দলিত বৌদ্ধ আন্দোলন

দলিতদের মধ্যে আধুনিক সামাজিক রাজনৈতিক আন্দোলন

দলিত বৌদ্ধ আন্দোলন বা নববৌদ্ধ আন্দোলন (পালি : নবযান)[১] হল বিংশ শতাব্দীতে সিংহলি বৌদ্ধ ভিক্ষুগণের সহায়তায় ভারতের দলিতগণকে নিয়ে গড়ে ওঠা একটি বৌদ্ধ নবজাগরণ। ভারতের দলিত আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ভীমরাও আম্বেডকর বর্ণাশ্রম ভিত্তিক ব্রাহ্মণ্য হিন্দুসমাজের নিন্দাপূর্বক সমস্ত দলিত অর্থাৎ শূদ্রাদি নিম্নবর্ণীয় ব্যক্তিগণকে বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত হতে আহ্বান করেন এবং এর ফলে এই আন্দোলন বিশেষ তাৎপর্য লাভ করে।

ভারতের বৌদ্ধ নবজাগরণের প্রতীক

উদ্ভব সম্পাদনা

বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক শাক্যমুনি বুদ্ধের পরিনির্বাণলাভের অনতিকাল পরেই বৌদ্ধ ধর্ম বিপুল প্রসার লাভ করে এবং ভারতের প্রধান ধর্মে পরিণত হয়। কিন্তু খ্রিস্টীয় দ্বাদশ শতাব্দীতেই ব্রাহ্মণ্যবাদের পুনরুত্থান এবং ইসলামের আগমনের ফলে ভারতে বৌদ্ধ ধর্ম অবলুপ্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দে সিংহলি বৌদ্ধ ভিক্ষু অনাগরিক ধর্মপাল কর্তৃক মহাবোধি সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর উক্ত সংগঠনের নেতৃত্বাধীনে ভারতে পুনরায় বৌদ্ধ ধর্মের নবজাগরণ সূচিত হয়। যদিও সেইসময় মহাবোধি সোসাইটি মূলত উচ্চবর্ণীয় ব্যক্তিদের বৌদ্ধ ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছিল।

দক্ষিণ ভারত সম্পাদনা

১৮৯৮ সালে, পন্ডিত ইয়োথি থাস তামিলনাড়ুতে শাক্য বৌদ্ধ সমাজ - ভারতীয় বৌদ্ধ সমিতি নামেও পরিচিত - প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি দলিতদের জন্য হিন্দু ধর্মের ধর্মীয় বিকল্প হিসেবে বৌদ্ধ ধর্মকে উপস্থাপন করেন। থাসের প্রচেষ্টার ফলে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ ভারতে তামিল দলিতদের মধ্যে একটি বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে ওঠে। ভারতীয় বৌদ্ধ সমিতির প্রথম সভাপতি ছিলেন পল ক্যারাস। আম্বেদকরবাদী আন্দোলনের বিপরীতে, ভারতীয় বৌদ্ধ সমিতি শ্রীলঙ্কায় প্রতিষ্ঠিত থেরবাদ বৌদ্ধধর্মের ঐতিহ্যকে গ্রহণ করে (যেখানে থাস তার প্রশিক্ষণ এবং বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষা গ্রহণ করেছিলেন)।[২]

