সবিতা আম্বেডকর
সাবিতা ভীমরাও আম্বেডকর (জন্মগত নাম শারদা কৃষ্ণরাও কবির; ২রা জানুয়ারি ১৯০৯ - ২৯শে মে ২০০৩) একজন ভারতীয় সমাজকর্মী, ডাক্তার এবং ভারতীয় সংবিধানের জনক ভীমরাও রামজি আম্বেডকরের দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন। আম্বেডকরকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা মাই বা মাইসাহেব (মারাঠি ভাষায় মা-কে মাই বলে অভিহিত করা হয়) হিসাবে উল্লেখ করে থাকেন।[১][২]
সাবিতা আম্বেডকর | |
---|---|
জন্ম | শারদা কৃষ্ণরাও কবির ২৭ জানুয়ারি ১৯০৯ |
মৃত্যু | ২৯ মে ২০০৩ মুম্বই, মহারাষ্ট্র, ভারত | (বয়স ৯৪)
জাতীয়তা | ভারতীয় |
অন্যান্য নাম | মাই (মা), মাইসাহেব আম্বেডকর |
শিক্ষা | এমবিবিএস |
পেশা | সামাজিক কর্মী, ডাক্তার |
পরিচিতির কারণ | সামাজিক কাজকর্ম |
আন্দোলন | দলিত বৌদ্ধ আন্দোলন |
দাম্পত্য সঙ্গী | বি. আর. আম্বেডকর (বি. ১৯৪৮ - তা. ১৯৫৬) |
আত্মীয় | দেখুন আম্বেডকর পরিবার |
বি. আর. আম্বেডকরের বিভিন্ন আন্দোলনে, বই লেখার সময়, ভারতীয় সংবিধান রচনা এবং হিন্দু কোড বিল ও দলিত বৌদ্ধ আন্দোলনের সময় তিনি তাঁকে সহায়তা করেছিলেন। বাবাসাহেব আম্বেডকর তাঁর দ্য বুদ্ধ এন্ড হিজ ধম্ম বইয়ের মুখবন্ধে, তাঁর জীবন আট-দশ বছরের জন্য প্রসারিত করার জন্য তাঁর স্ত্রী সাবিতা আম্বেডকরকে কৃতিত্ব দিয়েছিলেন।[৩][৪][৫]
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাসাবিতা আম্বেডকর ১৯০৯ সালের ২রা জানুয়ারি তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বোম্বে প্রেসিডেন্সির বোম্বের একটি মারাঠি ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর জন্মের নাম ছিল "শারদা কৃষ্ণরাও কবির"। তাঁর মাতার নাম জানকী এবং পিতার নাম কৃষ্ণরাও বিনায়ক কবির ছিল। তাঁর পরিবার মহারাষ্ট্রের রত্নগিরি জেলার রাজাপুরের দোরস গ্রামের বাসিন্দা ছিল। পরে তাঁর বাবা রত্নগিরি থেকে বোম্বে চলে এসেছিলেন। অতঃপর তাঁরা দাদারের পশ্চিমে স্যার রাও বাহাদুর সি কে বোলে রোডে, মাতৃছায়ায়, সারুর বাড়িতে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন।[৬][৭][৮]
শিক্ষা
সম্পাদনাসাবিতা আম্বেডকর একজন মেধাবী ছাত্রী ছিলেন। তিনি পুনে থেকে তাঁর প্রাথমিক পড়াশোনা সম্পন্ন করেছিলেন। এর পরে, ১৯৩৭ সালের দিকে, তিনি বোম্বের গ্রান্ট মেডিকেল কলেজ থেকে ব্যাচেলর অব মেডিসিন, ব্যাচেলর অব সার্জারি সম্পন্ন করেন। পড়াশোনা শেষ হলে তিনি গুজরাতের একটি বড় হাসপাতালে প্রথম শ্রেণির মেডিকেল অফিসার হিসাবে নিযুক্ত হন। কিন্তু কয়েক মাস অসুস্থতার পরে তিনি তার চাকরি ছেড়ে নিজের গ্রামে ফিরে আসেন। তাঁর আট ভাইবোনের মধ্যে ছয়জনের আন্ত-বর্ণ বিবাহ (অন্য জাতিতে বিবাহ) হয়েছিল। উক্ত দিনগুলোতে এটি মারাঠি ব্রাহ্মণদের কাছে এক অসাধারণ বিষয় ছিল। সাবিতা বলেছিলেন, "আমাদের পরিবার আন্তঃজাতির বিবাহের বিরোধিতা করেনি, কারণ পুরো পরিবার শিক্ষিত এবং প্রগতিশীল ছিল।"[৬][৯]
বিবাহ
সম্পাদনা১৯৪৮ সালের ১৫শে এপ্রিল তারিখে শারদা কবির ভীমরাও রামজি আম্বেডকরের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। বিবাহের সময় তিনি ৩৯ বছর বয়সী ছিলেন এবং তাঁর স্বামী ৫৭ বছর বয়সী ছিলেন। তাঁদের বিয়ের পরে, তিনি তাঁর অনুসারীদের কাছে জনপ্রিয়ভাবে "মাই" (মা) নামে পরিচিত ছিলেন। বিয়ের রেজিস্ট্রার হিসাবে, জেলা প্রশাসক রামেশ্বর দয়ালকে দিল্লিতে ডেকে আনা হয়েছিল। এই বিবাহ নাগরিক আইন অনুযায়ী সাধারণভাবে বিবাহ সম্পন্ন হয়েছিল। এই অনুষ্ঠানে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন তাঁদের মধ্যে রায় সাহাব পুরান চাঁদ, মি. ম্যাসি (ব্যক্তিগত সচিব), নীলকন্ঠ, রামকৃষ্ণ চান্দিওয়ালা, সংস্থা আধিকারিক মেশরাম, চিত্রের ভাগ্নে, স্বরাষ্ট্র সচিব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শারদা কবিরের ভাই অন্যতম। এছাড়াও ১৯৪৮ সালের ২৮শে নভেম্বর তারিখে, সদ্য বিবাহিত দম্পতিকে ভারতের তৎকালীন গভর্নর-জেনারেল চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারী স্নেহ ভোজ এর জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন এবং তাঁদের শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। বিয়ের পরে শারদা 'সাবিতা' নামটি গ্রহণ করেছিলেন।[১০][১১]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "बाबासाहेबांना औरंगाबादचे नाव ठेवायचे होते पुष्पनगर पाहा...मिलिंद कॉलेेजातील अनमोल ठेवा"। divyamarathi (মারাঠি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১৮।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "The Woman Behind Dr. Ambedkar - Why Are Our Women Denied Their Rightful Place In History?"। Women's Web: For Women Who Do (ইংরেজি ভাষায়)। ২২ মে ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ Pritchett, Frances। "00_pref_unpub"। Columbia.edu। ২ মে ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "उपोद्घाताची कथा.."। Loksatta (মারাঠি ভাষায়)। ৩ ডিসেম্বর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "PM expresses grief over death of Savita Ambedkar - Times of India"। The Times of India (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ ক খ Verma, Lokesh। "जानिये, बाबा साहेब अंबेडकर के दूसरे विवाह पर क्यों फैली थी नाराजगी"। Rajasthan Patrika (হিন্দি ভাষায়)। Noida। ১৫ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ "डॉ. सविता भीमराव आंबेडकर, जिनके लिए आंबेडकर से महत्वपूर्ण कुछ भी न था"। फॉरवर्ड प्रेस (হিন্দি ভাষায়)। ২১ জুন ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "B R Ambedkar's widow passes away - Times of India"। The Times of India (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ Sukhadeve, P. V.। Maaisahebanche Agnidivya (Marathi ভাষায়)। Kaushaly Prakashan। পৃষ্ঠা 17।
- ↑ "जानिये, बाबा साहेब अंबेडकर के दूसरे विवाह पर क्यों फैली थी नाराजगी"। www.patrika.com (হিন্দি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ Sukhadeve, P. V.। Maaisahebanche Agnidivya (Marathi ভাষায়)। Kaushaly Prakashan। পৃষ্ঠা 30।