সমভূমি
সমভূমি ( plains) : সমুদ্রপৃষ্ঠের সাথে প্রায় সমউচ্চতাবিশিষ্ট বিস্তীর্ণ এবং মৃদু ঢালবিশিষ্ট বিস্তৃত প্রান্তরকে সমভূমি বলে। সমভূমি সমুদ্র সমতলের চেয়ে সামান্য উচুঁ হয়।পৃথিবীর মোট ভূমিরূপের শতকরা প্রায় ৩৬ ভাগ সমভূমি।মানুষ অন্য সকল ভূমিরূপের চেয়ে সমভূমিতে থাকতে অধিক পছন্দ করে।
গঠন প্রক্রিয়াসম্পাদনা
সমভূমি মূলত তিনটি প্রক্রিয়ায় গঠিত হয়।যথাঃ ১.ক্ষয়ক্রিয়া ২.সঞ্চয়ক্রিয়া ও ৩.ভূআলোড়ন জনিত কারণ।[১]
শ্রেণিবিভাগসম্পাদনা
কোন কোন উৎস অনুযায়ী সমভূমি ২ প্রকার[২] আবার কোন কোন উৎস অনুযায়ী সমভূমি ৩ প্রকার।[৩] যেহেতু সমভূমি উৎপত্তির কারণ ৩ টি সেহেতু প্রসারিত দৃষ্টিকোন থেকে সমভূমি ৩ প্রকার। সেগুলি হল ক্ষয়জাত সমভূমি, সঞ্চয়জাত সমভূমি ও ভূগাঠনিক সমভূমি।
ক্ষয়জাত সমভূমিসম্পাদনা
কোন উচ্চ ভূমি প্রাকৃতিক শক্তি দ্বারা ক্রমশ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে সমভূমিতে পরিণত হলে তাকে ক্ষয়জাত সমভূমি বলে। ক্ষয়জাত সমভূমি মূলত চার ভাবে সৃষ্টি হয়।
- সমপ্রায় বা পেনিপ্লেন সমভূমি (মোনাডনক)
- কাস্ট সমভূমি
- পেডিপ্লেন সমভূমি
- তরঙ্গায়িত সমভূমি
সঞ্চয়জাত সমভূমিসম্পাদনা
বিভিন্ন প্রকার প্রাকৃতিক শক্তি দ্বারা পলি,বালুকণা নিন্মভূমিতে সঞ্চিত হয়ে যে সমভূমি সৃষ্টি করে তাকে সঞ্চয়জাত সমভূমি বলে।[৪]
উল্লেখযোগ্য সঞ্চয়জাত সমভূমি গুলো হল:
- বাজাদা সমভূমি
- পলল সমভূমি
- প্লাবন সমভূমি
- ব-দ্বীপ সমভূমি
- উপকূলীয় সমভূমি
- হিমবাহ সমভূমি
- লোয়েস সমভূমি
- লাভা সমভূমি
ভূআলোড়নজনিত বা ভূগাঠনিক সমভূমিসম্পাদনা
ভূআলোড়নজনিত কারণে সমুদ্র সমতলের দুবর্ল অংশের পতন বা মহাদেশের কোন নিচুভূমি উত্থিত হয়ে যে ভূমিরূপের সৃষ্টি করে,তাকে ভূআলোড়নজনিত সমভূমি বলে। তিন ভাবে এ ধরনের সমভূমি সৃষ্টি হয়।
- উত্থিত বা উন্নত সমভূমি
- অবনমিত বা অবনমন সমভূমি[৫]
- স্বাভাবিক সমভূমি
পৃথিবীর প্রধান প্রধান সমভূমিসম্পাদনা
পৃথিবীর প্রায় সকল মহাদেশেই সমভূমি রয়েছে।
ইউরেশিয়া অঞ্চলসম্পাদনা
ইউরেশিয়া অঞ্চল বলতে ইউরোপ ও এশিয়া অঞ্চলকে বোঝানো হয়।এ অঞ্চলের প্রধান প্রধান সমভূমিগুলো হল:
- বাংলাদেশের সমভূমি
- সিন্ধু-গাঙ্গেয় সমভূমি
- ভারতের দক্ষিণাত্যে কৃষ্ণমৃত্তিকার সমভূমি।
- চীন সমভূমি
- তুরাণের নিম্ন সমভূমি
- ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা ও জাভা সমভূমি
- আরবীয় সমভূমি।
- ত্রিপুরা সমভূমি
- মধ্যপ্রাচীয় সমভূমি
আফ্রিকা ও ওসেনিয়া অঞ্চলসম্পাদনা
আমেরিকান অঞ্চলসম্পাদনা
অন্যন্যসম্পাদনা
গুরুত্বসম্পাদনা
সুপ্রাচীনকাল থেকেই মানুষ বসবাসের জন্য সমভূমিকে বেচে নিয়েছে।সমভূমি পবর্ত বা মালভূমি থেকে অধিক নিরাপদ ও বাসযোগ্য।
সমভূমি পশুপালন,কৃষি ও চাষাবাদ শিল্পকারখানা স্থাপন,বাসস্থান স্থাপন প্রভৃতি কাজার জন্য বিশেষ উপযোগী।
বাংলাদেশের সমভূমিসম্পাদনা
বাংলাদেশের সুবিশাল এলাকা জুড়ে রয়েছে সমভূমি।বাংলাদেশের সমভূমির মোট আয়তন ১,২৪,২৬৬ বর্গকিলোমিটার।এর আধিকাংশই নদীবাহিত পলি দ্বারা সৃষ্ট।এ সমভূমি উত্তর অংশ থেকে ক্রমনিম্ন।সুন্দরবন প্রায় সমুদ্র সমতলে অবস্থিত। বাকি অঞ্চলগুলোর উচ্চতা-
বাংলাদেশের সমভূমির শ্রেণিবিভাগসম্পাদনা
বাংলাদেশের সমভূমিকে নিন্মোক্ত ভাগে ভাগ করা যায়।
- ত্রিপুরা সমভূমি
- সিলেট অববাহিকা
- পিডমন্ট বা পর্বত পাদস্থ পলিজ সমভূমি
- চট্টগ্রামের উপকূলবর্তী সমভূমি
- সক্রিয় ব-দ্বীপ অঞ্চলীয় সমভূমি
- পরিণত ব-দ্বীপ অঞ্চলীয় সমভূমি
- মৃতপ্রায় ব-দ্বীপ অঞ্চলীয় সমভূমি
- স্রোতজ সমভূমি[৬]
আরো দেখুনসম্পাদনা
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ ভূগোল ১ম পত্র
উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণি
লেখকঃড.শাহজাহান আহম্মদ ও জিয়াউর রহমান
প্রকাশকনা প্রতিষ্টানঃকাজল ব্রাদার লিমিটেড
প্রকাশকালঃজুন, ২০১৫। - ↑ মাধ্যমিক ভূগোল ও পরিবেশ
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড ঢাকা - ↑ ১ম তথ্যসূত্র দ্রষ্টব্য
- ↑ ক খ মাধ্যমিক ভূগোল
- ↑ প্রথম তথ্যসূত্র দ্রষ্টব্য
- ↑ বাংলাদেশের ভৌগোলিক শ্রেণিবিভাগ
লেখকঃ মর্গান ম্যাকনিয়ার
প্রকাশকালঃ ১৯৫৯