ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ
ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, বাংলাদেশের ময়মনসিংহ শহরে অবস্থিত একটি স্নাতক পর্যায়ের প্রথম সারির সরকারি প্রকৌশল কলেজ। ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি অনুষদের অধিভূক্ত।
![]() | |
ধরন | সরকারি প্রকৌশল কলেজ |
---|---|
স্থাপিত | ২০০৭ |
অধ্যক্ষ | প্রফেসর মোঃ আলমগীর হোসাইন |
শিক্ষার্থী | ৮০০+ |
ঠিকানা | রহমতপুর বাইপাসমোড়,খাগডহর,সদর,ময়মনসিংহ , , |
শিক্ষাঙ্গন | ৭ একর |
অধিভুক্তি | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
ওয়েবসাইট | [১] |
![]() |
ইতিহাসসম্পাদনা
বাংলাদেশকে তথ্য ও প্রযুক্তি নির্ভর করে গড়ে তুলার লক্ষ্যে ২০০৫ সালে ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপনা প্রকল্প অনুমোদন করে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৯ সালে ময়মনসিংহ বিভাগের একমাত্র প্রকৌশল শিক্ষার বিদ্যাপীঠ হিসেবে ৬০ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে যাত্রা শুরু করে ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। বর্তমান সরকারের প্রাক্তন মাননীয় ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান ২০০৯ সালে ইইই ডিপার্টমেন্টের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
অবস্থানসম্পাদনা
ময়মনসিংহ শহর থেকে প্রায় ৭কি.মি. দূরে ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে রহমতপুর বাইপাস মোড় সংলগ্ন ক্যাম্পাসটি খাগডহর, ময়মনসিংহ সদর, ময়মনসিংহ অবস্থিত।
অবকাঠামোসম্পাদনা
৩টি একাডেমিক ভবন, ১টি পাঠাগার ও কম্পিউটার ভবন, অধ্যক্ষের বাসভবন, শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের বাসভবন নিয়ে মোট ১৩ টি ভবন নিয়ে কলেজের পুরো কাঠামোটি গঠিত। এছাড়াও ছাত্রদের জন্য ২টি ও ছাত্রীদের ১টি আবাসিক হল রয়েছে। ধর্মীয় উপাসনার জন্য মসজিদ, পূজা কক্ষ এবং ক্যাম্পাসে একটি শহীদ মিনার রয়েছে।
বিভাগসমূহ ও আসনসংখ্যাসম্পাদনা
বিভাগসম্পাদনা
- ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল (ইইই)
- পুরকৌশল
- কম্পিউটার বিজ্ঞান প্রকৌশল
আসনসংখ্যাসম্পাদনা
ক্রম | নাম | আসনসংখ্যা |
---|---|---|
১ | বি.এস.সি ইন ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) | ৬০ |
২ | বি.এস.সি ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং | ৬০ |
৩ | বি.এস.সি ইন কম্পিউটার এন্ড সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং | ৬০ |
ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে মোট ৩টি বিভাগ রয়েছে। ২০০৮-২০০৯ শিক্ষাবর্ষে শুধুমাত্র ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগে ৬০ জন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির মাধ্যমে যাত্রা শুরু এই প্রতিষ্ঠানটির। পরবর্তীতে ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে পুরকৌশল বিভাগে ৬০ জন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করা হয়। বর্তমানে ইইই ও পুর বিভাগে ১২০ জন করে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করানো হয়।২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ চালু হয়েছে । বর্তমানে প্রায় ৬০০ জন ছাত্র-ছাত্রী এখানে অধ্যয়ন করছে।
ল্যাব সুবিধাসম্পাদনা
শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে প্রায় ৩৫০+ উপরে কম্পিউটার ও রয়েছে একটি অত্যাধুনিক পাওয়ার স্টেশন। তিনটি বিভাগ রয়েছে আলাদা আলাদা উন্নতমানের ল্যাব।
- তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগ
- ইলেকট্রনিক্স ল্যাব
- বৈদ্যুতিক সার্কিট ল্যাব
- বৈদ্যুতিক মেশিন ল্যাব
- পাওয়ার সিস্টেম এবং উচ্চ ভোল্টেজ ল্যাব
- ডিজিটাল সিগন্যাল প্রসেসিং ল্যাব
- স্ট্রাকচারাল মেশিন ল্যাব
- পুরকৌশল বিভাগ
- যন্ত্রের শপ
- ওয়েল্ডিং শপ
- জরিপের দোকান
- ফাউন্ড্রি শপ
- পরিবহন ল্যাব
- অঙ্কন পরীক্ষাগার
- হাইড্রোলিক্স ল্যাব
- কাঠ শপ
- পরিবেশ ল্যাব
- চিত্র প্রক্রিয়াকরণ ল্যাব
- জিও-টেকনিক্যাল ল্যাব
- কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগ
- নেটওয়ার্কিং ল্যাব
- সফটওয়্যার ল্যাব
- যোগাযোগ ল্যাব
- চিত্র ল্যাব
- মাইক্রোপ্রসেসর ল্যাব
ভর্তি প্রক্রিয়াসম্পাদনা
এসএসসি এবং এইসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা জিপিএ ও প্রতিযোগিতামূলক ভর্তি পরীক্ষায় অর্জিত নম্বরের ভিত্তিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়। ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি কার্যক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তি ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় মেধাক্রম অনুসারে এখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়।
আবাসন ব্যবস্থাসম্পাদনা
এই কলেজের শিক্ষার্থীদের থাকার জন্য রয়েছে তিনটি হল যার ২টি ছেলেদের জন্য ও ১টি মেয়েদের জন্যঃ
- মুক্তিযোদ্ধা হল - ২০০ ছাত্রের আবাসন সুবিধা সম্পন্ন;
- অমর একুশেহল - ২০০ ছাত্রের আবাসন সুবিধা সম্পন্ন;
- বীর মুক্তিযোদ্ধা তারামন বিবি হল - ১৫০ ছাত্রীর আবাসন সুবিধা সম্পন্ন।
কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারসম্পাদনা
ইন্টারনেট সংবলিত আধুনিক গ্রন্থাগারে রয়েছে প্রয়োজনীয় বইয়ে সমৃদ্ধ। প্রতিটি কক্ষে প্রায় ৮০ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করতে পারে। শিক্ষার্থীরা এখান হতে তাদের প্রয়োজনে বই ইসু করে বাসায় নিতে পারে।
কার্যক্রমসম্পাদনা
সাপ্তাহিক ছুটির দিন (শুক্রবার) বাদে প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ২টা পর্যন্ত ক্লাস হয়ে থাকে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা সফরের আয়োজন করা হয়। কলেজে সবরকম প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড সম্পন্ন করে এর প্রশাসনিক কার্যালয়ে। প্রশাসনিক কার্যালয়ের অধীনস্থ আরো কয়েকটি উপবিভাগ রয়েছে। বছরজুড়েই ক্যাম্পাসে নানারকম সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড চলে এবং বিশেষ দিবস উদযাপিত হয়।
মইক অ্যলামনাইসম্পাদনা
ইতিমধ্যেই প্রায় ৬০০ প্রকৌশলী ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে তাদের স্নাতক সম্পন্ন করেছেন এবং এখন তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টর যেমন BREB, DPDC, PGCB, NESCO, DMTCL, BSTI, WALTON, BANK ইত্যাদিতে নিযুক্ত আছেন। সম্প্রতি কিছু প্রাক্তন শিক্ষার্থী BPSC থেকে BCS ক্যাডার হিসেবে সুপারিশ হয়েছে। কয়েকজন শিক্ষার্থী বাংলাদেশের স্বনামধন্য পাবলিক ও প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে প্রভাষক/সহকারী অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছে । এছাড়াও, অনেক শিক্ষার্থী এখন বিশ্বের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপ পেয়ে বিদেশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করছে। একটি নতুন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হিসাবে,তারা টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়, বোস্টন ইউনিভার্সিটি, ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটি, কার্লসরুহে ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (KIT), কনকর্ডিয়া ইউনিভার্সিটি, কোরিয়া ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (KIST), Tampere University, Aix-Marseille University, University of Siegen, University of Applied Science Upper Austria,এর মতো বিশ্বের বিখ্যাত প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছে তাও আবার সম্পূর্ণ বৃত্তি সহ। শুধু এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোই নয় অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও। তাছাড়া,অনেক শিক্ষার্থী এখন বাংলাদেশের বুয়েট, কুয়েট, রুয়েট, চুয়েট, ডুয়েট, ঢাবি, এমআইএসটি, জাবি,জেএনইউ,বিইউপিতে তাদের স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করছে।
সহ শিক্ষা কার্যক্রমসম্পাদনা
শিক্ষার্থীরা পড়াশুনার পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষামূলক কাছে নিজেকে সমৃদ্ধ করা সুযোগ রয়েছে।
রোভার ডেন | সাংস্কৃতিক সংগঠন |
---|---|
ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের রোভার স্কাউট শাখা। "সেবা" এই মটো নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে রোভার সদস্যরা। |
"সাংস্কৃতি আমাদের ঐতিহ্যের বাহক" এই বিশ্বাস নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে মইক সাংস্কৃতিক সংগঠন। |
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
বহিঃসংযোগসম্পাদনা
- ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ - অফিসিয়াল ওয়েবসাইট