শ্রী শ্রী গণেশ পাগল সেবাশ্রম

মাদারীপুর জেলার হিন্দু তীর্থভূমি

শ্রী শ্রী গণেশ পাগল সেবাশ্রম মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ীতে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ হিন্দু তীর্থভূমি। বিশেষত বাঙালি হিন্দুর কাছে এটি একটি জনপ্রিয় তীর্থস্থান।

শ্রী শ্রী গণেশ পাগল সেবাশ্রম
শ্রী শ্রী গণেশ পাগল সেবাশ্রমের প্রধান ফটক
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিহিন্দুধর্ম
জেলামাদারীপুর
অবস্থান
অবস্থানকদমবাড়ী
দেশবাংলাদেশ
স্থাপত্য
ধরনবাংলার মন্দির স্থাপত্য
সৃষ্টিকারীশ্রী গণেশ পাগল

গণেশ পাগলের অনুসারীদের জন্য ১৯০৫ সালে (১৩১২ বঙ্গাব্দে) মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ী দিঘীরপাড় এলাকায় প্রায় ৩৬৫ বিঘা জমিতে গণেশ পাগল সেবাশ্রম গড়ে ওঠে।

শ্রী শ্রী গণেশ পাগল সেবাশ্রম সমাধি মন্দিরের ভিতরে গণেশ পাগলে মূর্তি

অবস্থান সম্পাদনা

মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ী বাজারের উত্তর-পূর্ব কোণে শ্রী শ্রী গণেশ পাগল সেবাশ্রম অবস্থিত। ঢাকা থেকে ঢাকা-বরিশাল জাতীয় মহাসড়ক পথ ধরে গিয়ে টেকেরহাট তেমাথা থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান।

গুরুত্ব সম্পাদনা

 
মাদারীপুরের কদমবাড়ীতে গণেশ পাগল সেবাশ্রমের কুম্ভমেলার এক অপূর্ব দৃশ্য

১৪০ বছর আগে ১৩ জন সাধু মিলিত হয়ে ১৩ কেজি চাল ও ১৩ টাকা নিয়ে ১৩ ই জ্যৈষ্ঠ ভারতের কুম্ভমেলার আদলে সেবাশ্রমে কুম্ভমেলার আয়োজন করেন। এরপর থেকে প্রতি বছর জ্যৈষ্ঠ মাসের ১৩ তারিখ মেলার সেই ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হচ্ছে। শ্রী শ্রী গনেশ পাগল সেবাশ্রম সংঘের এই মেলা উপমহাদেশের অন্যতম বৃহৎ কুম্ভমেলা হিসাবে স্বীকৃত। প্রায় ১৬৭ একর জমি অর্থাৎ ৯ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত থাকে মেলার আয়তন। অতীতে মাত্র একদিনের জন্য মেলা অনুষ্ঠিত হলেও বর্তমানে এই মেলার চলে প্রায় সপ্তাহ ব্যাপী।[১] বাংলাদেশ ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ায় একইসাথে গণেশ পাগলের কুম্ভমেলা পালিত হয়ে থাকে। [২]

প্রায় দেড়শ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী এই কুম্ভমেলার আয়োজনে দেশ-বিদেশের প্রায় ১০ লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটে। ভারত, নেপালভূটান থেকেও বহু লোক এই কুম্ভমেলায় অংশ নেন। [৩] জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে মেলায় আগত মানুষেরা বিশ্বাস করেন মেলায় আসলে এবং গণেশ পাগলের মন্দির দর্শন করলে সকল ধরণের বিপদ আপদ থেকে মুক্তি লাভ করা যায়।

অবকাঠামো সম্পাদনা

 
গণেশ পাগল গুচ্ছ মন্দির আশ্রমের প্রধান ফটক

আশ্রমে ছোট-বড় মোট ১০৮টি মন্দির রয়েছে। তবে আশ্রমের প্রধান ফটক অতিক্রম করে পাশেই দেখা মিলবে গুচ্ছ মন্দিরের। যেখানে আটটি সমন্বিত মন্দির একত্রে রয়েছে। সেগুলো হলো- লক্ষ্মী নারায়ণ মন্দির, দূর্গা মন্দির, শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির, গৌর নিতাই মন্দির, রাম মন্দির, হরি মন্দির, অন্নপূর্ণা মন্দির, মনসা মন্দির।

সমাধি মন্দিরের উত্তর পাশে রয়েছে মনসা মন্দির ও দক্ষিণে রয়েছে শিব মন্দির। এছাড়া পূর্বে রয়েছে শ্মশান কালী মন্দি ও পশ্চিমে রয়েছে সরস্বতী মন্দির।

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "গণেশ পাগলের কুম্ভ মেলা শুর"কালের কন্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২৩ 
  2. "পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার একাইহাটেও শুরু হল কালীসাধক গণেশ পাগলের কুম্ভমেলা"বর্তমার পত্রিকা। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০২৩ 
  3. "মাদারীপুরে শুরু হয়েছে গণেশ পাগলের কুম্ভমেলা"সময়নিউজ.টিভি। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মে ২০২৩ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা