হাড়িভাঙ্গা আম

বাংলাদেশের বিখ্যাত ও সুস্বাদু আম

হাড়িভাঙ্গা আম বাংলাদেশের একটি বিখ্যাত ও সুস্বাদু আম। বিশ্ববিখ্যাত এ হাড়িভাঙ্গা আমের উৎপত্তি রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়ন থেকে।[১][২]

হাড়িভাঙ্গা আম
ভৌগোলিক নির্দেশক
হাড়িভাঙ্গা আম
বর্ণনাহাড়িভাঙ্গা আম বাংলাদেশের আশবিহীন একপ্রকারের সুস্বাদু আম। বিশ্বখ্যাত, স্বাদে গন্ধে অতুলনীয় আম।
ধরনকৃষি
অঞ্চলখোড়াগাছ, মিঠাপুকুর, রংপুর
দেশবাংলাদেশ
উপাদানআম

নামকরণের ইতিহাস সম্পাদনা

আমটির ‘ইতিহাসের’ গোড়াপত্তন করেছিলেন নফল উদ্দিন পাইকার নামের এক বৃক্ষবিলাসী মানুষ। শুরুতে এর নাম ছিল মালদিয়া। আমগাছটির নিচে তিনি মাটির হাঁড়ি দিয়ে ফিল্টার বানিয়ে পানি দিতেন। একদিন রাতে কে বা কারা ওই মাটির হাঁড়িটি ভেঙে ফেলে। ওই গাছে বিপুল পরিমাণ আম ধরে। সেগুলো ছিল খুবই সুস্বাদু। সেগুলো বিক্রির জন্য বাজারে নিয়ে গেলে লোকজন ওই আম সম্পর্কে জানতে চায়। তখন চাষি নফল উদ্দিন মানুষকে বলেন, ‘যে গাছের নিচের হাড়িটা মানুষ ভাঙছিল সেই গাছেরই আম এগুলা।’ তখন থেকেই ওই গাছটির আম ‘হাড়িভাঙ্গা আম’ নামে পরিচিতি পায়। বর্তমানে রংপুরের হাঁড়িভাঙা আমের মাতৃ গাছটির বয়স ৬৩ বছর।[১][৩][৪]

বিবরণ সম্পাদনা

বিশ্বখ্যাত, স্বাদে গন্ধে অতুলনীয় বাংলাদেশের আশ বিহীন হাড়িভাঙ্গা আম। গাছ লক্ষ্যণীয় ও আকর্ষণীয়। ডগা পূষ্ট ও বলিষ্ঠ। ডালে জোড়কলম লাগালে গাছ অতি দ্রুত বৃদ্ধি পায়। চারা রোপনের পরবর্তী বছরেই মুকুল আসে। হাড়িভাঙ্গা আম গাছের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো গাছের ডালপালা উর্ধ্বমূখী বা আকাশচুম্বী হওয়ার চেয়ে পাশে বেশি বিস্তৃত হয়। উচ্চতা কম হওয়ায় ঝড়-বাতাসে গাছ উপড়ে পড়েনা এবং আম কম ঝরে।[১][৫][৬]

গঠন সম্পাদনা

আমের উপরিভাগ বেশি মোটা ও চওড়া, নিচের অংশ চিকন । দেখতে সুঠাম ও মাংসালো, শ্বাস গোলাকার ও একটু লম্বা। শ্বাস অনেক ছোট, আঁশ নেই। আকারের তুলনায় ওজনে বেশি, গড়ে ৩টি আমে ১ কেজি হয়। কোন ক্ষেত্রে একটি আম ৫০০/৭০০ গ্রাম হয়ে থাকে। চামড়া কুচকে যায় তবুও পঁচে না । ছোট থেকে পাকা পর্যন্ত একেক স্তরে একেক স্বাদ পাওয়া যায়।[১][৫]

ঔষধি ও পুষ্টিগুন সম্পাদনা

রাতকানা ও অন্ধত্ব প্রতিরোধে মহৌষধ। কচি পাতার রস দাঁতের ব্যাথা উপশমকারী। আমের শুকনো মুকুল পাতলা পায়খানা, পুরনো অমাশয় এবং প্রস্রাবের জ্বালা-যন্ত্রণা উপশম করে।

ব্যবহার সম্পাদনা

ফল হিসেবে খাওয়ার পাশাপাশি আম থেকে চাটনি, আচার, আমসত্ত্ব, মোরব্বা, জ্যাম, জেলি ও জুস তৈরি হয়। প্রচুর ভিটামিন ‘এ’ বা ক্যারোটিন, ভিটামিন ‘সি’, খনিজ পদার্থ ও ক্যালোরি রয়েছে ।

গ্যালারি সম্পাদনা

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "রংপুরের বিখ্যাত হাড়িভাঙ্গা আম"বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ৪ জুলাই ২০১৯। ৫ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০১৯ 
  2. "আমের 'সেরা' হাড়িভাঙ্গা"RTV Online (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-০৫ 
  3. BanglaNews24.com। "রংপুরের সুমিষ্ট হাড়িভাঙ্গা আম যাচ্ছে বিদেশেও"banglanews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-০৫ 
  4. "আগাম বাজারে আসায় কমদামে বিক্রি হচ্ছে হাড়িভাঙ্গা আম"আমাদের সময়.কম - AmaderShomoy.com। ২০১৯-০৬-১৯। ২০১৯-০৭-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-০৫ 
  5. ফিরে), স্টালিন সরকার (রংপুর থেকে। "হাড়িভাঙ্গা আমে ভাগ্যবদল"DailyInqilabOnline (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-০৫ 
  6. webdesk@somoynews.tv। "হাড়িভাঙ্গা আম বিক্রিতে খুশি মালিকরা"somoynews.tv (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-০৫ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা