লুৎফুর রহমান বর্ণভী
লুৎফুর রহমান বর্ণভী (১৯১৬ – ১৯৭৭) ছিলেন একজন বাংলাদেশি দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত,লেখক, সম্পাদক ও ইসলামি বক্তা। তিনি হুসাইন আহমদ মাদানির শিষ্য ছিলেন। তিনি অরাজনৈতিক ইসলামি সংঘটন আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ও জামিয়া লুৎফিয়া আনওয়ারুল উলুম হামিদনগর বরুণা মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা।[১][২]
লুৎফুর রহমান বর্ণভী | |
---|---|
জামিয়া লুৎফিয়া আনওয়ারুল উলুম হামিদনগর বরুণা'র প্রতিষ্ঠাতা ও ১ম মুহতামিম | |
অফিসে ১৯৪১ – ১৭ মে ১৯৭৭ | |
উত্তরসূরী | শেখ খলিলুর রহমান হামিদি |
আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ'র প্রতিষ্ঠাতা ও ১ম আমীর | |
অফিসে ১৯৪৪ – ১৭ মে ১৯৭৭ | |
উত্তরসূরী | শেখ খলিলুর রহমান হামিদি |
উপাধি | শায়খে বর্ণভী |
ব্যক্তিগত তথ্য | |
জন্ম | ১৯১৬ ইং বরুণা, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার |
মৃত্যু | ১৯৭৭ | (বয়স ৬০–৬১)
ধর্ম | ইসলাম |
জাতীয়তা | বাংলাদেশি |
সন্তান | |
পিতামাতা |
|
জাতিসত্তা | বাঙালি |
আখ্যা | সুন্নি |
ব্যবহারশাস্ত্র | হানাফি |
আন্দোলন | দেওবন্দি |
প্রধান আগ্রহ | তাসাউফ |
উল্লেখযোগ্য কাজ | |
যেখানের শিক্ষার্থী | দারুল উলুম দেওবন্দ |
মুসলিম নেতা | |
এর শিষ্য | হুসাইন আহমদ মাদানি |
জন্ম
সম্পাদনালুৎফুর রহমান বর্ণভী ১৯১৬ সালে সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল থানাধীন বরুণা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মুহাম্মদ হামিদউল্লাহ ও মাতা আমিনা খাতুন।[৩]
শিক্ষাজীবন
সম্পাদনাতার প্রাথমিক লেখাপড়ার হাতেখড়ি বাড়িতে বাবা-মার হাতে। অতঃপর তিনি সিলেটের ঐতিহ্যবাহী গাছবাড়ি জামিউল উলুম কামিল মাদ্রাসা ভর্তি হয়ে দীর্ঘ ৯ বছর লেখাপড়া করার পর ১৯৩৪ সালে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য ভারতের দারুল উলূম দেওবন্দ চলে যান। সেখানের ৬ বছর লেখাপড়ার পর ১৯৪১ সালে অত্যন্ত সুনামের সহিত দাওরা হাদিস সম্পন্ন করেন। দেওবন্দে তিনি হুসাইন আহমদ মাদানি রহ.-এর কাছে বুখারি শরীফের সবক গ্রহণ করেন। লেখাপড়া শেষ করে ১৯৪১ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন। দেশে প্রত্যাবর্তনকালে হুসাইন আহমদ মাদানি রহ. তাকে আধ্যাত্মিকতার খেলাফত প্রদান করেন।[২] [৩]
কর্মজীবন
সম্পাদনাদেশে ফিরে তিনি আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলুম মৌলভীবাজারে শিক্ষকতা শুরু করেন। এখানে ১০ বছর শিক্ষকতা করে তিনি নিজ গ্রাম বরুণায় জামিয়া লুৎফিয়া আনওয়ারুল উলুম হামিদনগর বরুণা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৪০ এর দশকে তিনি তদানীন্তন ভারতের মুসলমানদের ঐক্য ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬০ সালে তৎকালীন পাকিস্তানের সামরিক শাসক আইয়ুব খানের জন্মনিয়ন্ত্রণ আইনের প্রতিবাদে পল্টন ময়দানে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি সভাপতিত্ব করেন। ১৯৭১ সালে তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নেন।[৪]
মৃত্যু
সম্পাদনা১৯৭৭ সালের ১৭ মে (মঙ্গলবার) ভোর পাঁচটায় নিজ বাড়ীতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। [৩]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনাউদ্ধৃতি
সম্পাদনা- ↑ Harun, Mizan (২০১৮)। رجال صنعوا التاريخ وخدموا الإسلام والعلم في بنغلاديش للشاملة [Men Who Shaped History And Served Islamic Science In Bangladesh: A Comprehensive Perspective] (আরবি ভাষায়)। Dhaka: Darul Bayan। পৃষ্ঠা 299–304।
- ↑ ক খ "শায়খে বর্ণভীর আলোকিত জীবন – আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০২-১৭।
- ↑ ক খ গ সালাহউদ্দীন, জাহাঙ্গীর (ফেব্রুয়ারি ২০১৭)। বাংলার বরেণ্য আলেম। ১ম। ঢাকা: মাকতাবাতুল আযহার। পৃষ্ঠা ৩৩৫–৩৪৪।
- ↑ নূর, আহমেদ (৫ মে ২০২১)। "'হেফাজত' নামটাও ছিনতাই করা"। কালের কণ্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১।
গ্রন্থপঞ্জি
সম্পাদনা- জাহাঙ্গীর, সালাউদ্দিন (২০১৭)। বাংলার বরেণ্য আলেম — ১ম খণ্ড (১ম সংস্করণ)। মধ্য বাড্ডা, আদর্শ নগর, ঢাকা: মাকতাবাতুল আযহার। পৃষ্ঠা ৩৩৫–৩৪৫।
- নজরুল ইসলাম, শাহ (২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৩)। "আলোর মিনার শায়খে বর্ণভী (রহ.)"। দৈনিক জনতা।
- নিজামপুরী, আশরাফ আলী (২০১৩)। দ্যা হান্ড্রেড (বাংলা মায়ের একশ কৃতিসন্তান) (১ম সংস্করণ)। হাটহাজারী, চট্টগ্রাম: সালমান প্রকাশনী। পৃষ্ঠা ২৭২–২৭৬। আইএসবিএন 112009250-7।
- লস্কর, মো. আজিজুর রহমান (১৩ ডিসেম্বর ২০১৫)। "স্মরণে শায়খে বর্ণভী রাহ."। কমাশিসা।