মেঘা

নিমফ্যালিডি পরিবারের প্রজাপতি

মেঘা (বৈজ্ঞানিক নাম: Tanaecia lepidea (Butler))এক প্রজাতির মাঝারী আকারের বাদামী রঙের প্রজাপতি। এরা নিমফ্যালিডি পরিবার এবং তানাইসিয়া উপগোত্রের সদস্য।[]

মেঘা
Grey count
ডানা খোলা অবস্থায়
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Animalia
পর্ব: Arthropoda
শ্রেণী: Insecta
বর্গ: Lepidoptera
পরিবার: Nymphalidae
গণ: Tanaecia
প্রজাতি: T. lepidea
দ্বিপদী নাম
Tanaecia lepidea
Butler, 1868
প্রতিশব্দ
  • Euthalia lepidea (Butler, 1868)
  • Cynitia lepidea (Butler, 1868)

মেঘা এর প্রসারিত অবস্থায় ডানার আকার ৬৫ - ৮০ মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের হয়।

উপপ্রজাতি

সম্পাদনা

ভারতে প্রাপ্ত মেঘা এর উপপ্রজাতি হল- []

  • Tanaecia lepidea lepidea Butler, 1868 – Himalayan Grey Count
  • Tanaecia lepidea miyana Fruhstorfer, 1913 – Peninsular Grey Count
  • Tanaecia lepidea sthavara Fruhstorfer, 1913 – Indo-Chinese Grey Count

বিস্তার

সম্পাদনা

ভারত (দক্ষিণ ভারত থেকে মহারাষ্ট্র , মধ্যপ্রদেশ, দ: কর্ণাটক, উড়িষ্যা, উত্তরাঞ্চল থেকে অরুণাচল প্রদেশ, উত্তর-পূর্ব ভারত), নেপাল, ভুটান,বাংলাদেশ ও মায়ানমার এ এদের দেখা যায়।[]

বর্ণনা

সম্পাদনা

প্রজাপতির দেহাংশের পরিচয় বিষদ জানার জন্য প্রজাপতির দেহ এবং ডানার অংশের নির্দেশিকা দেখুন:-

উভয় ডানার উপরিতলের মূল রঙ কালচে বাদামি এবং ফ্যাকাশে ধূসর বর্ডার তথা পটি যুক্ত ! উক্ত বর্ডার সামনের ডানায় এপেক্স এর নিচ থেকে শুরু হয়ে টরনাস (tarnus ) পর্যন্ত সরুভাবে এবং পিছনের ডানায় চওড়া পটির আকারে বিস্তৃত। পিছনের ডানার উক্ত পটি টি নিচের অংশে আরও চওড়া। সামনের ডানার শীর্ষভাগ বা অ্যাপেক্স কোনাকৃতি হয়ে বাইরের দিকে বেরিয়ে থাকে ও ঈষদ বক্র। উভয় ডানার উপরিপৃষ্ঠে গাঢ় ও হালকা বাদামি কিছু দাগ-ছোপ বর্তমান। সামনের ডানার উপরিতলে সেলের (cell) মধ্যে কালচে বাদামি রেখা পরিবেষ্টিত দুটি বড় বাদামি ছোপ ও সেলের মধ্যভাগের ঠিক নিচেই সাব -বেসাল অংশে অনুরূপ একটি ছোপ বিদ্যমান।

ডানার নিম্নপৃষ্ঠের দাগ-ছোপ উপরেরই প্রায় অনুরূপ। নিম্নতলের রঙ ধূসর, হালকা কমলা ও উজ্জ্বল সাদায় মেশানো। সামনের ডানার নিম্নতলের ধূসর-সাদা বর্ডার তথা পটি টি উপরিতলের বর্ডারের তুলনায় অধিক চওড়া। সামনের ডানার ডিসকাল অংশে কোস্টার সামান্য নিচ থেকে একসারি বিভিন্ন আকৃতির কমলা ছোপ (প্রতিটি ইন্টারস্পেসে) সোজাসুজিভাবে নেমে গেছে। উক্ত ছোপগুলির মধ্যে সবার উপরের ছোপ দুটি সর্বাপেক্ষা বৃহদ (প্রথম টি বৃহত্তম) ও লম্বাটে। কমলা ছোপগুলির বহিঃপ্রান্তে অবস্থিত কালচে বাদামি দাগগুলি একত্রিত হয়ে একটি ঢেউখেলানো বহিঃ-ডিসকাল রেখার সৃষ্টি করেছে যেটি টার্মেনের (tarmen) সাথে প্রায় সমান্তরাল ভাবে বিন্যস্ত। পিছনের ডানার নিম্নতলে ফ্যাকাশে কমলা-বাদামি ছোপের অবিচ্ছিন্ন ও বক্রভাবে সমান্তরাল একটি ডিসকাল ও একটি পোস্ট -ডিসকাল সারি বর্তমান। পোস্ট-ডিসকাল ছোপের সারিটি অধিকতর স্পস্ট। এই দুই ছোপের সারির মধ্যভাগ ফ্যাকাশে সাদা ও ধূসর। মাথা,বক্ষদেশ ও উদর উপরিতলে কালচে বাদামি এবং নিম্নতলে সাদা ও ধূসর বর্নের।[]

এই প্রজাতির উড়ান খুব শক্তিশালী। বাস্কিং বা রোদ পোহানো এদের খুবই প্রিয় বিষয়। নিচু উচ্চতায় আর্দ্র বনভূমি যুক্ত অঞ্চলে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে এদের প্রচুর সংখ্যায় দেখা যায়। জঙ্গল পথ ও জঙ্গলের ফাঁকা জায়গায় (forest clearing) এই প্রজাপতি দের ভূমির কাছাকাছি নিচ দিয়ে উড়তে লক্ষ্য করা যায়। জঙ্গলের কাছাকাছি গ্রামাঞ্চল ও শহরাঞ্চলেও এদের দর্শন মেলে। অতি-পক্ক ফল ও গাছের পাতায় বসে রস পান করতে এদের প্রায়শই দেখা যায়। পুরুষরা স্ত্রীদের অপেক্ষা বেশি একই স্থানে ঘোরাফেরা করে (territorial habit)। পাহাড়ের পাদদেশ থেকে ২০০০ মি. উচ্চতা পর্যন্ত উন্মুক্ত জঙ্গল এবং নদী ও ঝর্ণার কিনারে এদের উপস্থিতি ভালো হারে লক্ষ্য করা যায় ফেব্রুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত।[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Varshney, R.K.; Smetacek, Peter (২০১৫)। A Synoptic Catalogue of the Butterflies of India। New Delhi: Butterfly Research Centre, Bhimtal & Indinov Publishing। পৃষ্ঠা 104। আইএসবিএন 978-81-929826-4-9ডিওআই:10.13140/RG.2.1.3966.2164 
  2. "Tanaecia lepidea Butler, 1868 – Grey Count"। সংগ্রহের তারিখ ১০ এপ্রিল ২০১৯ 
  3. Savela, Markku। "Tanaecia lepidea (Butler, 1868)"Lepidoptera and Some Other Life Forms। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ৩, ২০১৮ 
  4. Isaac, Kehimkar (২০০৮)। The book of Indian Butterflies (ইংরেজি ভাষায়) (1st সংস্করণ)। নতুন দিল্লি: অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। পৃষ্ঠা ৩৮৬। আইএসবিএন 978 019569620 2 
  5. Kunte, Krushnamegh (২০১৩)। Butterflies of The Garo Hills। Dehradun: Samrakshan Trust, Titli Trust and Indian Foundation of Butterflies। পৃষ্ঠা ১০৮।