মিমি চকলেট ছিল মিমি চকলেট লিমিটেড দ্বারা নির্মিত চকলেট বার এবং চুইংগামের একটি বাংলাদেশী মার্কা। এটি বাংলাদেশে ১৯৬৫ সালে চালু হয়।[] মিমি চকলেট বাংলাদেশের প্রথম চকলেট বার উৎপাদনকারী কোম্পানি এবং একসময় এটি বাংলাদেশের একমাত্র ও একচেটিয়াভাবে ব্যবসা করা চকলেট বার ছিল।[]

মিমি চকলেট
অরেঞ্জ ফ্লেভারের মিমি চকলেট বারের প্যাকেট
পণ্যের ধরনকনফেকশনারি
মালিকমিমি চকলেট লি.
দেশবাংলাদেশ
প্রবর্তন১৯৬৫; ৫৯ বছর আগে (1965)
বাতিল২০১৮ (2018)
বাজারদেশীয়

ইতিহাস

সম্পাদনা

মিমি চকলেটের কারখানাটি ১৯৬৫ সালে তেজগাঁও শিল্প এলাকায় ১ একর জমিতে স্থাপন করা হয়েছিল।[] বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট মিমি চকলেট লিমিটেডের দায়িত্ব নেয়।[] মিমি চকলেট ব্যবসায় সফল হয়েছিল কারণ সে সময় বাংলাদেশে খুব কম চকলেট ব্র্যান্ড ছিল। বিদেশি চকলেট পণ্য আমদানির সুযোগ ছিল কম। তাই ১৮ বছর ধরে মিমি চকলেট জনপ্রিয় চকলেট মার্কা হিসেবে ছিল। ১৯৯০ এর দশকে, মিমি প্রতি মাসে ৫০-৬০ লাখ টাকার চকলেট এবং চুইংগাম বিক্রি করত।[]

পণ্য হিসাবে মিমি চকলেট বার এবং চুইংগাম বিক্রি করত।[] চকোলেট বারগুলি বাদামী কাগজে প্যাকেট করা হত।[]

মিমি চকোলেট বারের দুটি ফ্লেভার ছিল:

  • মিল্ক ফ্লেভার[]
  • অরেঞ্জ ফ্লেভার[]

বিজ্ঞাপন

সম্পাদনা

মিমি চকলেটের আকর্ষণীয় টিভি বিজ্ঞাপন সেই সময়ের একমাত্র টেলিভিশন বিটিভিতে প্রচারিত হয়েছিল।[] কম প্রতিযোগীদের কারণে মিমি চকলেট পণ্যের প্রচারে তেমন মনোযোগ দেয়নি। মিমি চকলেট জনপ্রিয় বাক্য “মামী আসেনি কিন্তু মিমি এসেছে” যুক্ত শুধুমাত্র একটি বিজ্ঞাপন টিভিতে প্রকাশ করে।[]

বন্ধকরণ

সম্পাদনা

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে মিমি ছাড়া অন্য কোন কোম্পানির চকোলেট বার ছিল না। এসময় বাংলাদেশে চকোলেটটির একচেটিয়া বাজার দখলে ছিল; [] কিন্তু ১৭ বছর পর চকলেট উৎপাদনের পুরানো দিনের কৌশল, অদক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং নেতৃত্বের অভাব কোম্পানিকে পতনের দিকে পরিচালিত করে। পুরানো মেশিনের সাহায্যে চকলেট উৎপাদনের খরচ ২০০০ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ হয়। উৎপাদন খরচ বাড়তে থাকে এবং বারবার মেরামত করার পর মেশিনগুলো আর পুরনো গতি বজায় রাখতে পারছিল না। মিমি চকোলেট একবার ২০০৯ সালে সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল মূলধনের অভাব এবং বকেয়ার কারণে। পরে সরকার সেসব সমস্যার সমাধান করে পুনরায় চালু করে।[] এক পর্যায়ে মিমি চকলেট কোম্পানি ঋণ খেলাপি হয়ে পড়ে। অনিয়মিত হয়ে পড়ে কাঁচামাল আমদানি। ২০১৪ সালে মিমি চকলেটের বার্ষিক বিক্রি ১৫-২০ লাখ টাকায় নেমে আসে। সব দিক বিবেচনা করে একযোগে কোম্পানিটি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অবশেষে, ২০১৮ সালে মিমি চকোলেট আনুষ্ঠানিকভাবে বাজার ছাড়ে।[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "মিমি চকলেট: শৈশবের ভালোবাসার মৃত্যু"The Business Standard। ২৯ ডিসেম্বর ২০২০। 
  2. Anny, Fatema (১৯ জানুয়ারি ২০২২)। "যে কারণে হারিয়ে গেল সেই চিরচেনা চকলেট"Somoy News 
  3. Sohag, Kazi (৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১)। "সরকারের কাছে ৬২৫ কোটি টাকার সম্পত্তি বিক্রি করবে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট"Manab Zamin 
  4. এম সাইফুল্লাহ (২০১২)। "বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  5. Rahman, Sabah (৩১ জানুয়ারি ২০১৮)। "I love the 90s"Dhaka Tribune 
  6. Sanjana, Faria। "Deshi Treats"The Daily Star 
  7. Sultana, Israt (৮ জানুয়ারি ২০২২)। "What Happened to Mimi Chocolate? The Downfall of Mimi Chocolate"Business Inspection 
  8. Ferdous, Tania (৭ জুলাই ২০২১)। "বদলে যাচ্ছে আগামী দিনের চকলেট"Prothom Alo 
  9. Hossain, Nazmul (২৯ মার্চ ২০১৭)। "বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের 'মিমি চকোলেট'"Share Biz 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা