ভাঁজো নাচ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম, সন্নিহিত পূর্ব বর্ধমানমুর্শিদাবাদ জেলায় 'বাঙালি হিন্দু' মহিলাদের একটি ব্রতাচারমূলক সারিনৃত্যভাদ্র মাসের শুক্লাদ্বাদশীর থেকে পরপর আটদিন ইঁদপূজা ও 'ভাঁজো' পাতাকে কেন্দ্র করে গান ও নৃত্য পরিবেশিত হয়। [১]

বিবরণ সম্পাদনা

হিন্দু বর্ষপঞ্জীর ভাদ্রমাসের শুক্লাদ্বাদশীতে এতদাঞ্চলের সব বয়সের মেয়েরা ইন্দ্র বা ইঁদপূজা করেন। পরদিন ইঁদতলার মাটির সঙ্গে ইঁদুরের গর্তের মাটি মিশিয়ে নতুন সরা বা পাকা তালের ঘুঞরিতে 'ভাঁজো' পাতা হয়; ঐ মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হয় মটর-সরষে-মুসুরি-শন ইত্যাদি শস্যবীজ।

এরপর আটদিন ধরে নিত্যপূজা চলে; ন'দিনের দিন জাগরণ ও পরে বিসর্জন। প্রতি সন্ধ্যায় ভাঁজো পূজায়, জাগরণ ও বিসর্জনের সময় ব্রতিনীরা 'ভাঁজো পাত্র'গুলি ঘিরে গান ও নৃত্য করেন। ইঁদতলার মাটি সংগ্রহ করতে গিয়ে দু'তিনটে গ্রাম বা পাড়ার মেয়েরা পরস্পর নাচের মাধ্যমে নকল যুদ্ধনৃত্যের ভঙ্গি করেন। সঙ্গত হিসাবে মাদল-ঢোল, বাঁশি, করতাল বা অন্যান্য গ্রাম্য বাদ্যযন্ত্র দ্রুতরয়ে বাজানোর সাথে সাথে নাচ ক্রমে উদ্দাম ও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। নাচের সাথে গীত হওয়া একটি ছড়া:

গঙ্গার গর্ভে সরু সরু বালি
ভাঁজোর মুখে ছটা,
তুলে ধরো বালি

[১]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. বাংলার লোকসংস্কৃতির বিশ্বকোষ, দুলাল চৌধুরী, আকাদেমি অব ফোকলোর, কলকাতা: ৭০০০৯৪, প্রথম প্রকাশ:২০০৪, পৃষ্ঠা: ২৩৪