রেঢ়াখোল রাজ্য

ব্রিটিশ শাসিত ভারতে অবস্থিত একটি দেশীয় রাজ্য

রেঢ়াখোল রাজ্য ছিলো ব্রিটিশ শাসিত ভারতে অবস্থিত একটি দেশীয় রাজ্য, যা বর্তমানে ভারতের অন্তর্গত৷[১] এটি ছোটনাগপুর দেশীয় রাজ্যসমষ্টির অন্তর্গত ছিল এবং এটি রাজধানী ছিল রেঢ়াখোল শহরে, যা বর্তমানে ওড়িশা রাজ্যের সম্বলপুর জেলায় অবস্থিত। রাজ্যটি ২,১৫৭ বর্গকিলোমিটার (৮৩৩ মা) ক্ষেত্রফল জুড়ে বিস্তৃত ছিল এবং ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে এটির নথিভুক্ত জনসংখ্যা ছিল ২৬,৮৮৮ জন। ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে এটির বার্ষিক রাজস্বের পরিমাণ ছিল‌ ৫৫,০০০ ভারতীয় মুদ্রা।

রেঢ়াখোল রাজ্য
ରେଢ଼ାଖୋଲ
ব্রিটিশ ভারত দেশীয় রাজ্য
খ্রিস্টীয় দ্বাদশ শতাব্দী–১৯৪৮

Rairakhol State in the ইম্পেরিয়াল গেজেটিয়ার অব ইন্ডিয়া থেকে প্রাপ্ত রেঢ়াখোল রাজ্যের মানচিত্র
আয়তন 
• ১৯০১
২,১৫৭ বর্গকিলোমিটার (৮৩৩ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা 
• ১৯০১
২৬,৮৮৮
ইতিহাস 
• প্রতিষ্ঠিত
খ্রিস্টীয় দ্বাদশ শতাব্দী
১৯৪৮
উত্তরসূরী
ভারত
ভারতের রাজপুত অধীন প্রদেশ - রেঢ়াখোল দেশীয় রাজ্য

রাজ্যটির অধিকাংশ অংশই জঙ্গল আবৃত ছিল এবং তা ছিল মূলত হাতি চলাচলের ক্ষেত্র। রেঢ়াখোল রাজ্যের অধিকাংশ বাসিন্দা ওড়িয়া সম্বলপুরী হলেও কোল, মুন্ডা, ওরাওঁ জনজাতির লোকেরাও বাস করতেন। রাজ্যটির সিংহভাগ লোক চাষা সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত ছিল।[২]

ইতিহাস সম্পাদনা

পাটনাগড় রাজ্যের রাজা এটিকে স্বাধীন রাজ্যে পরিণত করার পূর্বে খ্রিস্টীয় অষ্টাদশ শতাব্দী পর্যন্ত এটি বামণ্ডা রাজ্যের একটি সামন্ত জমিদারির অংশ ছিল। জনশ্রুতি অনুযায়ী বামণ্ডার রাজা এবং রেঢ়াখোলের সামন্ত রাজার পরিবারের মধ্যে যুদ্ধ ছিল প্রায় নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। এরকমই এক ভয়াবহ যুদ্ধের সময় বামণ্ডা রাজ্যের রাজা রেঢ়াখোলের সামন্ত রাজপরিবারের সমস্ত সদস্যকে হত্যা করলেও একটি শিশু বালককে হত্যা করতে পারেনা। বালকটি স্থানীয় ভুক্তশুদ্ধ কৃষক সম্প্রদায়ের এক নারীর কাছে লুক্কায়িত ছিলেন ফলে বামণ্ডার সৈন্যরা তাকে খুঁজে পান না। কিশোর প্রাপ্তবয়স্ক হলে তিনি তার রাজ্য পুনরুদ্ধারে সফল হন। কৃতজ্ঞতার সহিত তিনি ভুক্তশুদ্ধ কৃষক সম্প্রদায়কে রাজ্যের শাসকের মাতৃ বংশপরিচয় বলে সম্মানিত করেন। [২] রেঢ়াখোল রাজ্যের শাসক কে ছিলেন কদম্ব বংশীয় রাজপুত, তথা সরাইকেল্লা, খরসোয়াঁ এবং বনাই রাজ্যের সাথে বংশগতভাবে সম্বন্ধীয়।

খ্রিস্টীয় ঊনবিংশ শতাব্দীতে রাজা বিশনচন্দ্র জনমুনির রাজত্বকাল ৭৫ বছর অবধি টিকে ছিল। রাজ্যটি ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত মধ্যপ্রদেশের ছত্রিশগড় বিভাগীয় কমিশনারের রাজনৈতিক দখলের অধীনে ছিল, পরে এটিকে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের পয়লা জানুয়ারি তারিখে রেঢ়াখোল রাজ্যের শেষ শাসক রাজা গিরিশচন্দ্র দেও ভারতীয় অধিরাজ্যে যোগদানের ইচ্ছা প্রকাশ করে সম্মতিস্বাক্ষর করেন। [৩]

শাসকবর্গ সম্পাদনা

রেঢ়াখোল রাজ্যের শাসকরা কদম্ব বংশীয় রাজপুত ছিলেন এবং তারা রাজা উপাধিতে ভূষিত হতেন। [৪]

রাজা সম্পাদনা

  • ১৮২৫ - ১৯০০ বিশনচন্দ্র জনমুনি
  • ১৯০০ - ৩ জুলাই ১৯০৬ গৌরচন্দ্র দেও
  • ৩ জুলাই ২৯০৬ - ১৯৩_ বীরচন্দ্র যাদুমণি দেও জনমুনি
  • ১৯৩_ - ১৫ আগস্ট ১৯৪৭ গিরীশচন্দ্র দেও

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Malleson, G. B.: An historical sketch of the native states of India, London 1875, Reprint Delhi 1984
  2. They are kadam VanshiesImperial Gazetteer of India, v. 21, p. 61.
  3. "Rairakhol Princely State"। ১১ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ অক্টোবর ২০২০ 
  4. https://dsal.uchicago.edu/reference/gazetteer/pager.html?objectid=DS405.1.I34_V21_067.gif