রবার্ট লিন্ডসে (সিলেট)
রবার্ট লিন্ডসে (১৭৫৪-১৮৩৬) ছিলেন একজন স্কটিশ ঔপনিবেশিক কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ী যিনি ১৭৭৮ থেকে ১৭৮৭ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশ ভারতের সময়ে সিলেটের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে এবং তারপর ১৭৮৭ থেকে ১৭৯০ সাল পর্যন্ত জেলা কালেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[১][২] তিনি মুহররমের বিদ্রোহে অংশ নিয়েছিলেন বলে জানা যায়।
রবার্ট লিন্ডসে | |
---|---|
সিলেটের সুপারভাইজার/ সুপারিনটেনডেন্ট | |
কাজের মেয়াদ ১৭৭৮ – ১৭৮৭ | |
সার্বভৌম শাসক | জর্জ III |
গভর্নর | ওয়ারেন হেস্টিংস, জন ম্যাকফারসন |
পূর্বসূরী | হল্যান্ড |
উত্তরসূরী | অবলুপ্ত |
সিলেটের ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর | |
কাজের মেয়াদ ১৭৮৭ – ১৭৯০ | |
গভর্নর | চার্লস কর্নওয়ালিস |
পূর্বসূরী | সিলেটের সুপারভাইজার |
উত্তরসূরী | হাইন্ডম্যান |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | রবার্ট লিন্ডসে ২৫ জানুয়ারি ১৭৫৪ স্কটল্যান্ড |
মৃত্যু | ১৮৩৬ (বয়স ৮১–৮২) স্কটল্যান্ড |
দাম্পত্য সঙ্গী | এলিজাবেথ ডিক |
মাতা | অ্যান ডেইলরিম্পল |
পিতা | জেমস লিন্ডসে |
আত্মীয়স্বজন | আলেকজান্ডার এবং চার্লস (ভাই), এলিজাবেথ ইয়র্ক (বোন) |
সামরিক পরিষেবা | |
যুদ্ধ | মুহররমের হাঙ্গামা, রাধারামের বিদ্রোহ, খাসিয়া বিদ্রোহ |
জীবনী
সম্পাদনালিন্ডসে ১৭৫৪ সালের ২৫ জানুয়ারী আর্ল অফ বালকারেস, জেমস লিন্ডসে এবং অ্যান ডেইলরিম্পলের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। তার মামা, চার্লস ডেইলরিম্পল তাকে ব্যবসায়িক জীবনধারা শিখাতে ডেপটফোর্ডের একটি জাহাজে ক্যাডিজে নিয়ে আসেন। ১৭৭২ সালে, তিনি প্রিন্স অফ ওয়েলস ইস্ট ইন্ডিয়াম্যানে ভারতের উদ্দ্যেশে ভ্রমণ করে সেপ্টেম্বর মাসে কলকাতায় পৌঁছান। এখানে তাকে রাজস্ব বিভাগের হিসাবরক্ষক-জেনারেলের সহকারী করা হয় এবং ফার্সি ভাষা শিখতে থাকেন। ১৭৭৬ সালের শরৎকালে তিনি ঢাকা শহরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। ফারসি ভাষার গুরুত্ব কমে যাওয়ায় ঐসময় তিনি হিন্দুস্তানি ভাষাও শিখেন।
সিলেটের কালেক্টর
সম্পাদনাঢাকায় কয়েক বছর থাকার পর লিন্ডসে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। সেখানে পৌঁছে ঐতিহ্য অনুযায়ী শাহ জালালের দরগায় শ্রদ্ধা জানানোর জন্য তাকে পরামর্শ দেওয়া হয়। কথিত আছে যে তিনি প্রবেশের আগে তার জুতা খুলে ফেলেন এবং যাওয়ার সময় পাঁচটি সোনার মোহর (১৬ বাংলা টাকা) দান করেন। তিনি সিলেটে তৎকালীন মাছ (শুটকি) শুকানোর প্রথা এবং এর "কটু" গন্ধের কথা উল্লেখ করেন।[৩]
তার আত্মজীবনীমূলক বইয়ের ৭ম অধ্যায়ে তিনি সিলেট শাহী ঈদগাহে ১৭৮২ সালের সিলেট বিদ্রোহের কথা উল্লেখ করেছেন। তার শাসনামলে, তিনি ১৭৮৬ সালে রাধারামের বিদ্রোহকে সফলভাবে দমন করেন।[৪] অল্প সময়ের মধ্যে জন উইলসের পরেই লিন্ডসে সিলেটের কালেক্টর হিসেবে হিন্ডম্যান কর্তৃক স্থলাভিষিক্ত হন।
ব্রিটেনে প্রত্যাবর্তন
সম্পাদনাআসাম ডিস্ট্রিক্ট গেজেটিয়ার্স ১০ম খন্ড অনুসারে, লিন্ডসে "ব্যবসায় খুবই আগ্রহী ছিলেন, এবং তার সম্পদের উৎসের কথা বেশিরভাগই কাব্যিক ভাষায় বর্ণনা করেছেন। 'চুনাম বা চুনাপাথর তাড়াতাড়ি স্রোতের দ্বারা খসে পড়ে। পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের উচুঁ খিরিখাত দিয়ে বিশালাকার ঝরণার প্রবাহ পারিপার্শ্বিক দৃশ্যাবলীকে সম্পূর্ণরূপে নজরকাড়া করে তুলেছিল। পর্বতটি বিশুদ্ধতম অ্যালাবাস্টার চুনের সমন্বয়ে গঠিত ছিল যা সমগ্র বিশ্বের সরবরাহের সমান পরিমাণ শুধু এখানেই উপস্থিত'।"[১] যদিও লিন্ডসে খাসিয়া প্রধানদের কারণে অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়েন, কিন্তু নিঃসন্দেহে তিনি সিলেটে যে সম্পদ আহরণ করেছিলেন তাতে চুন অনেকাংশে অবদান রেখেছিল।[৫]
যুক্তরাজ্যে ফিরে আসার পর, লিন্ডসে তার ভাই বালকারেসের ৬ষ্ঠ আর্ল, আলেকজান্ডার লিন্ডসের কাছ থেকে স্কটল্যান্ডে বালকারেস হাউসের বিশাল সম্পত্তি ক্রয় করেন, বাংলায় যে সম্পদ অর্জন করেন তা দিয়ে। তিনি ১৮৩৬ সালে মারা যান।[২]
রাজনৈতিক দপ্তর | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী হল্যান্ড |
সুপারিনটেনডেন্ট অব সিলেট ১৭৭৮–১৭৮৭ |
উত্তরসূরী অবলুপ্ত পদবী |
পূর্বসূরী নতুন পদবী |
কালেক্টর অব সিলেট ১৭৮৭-১৭৯০ |
উত্তরসূরী হিন্ডম্যান |
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ Allen, B.C. (১৯০৬)। Assam district gazetteers, Volume 10। Baptist Mission Press। পৃষ্ঠা 14।
- ↑ ক খ দেওয়ান নূরুল আনোয়ার হোসেন চৌধুরী (২০১২)। "লিন্ডসে, রবার্ট"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ Lives of the Lindsays; or a Memoir of the Houses of Crawford and Balcarres। 3। পৃষ্ঠা 151।
- ↑ Bhattacharjee, J.B. (২০০৫)। "Revolt of Nawab Radharam (1786)"। Proceedings of North East India History Association। Gauhati University। 26: 177–78।
- ↑ Allen, p. 15