মুস্‌নাদে আহ্‌মাদ বিন হানবাল ( আরবি: مسند احمد بن حنبل ) হলো ইসলামী পণ্ডিত আহ্‌মাদ বিন হানবাল দ্বারা সংগৃহীত হাদীসের এক বিশাল সংগ্রহ,[১] আর আহ্‌মাদ বিন হানবাল হলেন হানবালী মাযহাবের প্রবক্তা।

মুসনাদ আহমাদ ইবনে হাম্বাল
লেখকআহমদ বিন হাম্বল
ভাষাআরবী
ধরনহাদিস সংকলন

বিবরণ সম্পাদনা

মাকাতাবা শামিলা অনুযায়ী, এটি ইসলামের ইতিহাসে লেখা বৃহত্তম হাদীস বই যেখানে সাতাশ হাজারেরও (২৭০০০) বেশি হাদিস রয়েছে । [২] এখানে বিষয়ভিত্তিক হাদিস বর্ণনার বদলে প্রতিটি ছহাবী দ্বারা বর্ণিত হাদীস দ্বারা তা সংগঠিত হয়েছে, আর 'আশারাহ মুবাশারাহ ("দশ জন যাদের জান্নাত প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল") এর হাদীস দিয়ে এটি শুরু হয়েছে। এটি তাদের মর্যাদা এবং আল্লাহ্‌র রসূলের থেকে হাদীস পাওয়ার প্রচেষ্টা চালানোর স্বীকৃত দেয়ার জন্য করা হয়।[৩]

কেউ কেউ বলেন যে, ইবন হানবাল তার গ্রন্থের বিষয়ে একটি মন্তব্য করেছিলেন যা নিম্নরূপে: "আমি এই বইটিতে কেবল সেইসব হাদীস অন্তর্ভুক্ত করেছি যেগুলো অন্য আলেমরা প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করে।।" যেমন কিছু কিছু হানবালী পণ্ডিত আবুল-ফারাজ ইবনুল জাওযী দাবি করেন, মুসনাদে এমন কিছু হাদিস রয়েছে যেখানে কোন বর্ণনাকারী কিছু অতিরিক্ত সংযোজন করেছে। কেউ কেউ বলেন এরকম নয়টি হাদীস আছে, বা অন্য কেউ বলেন পনেরটি হাদিস আছে এমন। তবে সবাই এটিতে একমত যে, যেইসব হাদীস বানোয়াট বলে সন্দেহ করা হচ্ছে সেগুলি নতুন কোন হাদীস নয়। [৪]

হাদিসগুলোর প্রকারভেদ সম্পাদনা

এগুলাে ছয়ভাগে বিভক্ত :

১. এমন হাদীস, যেগুলাে ইমাম আহমদের পুত্র আবূ আবদির রহমান আব্দুল্লাহ তার পিতা ইমাম আহমদ (র) হতে বর্ণনা করেছেন তার নিকট হতে সরাসরি শ্রবণের পর। এগুলাে ইমাম আহ্‌মাদের মুসনাদ নামে পরিচিত। এই পর্যায়ের হাদীসের সংখ্যা বহু। মুসনাদ গ্রন্থের তিন-চতুর্থাংশ জুড়ে প্রায় এই পর্যায়ের হাদীসের অবস্থান।

২. এমন হাদীস, যেগুলাে আব্দুল্লাহ তার পিতা ইমাম আহ্‌মাদ (রহিমাহুল্লাহ) থেকেও শুনেছেন এবং অন্য কারাে নিকট থেকেও শুনেছেন। এই প্রকারের হাদীসের সংখ্যা খুবই কম।

৩. এমন হাদীস, যেগুলাে আব্দুল্লাহ তার পিতা থেকে নয় বরং অন্য কারাে সূত্রে বর্ণনা করেছেন। মুহাদ্দিসগণের পরিভাষায় এগুলাে “যাওয়াইদ-ই আব্দুল্লাহ (আব্দুল্লাহ্‌র বর্ণিত অতিরিক্ত হাদীস) নামে পরিচিত। এই প্রকারের হাদীসের সংখ্যা প্রথম প্রকারের হাদীসের সংখ্যা হতে কম কিন্তু অন্য সকল প্রকারের হাদীসের সংখ্যা হতে বেশি।

৪. এমন হাদীস যেগুলাে আব্দুল্লাহ তার পিতা ইমাম আহ্‌মাদের সামনে পাঠ করে শুনিয়েছেন, ইমাম আহ্‌মাদ (রহিমাহুল্লাহ)র মুখ হতে শুনেন নি। এই প্রকারের হাদীস কম।

৫. এমন হাদীস, যেগুলাে আব্দুল্লাহ তার পিতা ইমাম আহ্‌মাদ (রহিমাহুল্লাহ)র মুখ হতে শশানেন নি এবং তার সামনে পাঠ ও করেন নি, বরং ইমাম আহমদের স্বহস্তে লিখিত পাণ্ডুলিপিতে পেয়েছেন, এ পর্যায়ের হাদীসের সংখ্যা ও খুব বেশি নয়।

৬. এমন হাদীস, যেগুলাে হাকিম আবূ বকর কাতীঈ বর্ণনা করেছেন আব্দুল্লাহ ও তার পিতার সনদ বাদ দিয়ে অন্য সনদে, এই প্রকারের হাদীসের সংখ্যা অন্য সকল প্রকারের হাদীস থেকে কম।[৫]

প্রকাশনা সম্পাদনা

বইটি বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা প্রকাশ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে:

  • ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এই হাদীস গ্রন্থ অনুবাদ করেছে এবং প্রকাশ করেছে।
  • [৬]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. A.C. Brown, Jonathan (২০১৪)। Misquoting Muhammad: The Challenge and Choices of Interpreting the Prophet's LegacyOneworld Publications। পৃষ্ঠা 41আইএসবিএন 978-1780744209 
  2. http://shamela.ws/index.php/book/98139
  3. "Musnad Imam Ahmad Bin Hanbal (3 vol)"www.islamguide.dk। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ৩০, ২০১৯ 
  4. Fatawa of Ibn Taimiya, vol 1, page 248.
  5. মুসনাদে আহমদ - পৃষ্ঠা ২৮। ইসলামিক ফাউন্ডেশন। ২০০৮। 
  6. https://www.rokomari.com/book/68341/musnade-ahmad-1st-2nd-parts

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা