মোস্তফা এম এ মতিন

বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ

মোস্তফা এম এ মতিন (১ আগস্ট ১৯৩৪-২৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৪) ছিলেন বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার রাজনীতিবিদ, ভাষা সৈনিক ও বিলুপ্ত ময়মনসিংহ-১৮ (বর্তমান ময়মনসিংহ-১১) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য[১][২] ভাষা আন্দোলনে অবদানের জন্য তাকে ২০২২ সালে মরণোত্তর একুশে পদক প্রদান করা হয়।[৩]

মোস্তফা এম এ মতিন
বিলুপ্ত ময়মনসিংহ-১৮ আসনের সাংসদ (বর্তমান ময়মনসিংহ-১১)
কাজের মেয়াদ
১৯৭৩ – ১৯৭৫
উত্তরসূরীআসাদুজ্জামান খান
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম১ আগস্ট ১৯৩৪
ভালুকা, ময়মনসিংহ জেলা
মৃত্যু২৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৪(2004-02-27) (বয়স ৬৯)
ভালুকা, ময়মনসিংহ
রাজনৈতিক দলবাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
সন্তান
পুরস্কারএকুশে পদক (২০২৩)

প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

মতিন ১ আগস্ট ১৯৩৪ সালে ময়মনসিংহের ভালুকার সাতেঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম তাহের উদ্দিন শেখ এবং মাতা হাজেরা খাতুন। ৪ ভাই ২ বোনের মধ্যে মোস্তফা মতিন চতুর্থ। তিনি মা-বাবার কনিষ্ঠ পুত্র আবদুল মতিন ১৯৫০ সালে গফরগাঁও ইসলামিয়া সরকারি হাই স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক ও ১৯৫২ সালে ঢাকা কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে আইএ পাস করেন। জগন্নাথ কলেজ থেকে বি.এ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এল.এল.বি. ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯৬৩ সালে ঢাকা জেলা বারে আইন পেশায় যোগদান করেন।[৪]

কর্ম ও রাজনৈতিক জীবন সম্পাদনা

মতিন বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবী সমিতিতে যোগদান করে আমৃত্যু আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। এর পূর্বে মতিঝিল টি এন্ড টি হাই স্কুলে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ছাত্রাবস্থাতে রাজনীতে যুক্ত হন এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি বাংলা ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধসহ সকল আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।[৫]

মতিন ১৯৭০ সালে প্রাদেশিক পরিষদ ও ১৯৭৩ সালে বিলুপ্ত ময়মনসিংহ-১৮ আসন (বর্তমান ময়মনসিংহ-১১) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[৫] ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় নির্বাচনে তিনি ময়মনসিংহ-১১ আসন থেকে অংশ নিয়ে পরাজিত হয়েহিলেন।[৬]

তিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন প্রবাসী সরকারের স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হিসেবে সরকারের অর্থনৈতিক সহায়তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচিত সভাপতি হিসেবে দুই মেয়াদে (২০০১ ও ২০০২) দায়িত্ব পালন করেন।

সম্মাননা সম্পাদনা

  • ১৯৫২ সালে বাংলা ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণের স্বীকৃতিস্বরুপ ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ২০০০ সালে মতিনকে ভাষা সৈনিক হিসেবে সংবর্ধনা ও স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়।[৫]
  • একুশে পদক ২০২২ (মরণোত্তর)[৩]
  • ভাষা সৈনিক মোস্তফা এম এ মতিন স্বরনে ময়মনসিংহ জয়নুল আবেদীন পার্কে ভাষা সৈনিক এডভোকেট মোস্তফা এম.এ. মতিন পৌর পাঠাগার স্থাপন করা হয়।[৭]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "১ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  2. "ভালুকায় আওয়ামী লীগ নেত্রীকে সংবর্ধনা"জনকন্ঠ। ১৯ মার্চ ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মার্চ ২০২০ 
  3. "একুশে পদক পাচ্ছেন ২৪ বিশিষ্ট নাগরিক"দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ 
  4. "সাত গুণীজনকে আজ আজীবন সম্মাননা"সমকাল। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-১৬ 
  5. "ভাষা সৈনিকদের পুর্নমূল্যায়ন"banglanews24.com। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মার্চ ২০২০ 
  6. "মোস্তফা এম এ মতিন, আসন নং: ১৫৬, ময়মনসিংহ-১১, দল: আওয়ামী লীগ (নৌকা)"দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০২০ 
  7. "ভাষা সৈনিক মোস্তফা মতিন স্মৃতি পাঠাগারের যাত্রা শুরু"banglanews24.com। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১৯ নভেম্বর ২০২২