উত্তর ভারত সম্পাদনা

দুটি আদি ধর্ম আন্দোলন – যেগুলি বৌদ্ধ ধর্মের পক্ষে হিন্দু ধর্মকে প্রত্যাখ্যান করেছিল – উত্তরপ্রদেশে স্বামী অচ্যুতানন্দ হরিহর এবং পাঞ্জাবে বাবু মঙ্গু রাম চালু করেছিলেন। একটি অস্পৃশ্য পরিবারে জন্মগ্রহণকারী, অচ্যুতানন্দ আর্য সমাজ শুদ্ধি সংস্কার আন্দোলনে যোগদান করেন এবং সেখানে প্রায় আট বছর (১৯০৫-১৯১২) কাজ করেন।[৩] তিনি অনুভব করেছিলেন যে আর্য সমাজ সূক্ষ্ম উপায়ে অস্পৃশ্যতা অনুশীলন করে এবং পরবর্তীকালে সামাজিক-রাজনৈতিক ভারতীয় অছুত মহাসভা আন্দোলন শুরু করার জন্য এটি ছেড়ে দেয়। অচ্যুতানন্দ আদি-হিন্দু পত্রিকা প্রকাশ করেন, যেখানে তিনি দলিতদেরকে "ভারতীয়দের আদি ধর্ম" হিসেবে আদি-ধর্মে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান।[৪] অচ্যুতানন্দ একটি যৌথ সাংস্কৃতিক ও জাতিগত পরিচয়ের ভিত্তিতে তার দর্শন প্রণয়ন করেছিলেন। তিনি এটি উপজাতি সমাজ সহ দলিতদের বাইরেও দর্শকদের কাছে উপস্থাপন করেছিলেন। তিনি মহাত্মা গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলন এবং উপবাসের পাশাপাশি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের বিরোধিতা করেছিলেন, এই বলে যে ব্রাহ্মণরা "ব্রিটিশদের মতই ভারতে বিদেশী" ছিল, আনন্দ তেলতুম্বদে অনুসারে। বাবু মঙ্গু রামও পাঞ্জাবের একটি অস্পৃশ্য পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন যার একটি সমৃদ্ধ চামড়া ব্যবসা ছিল। মঙ্গু রাম ১৯০৯ সালে ২৩ বছর বয়সে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসেন এবং ক্যালিফোর্নিয়ায় কাজ করেন।[৪] সেখানে, তিনি গদর পার্টিতে যোগ দেন এবং ব্রিটিশ শাসনের বিরোধিতা করার জন্য ক্যালিফোর্নিয়া থেকে ভারতে অস্ত্র পাচার করেন। ১৯২৫ সালে, তিনি দলিত স্বাধীনতার দিকে মনোনিবেশ করেন, "অ্যাড ধর্ম" আন্দোলনের পাশাপাশি তার ধারণাগুলি ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য আদি-ডাঙ্কা নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা চালু করেন। তেলতুম্বডের মতে, মান্ডু রামের ধর্মীয় আন্দোলন বাস্তবায়িত হতে ব্যর্থ হয় এবং মঙ্গু রাম পরে আম্বেদকরবাদী আন্দোলনে যোগ দেন।[৫] ১৯১৪ সালে, প্রকাশকে কলকাতায় বোধনন্দ মহাস্তবীর হিসেবে নিযুক্ত করা হয় এবং লখনউতে বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার শুরু করেন। তিনি ১৯১৬ সালে ভারতীয় বুদ্ধ সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৯২৮ সালে একটি বিহার স্থাপন করেন।[৬]

ভীমরাও রামজি আম্বেডকর সম্পাদনা

১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে য়েবলা সম্মেলনে বাবাসাহেব ভীমরাও আম্বেডকর ঘোষণা করেন যে তিনি কিছুতেই একজন হিন্দুধর্মাবলম্বী হিসেবে মৃত্যুবরণ করবেন না কারণ হিন্দুধর্ম বর্ণভিত্তিক সমাজব্যবস্থার মধ্য দিয়ে মানুষের মধ্যে বিভেদ এবং বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। এর প্রেক্ষিতে বিভিন্ন ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ আম্বেডকরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং প্রত্যেকেই তাকে স্ব স্ব ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়ার আহ্বান জানান। এরপর বিভিন্ন বৈঠকে দলিতদের ধর্মান্তরিত হওয়ার ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দিকগুলি আলোচিত হয়। ১৯৩৬ সালের ২২ মে লখনউতে একটি " সর্বধর্ম সম্মেলন " অনুষ্ঠিত হয়। জগজীবন রাম সহ বহু বিশিষ্ট দলিত নেতৃবর্গ উক্ত সম্মেলনে যোগদান করেন, যদিও বাবাসাহেব আম্বেডকর এই সম্মেলনে উপস্থিত থাকতে পারেননি। এই সম্মেলনে ইসলাম, খ্রিস্ট ধর্ম এবং বৌদ্ধ ধর্ম সহ বিভিন্ন ধর্মের প্রতিনিধিগণ তাদের ধর্মের গুণাবলি দলিত নেতাদের সামনে ব্যাখ্যা করেন।

১০ জুন, ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে ভিক্ষু লোকনাথ বাবাসাহেব আম্বেডকরের দাদরের বাসভবনে গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করার জন্য তাকে অনুরোধ করেন। পরে গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লোকনাথ জানান যে আম্বেডকর বৌদ্ধ ধর্মের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছেন এবং সমগ্র দলিত সম্প্রদায়কে বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন। ১৯৩৭ সালে লোকনাথ তার সিংহলে অবস্থিত ছাপাখানা থেকে ভারতের নিপীড়িত এবং দলিত সম্প্রদায়ের উদ্দেশে একটি প্রচারপত্র প্রকাশ করেন যাতে লিখিত হয়, বৌদ্ধ ধর্ম আপনাদের মুক্তি এনে দেবে

১৯৪০ খ্রিস্টাব্দের প্রথমার্ধে আম্বেডকর একবার কানপুরে অবস্থিত আচার্য ঈশ্বরদত্ত মেধার্থীর বুদ্ধিপুরী বিদ্যালয়ে ভ্রমণ করেন। ইতঃপূর্বেই মেধার্থী ভিক্ষু লোকনাথ কর্তৃক বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত হন এবং ১৯৪০ সালের মধ্যভাগে তার আম্বেডকরের সঙ্গে বিশেষ ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। দিল্লিতে কিছুদিনের জন্য আম্বেডকর আচার্য মেধার্থীর নিকটে পালি ভাষাও শিক্ষা করেন।

১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে কোল্হাপুরের মহারাজ চতুর্থ সাহু কর্তৃক আয়োজিত " অব্রাহ্মণ সম্মেলন "-এ আম্বেডকর প্রথমবার বোধানন্দ মহাস্থবিরের সাক্ষাৎপ্রাপ্ত হন। ১৯৪০ সালে পর পর দু'টি অনুষ্ঠানে তারা পুনরায় সাক্ষাৎ করেন এবং ধর্ম বিষয়ে আলোচনা করেন। মহাস্থবির আম্বেডকরের দ্বিতীয় বিবাহে আপত্তি প্রকাশ করেন কারণ তার দ্বিতীয়া স্ত্রী ছিলেন ব্রাহ্মণ কুলজাতা। পরবর্তীকালে মহাস্থবিরের অনুগামীগণ আম্বেডকরের " রিপাবলিকান পার্টি " (Republican Party)-তে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।

আম্বেডকরের দীক্ষা সম্পাদনা

 
নাগপুরে অবস্থিত দীক্ষাভূমি স্তূপ, যেস্থানে বাবাসাহেব আম্বেডকর বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষাগ্রহণ করেছিলেন

দলিতদের জন্য একমাত্র বৌদ্ধ ধর্মই মঙ্গলপ্রদ, এই তত্ত্বের উপর বহু গ্রন্থ প্রকাশের পর আম্বেডকর ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দের ১৪ অক্টোবর নাগপুরের দীক্ষাভূমিতে আনুষ্ঠানিকভাবে বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত হন। তিনি একজন বৌদ্ধ ভিক্ষুর কাছ থেকে ত্রিরত্ন এবং পঞ্চশীল গ্রহণ করেন। এরপর সেখানে উপস্থিত তার ৩৮০০০০ অনুগামীও বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেন। সেই দীক্ষানুষ্ঠানে আচার্য ঈশ্বরদত্ত মেধার্থী এবং তার শিষ্য ভোজদেব মুদিত-ও উপস্থিত ছিলেন।

এর পরবর্তীকালে বহু ধর্মান্তরিত দলিত নিজেদের " আম্বেডকর বৌদ্ধ " বলে অভিহিত করেছেন কারণ আম্বেডকরের দীক্ষাগ্রহণের মাধ্যমেই এই আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল। আবার কেউ কেউ এই আন্দোলনকে নববৌদ্ধ আন্দোলন হিসেবে চিহ্নিত করেছেন কারণ এর ফলে ভারতে অবলুপ্তপ্রায় বৌদ্ধ ধর্মের পুনর্জাগরণ সম্ভব হয়েছিল।

আম্বেডকর কর্তৃক গৃহীত ২২টি শপথ সম্পাদনা

স্বয়ং দীক্ষাগ্রহণের পর আম্বেডকর তার অনুগামীগণকে দীক্ষাপ্রদান করেন। ত্রিরত্ন এবং পঞ্চশীল গ্রহণের পর তারা সম্মিলিতভাবে ২২টি শপথ গ্রহণ করেন। এরপর ১৬ অক্টোবর ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে আম্বেডকর অপর একটি গণদীক্ষার আয়োজন করেন এবং সেখানেও নবদীক্ষিত বৌদ্ধগণকে নিম্নোল্লিখিত ২২টি শপথ প্রদান করেন।

  1. আমি ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বরের প্রতি কোন বিশ্বাস রাখব না এবং তাদের উপাসনা করব না।
  2. আমি রাম এবং কৃষ্ণ, যারা ঈশ্বরের অবতার রূপে পরিচিত, তাদের প্রতি কোন বিশ্বাস রাখব না এবং তাদের উপাসনা থেকে বিরত থাকব।
  3. আমি গৌরী, গণপতি সহ অন্যান্য হিন্দু দেবদেবীগণের প্রতি কোন বিশ্বাস রাখব না এবং তাদের আরাধনা করব না।
  4. আমি ঈশ্বরের অবতারে বিশ্বাস করি না।
  5. আমি ভগবান বুদ্ধকে বিষ্ণুর অবতার হিসেবে স্বীকার করি না এবং ভবিষ্যতেও করব না। আমি মনে করি এই তত্ত্বটি একটি মিথ্যা প্রচারমাত্র।
  6. আমি শ্রাদ্ধানুষ্ঠান এবং মৃতের উদ্দেশ্যে পিণ্ডদান করা থেকে বিরত থাকব।
  7. আমি সেই সমস্ত কার্যাবলি থেকে বিরত থাকব যার দ্বারা ভগবান বুদ্ধের শিক্ষার অবমাননা হয়।
  8. আমি ব্রাহ্মণগণকে কোন সামাজিক অনুষ্ঠানে হিন্দু শাস্ত্রীয় বিধি অনুসারে ধর্মীয় ক্রিয়াদি সম্পাদন করতে দেব না।
  9. আমি মানুষের মধ্যে সাম্যে এবং ঐক্যে বিশ্বাস করব।
  10. আমি মানবসমাজে সাম্য এবং ঐক্য প্রতিষ্ঠার্থ আপ্রাণ প্রয়াস করে যাব।
  11. আমি ভগবান বুদ্ধ কর্তৃক প্রচারিত অষ্টাঙ্গ মার্গ অনুসরণ করে চলব।
  12. আমি ভগবান বুদ্ধ কর্তৃক প্রচারিত দশ পারমিতা মান্য করে চলব।
  13. আমি জগতের সকল জীবের প্রতি দয়া এবং করুণা প্রদর্শন করব এবং তাদের রক্ষা করব।
  14. আমি চৌর্যবৃত্তি অবলম্বন করব না।
  15. আমি মিথ্যা বাক্য উচ্চারণ করব না এবং কখনও মিথ্যাচার করব না।
  16. আমি ইন্দ্রিয়কাম চরিতার্থ করার জন্য কোন অসাধু কার্যে লিপ্ত হব না।
  17. আমি মদ্যাদি মাদকদ্রব্য সেবন করব না।
  18. আমি জীবনে প্রতিনিয়ত অষ্টাঙ্গ মার্গ অনুশীলনের প্রয়াস করব এবং সকলের প্রতি করুণা অভ্যাস করব।
  19. আমি হিন্দুধর্ম ত্যাগ করছি কারণ হিন্দুধর্ম মনুষ্যত্বের পক্ষে ক্ষতিকর। হিন্দুধর্ম বর্ণাশ্রমভিত্তিক সমাজব্যবস্থার মাধ্যমে মানবসমাজে বিভেদের প্রাচীর সৃষ্টি করেছে এবং সাম্য প্রতিষ্ঠাকে প্রতিহত করেছে। তাই আমি বৌদ্ধ ধর্মকে আনুষ্ঠানিকভাবে আমার ধর্ম হিসেবে অবলম্বন করলাম।
  20. আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে ভগবান বুদ্ধ কর্তৃক প্রচারিত ধর্মই একমাত্র সত্য ধর্ম।
  21. আমি বিশ্বাস করি যে আমি জন্মান্তরিত হয়েছি।
  22. আমি এতদ্বারা ঘোষণা করছি যে আমি ভবিষ্যতে ভগবান বুদ্ধ কর্তৃক প্রচারিত ধর্ম দর্শন এবং শিক্ষানুসারে জীবনযাপন করব।

