রুটির ইতিহাস

ইতিহাসের বিভিন্ন দিক

আদি মানব সমাজ গঠনে রুটি ছিল কেন্দ্রীয়। উর্বর চন্দ্রকলা ভূমি, যেখানে গম ছিল, পোষ্য প্রাণী ছিল, সেখানে কৃষিকাজ ছড়িয়ে পড়েছিল উত্তর ও পশ্চিমে, ইউরোপ এবং উত্তর আফ্রিকা এবং পূর্বদিকে পূর্ব এশিয়ার পর্যন্ত। ফলস্বরূপ যাযাবর জীবনযাত্রার বিপরীতে নগর গঠনের দিকে পরিচালিত করে এবং আরো অধিক বাস্তববুদ্ধিসম্পন্ন সামাজিক সংগঠনের জন্ম দেয়। আমেরিকাতে ভুট্টা সহ এবং এশিয়ায় ধানের সাথে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে।

গিজারে অবস্থিত ইৎজারের সমাধি প্রস্তর ফলক, চতুর্থ রাজবংশ, ২৫৪৩-২৪৩৫ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ। ইৎজার একটি টেবিলের উপর রুটির টুকরোগুলির পাশে বসে আছেন, রুটিগুলি উল্লম্বভাবে সাজানো। মিশরীয় যাদুঘর, তুরিন

পুরাকীর্তি সম্পাদনা

১৪,৬০০ থেকে ১১,৬০০ বছর আগে বুনো গম, বুনো যব এবং গাছের শিকড় থেকে নাটুফিয়ান শিকারী-সংগ্রহকারীদের দ্বারা তৈরি সমান রুটি টুকরো পাওয়া গেছে জর্ডানের কালা মরুভূমির শুবায়কা ১ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানে, পাওয়া গেছে হাজার বছর ধরে আবাদকৃত গম থেকে রুটি তৈরির পূর্বতম জ্ঞান। [১][২] সম্ভবত ৩০,০০০ বছর পুরানো, সম্ভবত শস্য এবং বীজ পিষে ময়দা বানানোর জন্য ব্যবহৃত হতো, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে অস্ট্রেলিয়া এবং ইউরোপে মাটি খুঁড়ে আবিষ্কার করা হয়েছে, তবে এই সরঞ্জামগুলি রুটি তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল তার কোনও নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া যায় নি। [৩][৪]

 
মোচাকৃতি[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] রুটির পিণ্ড সমাধি পণ্য হিসাবে গ্রেট সমাধিতে, উত্তর নেক্রোপলিস, গ্যাবিলিন, মিশরের পঞ্চম রাজবংশ, ২৪৩৫-২৩০৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দে রাখা হয়েছিল। ১৯১১ সালে আর্নেস্তো শিয়াপ্যারেলি দ্বারা খননে উদ্ধারকৃত। মিশরীয় যাদুঘর, তুরিন, এস ১৪০৫১-১৪০৫৫

রুটি অন্য প্রকারে কৃষির সাথে দৃঢ়ভাবে জড়িত। গম উর্বর চন্দ্রকায় গৃহপালিত হয়েছিল। [৫][৬] রুটি প্রায় ৯,১০০ বছর আগে তুরস্ক এবং ইউরোপের নব্যপ্রস্তরযুগের স্থানগুলোতে পাওয়া যায়। [২][৭][৮]

শৈল্পিক চিত্রের আকারে প্রাচীন মিশরে রুটি তৈরির বিস্তৃত প্রমাণ রয়েছে, রুটি তৈরিতে ব্যবহৃত কাঠামো এবং উপকরণের অবশেষ এবং মাখানো ময়দার তাল এবং আস্ত রুটির অবশিষ্টাংশ রুটি তৈরির বিস্তৃত প্রমাণ হিসাবে পাওয়া গেছে। [৯][১০][১১][১২][১৩][১৪]

প্রাচীনকালে খামি দেওয়ার জন্য ব্যবহারের আগের দিন মাখানো ময়দা (চিনি এবং জল দিয়ে) রাখা হতো টক পাউরুটি পাবার জন্য। [১৫] রোমান লেখক লেখকপ্লিনি দ্য এল্ডার রিপোর্ট করেছেন যে, গউল এবং ইবেরীয়রা বিয়ারের ফেনা ব্যবহার করতেন "অন্যান্য লোকের চেয়ে হালকা ধরনের রুটি" তৈরি করতে। প্রাচীন বিশ্বের যারা বিয়ারের পরিবর্তে ওয়াইন পান করত তারা খামিরের উৎস হিসাবে পেষা আঙ্গুর এবং ময়দা দিয়ে তৈরি একটি পেস্ট ব্যবহার করত যা গাঁজন শুরু করার জন্য বা গমের ভুসি ওয়াইনে চুবিয়ে রাখত ঈস্ট তৈরি করার জন্য।

প্রবেশের জন্য একটি দরজা সহ প্রাক-উত্তপ্ত হতে পারে এমন একটি মুক্ত-স্থিত চুলার ধারণাটি গ্রীকদের বলে মনে হয়। [১৬]

এমনকি প্রাচীনকালেও বিভিন্ন ধরনের রুটি ছিল। প্রাচীন কালে গ্রীক রুটি ছিল যব রুটি:গ্রিক করি সোলোন ঘোষণা করেছিলেন যে, কেবল গমের রুটি ভোজের দিনে বেক করা হত। খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর মধ্যে এথেন্সে বেকারের দোকান থেকে রুটি কেনা যেত এবং রোমে গ্রীক বেকাররা খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতাব্দীতে হাজির হয়েছিল। [১৭] বিদেশী রুটি বেকারদের কলেজিয়াম তৈরি করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।

মধ্যযুগীয় সম্পাদনা

 
ফ্রান্সের, 'লিভারে ডু রাই মোডাস এট দে লা রেইনো রেশিও' থেকে কৃষকরা রুটি ভাগ করে নিচ্ছেন। (জাতীয় গ্রন্থাগার)

মধ্যযুগীয় ইউরোপে, রুটি কেবল প্রধান খাদ্য হিসাবেই নয়, টেবিলের পরিষেবার অংশ হিসাবেও পরিবেশিত হয়েছিল। দিনের খাবারের মানসম্পন্ন টেবিল বিন্যাসে, এক টুকরো শুকনো রুটির ট্রেনচারে মোটামুটিভাবে ৬ ইঞ্চি বাই ৪ ইঞ্চি (১৫ সেমি বাই ১০ সেমি) শোষক থালা হিসাবে পরিবেশিত হতো। খাবার শেষে ট্রেনচারটি খেয়ে ফেলা যেত, গরীবদের দেওয়া হতো বা কুকুরকে খাওয়ানো হতো। ১৫ শতাব্দীর পর কাঠের তৈরি ট্রেনচার এসে রুটির স্থান দখল করে। [১৮]

১৯ শতকে সম্পাদনা

১৯ শতক পর্যন্ত ইউরোপে বিক্রি হওয়া রুটিতে প্রায়ই বিপজ্জনক পদার্থের ভেজাল থাকত, যেমন চক, কাঠের মিহি গুঁড়ো, ফিটকিরি, প্লাস্টার, কাদামাটি এবং অ্যামোনিয়াম কার্বোনেট। এটি ধীরে ধীরে ব্রিটেনে সরকারী পদক্ষেপ যেমন ১৮৬০ এবং ১৮৯৯ খাদ্য ভেজাল আইনের বাস্তবায়নের সাথে শেষ হয়। [১৯] আমেরিকাতে ভেজালের এই প্রক্রিয়া শেষ করতে আরও কঠিন সময় পার করতে হয়েছিল, কারণ বিভিন্ন রাজ্যের রুটি তৈরির বিভিন্ন নীতিমালা ছিল। [২০]

শিল্পায়ন সম্পাদনা

বিংশ শতাব্দীর শুরুতে রুটি-বেকিং শিল্পায়িত হয়েছিল। অটো ফ্রেডেরিক রোহওয়েদার ১৯১২ সালে একটি রুটি টুকরো করার মেশিনের আদিরুপ তৈরি করেন এবং ১৯২৮ সালে রুটি টুকরো করে কেটে মোড়ানোর একটি ব্যবহারিক মেশিন তৈরি করেছিলেন। [২১][২২]

 
জার্মানি[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ], ব্রেড প্যালিটাইজিং শিল্প রোবট সহ একটি স্বয়ংক্রিয় বেকারি

