৭১ সালে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সে (পিআইএ) কর্মরত ছিলেন সাহাবউদ্দিন আহমেদ। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ৭ এপ্রিল ভারতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে নানা সাংগঠনিক কাজ করতে থাকেন। ২৮ সেপ্টেম্বর মুক্তিবাহিনীর বিমানবাহিনী গঠিত হলে তিনি তাতে যোগ দেন। তিনি প্রথমে জঙ্গি বিমান চালনার প্রশিক্ষণ নেন। পরে লোক-সংকটের কারণে তাকে হেলিকপ্টারে স্থানান্তর করা হয়। তার হেলিকপ্টার চালনার পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল না। কয়েক দিনের প্রশিক্ষণে হেলিকপ্টার চালনায় তিনি দক্ষ হয়ে ওঠেন।যুদ্ধের পর ২০০৭ সালে বাংলাদেশ বিমানের চাকরি থেকে অবসর নেন। [২]

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকাসম্পাদনা

১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলায় খুব সকালে হেলিকপ্টারে করে ছত্রীসেনা নামায় মিত্রবাহিনী। পাকিস্তানিরা তাঁদের অ্যামবুশ করে। এতে ছত্রীসেনারা নিশ্চিত বিপর্যয়ের মুখে পড়েন। তখন মিত্রবাহিনী মুক্তিবাহিনীর নবগঠিত বিমানবাহিনীর সাহায্য কামনা করে। খবর পাওয়া মাত্র মুক্তিবাহিনীর বিমানবাহিনীর একটি ইউনিট অস্ত্রসজ্জিত হেলিকপ্টার নিয়ে রায়পুরায় রওনা হয়। সাহাবউদ্দিন আহমেদের পরিকল্পনা ছিল, তারা দূর থেকে আক্রমণ চালিয়ে চলে যাবেন। কিন্তু অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের ঝুঁকি নিয়ে বেশি নিচে নেমে আক্রমণ চালাতে হয়। বেশি নিচে নামার কারণে পাকিস্তান সেনারা হেলিকপ্টারে পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করে। সাহাবউদ্দিন আহমেদদের আক্রমণ এত জোরালো ও নিখুঁত ছিল যে সব বাধা উপেক্ষা করে তারা পাকিস্তানিদের ওপর সফল অপারেশন চালান। তাঁদের আক্রমণে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ২০ জন নিহত ও ২৪-২৫ জন আহত হয়। বাকিরা সেখান থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। এই অপারেশন শেষ করে সাহাবউদ্দিন আহমেদরা হেলিকপ্টার নিয়ে নিরাপদে ফিরে যান। সাহাবউদ্দিন আহমেদ ১০-১১টি অপারেশনে অংশ নিয়েছেন। তিনি আর দুটি অপারেশনে এ রকম বিরূপ অবস্থার মুখে পড়েছিলেন। যেকোনো সময় তার হেলিকপ্টার শত্রুর গুলিতে ধ্বংস হয়ে যেতে পারত। সেটা ৬ ডিসেম্বর মৌলভীবাজারে এবং ৭ ডিসেম্বর সিলেটের শমসেরপুরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গুলিতে তার হেলিকপ্টার কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হেলিকপ্টারে ছিলেন সাহাবউদ্দিন আহমেদ, বদরুল আলম ও একজন গানার।[৩]

পুরস্কার ও সম্মাননাসম্পাদনা

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. "দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না"| তারিখ: ১৯-০৫-২০১১"। ২০১৭-১২-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৪-১০ 
  2. একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা (খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রন্থ)। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ১০৩। আইএসবিএন 978-984-33-5144-9 
  3. একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (প্রথম খন্ড)। প্রথমা প্রকাশন। এপ্রিল ২০১২। পৃষ্ঠা ৪৪। আইএসবিএন 978-984-90253-7-5 

বহি:সংযোগসম্পাদনা