আম্বেদকরের মৃত্যুর পর সম্পাদনা

বৌদ্ধ আন্দোলন কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়েছিল আম্বেদকরের ধর্মান্তরের পরেই তার মৃত্যুর কারণে। এটি অস্পৃশ্য জনগোষ্ঠীর কাছ থেকে তাৎক্ষণিক জনসমর্থন পায়নি যা আম্বেদকর আশা করেছিলেন। আম্বেদকরবাদী আন্দোলনের নেতাদের মধ্যে বিভাজন এবং দিকনির্দেশনার অভাব একটি অতিরিক্ত বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরবর্তীতে বিভিন্ন মানুষের দ্বারা তা আবারও প্রসারিত হয়। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, বর্তমানে ভারতে ৮.৪৪ মিলিয়ন বৌদ্ধ রয়েছে, যাদের মধ্যে অন্তত 6.5 মিলিয়ন মহারাষ্ট্রে মারাঠি বৌদ্ধ। এটি বৌদ্ধধর্মকে ভারতের পঞ্চম বৃহত্তম ধর্ম এবং মহারাষ্ট্রের জনসংখ্যার ৬%, কিন্তু ভারতের সামগ্রিক জনসংখ্যার ৩%-এরও কম।[৭]

বৌদ্ধ পুনরুজ্জীবন দুটি রাজ্যে কেন্দ্রীভূত রয়েছে: আম্বেদকরের জন্মস্থান মহারাষ্ট্র এবং উত্তর প্রদেশ – বোধনন্দ মহাস্তবীর, আচার্য মেধারথি এবং তাদের সহযোগীদের দেশ।

পাদটীকা সম্পাদনা

  1. Omvedt, Gail. Buddhism in India : Challenging Brahmanism and Caste. 3rd ed. London/New Delhi/Thousand Oaks: Sage, 2003. pages: 2, 3-7, 8, 14-15, 19, 240, 266, 271
  2. Anand Teltumbde (২০১৬)। Dalits: Past, Present and Future। Taylor & Francis। পৃষ্ঠা 57–59। আইএসবিএন 978-1-315-52644-7 
  3. Lars Fogelin (২০১৫)। An Archaeological History of Indian Buddhism। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 6–11, 218, 229–230। আইএসবিএন 978-0-19-994823-9 
  4. Anand Teltumbde (২০১৬)। Dalits: Past, Present and Future। Taylor & Francis। পৃষ্ঠা 59–61। আইএসবিএন 978-1-315-52644-7 
  5. Ann Heirman; Stephan Peter Bumbacher (২০০৭)। The Spread of Buddhism। BRILL Academic। পৃষ্ঠা 139–142। আইএসবিএন 978-90-04-15830-6 
  6. Andrew Powell (১৯৮৯)। Living Buddhism। University of California Press। পৃষ্ঠা 38–39। আইএসবিএন 978-0-520-20410-2 
  7. Census GIS HouseHold ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৬ জুলাই ২০১০ তারিখে

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহ