ভারতের প্রধান মুফতি

ভারতের প্রধান মুফতি হলেন ভারতীয় সুন্নি মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ এবং প্রভাবশালী ধর্মীয় ব্যক্তি। [২] [৩] [৪] [৫] [৬] বর্তমানে এই পদে অসীন আছেন সর্বভারতীয় সুন্নি জামিয়াতুল উলামার সাধারণ সম্পাদক শেখ আবুবকর আহমদ[৭] [৮] [৯] [১০] তিনি ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে নয়াদিল্লির রামলীলা ময়দানে সর্বভারতীয় তানজিম উলামায়ে ইসলাম কর্তৃক আয়োজিত গরীব নওয়াজ শান্তি সম্মেলনে এই উপাধিতে ভূষিত হন। [৯]

প্রধান মুফতি
প্রতিষ্ঠাতা(গণ)মুঘল সাম্রাজ্য[১]
প্রধান মুফতিশেখ আবুবকর আহমদ
সদস্যবৃন্দসর্বভারতীয় তানজীম উলামায়ে ইসলাম, সমস্ত কেরালা জেম-আইয়্যাতুল উলামা এবং সর্বভারতীয় সুন্নি জমিয়্যাতুল উলামা
সহাকারীপ্রধান মুফতির কার্যালয়
অবস্থান, , ,
স্থানাঙ্ক২৮°৩৮′৪৮″ উত্তর ৭৭°১৪′৪১″ পূর্ব / ২৮.৬৪৬৮০৫৪° উত্তর ৭৭.২৪৪৮৪০৯° পূর্ব / 28.6468054; 77.2448409
ওয়েবসাইটভারতের প্রধান মুফতি
ভারতের প্রধান মুফতি
দায়িত্ব
শেখ আবুবকর আহমদ

২৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৯ থেকে
ভারতের প্রধান মুফতির কার্যালয়
সম্বোধনরীতিমুফতি আজম-এ-হিন্দ
বাসভবনকালিকট
আসননয়াদিল্লি
মেয়াদকালঅনির্দিষ্ট
সর্বপ্রথমআবদুল কাদির বদায়ুনি
গঠনমুঘল সাম্রাজ্য[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
অপ্রাতিষ্ঠানিক নামমুসলিয়ার

ভূমিকা সম্পাদনা

প্রধান মুফতি হলেন বেরলভী-সুন্নি সম্প্রদায়ের দ্বারা নিযুক্ত দেশের সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ ধর্মীয় নেতা। [১১] ইসলামী আইনগত বিষয় এবং সামাজিক বিষয়ে মতামত (ফতোয়া) দেওয়াই তার প্রধান ভূমিকা। [১২] [১৩] প্রধান মুফতি ঐতিহ্যগতভাবে সুন্নি ইসলামের বেরলভী মতবাদীদের মধ্য থেকে নির্বাচিত হন। [১৪]

ইতিহাস সম্পাদনা

মুঘল আমল সম্পাদনা

ভারতের প্রথম প্রধান মুফতি ছিলেন শাহ ফজলে রসুল বাদায়ুনী। তিনি সর্বশেষ মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর কর্তৃক নিযুক্ত হন। বাদায়ুনী ছিলেন একজন হানাফী পন্ডিত [১৫] যিনি ইসলামী আইনশাস্ত্র সম্পর্কে গভীর জ্ঞান রাখতেন। ইসলামিক বিষয়ে তার উর্দু বক্তব্য তারীকী ফতোয়া নামে প্রকাশিত হয়, যা পরবর্তীতে ব্যপক খ্যাতি অর্জন করে। তার নাতি আবদুল কাদির বাদায়ুনি প্রধান মুফতি হিসাবে তার স্থলাভিষিক্ত হন। [১৬] [১৭]

ব্রিটিশ আমল সম্পাদনা

ব্রিটিশ শাসনামলে, অনেক ইসলামি পণ্ডিতরা আহমদ রেজা খান বেরলভীকে ভারতীয় মুসলমানদের আধ্যাত্মিক নেতা, পণ্ডিত ও পুনরুজ্জীবনবাদী নেতা ছিলেন বলে উল্লেখ করেন। [১৮] [১৯] [২০] বহু ছাত্র ও পণ্ডিত তার কাজের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিল এবং তাকে প্রধান মুফতি হওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিল, কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তিনি শিক্ষামূলক পুনরুজ্জীবন এবং লেখালেখির সাথে জড়িত থাকতে চেয়েছিলেন। তার পরিবর্তে তার ছাত্র আমজাদ আলী আজমি এই পদের জন্য নির্বাচিত হন। [২১] হানাফী ফিকহের উপর তার বই, বাহার-ই-শরিয়াত প্রধান মুফতি হিসেবে তার একটি উল্লেখযোগ্য কাজ। তার পাশাপাশি সে সময় মোস্তফা রেজা খান কাদরী প্রধান মুফতি নির্বাচিত হন। আহমেদ রেজা খান বেরলভি ইন্দিরা গান্ধীর শাসনামলে প্রধান মুফতি হন। তিনি এ পদে থাকাকালীন সরকার কর্তৃক প্রণীত পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচির প্রতিবাদ করেন।

শেখ আবুবকর আহমদ সম্পাদনা

শেখ আবুবকর আহমদ ভারতের প্রধান মুফতি হিসেবে ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯-এ রামলীলা ময়দানে শপথ গ্রহণ করেন। তিনি দক্ষিণ ভারতীয়দের মধ্যে প্রথম প্রধান মুফতি। [৮]

ভারতের প্রধান মুফতিদের তালিকা সম্পাদনা

ক্রম. নাম (জন্ম-মৃত্যু) মাযহাব স্থান অন্যান্য কাজ এবং কার্যক্রম টীকা
১৬ শতক - ১৭ শতক

ملا عبد القادر بدایونی (আরবি ও উর্দু)

হানাফী বাদাউন মুনতাখাব-উত-তাওয়ারীখ (আরবি)-এর লেখক মুঘল সম্রাট আকবর ১৫৭৪ সালে তাকে মুফতি পদে নিযুক্ত করেন। তিনি তার কর্মজীবনের বেশিরভাগ সময় এই দায়িত্ব পালনেঅতিবাহিত করেন।
১৭ শতক
১৮ শতক
১৯ শতক

(১ জুলাই 1798 - ৮ আগস্ট 1872)

شاہ فضلِ رسول قادری بدایونی (উর্দু, স্বীয় মাতৃভাষা),
شاه فضل رسول قدري بدایونی (আরবি)

হানাফী বাদাউন তারিখী-ফতোয়া লেখক (উর্দু) বাদায়ুনীকে সর্বশেষ মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর নিযুক্ত করেছিলেন।
২০ শতক

مفتی اعظم محمد کفایت اللہ دہلوی ( উর্দু, তার মাতৃভাষা),


مفتی کفایت اللہ الدلوی (আরবি) [২২] [২৩] [২৪]

হানাফী শাহজাহানপুর লেখক কিফায়াতুল মুফতি [২৫]

صدر الشريعہ مفتى محمد امجد على اعظمى (উর্দু, স্বীয় মাতৃভাষা),

مفتى أمجد على أعظمى (আরবি)

হানাফী বেরেলি বাহার-ই-শরিয়াতের লেখক (উর্দু)

مصطفٰی رضا خان قادری نوری ( উর্দু, স্বীয় মাতৃভাষা),
مصطفى رضا خان القادري النوري (আরবি)

হানাফী বেরেলি ফাতাওয়া মুস্তাওয়াফিয়াহ (আরবী) লেখক
২০ শতক - 21 শতক

تاج الشریعہ اختر رضا خان ( উর্দু, স্বীয় মাতৃভাষা),
مفتي اختر رضا خان (আরবি)

হানাফী বেরেলি জামিয়াতুর রযার প্রতিষ্ঠাতা এবং ফতোয়া তাজুশ শরীয়াহ (আরবি) লেখক
২১ শতক
১০

( মালায়ালম, তার মাতৃভাষা),

الشيخ أبوبكر أحمد (আরবি)

শাফিঈ কোঝিকোড় অল ইন্ডিয়া মুসলিম স্কলারস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Bowering, Gerhard; Crone, Patricia; Kadi, Wadad; Stewart, Devin J.; Zaman, Muhammad Qasim; Mirza, Mahan (২৮ নভেম্বর ২০১২)। The Princeton Encyclopedia of Islamic Political Thought (ইংরেজি ভাষায়)। Princeton University Press। আইএসবিএন 978-1-4008-3855-4। ১৩ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ 
  2. Taneja, Parina (৯ জুন ২০২০)। "Grand Mufti Sheikh Abu Bakr Ahmad on COVID19 pandemic: Follow social distancing while visiting public places"indiatvnews.com (ইংরেজি ভাষায়)। ১৫ জুলাই ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০২০Sheikh Abu Bakr Ahmad, Grand Mufti of India and President of the Islamic Community of India 
  3. "Kerala celebrates Bakrid adhering to COVID protocols"Mathrubhumi (ইংরেজি ভাষায়)। ২৯ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০২০Grand Mufti of India and President of the Islamic Community of India, Kanthapuram A. P. Aboobacker Musliyar 
  4. "Closed-door celebration for Kerala Muslims on Eid"outlookindia.com/। ১৩ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০২০ 
  5. "Eid al-Fitr 2020: Closed-door celebrations Muslims across Kerala, Mangaluru on Eid"Hindustan Times (ইংরেজি ভাষায়)। ২৪ মে ২০২০। ২৪ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০২০ 
  6. "Muted Eid Celebrations"Gulf Times। ১৩ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০২০ 
  7. Kumar, Ashwani। "Education is key to peace, says India's Grand Mufti"Khaleej Times। ২৭ মে ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০Sheikh Aboobacker took charge as the Grand Mufti this February and holds the supreme authority to give fatwas in relation to Islamic religious matters in India. 
  8. "Kanthapuram elected as new Grand Mufti"Mathrubhumi। ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৯Kanthapurm will be the supreme leader of Muslim community who believe in various madhab of Sunni and Sufi sects. 
  9. "Kanthapuram selected Grand Mufti of India"The Times of IndiaThe Times Groupআইএসএসএন 0971-8257। ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  10. "تعيين الشيخ أبوبكر أحمد مفتيا للهند"العين الإخبارية (আরবি ভাষায়)। আইএসএসএন 2521-439X। ৮ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  11. "Muslim Women Shouldn't Raise Slogans Against CAA, Says Grand Mufti. Moral Policing Never Stops!"The Times of India। ২৮ জানুয়ারি ২০২০। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০88-year-old Kanthapuram was last year appointed as India's Grand Mufti, the senior-most Islamic cleric in a country. 
  12. Pickles, Katie (১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০)। "A mufti day is enormous fun. But time to give it a new name"The Spinoff। ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০Grand Mufti Sheikh Abubakr Ahmad is the Indian Islamic community’s current most senior religious authority. Mufti interpret Islamic law and then issue fatwa (legal opinion). 
  13. "Kanthapuram Grand Mufti of Sunnis in India"The Hindu। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯। আইএসএসএন 0971-751X। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০Kanthapuram A.P. Aboobacker Musliyar has been made Grand Mufti, the top authority to give non-binding advice and opinion on Islamic jurisprudence and religious practices of the Sunni sects in India. 
  14. Mulla, Malikarehana A। "6" (পিডিএফ)Sects and sub sects among the Muslims of Karnataka with special reference to North Karnataka a study। পৃষ্ঠা 221। ১৮ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ 
  15. "History of Fazle Rasool Badayuni"ziaetaiba.com। ৬ মার্চ ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০১৯ 
  16. "Chapter 12 – Akbar's Religious Views, as Described by Badauni"ibiblio.org। ২ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুলাই ২০১৯ 
  17. Muntakhab-ut-Tawarikh.Vol.1। Atlantic Publishers and Distributors। ৫ মার্চ ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুলাই ২০১৯ 
  18. Cesari, Jocelyne (১৪ এপ্রিল ২০১৪)। The Awakening of Muslim Democracy: Religion, Modernity, and the State (ইংরেজি ভাষায়)। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 25। আইএসবিএন 978-1-107-51329-7। ১৩ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জুন ২০২০ 
  19. Esposito, John L. (১ অক্টোবর ২০১৮)। Religion and Violence (ইংরেজি ভাষায়)। MDPI। পৃষ্ঠা 5। আইএসবিএন 978-3-03842-143-6। ১৩ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জুন ২০২০ 
  20. M Hassan, Imam; Hussain, Ibrar। "Comparative Study of 'Kanzul Iman' among other Famous Translation" (পিডিএফ)আইএসএসএন 2320-7973। ৩ মার্চ ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মার্চ ২০২০ 
  21. "History of Amjad Ali Azami"ziaetaiba.com। ৬ মার্চ ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০১৯ 
  22. Mufti Azam Hind, Maulana Kifayatyullah Shahjahanpuri Thumma Dehlawi (2005 সংস্করণ)। Khuda Bakhsh Oriental Library 
  23. Maulana Habibur Rahman Ludhyanvi Aur Unki Tahrik Ahar E Islam Ek Tarikhi wa Tahqeeqi Jaiza Mohd.
  24. A Biography Of Mufti Kifaayatullaah Dehlavi। পৃষ্ঠা 20। সংগ্রহের তারিখ ১৬ এপ্রিল ২০২০ 
  25. "Kifayatrul Mufti"archive। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মার্চ ২০২০