মণিরাম দেওয়ান

ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী ও অসমীয় মানবদরদী

মণিরাম দেওয়ান (ইংরেজি: Maniram Dewan; অসমীয়া: মণিরাম দেৱান) উন্নিশ শতিকার অসমের একজন মহৎ ব্যক্তি। তিনি অসমে সর্বপ্রথম চা-বাগান স্থাপন করেন। ব্রিটিশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের পরিকল্পনার জন্য ১৮৫৭ সালে তাকে ফাঁসী দেওয়া হয়।[১]

মণিরাম দেওয়ান
জন্ম
মণিরাম দত্ত বরুয়া

(১৮০৬-০৪-১৭)১৭ এপ্রিল ১৮০৬
মৃত্যু২৬ ফেব্রুয়ারি ১৮৫৮(1858-02-26) (বয়স ৫১)
মৃত্যুর কারণফাঁসী
অন্যান্য নামমণিরাম বরভাণ্ডার বরুয়া, মণিরাম দেওয়ান
পেশাচা বাগানের কৃষক
প্রতিষ্ঠানআসাম টি কোম্পানী
পরিচিতির কারণ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহ, অসমের চা বাগানের জনক
উল্লেখযোগ্য কর্ম
বুরঞ্জী বিবেক রত্ন (১৮৩৮)
অপরাধের অভিযোগব্রিটিশ ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহের পরিকল্পনা করা
অপরাধের শাস্তিফাঁসী

জন্ম সম্পাদনা

১৮০৬ সালে অসমের শিবসাগর জেলার চারিং নামক স্থানে মণিরাম দেওয়ানের জন্ম হয়। তার পিতার নাম মুক্তিয়ার রামদত্ত ও মাতার নাম কৌশ্যলা।

কর্মজীবন সম্পাদনা

১৮২৮ সালে অসমের পলিটিকেল এজেন্ট কেপ্টেইন নিউভিল ইংরেজের অধীনে মণিরামকে রেভিনিউ সিরস্তাদার ও তহসিলদার পদে নিযুক্তি করেন। ১৮৩৩ সন থেকে ১৮৩৭ সন পর্যন্ত তিনি পুরন্দর সিংহের অধীনে বরভাণ্ডার বরুয়া পদে নিযুক্ত ছিলেন। পুরন্দর সিংহ রাজ্য হারানোর পর তিনি শিবসাগর জেলার চেরেকাপার, মেটেকা ও কোয়রপুর ইত্যাদি মৌজার মৌজাদার পদে নিযুক্ত হন। ১৮৩৯ সালে তিনি মৌজাদারের পদ ছেড়ে অসম টি কম্পানীতে যোগদান করেন। ১৮৪৫ সালে কম্পানীর চাকরি ছেড়ে তিনি যোরহাটের সেনিমরা ও শিবসাগর জেলার চিংলৌ অঞ্চলে নিজস্ব দুইটি চা-বাগান স্থাপন করেন।

১৮৫২ সালে পুরন্দর সিংহের পুত্র চারিংরাজা কামেশ্বর সিংহের মৃত্যুর পর তার নাবালক পুত্র কন্দর্পেশ্বর সিংহ চারিংরাজ্যের রাজা হয়। নাবালক রাজার পক্ষ হয়ে মণিরাম সেইসময় চারিংরাজ্য পরিচালনা করেন। ১৮৫৭ সালের শেষের দিকে চারিংরাজ্যের রাজা কন্দর্পেশ্বরকে উজনি অসমের রাজা বানানোর অনুরোধে তিনি তৎকালীন ব্রিটিশের রাজধানী কলকাতায় গমন করেন। সেই সময়ের সিপাহী বিদ্রোহের কথা জানতে পেয়ে তিনি ব্রিটিশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ আরম্ভ করার জন্য কলকাতা থেকে একটি পত্র কন্দর্পেশ্বরকে প্রেরন করেন। কিন্তু পত্রটি ব্রিটিশ পুলিশকর্মী হরনাথ দারোগার হাতে গিয়ে পৌছায়। পত্রটির দ্বারা মণিরাম দেওয়ান ব্রিটিশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার পরিকল্পনা প্রমাণিত হয় ও তাকে কলকাতায় বন্দী করা হয়। অবশেষে যোরহাটের আদালতে বিচার করা হ্য় ও ১৮৫৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তারিখে জনসমক্ষে তাকে ফাঁসী দেওয়া হয়।[২]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা