রাধাষ্টমী

রাধারাণীর জন্মবার্ষিকী


রাধাষ্টমী হচ্ছে কৃষ্ণের সঙ্গিনী রাধার জন্মতিথি স্মরণে হিন্দুধর্মের বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের দ্বারা পালিত একটি পবিত্র দিন। বিশেষ করে ভাদ্র মাসের শুক্ল পক্ষের অষ্টমী তিথিতে তার জন্মস্থান বারসানায় অত্যন্ত উৎসাহের সাথে দিনটি পালিত হয়।[][] রাধাষ্টমী উৎসবটি সামাজিক জীবন পরিচালনাকারী সাংস্কৃতিক-ধর্মীয় বিশ্বাস ব্যবস্থার একটি দিক।[]

রাধাষ্টমী
কৃষ্ণ বলরাম মন্দিরে রাধাষ্টমী উদযাপন
অন্য নামরাধা অষ্টমী, রাধা জয়ন্তী
পালনকারীহিন্দু
ধরনধর্মীয়, সাংস্কৃতিক
উদযাপনমথুরা, বৃন্দাবন এবং বারসানায় দুপুরের শ্রিংগারা। মণিমহেশ যাত্রা[[]
সংঘটনবাৎসরিক

স্কন্দ পুরাণের বিষ্ণু খন্ডে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ভগবান কৃষ্ণের ১৬,০০০ জন গোপী ও গোপিকা ছিলেন, যাদের মধ্যে সর্বেশ্বরী রাধা দেবী ছিলেন শ্রদ্ধেয় ১০৯ জনের মধ্যে সর্বাধিক বৈশিষ্টপূর্ণ।[]

ইতিহাস ও তাৎপর্য

সম্পাদনা
 
শ্রী লাদলি লাল মন্দিরে রাধা, রাওয়াল

রাধারাণী ভাদ্রপদ মাসের উজ্জ্বল পাক্ষিকের (শুক্ল পক্ষ) ৮ম দিনে (অষ্টমী) জন্মগ্রহণ করেছিলেন, অনুরাধা নক্ষত্র, দুপুর ১২টা এবং গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে, ২৩ সেপ্টেম্বর ৩২২১ খ্রিস্টপূর্ব - বুধবার বারসানায় (রাওয়াল), উত্তর প্রদেশভারত। রাজা বৃষভানু এবং তার স্ত্রী কীর্তিদা পুকুরে সোনার পদ্মের উপর দেবী রাধাকে পেয়েছিলেন। লোককাহিনী অনুসারে, যতক্ষণ না স্বয়ং ভগবান কৃষ্ণ তার সামনে আবির্ভূত হন ততক্ষণ পর্যন্ত রাধা পৃথিবী দেখার জন্য তার চোখ খোলেননি।[]

রাধাষ্টমী ও গোয়াল পূজা

সম্পাদনা

সারা ভারতবর্ষের মানুষ রাধাষ্টমীতে মেতে ওঠেন রাধিকার জন্মদিন মহোৎসব পালনে। কিন্তু দক্ষিণ পশ্চিম রাঢ়ের বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম জেলায় এই দিন সাড়ম্বরে পালিত হয় গোয়ালপূজা। অথর্ব বেদের একটি সূক্তে গোপালনের জন্য পশুচারণ ক্ষেত্রকে যত্নের সঙ্গে রক্ষা করা এবং পশুশালা নির্মাণ ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার কথা বলা হয়েছে। গোয়াল পূজা মূলত পশুশালা পূজার দিন। পূজার কারণ হিসাবে মনে করা যেতে পারে এই সময়ে প্রাদুর্ভাব ঘটে বিভিন্ন রোগজ্বালার। সেগুলির হাত থেকে গোসম্পদকে রক্ষা করার জন্য গোয়ালঘর পরিষ্কার করা হয়। এছাড়াও চাষের শেষে চাষে খাটা খাটনি করা গরুগুলিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে সেবা দেওয়া। বলা যেতে পারে গোধন রক্ষা করা। মহাভারতের অনুশাসন পর্বে এই গোধন রক্ষা করার কথা বলা আছে। বাঁদনা যদি হয় গো-বন্দনার পরব তবে গোয়াল পূজা গো-লক্ষ্মী পূজা। আবার পুরাণ অনুযায়ী রাধা লক্ষ্মীর অংশজাত। সেই হিসাবে রাধাষ্টমী খেটে খাওয়া মানুষের রাধার জন্মদিন পালন তথা লক্ষ্মীর পূজা তথা সংসারে সুখ সমৃদ্ধি নিয়ে আসা গোধন পূজার দিন। এইদিন গোয়ালঘর পরিষ্কার করা হয়। গোবর দিয়ে গোয়াল ছঁচ দেওয়া হয়। আলপনা এঁকে এবং শালুক ফুল দিয়ে গোয়াল সাজানো হয়। গরুকেও ভালো করে চান করিয়ে শালুক ফুলের মালা পরানো হয়।বেশিরভাগ গৃহেই ভাত রান্না হয় না। এদিন লুচি, আসকে পিঠে,মুড়কি ইত্যাদি খাওয়ার এবং পুজোয় নৈবেদ্য হিসাবে দেওয়ার চল আছে।[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Ashtami- Significance And Celebrations[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ][১]
  2. Bhadrapada Festivals
  3. "Radhastami celebrations at ISKCON temple today"। ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০২০ 
  4. Mohanty, Prafulla Kumar (২০০৩)। "Mask and Creative Symbolisation in Contemporary Oriya Literature : Krishna, Radha and Ahalya"Indian Literature47 (2 (214)): 181–189। আইএসএসএন 0019-5804জেস্টোর 23341400 
  5. "Radha Ashtami festival"। ১৬ এপ্রিল ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ এপ্রিল ২০২২ 
  6. "Radha Ashtami 2017: Significance, Mahurat Timings, Prasad and Pooja Rituals"। ৩০ আগস্ট ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০২০ 
  7. fb রামামৃত সিংহমহাপাত্র ২০২৪, তুষারকান্তি ষন্নিগ্রহী কর্তৃক সংগৃহীত। সংগ্রহের তারিখ:১১ সেপ্টেম্বর,২০২৪।

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা
  • "Srila Prabhupada's Presentation of Srimati Radharani - First Radhastami celebration in ISKCON"। www.sdgonline.org। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৯-০৮ 
  • "Radhastami"। www.krishna.com। ২০২৪-০২-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৯-০৩ 
  • "Celebration of Radhashtami festival in Vrindavan"। www.radhavallabh.com। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১২-০৪