১৯৬১ সালে যুক্তরাজ্যে একটি বড় পরিবর্তন আসে চোরলিউড রুটি তৈরির প্রক্রিয়ার বিকাশের মাধ্যমে। এতে ময়দার তাল তৈরিতে তীব্র যান্ত্রিকতা ব্যবহার করা হয় এবং তালের চারপাশের গ্যাসকে নিয়ন্ত্রণ করে নাটকীয়ভাবে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে গাঁজন সময়কাল হ্রাস করে এবং রুটি তৈরির সময়কে কমিয়ে দেয়। [২৩] এই প্রক্রিয়ায় কিছু প্রোটিন নষ্ট হয়।

প্রজন্ম ধরে, সাদা রুটি ধনীদের পছন্দের রুটি ছিল এবং দরিদ্ররা নিস্প্রভ (পুরো শস্য) রুটি খেত। তবে, বেশিরভাগ পশ্চিমা সমাজে, বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে গোটা দানার রুটি উচ্চ পুষ্টি মানের হিসাবে অধিক পছন্দ হতে থাকে এবং চর্লিউড রুটি পুষ্টি অজ্ঞ নিম্ন-শ্রেণীর মানুষদের সাথে রয়ে যায়। [২৪]

সাম্প্রতিককালে, এবং বিশেষত ছোট খুচরা বেকারিগুলিতে, রাসায়নিক সংযোজক ব্যবহার করা হয় যা মিশ্রণের গতি বাড়ায় এবং প্রয়োজনীয় গাঁজন সময়কে হ্রাস করে, যাতে রুটির একটি ব্যাচ মিশ্রিত হতে, তৈরি হতে এবং বেক করতে তিন ঘণ্টারও কম সময় লাগে। রাসায়নিক সংযোজকগুলির কারণে যে ময়দা গাঁজনের প্রয়োজন হয় না তাকে বাণিজ্যিক বেকাররা "কু্‌ইক ব্রেড" বলে। সাধারণ সংযোজকগুলির মধ্যে হ্রাসকারী এজেন্ট হিসাবে এল-সিস্টাইন বা সোডিয়াম মেটাবিসালফাইট, এবং অক্সিডেন্ট হিসাবে পটাশিয়াম ব্রোমেট বা অ্যাসকরবিক অ্যাসিড ব্যবহার করা হয়;[২৫][২৬] রুটির কোমলতা বাড়ানোর জন্য এই শেষ উপাদানটি পুরো পাত্রে রুটির সাথে যুক্ত করা হয়। [২৭] দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুদ্ধে যোগদানকারী মহিলাদের মধ্যে রিকেটস প্রতিরোধে ময়দায়ক্যালসিয়াম যুক্ত করা হয়েছিল। [২৭]

১৯৯৬ সাল থেকে, রুটি মেশিন রুটি তৈরির প্রক্রিয়াটি স্বয়ংক্রিয় করার পর বাসা বাড়ীতে এটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। [২৮]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Briggs, Helen (১৭ জুলাই ২০১৮)। "Prehistoric bake-off: Recipe for oldest bread revealed"BBC NewsBritish Broadcasting Corporation। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৮ 
  2. Arranz-Otaegui, Amaia; Gonzalez Carretero, Lara (১৬ জুলাই ২০১৮)। "Archaeobotanical evidence reveals the origins of bread 14,400 years ago in northeastern Jordan": 7925–7930। ডিওআই:10.1073/pnas.1801071115পিএমআইডি 30012614পিএমসি 6077754  
  3. Behrendt, Larissa (২০১৬-০৯-২২)। "Indigenous Australians know we're the oldest living culture – it's in our Dreamtime | Larissa Behrendt"The Guardian (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0261-3077। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-১৩ 
  4. "Prehistoric man ate flatbread 30,000 years ago: study"phys.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-১৩ 
  5. "Feldman, Moshe and Kislev, Mordechai E., Israel Journal of Plant Sciences, Volume 55, Number 3–4 / 2007, pp. 207–21, Domestication of emmer wheat and evolution of free-threshing tetraploid wheat in "A Century of Wheat Research-From Wild Emmer Discovery to Genome Analysis", Published Online: 3 November 2008"। ৬ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুলাই ২০১১ 
  6. Colledge, Sue; University College, London. Institute of Archaeology (২০০৭)। The origins and spread of domestic plants in southwest Asia and Europe। Left Coast Press। পৃষ্ঠা 40–। আইএসবিএন 978-1-59874-988-5। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০১১ 
  7. Popova, T. (2016) Bread remains in archaeological contexts. Southeast Europe and Anatolia in Prehistory Essays in Honor of Vassil Nikolov on His 65th Anniversary, eds Bacvarov, K.; Gleser, R. (Habelt, Bonn), pp 519–526.
  8. González Carretero, L.; Wollstonecroft, M.; Fuller, DQ. (2017) A methodological approach to the study of archaeological cereal meals: A case study at Çatalhöyük East (Turkey). Veg Hist Archaeobot 26:415–432.
  9. Samuel, Delwen (১৯৮৯)। "Chapter 12: Their staff of life: Initial investigations on ancient Egyptian bread baking" (পিডিএফ)Amarna Reports। Egypt Exploration Society। পৃষ্ঠা 1253–1290। আইএসবিএন 978-0-85698-109-8। ২৬ জুলাই ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ আগস্ট ২০২০ 
  10. Gonzalez Carretero, Lara (৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭)। "3,500-year-old bread and beer from the New Kingdom, Egypt"। সংগ্রহের তারিখ ১৭ এপ্রিল ২০১৭ 
  11. Samuel, D. (১৯৯৪)। "An archaeological study of baking and bread in New Kingdom Egypt (doctoral thesis)" 
  12. Samuel, Delwen (২০০০)। "Chapter 22: Brewing and baking" (পিডিএফ)Ancient Egyptian materials and technology। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 537–576। আইএসবিএন 9780521452571। ২৬ জুলাই ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ আগস্ট ২০২০ 
  13. Samuel, D. (১৯৯৬)। "Investigation of Ancient Egyptian Baking and Brewing Methods by Correlative Microscopy": 488–490। ডিওআই:10.1126/science.273.5274.488পিএমআইডি 8662535 
  14. Samuel, Delwen (২০০২)। "Bread in archaeology": 27–36। ডিওআই:10.4000/civilisations.1353  
  15. Tannahill, Reay (1973). Food in History (Stein and Day. আইএসবিএন ০-৮১২৮-১৪৩৭-১). p. 68f.
  16. Toussaint-Samat 2009, p.202
  17. Toussaint-Samat 2009, p.204 gives a date of 168 for "a considerable influx of craftsmen bakers (pistores) of Greek origin into Rome".
  18. Tannahill p. 227
  19. Coley, Noel (১ মার্চ ২০০৫)। Royal Society of Chemistry https://web.archive.org/web/20180614144230/https://eic.rsc.org/feature/the-fight-against-food-adulteration/2020253.article। ১৪ জুন ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুন ২০১৮  |শিরোনাম= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)
  20. MS., City Clerk's Office, Record Book, 1814-1820, pp. 3, 5.
  21. "Sliced Bread Turns 80 Years Old"Chillicothe Constitution-Tribune। জুলাই ৭, ২০০৮। নভেম্বর ১২, ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ৬, ২০১১ 
  22. It occupies a section in Sigfried Giedion, [1948] 1969. Mechanization Takes Command (Oxford University Press).
  23. "Criticisms of the Chorleywood bread process"। ২২ মে ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  24. Christianne L.H. Hupkens, Ronald A. Knibbe and Maris J. Drop, for example analyzed social class variation in the intake of fat and fibre, including white bread consumption, in Maastricht, Liège and Aachen, "Social Class Differences in Women's Fat and Fibre Consumption: A Cross-National Study" 1995; the literature on class perceptions and diet is enormous.
  25. Pyler, Ernst John (১৯৫৮)। Our Daily Bread। Siebel। পৃষ্ঠা 703। 
  26. Elkassabany, M.; Hoseney, R.C. (১৯৮০)। "Ascorbic Acid as an Oxidant in Wheat Flour Dough. I. Conversion to Dehydroascorbic Acid" (পিডিএফ): 85–87। ৪ মে ২০১৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ আগস্ট ২০২০ 
  27. "Modern History of Bread - 20th Century UK"Federation of Bakers 
  28. Nonaka, I.; Takeuchi, H. (1995), The Knowledge-Creating Company, Oxford University Press.