বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় মেলাঘর ক্যাম্প ছিল বাঙালি গেরিলা যোদ্ধাদের একটি প্রশিক্ষণ ক্যাম্প। ১১ জুলাই, ১৯৭১ সালে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিসভার বৈঠকে বাংলাদেশী বাহিনীকে এগারোটি সেক্টরে ভাগ করা হয়। ভারতের আগরতলার কাছে মেলাঘর ছিল দুই নম্বর সেক্টরের সদর দফতর।[১]

সেক্টর তথ্য সম্পাদনা

মেলাঘর ক্যাম্পের দুই সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার ছিলেন মেজর খালেদ মোশাররফ (প্রয়াত মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীর উত্তম) ২১ অক্টোবর, ১৯৭১ পর্যন্ত এবং তারপর ক্যাপ্টেন এটিএম হায়দার (প্রয়াত লেফটেন্যান্ট কর্নেল এটিএম হায়দার বীর উত্তম পিএসসি) ২২ অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত। মেজর খালেদ মোশাররফ এটিএম হায়দারের সাথে ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বরে মেলাঘর ক্যাম্পে কে-ফোর্সনামে একটি ব্রিগেড গঠন করেন এবং এতে ৪, ৯ এবং ১০ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ছিল। এই ক্যাম্পের যোদ্ধারা ফরিদপুরের পূর্বাঞ্চল, নোয়াখালী, কুমিল্লার কিছু অংশ এবং ঢাকা শহরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল।[১] [২]

কে ফোর্সের অধীনে প্রথম গেরিলা ইউনিট গড়ে তোলা হয়েছিল ঢাকা শহরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে আক্রমণ করার জন্য।[৩]

মেলাঘর ক্যাম্পের পরিবেশ ও জীবন সম্পাদনা

মেলাঘর ক্যাম্পের বিস্তৃতি কয়েক মাইল। পাহাড়, জঙ্গলে ঘেরা এলাকা। শিবিরে যাওয়ার মাটির পথটি ছিল অসম এবং একটু বৃষ্টি হলে তা পিচ্ছিল হয়ে যেতে পারে।[৪][৫]

মেলাঘর ক্যাম্পে বিভিন্ন জেলা থেকে গেরিলা যোদ্ধারা প্রশিক্ষণের জন্য আসে। তবে এই ক্যাম্পের বেশির ভাগ প্রশিক্ষণার্থী ছিল ঢাকার। যোদ্ধাদের প্রতিটি দলের জন্য সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামটি ১৫ দিন স্থায়ী হয়েছিল। প্রতি রাতে, গেরিলাদের দুটি বা তিনটি দল পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য গোলাবারুদ নিয়ে তাদের দেশের একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে প্রবেশ করত।[৩][৪]

জীবন কঠোর ছিল যোদ্ধারা দিনে দুইবার প্রশিক্ষণ নেন। ক্যাম্পে খাবার, পানি ও ওষুধের খুব সীমিত সরবরাহ ছিল।[৩][৫]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা